somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রিম্যাসন্স ওপেন সিক্রেটস- অপসৃত ২৬ অবগুন্ঠন

০৬ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্মীয় ও ধর্মাচার সংশ্লিষ্ট গুপ্ততথ্য-চাপাপড়া বিষয় নিয়ে সিরিজটায় ম্যাসন নিয়ে সরাসরি লিখব কি লিখব না ভাবছিলাম। রূপকথার জাদুকথক ইমন জুবায়ের স্বয়ং যখন বিষয়টা নিয়ে লেখা শুরু করলেন, অনেকদিনের প্ল্যানটা পাবলিশ করেই ফেললাম

অবগুন্ঠিত সিরিজ:
১. অবগুন্ঠিত ৫০ : ধর্মীয় ৫০টি তথ্যের প্রায় সবই অজানা হতে পারে

২. অবগুন্ঠিত আরো বারো: ধর্মীয় এই তথ্যগুলোর সবই অজানা হতে পারে

৩. অবগুন্ঠিত তেরো: একটি ভয়ানক সত্যি, যা ঢেকে ছিল আমাদের চোখে

এবারের পর্ব, ফ্রিম্যাসন দের এমন কিছু স্বস্বীকৃত অথবা প্রকাশ্যদৃষ্ট ফ্যাক্ট, যা শিহরণ তো আনবেই- কাঁপিয়েও দিতে পারে।

১. ব্রিটিশ যুক্ত-বাহিনীর হাতে তুরস্কে খিলাফত পতনের পর কামাল আতাতুর্ক তো ধর্মনিরপেক্ষতার মানে ধরেছিলেন এই- আবদুল্লাহ্ নাম রাখা যাবে না, তা ধর্মনিরপেক্ষ নয়; আরবি লিপিতে তুর্কি ভাষা লেখা বন্ধ, ল্যাটিন লিপির আগমন; মসজিদের বিশাল বিলোপ... মজার ব্যাপার হল, মহান সংস্কারক কামাল পাশা একদিকে এই পরিবর্তন আনলেন, আরেকদিকে পুরো তুরস্ক ছেয়ে গেল... না, গীর্জায় নয়, মেসনদের উপাসনালয় বা মেসনিক লজে।

২. খেয়াল করেছেন কি, তুরস্কের নতুন ধারার সরকার তিনবার এলো, তাও তুর্কি সেনাবাহিনী সেই সরকারের ঠিক অনুগত নয়? আর অতি আদি থেকেই তুর্কি সামরিকতার হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল সাংবিধানিক ক্ষমতা। কেন? খোঁজ নিলে দেখা যাবে, তুর্কি সামরিক বাহিনীর সবচে কমন বিষয়- ফ্রিম্যাসন।

৩. এবার আসুন ইরাকে। পতন হল সাদ্দামের। দখল নিল মার্কিনরা। প্রতিষ্ঠিত হল... ফ্রিম্যাসন দের উপাসনালয়, ম্যাসনিক লজ। পুরো ইরাক জুড়ে। প্রথম ধাক্কাতেই চল্লিশটার উপর।

৪. ফ্রিম্যাসনদের বইটাকে আমরা ধর্মগ্রন্থ বলতে পারি। জর্জ বুশ সহ অসংখ্য প্রেসিডেন্ট-গভর্নর-সিনেটর কিন্তু বাইবেল ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করেননি ক্ষমারোহনের সময়। করেছিলেন, সরল ভাষায় যে বইটাকে ‌'ম্যাসনিক বাইবেল' বলা হয়, সেটা ছুঁয়ে।

৫. জর্জ বুশের কথা যখন এলই- তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ম্যাসনিক যে বিশেষ উচ্চতর সংঘের সদস্য ছিলেন, সেটায় সদস্য হবার ক্ষমতা রাখে শুধু সর্ব্বোচ্চ পর্যায়ের ম্যাসনদের সন্তান, যারা নিজেরাও ম্যাসন।

৬. এবং ওই বিশেষায়িত সংঘের প্রতীক, দুটা হাড়ের এক্স-ক্রশের মাঝখানে একটা মানুষের খুলি। যাকে আজকে আমরা বিপদ সংকেত হিসাবে ব্যবহার করি, আদতে সেটা ম্যাসনদের উচ্চতম একটা চিহ্নমাত্র।

৭. আর এই প্রতীকটা ব্যবহৃত হয় উচ্চতর ধাপের ম্যাসনদের ব্যক্তিগত উপাসনা কক্ষ বা ধ্যানঘরে। ওই ঘরে তারা ধ্যান করেন- তাদের দ্বারা স্বীকৃত কথাটা। দুটা ক্রস করা হাড়ের মাঝখানে মানুষের খুলি, একপাশে পাত্রে কিছু সালফার, আরেকপাশে বালিঘড়ি, বাঁকানো কাস্তে লম্বা লাঠির মাথায়- দাঁড়া করানো। এই হল সেখানকার প্রাথমিক বস্তু। এমনকি ইউ এস ক্যাপিটাল হিলেও আছে সম্মানিত সিনেটর-কংগ্রেসম্যানদের জন্য এমন কক্ষ।

৮. কোন ধরনের ম্যাসনিক কক্ষে ম্যাসন না হয়ে কেউ ঢুকতে পারবে না।

৯. ঢাকার একটা বিশেষ জায়গায় প্রকাশ্যে আছে সেই ম্যাসনিক উপাসনালয় বা লজ। আমি নিজে দেখে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়েছিলাম। পরে বন্ধুবান্ধব অনেকের কাছেই শুনলাম, তারাও চার মিলিয়ে ফেলেছে। পরে তো ইমন জুবায়েরের ব্লগে দেখলাম অনেকেই জানে বিল্ডিঙটার কথা।

১০. বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট বিলিওনিয়ার, যিনি সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ান শুধু শ্রেষ্ঠ ধনী, ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী-প্রেসিডেন্ট টাইপ রাজনীতিবিদ, মিডিয়ার মোঘল ও তেলচক্রে- তাঁকে বলা হয় একজন মেসনিক প্রতিনিধি।

১১. ফ্যাক্টে চলে আসি- মেসনরা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন যে, তাদের রিচুয়ালের একটা অংশ হল, মানুষের মাথার খুলিতে নিয়ে লাল মদ খাওয়া।

১২. পৃথিবীতে সংগঠনের সদস্য আছেন পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি, ইউএসএ তে পচিশ লক্ষেরও বেশি।

১৪. এই সব সদস্যকে অঙ্গীকার করতে হয়, তাঁরা নিজ নিজ ধর্মের উর্দ্ধে (?), নিজ দেশের উর্দ্ধে মেসনকে অগ্রাধিকার দিবেন ফাইনাল ডেস্টিনেশন অর্জন পর্যন্ত।

১৫. গ্র্যান্ড মাস্টার- আপাত নির্দোষ শব্দ। বাংলায় শাব্দিক অর্থ করুন, মহা প্রভু, আরবিতে করুন, আল ইলাহ্। প্রত্যেক ম্যাসনকে সংগঠনে যুক্ত হবার সময় ম্যাসনিক গ্র্যান্ড মাস্টারকে ভার্বাল স্বীকৃতি দিতে হয়।

১৬. কথা সত্যি, ম্যাসন হতে তাঁরা কাউকে বাধ্য করেন না- এটা শত্রুও বলে। এমনকি খুব আগ্রহও দেখান না। কিন্তু সেই তিন হাজার বছর ধরে, কেউ যদি ম্যাসন হতে চায়, যথাযথ সময় ও মনোযোগ দেয় রিক্রুটার সদস্যর সাথে, তাকে চোখ বেঁধে ম্যাসনিক লজে নিয়ে আসা হবে। চোখ বেঁধে ভিতরে ঢোকানো হবে।

১৭. এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় গ্র্যান্ড মাস্টারের সামনে আনার পর, প্রথমেই গ্র্যান্ড মাস্টার নবাগতর বুকে, হৃদপিন্ড বরাবর একটা তীক্ষ্ণ ছোরা ধরে যা বলবেন, তা হল, এই সংঘে তোমাকে ভাই হিসাবে স্বীকার করা হোক বা না হোক, এখানকার কথা যদি তুমি কোনদিন বাইরে বল, তোমার নাড়িভুঁড়ি অমুক জায়গায়, গলা কেটে অমুক জায়গায়... তুমি কি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হচ্ছ... এ ধরনের কথা দিয়ে। এটা তাদের স্বীকৃত ফ্যাক্ট।

১৮. ধর্মের বিন্দুমাত্র স্থান ম্যাসনদের প্রতিষ্ঠানে, ম্যাসনদের পারস্পরিকতায় নেই, এবং রিক্রুটের সময় এই ওথ তাদের গ্রহণ করতে হবে। ব্যাপারটা এমন না, যে তোমার ধর্ম তোমার। ব্যাপারটা এমন, যে, তুমি ধর্ম নিয়ে প্রবেশই করতে পারবে না ভিতরে। সব বল, পৃথিবীতে প্রচলিত ধর্মগুলো নিয়ে বা তা সংশ্লিষ্ট একটা শব্দও উচ্চারণ করতে পারবে না এখানে বা পারস্পরিকতায়।

১৯. ঈশ্বর-আল্লাহ্-গড নয়, সংঘটার বিশ্বাস ইউনিভার্সাল আর্কিটেক্টের উপর। খেয়াল করুন, ঈশ্বর না থাকা থেকে গড়েন, আর আর্কিটেক্ট থাকাকে রিশেপ করেন। সেই অস্তিত্ব কে হতে পারেন?

২০. আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদারদের বেশিরভাগ প্রকাশ্য মেসন।

২১. আমেরিকার ১৭ জন প্রেসিডেন্ট প্রকাশ্য মেসন।

২২. বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন মেসনিক ইতিহাসের তিন হাজার বছরের সবচে উল্লেখ্য ও সবচে প্রভাবশালী পাঁচজন মেসনের অন্তর্ভুক্ত।

২৩. ওয়াশিংটন ডিসি'র পুরো নগরটার ডিজাইন ম্যাসনিক লোগো গুলোর মত করে করা।

২৪. অ্যাটলাস শ্রাগড বইয়ের লেখিকা, এক ক্রীতদাসী, সেই দাস যুগের কয়লা যুগের আমেরিকায় তার প্রভুর 'ভবিষ্যত পৃথিবী নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা' বিষয়ক আলোচনা শুনে বইটা লেখেন। তিনি সেখানে আতঙ্কিত সুরে বলেন, ভবিষ্যতের পৃথিবীটাকে নিয়ন্ত্রণ করবে যে গ্রুপ, তারা ব্যাপারটা করবে মূলত জ্বালানী খাতকে সামনে রেখে। ব্যাপারটা আমরা তেল খাতে এখন দেখতে পাই।

২৫. সেই আমেরিকার এক মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল, নোভাস অর্ডো সেক্লোরাম বা ধর্মহীন বিশ্ব ব্যবস্থা। হ্যা, ঠিক তাই। কারণ, তাদের সেক্লোরাম বা তাদের ধর্মনিরপেক্ষতার দর্শন-দর্পনটা আমরা তুরস্কে দেখেছি। ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা কামাল আতাতুর্ক দিয়েছিলেন- যে মসজিদে যায় না, তার নাম ধর্মনিরপেক্ষ। আর মেসনরা দিয়েছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে, তুমি কখনো কোন অবস্থাতেই নিজ ধর্মের শব্দ-বাক্য-কর্ম-আচার প্রকাশ করতে পারছ না ফ্রিম্যাসনের কোন সঙ্ঘে অথবা কোন ম্যাসনের সাথে অথবা কোন সাংগঠনিক অবস্থায়।

২৬. এই বিশ্বব্যবস্থাটাকে সিনিয়র জর্জ বুশ নাম দেন নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার। যে বিশ্বব্যবস্থায় ধর্মনিরপেক্ষতার মানে হল, ব্যক্তিজীবনে কোন ধর্ম পালন না করা। এবং যে বিশ্বব্যবস্থার বাস্তবায়নের নমুনা আমরা সিনিয়র-জুনিয়র এর ইরাক-আফগান-লিবিয়াতে চল্লিশ লক্ষাধিক প্রাণে দেখতে পেলাম।


আমরা, পুরো পৃথিবীর মানুষেরা অসুস্থতায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। অসুস্থতা সহ্য করা ও অতি সহজ জীবনযাপন করা আমাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে আর যা স্বভাবে পরিণত হয়, তাই স্বাভাবিক।
এখন পুরো পৃথিবীতে যা ঘটছে, তা স্বাভাবিক।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৩৭
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×