somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্রিটিশ দালাল ওহাব নজদী কর্তৃক মক্কা-মদীনা শরীফ আক্রমণ ও ওহাবী ফেরকার...

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রিটিশ গোয়েন্দা অফিসার মিষ্টার হামফ্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এককভাবে ব্রিটিশ সরকারের গোয়েন্দা নিযুক্ত ছিল, তুরস্ক, ইরাক, ইরান ও অন্যান্য আরব দেশসমূহতে, আর তার ডাকবাংলা ছিল বসরার তরখানে তার গোয়েন্দা সংস্থার লক্ষ্য ছিল ইসলাম ধর্মের উপর আঘাত হেনে মুসলিম জাতির মধ্যে বিভেধ সৃষ্টি করা । একদা মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী মিঃ হামফ্রের ডাকবাংলার সন্মুখ দিয়ে যেতে থাকলে ইবনে ওহাবের সাথে উদ্দেশ্যমূলক বন্ধুত্ব স্থাপন করে তাকে ওহাবী মতবাদের বুনিয়াদ স্থাপনের পরামর্শ দেন ।
ব্রিটিশ গোয়েন্দা মিঃ হামফ্রে বলেন, আমি একদিন মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীকে একটি মিথ্যা স্বপ্নের কথা বয়ান করলাম, তা হল এইঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামকে কুরসীর উপর বসা অবস্থায় দেখলাম । বড় বড় আলেম ও বুজুর্গানে দ্বীন যাঁদেরকে আমি চিনি না, তাঁর চারদিক থেকে তাঁকে তারা ঘিরে রেখেছেন । তখন আমি দেখলাম আপনি সেই মজলিশে প্রবেশ করছেন । আপনার চেহারা থেকে রৌশনী বের হচ্ছে । যখন আপনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম এর সামনে পৌঁছলেন, তখন মাথা নাড়িয়ে আপনাকে সম্মান প্রদশর্ন করলেন । আপনার মাথায় চুমু খেলেন এবং বললেন হে আমার একই নামের অধিকারী মোহাম্মদ ! তুমি আমার এলেমের ওয়ারিশ মুসলমানদের দ্বীন দুনিয়াকে সামাল দেওয়ার জন্য তুমি আমার যথার্থ খলিফা । এ কথা শুনে আপনি বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ !! লোকের কাছে এলেম জাহির করতে আমার ভয় হয় । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম বললেন, মনের মধ্যে ভয়কে স্থান দিও না ।
মিঃ হামফ্রে বললেন, মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী আমার মনগড়া স্বপ্ন শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন । তিনি আমাকে বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন, ভাই ! তোমার স্বপ্ন কি সত্য হয় ? আমি তাকে এই ব্যাপারে সান্তনা দিতে থাকি । আমি লক্ষ্য করলাম স্বপ্নের আলোচনার পর তার মনোভাব এক নতুন মাযহাব সৃষ্টির জন্য দৃঢ় ইচ্ছা নিয়ে কাজ শুরু করে দিল ।

ব্রিটিশ উপনেবেশিক পুনবার্সন মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারীর পরামর্শে ওহাবী মাযহাব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা হলঃ-

মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর মাযহাবে যারা যোগদান করবে না তাদেরকে কাফের বলা এবং তাদেরকে গ্রেফতার করে পশুর হাটে নিয়ে দাস-দাসীর মত বিক্রি করা (বর্তমানে আই.এস. আই ইরাকে যা করতেছে ) ।
২ । মূর্তি পুজা বন্ধ করার বাহানায় যথাসম্ভব কাবাঘর ধ্বংস করা এবং মুসলমানদেরকে হজ্ব থেকে বিরত রাখা । হাজীদের জানমাল লুন্ঠনের জন্য আরব উপজাতিদের উত্তেজিত করা । ( বর্তমান সৌদী গোষ্ঠী যা করতেছে ) ।
৩ । আরব উপজাতিদের ওসমানিয়া খলিফার আদেশাবলী পালন থেকে বিরত থাকার উৎসাহ প্রদান করা । এই কাজ সমাধা করার জন্য কিছু সংখ্যক সশস্ত্র ফৌজ তৈরী করা ।
৪ । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম এবং তাঁর মহান খলিফাদেরকে অবহেলা করা । শিরক ও মুর্তি পুজার চিহ্ন সমূহ মিটানোর বাহানায় মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফের মাজারগুলো ধ্বংস করা ( সৌদি গোষ্ঠী ১৯৩২ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর ভয়ংকর ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়ে মহান সাহাবায়ে কেরামের পবিত্র মাজার শরীফ ধ্বংস এবং অসংখ্য ছুন্নী ওলামায়ে কেরামদের হত্যা করে, রাজতন্ত্র কায়েম করে ফেরাউনের মত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ....... ) ।

মিষ্টার হামফ্রে বলেন, শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর দাওয়াতী পরিবেশ তৈরী করে তাকে চক্করে ফেলতে আমাদের দু’বছর সময় লেগে গেছে । ১১৪৩ হিজরী সনের মাঝামাঝি সময়ে মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী আল আরবে শেখের দাওয়াত প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে তার শত্রু ও বিরোধীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে । যেমনঃ ব্যভিচার ও শরাব পানের বিষয় প্রচারিত হয়েছিল ।
মিষ্টার হামফ্রে বলেন, আমি মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীকে বললাম, নবুয়তের প্রাথমিক দিনগুলোতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম এর দুশমন আপনার দুশমনের চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী ছিল । কিন্তু তিনি তাদের সুষ্ঠু সমস্যা এবং বিপদাপদগুলোকে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে সহ্য করতে থাকেন ।
একবরা শেখের বিরোধী পক্ষের ১২৬ ব্যক্তি তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে । আমি দ্রুততার সাথে হস্তক্ষেপ করে তাদের চক্রান্তে নস্যাত করে দেই । এমন কি তাদের এমনিভাবে লজ্জিত করি যে, তারা মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর অনুকূল হয়ে যায় । আর অনেকেই চক্রান্তকারীদের সহযোগিতা পরিত্যাগ করে ।
মিষ্টার হামফ্রে বলেনঃ আমি মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীকে ইবনে ওহাব নজদীর সাথে মিলে মিশে কাজ করার নির্দেশ করি, তিনি সৌদী বংশের প্রথম বংশধর ছিলেন । তিনি ১১৪৬ হিজরী সনে ওহাবী মাযহাব গ্রহণ করেন । আর তিনি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ হতে নজদের শাসনকর্তাও ছিলেন । তিনি ১১৭৯ হিজরী সনে ইন্তেকাল করে । এরা উভয়েই নজদের নিকট “দরইয়া” শহরকে নিজেদের কর্মস্থল করে নেন । এইভাবে কেন্দ্রীয় সরকার ব্রিটিশ সমস্ত আরবে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে কামিয়াব হয় । তৎকাল থেকে নজদী বংশীয় ও খৃষ্টান মৌলবাদী জাতির মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে । আজও উভয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে ।
প্রকাশ থাকে যে, মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী শাসন ক্ষমতার ভার গ্রহণ করে এজিদ চক্রের বদ আদর্শগুলোকে এক এক করে অনসরণ করে । এজিদ ক্ষমতা ধারণ করে সর্ব প্রথম কারবালার তৃষ্ণর্ত রক্তাক্ত প্রান্তরে মহান ইমাম “ইমামে আকবর” রাদ্বিআল্লাহু আনহু ও তার সহযোগীদের শহীদ করে । শুধু তাই নয়, মহান সাহাবায়ে কেরামের মাযার শরীফ ধ্বংস করে ফেলে, এমন কি সে মহান প্রিয়নবীর রওজা শরীফের উপর কালো থাবা বিস্তার করেছিল । বহু হাজী হজ্ব কর্ম ছেড়ে দিয়ে মক্কা-মদীনা শরীফ হতে পলায়ণ পূর্বক পাহাড় পর্বতে আশ্রয় গ্রহণ করেন । সে তার জ্ঞাতি ভাই ইবনে সৌদের সহযোগীতায় এক শক্তিশালী যাযাবর বাহিনী গঠন পূর্বক সর্ব প্রথম নজদ প্রদেশের ক্ষমতা দখল করে । অতঃপর সে বাগদাদ শরীফ আক্রমণ করে এবং ইরাকের কিছু অংশ দখল করে নেয় । এর পর ক্রমান্বয়ে শক্তি সষ্ণয় করে প্রায় লক্ষাধিক সৈন্য নিয়ে সে হেজাজের রাজধানী আক্রমণ করে । এখানে কাবা শরীফের ইমাম তার বাহিনীর হাতে নাজেহাল হন এবং বহু আলেম ওলামা শহীদ হন । তার বর্বরচিত আচরণ ও লুন্ঠন ও নারী ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুর্কী সালতানাতে ।
মোহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর নৃশংসতায় ও জুলুমে মদীনাবাসী আর্তনাদ করে উঠে । হাজার হাজার মদীনাবাসীকে হত্যা করে । মা ও শিশুরা পর্যন্ত তার হাত হতে রক্ষা পায়নি । এ ব্যক্তি এজিদ হতে বহু গুণে চরমপন্থী ছিল । বাহ্যিকভাবে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ না করলেও তার কর্মকান্ড ধর্মচ্যুত ও ধর্মদ্রোহী সাব্যস্ত হয় । এই ব্যক্তিকে মুসলমান বলা মানে ধর্ম অবমাননা করা । হিন্দুস্থানের উর্দু পড়া দেওবন্দী আলেম ছাড়া এই বদ মাযহাবীকে অন্য কেউ সমর্থন দেয়নি ।
সূত্রঃ ( ফতোয়ায়ে শামী ৩য় খন্ড ৩১৯ পৃষ্ঠ ) ।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙালি নারীর কাছে

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০২ রা জুন, ২০২৪ রাত ১২:৪৬

পরনে আজানুলম্বিত চিকন সুতোর শাড়ি, সবুজ জমিনের পরতে পরতে কবিতারা জড়িয়ে আছে বিশুদ্ধ মাদকতা নিয়ে, গোধূলির আলোয় হেঁটে যায় নিজ্‌ঝুম শস্যক্ষেতের ঘাসপাঁপড়ির আল ধরে, অতিধীর সুরের লয়ে, সুনিপুণ ছন্দে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন পুরুষ হারানোর গল্প

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০২ রা জুন, ২০২৪ রাত ৩:২৮



একজন পুরুষ মন খারাপ করে
খোলা মাঠে শুয়ে রাতের আকাশ দেখছিল।
হঠাৎ হঠাৎ ক্ষতবিক্ষত চাঁদ
অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল মেঘের আড়ালে।
মাঝে মাঝে পুরুষটির চোখ দিয়ে
কোনো এক কষ্টের জল গড়িয়ে পড়ছিল সবুজ ঘাসের উপর।
চোখের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসেন ইক্টু ঘুরাঘুরি করি.... :-B

লিখেছেন সোহানী, ০২ রা জুন, ২০২৪ সকাল ৯:২৩

এক কসাইয়ের লাশ আরেক কসাই কিভাবে কিমা বানাইলো কিংবা কত বিলিয়ন ট্যাকা টুকা লইয়া সাবেক আইজি সাব ভাগছে ওইগুলা নিয়া মাথা গরম কইরা কুনু লাভ নাইরে... আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×