"In spite of everything, I still believe that people are really good at heart"? -Anne Frank,The diary of young girl.
একটাসময় হঠাৎই পৃথিবীর সবকিছুর উপর থেকে বিশ্বাস উঠে যাওয়া শুরু হয়! তখন লিখতে শুরু করা একটা পর্ব। যেখানে যেটাকে মনে হয়েছে অসাধারণ গল্পটা বলার চেষ্টা থাকবে। গল্প-১!
দিনকয়েক আগের কথা। আমার আগের স্কুলের এক ছাত্রীর বিয়ে। মেয়েটির বাবা মারা গেছেন এবং সে সৎ বাবার কাছে মানুষ।ক্লাসমেট হবার সুবাদে এই তথ্য আমি জানতাম। আমি যেটা জানতাম না সেটি হল মেয়েটির বাবা একজন রিকশাচালক। সম্ভবত আমি ওনার রিকশায় চড়েই বহুবার আমার স্কুলে গিয়েছি। মেয়েটা চক্ষুলজ্জার খাতিরেই হোক কিংবা আমি কোনদিন জিজ্ঞেস করিনি এইজন্যই হোক আমাকে কখনো বলেনি! তো হঠাৎ একদিন আমি শুনলাম আমার এই সহপাঠীর বিয়ে এবং খুব অস্বাভাবিকভাবে আরও কিছু বন্ধুবান্ধবের সাথে বিয়েতে হাজির হয়ে গেলাম। আমার ধারণা ছিল আমার বয়সী একটা মেয়েকে ধুপধাপ বিয়ে দিয়ে দিলে তার মোটেই ভাল লাগবে না এবং সম্ভবত বিয়েটা তার অমতে হচ্ছে। কিন্তু অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম যে না মেয়েটা ভয়ঙ্কর খুশি!এবং তার এই খুশি হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে তার হবু স্বামী তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে বিয়ের পর তাকে তার ইচ্ছেমত পড়াশোনা কিংবা কাজ চালিয়ে যেতে দেবে। উল্লেখ্য মেয়েটা বেশ স্কুল টাইম থেকেই বাচ্চাদের টিউশনি করায়। আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। তাই একটু সাহস করে নতুন জামাই বাবাজীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম,বাপধন বলতো তোমার মতলবটা কি?উনি যা উত্তর দিলেন তাতে আরও একবার আমার চমকে ওঠার পালা। বক্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে এই যেহেতু মেয়েটা সৎ বাবার কাছে মানুষ আর ওনার এই ঘরে আরও ২ টি ছেলেমেয়ে আছে ওনার পক্ষে মেয়েকে পড়ানো সম্ভব নয়। এমনকি ওনার ধারণা উনি অসুস্থ হওয়ায় খুব বেশিদিন বাঁচবেন ও না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেয়েকে সুপাত্রস্থ করে নিজের কর্তব্য শেষ করতে চান। নয়তো মেয়ের আসল বাবার আত্মা শান্তি পাবেন না! পাত্র একটি এনজিওতে কেরানির চাকরি করেন। বিশ্বাস করুন আমি একজন রিকশাওয়ালা,তার মেয়ে আর তার হবু জামাইয়ের কথা মুগ্ধ হয়ে শুনেছি সেদিন। আমি বিতর্ক করি। প্রতিপক্ষের বাঘা বাঘা বিতার্কিকরাও এতটা মুগ্ধ করতে পারেনি কখনো! আমার ইনটুইশন বলে মেয়েটা ভয়ঙ্কর ভাগ্যবতী! আমি সেদিন ফিরে আসার সময় মেয়েটার চোখের কোণায় খুশি চিকচিক করতে দেখছিলাম। আমার অনুমান ভুল নয়। মেয়েটাকে প্রায়ই দেখি ফেসবুকে নতুন জীবনের আনন্দ নিয়ে পোস্ট করতে। তুই তোর পড়াশোনাটাও চালিয়ে যাচ্ছিস আশা করি!
কিছুদিন আগে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়েছিলাম। যারা জানতেন বিপদের মাত্রা এবং ঘটনা তারা বড়জোর সবাই ইনবক্সে সান্ত্বনা দিয়ে গেছেন। কেউ বলেনি সাহস করে প্রতিবাদের কথা। তার ফলাফল অবশ্য ভয়ঙ্কর হয়েছে। শুধু একটা বান্ধবী এগিয়ে এসেছিল সব শুনে। সব ঝামেলার ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সামলে গেছে সব। বিনিময়ে আমার পাশাপাশি সেও ছিল হুমকিতে। তবু ওইযে পিপল আর রিয়েলি গুড এট হার্ট!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৫৯