somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতঃপর হরিদাস পাল~

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হরিদাস পাল সম্পর্কে আর কি বলবো। হরিদাস পাল মানেই তো -তার একটা কথা বলার প্রাতিষ্ঠানিক প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মটা না থাকলে কেউ কারো কথায় ঠিক মজা পায়না, সুখ হয়না, কাম জাগেনা। এই প্ল্যাটফর্মে আবার বিপদজনক অনেক। ভেবে কথা বলতে হবে, সম্মানে নতজানু হও! প্রজ্ঞাবান তিনি।

হরিদাস মার্ক্স দিয়ে ফুকো বুঝাতে চাইলো, যেহেতু পরীক্ষার হলে বসে গোল্লা ভরাটের ভোগান্তি নেই, যেহেতু জনাব স্যর বা ম্যামের চোখ রাঙ্গানীর মতো ভয়গুলো নেই সেহেতু মনে হয় এবার হরিদাস পাল আজ একটু সাহসের পরিচয় দেখানোর চেষ্টা করতেই পারে।

এখানে সে কেবল এক আকস্মিক মুক্ত আলোচনা সভার দাওয়াত গ্রহন করেছে মাত্র।

প্রথমেই অভ্যাসবশত আমাদের হরিদাস পাল তেমন বাক-বিতন্ডায় জড়াবেনা বলে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।

বাজারে টেবিল তৈরি হয় কি দিয়ে?
সবাই বললোঃ কাঠ।

এই কাঠ যখন টেবিল হলো। কাঠ উলটে পণ্য হয়ে গেলো- এই পণ্যের মোহে আমাদের শুরু হলো রতিক্রিয়া। বিদ্যা অর্জনে টেবিল আবশ্যকীয় সুতরাং টেবিল ছাড়া চলবেনা...

কথাগুলো হরিদাসের পেটে আসলেও মুখে আসছিলনা... সে তাই এক বিস্ময়কর হাই তুলে ! সজোরে অতীত মৈথুনে কালক্ষেপণ করতে থাকলো।

হায়! সেদিনের সোনালী দিন কোথায় গেলো তার! টেবিলে বসে দৈর্ঘ্য-প্রস্থের ফটোকপিগুলো এই মাথা হতে ঐ মাথা কি যাচ্ছেতাই ভাবেই না গিলেছে সে ... আর পরীক্ষার হলে তা উদগিরণ করে ফাস্ট ক্লাস ফাস্ট হয়েছে, কি সহজে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্বের শিক্ষক হওয়া যায় সে এই গুঁড় রহস্যের উদঘাটন করতে পেরেছিলো!

আমাদের হরিদাস পাল। মনস্তত্বে যার অগাধ পাণ্ডিত্য বলে আজ বিশ্বাস করেন সবাই।

হরিপদ পেট্রোলকে সরিষার তেল ভেবে ভুল করে নাই এটা তার কাছে প্রমাণিত সত্য। শিক্ষকের উপরের টাকে পেট্রোল ঢালায় সে দুগুণ ফল পেয়েছে। হরিদাস পাল... কম বুদ্ধিমান নয় বৈকি। সে এমনকি গার্লফ্রেইন্ডের সাথেও বাক-বিতন্ডায় অভ্যস্ত ছিলোনা। সে নিশ্চুপ থেকে শুনে গিয়েছে। অযথা ঝামেলা করেনাই। সে নিতান্তই শিক্ষানবিশের ভান করতো। জ্বি স্যর! হ্যাঁ স্যর! হ্যাঁ গার্লফ্রেইন্ড! জ্বী! গার্লফ্রেইন্ড!

হরিদাস পালের পূর্ব পুরুষেরা ছিলো হালচাষি তাই বলে ভেবে বসলে ভুল হবে...

হরিদাসের কালক্ষেপণে আবার বাধা আসলো

কোথা থেকে এক আগুন্তুক কণ্ঠ বলে উঠলো...

"আমি পণ্যকে ভালোবাসি, পণ্যকে দিয়ে আমার স্ট্যাটাস নির্ধারিত হয়। পণ্যের সাথে আমি একাত্ম হয়ে যাচ্ছি। পণ্যের সম্পর্ক আমার উপর, আমার সম্পর্ক পণ্যের উপর। পালটা পালটি হয়ে যাচ্ছে। আমি বিষয়ী, বাজার আমাকে বিষয় করে তুলছে।" হেগেল বলেছেন... বুস্তুতে ফিরে চলো...

হরিদাস আকস্মিক এই কথায় চমকে উঠলে! পরের লাইন গুলো কেমন যেনো পাকস্থলীতে চাপসৃষ্টি কারক ভাবনাগুলোর সাথে মিলে গেলো! এমন কিভাবে হয়? অব্যক্ত কথা গুলো না বলতে পারায় ঝাপসা হয়ে আসে তার চশমার দেয়াল। বক্তার উৎস অনুসন্ধানে ব্যর্থ হয়ে সে নিতান্ত বাধ্য হয়ে ফিরে গেলো স্ব অতীতে মৈথুনে।

ফাস্ট ইয়ারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মনস্তত্ত্বে ভর্তি হয়ে আমাদের হরিদাস মুশকিলে পরেছে অনেক। চার চোখের দিব্যদৃষ্টিতে সে সহপাঠীদের মধ্যে নিজের হালচাষি পূর্বপুরুষদের দেখতে পায়। এমন অতীত তাকে অনেক পীড়িত করেছে। জিনেটিক ওসিডি! এমন কোন কিছুকি আছে মনস্তত্বে? হরিদাস পাল এমনটাই ভাবছিলো

হরিদাস কখনো সেকেন্ড হয়নাই। সে নিয়ম করে পড়েছে। গোপনে পড়েছে। আর বন্ধুদের পড়তে দেখলে সজোরে আস্ফালন করে বলেছে, এতো পড়ে কি হবে শুনি!

কেউ একজন সেই সময় অবান্তর এক প্রশ্ন রাখলো...

ডিগ্রী কিভাবে তৈরি হয়?

উপস্থিত সবাই এবার চুপ । এমন নিথর নিস্তব্দতা হরিদাস আশা করেনি।

এবার হরিদাস পাল সুযোগের সদ্ব্যবহার করার সিদ্ধান্তে আসিলো, নিজের জ্ঞান প্রচার এবার তার করতেই হবে।

সে বিদ্রূপ কণ্ঠে বলে উঠলো, কেনো! কাঠ?

হরিদাসের কথা শেষ না হতেই চারিদিকে হাসির শব্দ শোনা গেলো... এমন হাসি বহুযুগ শুনতে হয়নি তাকে ।

বক্তার মুখটা এবার কিছুটা দেখা যাচ্ছে, তিনি অবশ্য না হেসেই কথা চালিয়ে গেলেন,

জ্ঞান উলটে ডিগ্রী হয়ে গেলো... এই ডিগ্রীর মোহে আমাদের শুরু হয় রতিক্রিয়া... জ্ঞান যেনো মিথ হয়ে গেলো... হিপনোটিজমের শেষ ধাপে বক্তা বলে উঠলেন "Mয়th is at a time true but unreal."

সভা চলছে...! মূর্তিমতো হরিদাসকে টেনে কেউ একজন চেয়ারে বসিয়ে দিলো... সে নিজেও এই ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইলোনা... তার মস্তিষ্কে আজো বয়ে চলছে প্রগাড় প্রস্রাবের ফেনা...।

আমাদের হরিদাস পালকে নিয়ে কবিতা লিখছিলো এক আগন্তুক কবি... কবি-সাহিত্যিকদের হরিদাসে এল্যার্জি নাকি সে নিজেই উহা যাহা তাহা তাহা! সে তা বুঝেনাই কখনো... তবে সেই কবিতা মনে আসলে হরিদাসের এক বিদঘুটে গন্ধ নাকে আসে... মনে পড়ে বহুযুগ আগে এমন কবিতা শুনে সবাই কেমন শেষবারের মতো তাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছিলো। বিদ্রূপটা সামাজিক নাকি বৈষয়িক এটা সেদিন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলো।

হরিদাসের কথা কিন্তু কারো মনে থাকলোনা... হরিদাসকে কেউ মনে রাখে?


"অই যে চশমা-ধারী, মারাত্মক সিরিয়াস
চেহারা-সুরত, যেন সারা দীন-দুনিয়ার যাবতীয়
দায়ভার তারই বৃষ স্কন্ধে কেউ চাপিয়ে দিয়েছে;
যেন সে পটল তুললে দুনিয়া এতিম হয়ে যাবে।

কিন্তু অই চশমা-ধারী, মারাত্মক সিরিয়াস
চেহারা-সুরত, জানে না যে ওর মতো কত শত
বালস্য বাল/ “হরিদাস পাল” পৃথিবীর-প্রকৃতির
প্রগাঢ় প্রস্রাবের ফেনায় ভেসে গেছে……..।”
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×