লেদু সরকার লুঙ্গীর গিঁট হাতে স্থির দাড়িয়ে , তার ঠিক সামনে চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে ছালেহার বাড়ির কুত্তাটা । এই কুত্তার নাম শুয়োরের বাইচ্চা । নাম কেন শুয়োরের বাইচ্চা তার কোন যথাযথ কারন নাই , ছালেহার জামাই একরাতে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে হটাত বলে – “ আইজ থেইক্কা এই কুত্তারে হগলে শুয়োরের বাইচ্চা কইয়া ডাকবা , কথা কানে গেছে ? কথা কারও কানে গেছে নাকি বুঝা যায় নি তবে সদ্য শুয়োরের বাইচ্চা নামপ্রাপ্ত কুত্তাটা ঘেউউউ ঘেউউউ আওয়াজে লেজ নাড়তে নাড়তে বুঝিয়ে দিল , কথা তার কানে গেছে ।
লেদু শুয়োরের বাইচ্চাকে বড় ভয় পায় । ছালেহাকে সে বলেছে -- “ শোন ছালেহা , তুমারে মারা দিবার পরে তুমার কুত্তার মারা খাইতে আমি রাজি না । এই কুত্তার নজর খারাপ । এমনে কইরা তাহায় মনে হয় আমার গোশত টান মাইরা খাইয়া হালাইব । যেদিন আমি আইবাম ওইদিন তুমি তুমার কুত্তা সামলাইবা , ভালা হয় ভাতে বিষ দিয়া এই শুয়োরের বাইচ্চারে মাইরা হালাউ ।
ছালেহা ব্লাউজের বোতাম লাগাতে লাগাতে বলে – “ আমার পুলা এই কুত্তা পালে , এরে মারন যাইব না । “
"আর আমি যে তুমার সংসার পালতেছি ! আমার টেকায় ধইঞ্চচা জামাই আর ধামরা পুলারে লইয়া মৌজ ফুর্তিতে আছো , আর আমার জানের কদর করবা না ! "
"ভয় পাইও না , অন্নদাতারে কুত্তা কামরায় না । "
ছালেহার কথা শুনে লেদু সরকার শান্ত হয় তবে নির্ভয় হয় না । বহু পুরানো হলেও এখনো তার ডান উরুতে সেই লাল রঙের পাগলা কুত্তাটার দাঁতের ছাপ খুঁজে পাওয়া যায় । দুনিয়ায় একমাত্র এই কুত্তা জাতটাকেই তার বড় ভয় !
আজ রাতে সে যখন ছালেহার ঘর থেকে লুঙ্গীর গিঁট বাঁধতে বাঁধতে বের হয়ে আসচ্ছে তখনই সামনে কুত্তাটা হাজির । শীতল চোখে সে লেদুর দিকে তাকিয়ে থাকে । জ্যোৎস্না আলোয় তার লকলকে জিব্বা দেখা যায় আর শোনা যায় ফোঁসফোঁস শ্বাস ফেলার শব্দ । কুত্তাটার চোখে গোশত শিকারের নেশা । থকথকে লাল তাজা গোশত । লেদু সরকারের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে । লুঙ্গীর গিঁট ধরা অবস্থায় চোখে চোখ না সরিয়ে খুব আস্তে আস্তে সে বাম পাশের কাঁচা রাস্তায় সরে যেতে থাকে । কুত্তাটাও চলে লেদু সরকারের পায়ের সাথে তাল মিলিয়ে । আশ্বিন মাসের রাতের বাতাস যেন লেদু সরকারের সারা শরীর ঘামে ভিজিয়ে দেয় । সে বিড়বিড় করে শুধু বলতে থাকে – “অন্নদাতারে কুত্তা কামরায় না “ , অন্নদাতারে কুত্তা কামরায় না “
“ ওই শুয়োরের বাইচ্চা , আয় , এইদিক আয় ! তু তু আয় আয় ... হটাত পুকুর ঘাট থেকে আওয়াজ ভেসে আসে ।
কুত্তাটা গুত্তা খেয়ে ডাইনে দৌড় দেয় । লেদু জরাগ্রস্থ রোগীর মতো তাকিয়ে দেখে পুকুর ঘাঁটে ছালেহার জামাই আর তার ছেলে বসে আছে । কুত্তাটা গিয়ে তাদের পায়ের কাছে বসে পড়ে । লেদু সরকার কাঁপা পায়ে দ্রুত হাঁটতে গিয়ে বারবার হোঁচট খায় , সে বুঝতে পারে চাঁদের সাদা মিশিয়ে তিন জোড়া চোখ এখনো তার পিঠে বিঁধে আছে ।
সে মাতালের মতো কেবল একনাগাড়ে বলে চলে - “অন্নদাতারে কুত্তা কামরায় না “ , অন্নদাতারে কুত্তা কামরায় না “
.......................................................................................................
অনুগল্প - ' যৌনাবেগ '
অনুগল্প - যৌনাবেগ - ওড়না টানা অপারেশন
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




