somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রহস্যোপন্যাসঃ মাকড়সার জাল - প্রথম পর্ব

১৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




(১)
অনেকটা সময় ধরে অভি কলিং বেলটা বাজাচ্ছে ।বেল বেজেই চলেছে কিন্তু কোন সাড়া শব্দ নেই। একসময় খানিকটা বিরক্ত হয়ে মনে মনে স্বগোতক্তি করল সে
- কি রে বাবা! খোলে না ক্যান? শুনতে পারছে না, না-কি? মেজাজটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে তো।
তারপর হঠাৎ তার মাথায় চিন্তাটা এলো, ঘুমাচ্ছে কি না কে জানে? দেখি ফোন করে মনে মনে বলল সে। পকেট থেকে ফোন বের করতে যাবে ঠিক তখনই দরজা খোলার শব্দ হলো ।দরজা খুলেই জাহাঙ্গীর হাই তুলতে লাগলো, তার চোখ মুখ জুড়ে রাজ্যের ঘুম তখনো লেগে আছে।
একে তো দরজা খুলতে দেরি তার উপরে জাহাঙ্গীরের হাই তোলার ভঙ্গিটা অভির রাগটাকে আরো দুই ডিগ্রি উপরে তুলে দিল। অভি ভাবলো কড়া করে কিছু বলবে এবার তারপর কি জানি কে ভেবে নিজেকে সামলে নিয়ে যা বলল তাও কড়া থেকে কম কিছু নয়।
-সেই- থেকে বেল দিচ্ছি। কানে কি তুলা দিয়ে ঘুমিয়েছিলি ? কোন সাড়া নেই শব্দ নেই। বিরক্তিকর। চরম বিরক্তিকর তোর আচরণ । আর বাড়িতে কেউ নেই? তুই একা? আচ্ছা দিন দুপুরে তোর মন ইয়াং ছেলে এমন পড়ে পড়ে ঘুমায়? দেখেছিস কোথাও পারিস ও বটে! যত্তসব দায়িত্বজ্ঞানহীন পোলাপান।

যেন কিছু হয়নি জাহাঙ্গীর নির্লিপ্তভাবে হাই তোলা সেরে চোখ ডলতে ডলতে মিচমিচিয়ে হেসে বলল
- তুই এখন আসছিস ক্যান? এখন কি তোর আসার সময়?
- আমি এখন আসছি ক্যান মানে কি? সব ভুলে বসে আছিস? যেতে হবে না।
- কোথায়?
- রূপনগরে আবার কোথায়? তারেকের ওখানে......কি আশ্চর্য। সব ভুলে বসে আছিস দেখছি ?
-আমি কিছু ভুলিনি সে তো সন্ধ্যার ট্রেনে যাবো।আর তুই দুপুর রোদে এসে হাজির। তোর জন্য একটু শান্তি মত ঘুমুতেও পারলাম না। সময় পেলি না আর এই ভর দুপুরে এসে হাজির হলি!
-ভাত ঘুম দিচ্ছিলি বুঝি? এসে বড্ড অন্যায় করেছি।আমারই ভুল হয়ে গেছে। অসুবিধা হয়ে গেল,না? ওই কর, খাও দাও আর ফোঁস ফোঁস করে ঘুমাও। থাকো ঘুমিয়ে শালা এই জন্য বলে করো উপকার করতে যেও না। আমি যাই।স্টেশনে দেখা হবে।
- মেজাজ খুব গরম আছে দেখছি।বাইরে দাড়িয়ে শুধু ঝগড়াই করবি? ভেতরে আসবি না? আয় ভেতর আয়! মেজাজ ঠাণ্ডা করে ঝটপট কিচেনে গিয়ে দু কাপ ব্ল্যাক কফি বানা তো।ঘুমটা এখনো চোখে লেগে আছে। আর দেখ ফ্রিজে মা তোর জন্য কি যেন রেখে গেছে। মা গেছে সুলতাদের ওখানে আসবে সন্ধ্যায়। মা এলে তারপর আমরা বেরোব। আমার ইমারজেন্সি, ওয়াশ রুম থেকে এসে কথা বলছি।
অভি রাগে গজ গজ করতে করতে বসবার ঘরে ঢুকলো। মন শান্ত হলে কিছুক্ষণ পরে কিচেনে গেল কফির জন্য পানি গরম করতে। আন্টির হাতের রান্না তার খুব প্রিয় যেহেতু মা নেই তার আন্টির হাতের রান্নায় সে মায়ের স্পর্শ খুঁজে পায়। জাহাঙ্গীরেরর মা জোহরা বেগম মা বাবা হারা এই ছেলেটিকে খুব স্নেহ করেন।ওকে নিত্য নতুন আইটেমের রান্না করে খাওয়াতে ভালোবাসেন। অভি ফ্রিজ খুলে দেখে সেখানে ঘরে পাতা দই আর কালোজাম রাখা আছে । মিষ্টি দেখে যেটুকু রাগ ছিল সব পানি হয়ে গেল নিমেষে ।
মিষ্টির বোলটা বের করে সে ডাইনিং এ বসে খেতে লাগলো আর দেরি না করে । জাহাঙ্গীর ওয়াশ রুম থেকে ফিরে এসে দেখে অভি খাবার নিয়ে ব্যস্ত।

সে হাসতে হাসতে বলল,
-কিরে রাগ সব পানি হয়ে গেলো নাকি ? আমি তো ঝগড়া শোনার প্রস্তুতি নিয়ে এলাম।
অভি জাহাঙ্গীরের খোঁচাটাকে আমলে না নিয়ে বলল,
-যা বলিস মিষ্টিটা কিন্তু দারুণ খেতে।বাজারের মিষ্টিগুলো একেবারে যাচ্ছে তাই।টক টক লাগে। কি দিয়ে বানায় কে জানে। আন্টির হাতে জাদু আছে।
এর মধ্যে কফি তৈরি হয়ে গেছে ব্ল্যাক কফির কাপে চুমুক দিয়ে জাহাঙ্গীর বলল,
- একটু বেশি আগে চলে যাওয়া হচ্ছে কিন্তু ভেবে দেখেছিস কিছু?
-ভেবে লাভ নেই টিকিট কাটা হয়ে গেছে। এখন যেতে হবে।
-তা অবশ্য গেছে। এত আগে গেলে যদি কিছু মনে করে তারিক বা ওর বাড়ির লোক?

- আরে বিয়ের আগে অনেক কাজ থাকে। আমরা তারেকের হেল্পিং হ্যান্ড হিসাবে কাজ করবো,সমস্যা কি। আর এ ক'দিন মনের আনন্দে একটু ঘুরবো। দুর্গম এলাকা বলছিলি না? তুই তো আগে ওখানটায় গিয়েছিস। তোর কাছে ওই এলাকার প্রাকৃতিক বর্ণনা শুনে আমি তো মুগ্ধ। তবে আমরা যে আগে যাচ্ছি তারেককে জানালে ভালো হতো নয় কি?
-না থাক ওকে সারপ্রািইজ দেওয়া যাক । তাছাড়া ওকে আগে থেকে বললে ও গাড়ি পাঠিয়ে দেবে স্টেশনে,তাহলে ভ্রমনের আসল মজাটা নষ্ট হয়ে যাবে।আমরা ওদের ওখানে নিজের মতো করে যাবে। শুনেছি স্টেশন থেকে ওদের ওখানে পৌছাবার রাস্তাটা বেশ দুর্গম আর বিপদ সংকুল। বেশ একটা এ্যাডভেঞ্চার হবে।
-আমারও তাই মনে হয় আর যাই বলিস ব্যপারটা কিন্তু বেশ থ্রিলিং । সাথে যদি কোন ঘটনা জড়িয়ে যায় তাহলে তো জমে একেবারে ক্ষীর।

(২)
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে স্টেশনে পৌছে গেল ওরা,সাথে ছোটখাটো লাগেজ। স্টেশন ভর্তি লোকজন। এতো বেশি লোকজন তো হবার কথা নয়।কি ব্যপার ? জিজ্ঞেস করে জানা গেল , আজ স্থানীয় বাজারের হাটবার স্টেশনে অবস্থানকৃত লোকজনগুলো বেশির ভাগই হাটুরে তাই এই অপ্রত্যাশিত ভীড় । একথাটা মনে ছিল না টিকেট কাটার সময় অভি বা জাহাঙ্গীরের কারোই।। ট্রেনে উঠতে বেশ বেগ পেতে হলো।যেহেতু স্টেশনে প্রচুর লোকসমাগম স্বাভাবিকভাবে প্রচুর যাত্রী এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে স্টেশনে ট্রেন এসে পৌঁছানো মাত্র ।অভি আর জাহাঙ্গীর লক্ষ করে দেখলো তাদের মধ্যে কিশোর কিশোরীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। সম্ভবত ওরা ভ্রমনে বের হয়েছে। ওদের সাজ পোষাক দেখে তাই মনে হচ্ছে। ভ্রমনের সিজন শুরু হয়েছে মনে হচ্ছে। আবার ফেসবুকের কোন গ্রুপও হতে পারে। এধরনের গ্রুপগুলো স্বল্প খরচে প্যাকেজ প্রোগ্রামের আওতায় প্রায় দল বেঁধে ভ্রমনে বের হয়।
অভি লক্ষ করলো এত লোকের ভীড়ের মধ্যে তার স্বরে একটা আদিবাসী বাচ্চা কাঁদছে। একই সাথে মায়ের পরনের পোশাকটি জোরে আঁকড়ে ধরে আছে। বাচ্চাটি বুঝে গেছে হাত ছুটে গেলে সে হারিয়ে যাবে। তার মা হয়তো এরকমই শিক্ষা দিয়েছে। বাচ্চাটির মায়ের কোলে আরও দুটি বাচ্চা। কোলের বাচ্চা দুটি অবাক চোখে ভায়ের কান্না দেখছে আর দুঃখী মুখ করে এদিকে ওদিকে চাইছে । দৃশ্যটা অদ্ভুত। আদিবাসী মহিলাটির অবশ্য এতে কোন বিকার নেই সেই ভীড় ঠেলে ট্রেনে ওঠার পথ খুঁজছে কান্নারত বাচ্চাটিও তার মাকে ঠিক ঠাক অনুসরণ করছে। চোখ আটকে যাওয়ার মত একটা দৃশ্য।

অভি নিজের মনে বলল
- এত মানুষ। আমার তো ধারণা ছিল রাতের ট্রেনে নিরিবিলি যাবো এখন দেখছি সে আশার গুড়ে বালি। আরাম করে যাওয়া তো দুরের কথা এখন সিট পাওয়া গেলে হয়। দাড়িয়ে যেতে হলে আমি শেষ।সাথে রাত জাগতে হতে পারে। কি একটা অবস্থা।
যা হয় হোক যেতে তো হবে সেই ভাবনা থেকে অভি আর জাহাঙ্গীর ভীড় ঠেলে নির্দিষ্ট বগিতে কোনরকমে উঠে এলো। টিকিট মিলিয়ে নিয়ে বসে থাকা লোকজনকে উঠিয়ে ঝটপট ছিট দখল করল। ভাগ্যিস কোন বয়স্ক লোকজন বসেনি সিটে তাহলে খবর ছিল।কিন্তু সারারাত এই ভীড়ের মধ্যে গাদাগাদি পরিবেশে থাকতে হবে বলে বিরক্ততে দুই বন্ধুরই মন খারাপ হয়ে গেল কিছুটা।আশার কথা রাত বাড়তে পরবর্তী কয়েক স্টেশনে লোকাল যাত্রী সব নেমে গেল একে একে। রেল কামড়া বলতে গেলে প্রায় খালিই হয়ে গেল। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল দু'জনেই।ট্রেনের বগি ফাঁকা হতে খুব সহজে সামনা সামনি সিটের মুখোমুখি দুজন তিন ছিট জুড়ে গা এলিয়ে লাগেজটাকে বালিশ বানিয়ে শুয়ে পড়ে গল্প জুড়ে দিল তারা। আরও কিছু কথা বার্তা শেষে সব চুপচাপ। এদিকে পাল্লা দিয়ে রাত বাড়ছে।
আরও কিছুটা সময় যেতে জাহাঙ্গীর একটা থ্রিলার খুলে পড়তে শুরু করলো আর অভি শুনতে লাগলো তার পছন্দের গান।
কখন যে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেল অভি তা নিজেই টের পেল না।এক ঘুমে রাত শেষ। জাহাঙ্গীরের ডাকে যখন তার ঘুম ভাঙলো ততক্ষণে সকাল হয়ে গেছে এবং ট্রেন থেমে আছে নির্দিষ্ট স্টেশনে।

জাহাঙ্গীর ব্যস্ত হয়ে তাড়া দিলো
- আরে নাম নাম নেমে পড়। কি ঘুম রে বাবা। কুম্ভকর্ণ নাকি? ট্রেন ছেড়ে দেবে তো এখনি! এই অভি ...।
অভি চোখ ডলতে শুরু করলে তাকে এক প্রকার হাত ধরে উড়িয়ে প্লাটফর্মে টেনে নিয়ে এলো জাহাঙ্গীর। ঠিক তখনই দুলে উঠলো ট্রেন।
ট্রেন থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে বুঝলো জায়গাটা সত্যি সত্যি একদম অন্যরকম । ট্রেন থেকে নেমেছে বেশ অনেকক্ষণ অথচ তেমন কোন যানবাহনের খবর নেই কোথাও।সব কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা। এর আগে তারিকদের নিজস্ব গাড়িতে এসেছিল বলে জাহাঙ্গীর এই স্টেশনের রকম সমক বুঝতে পারেনি। এই এলাকায় এলে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তা ও তার ভাবনার বাইরে ছিল।। স্টেশনে শুধু তারা দুজন ই নেমেছে। স্টেশনটাও অদ্ভুত দোকান পাট ও তেমন নেই। চারদিকটা কেমন শুন শান।অদুরে একটা দোকানে চা পান বিড়ি বিক্রি হচ্ছে। দুজন মানুষ একজন পান চিবোতে চিবোতে বিড়ি টানছে আর আরেক জন চায়ের কাপে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চুমুক দিচ্ছে।আর কোন লোক নেই কোথাও।ব্যপারটা কেমন যেন খাপ ছাড়া। দুটো কুকুর অলস শুয়ে আছে একপাশে তাদের গায়ে সকালের রোদ এসে পড়েছে। অনেক চেষ্টাতে একটা রিকশা ভ্যান পাওয়া গেল। তবে পথ এতটাই অমসৃন আর খানাখন্দে ভরা যে মনে হলো এর থেকে পায়ে হেঁটে গেলে আরো ভালো হবে। ভ্যান চলতে শুরু করলো। মাঝে মাঝে নেমে পড়তে হচ্ছে না হলে ভ্যান এগুচ্ছে না এমনই বিদঘুটে সে পথ। সারা শরীরে যে আজ ব্যাথা হবে সেটা এক প্রকার নিশ্চিত। ভ্যান রিকশা চলছে ।ভ্যান চালকের সাথে কথা বলে বোঝা গেল এ লোকটা বাড়তি কথা বলতে ইচ্ছুক নয় । কেমন যেন গম্ভীর টাইপের। মাইলের পর মাইল শুনশান নিরব।অভি আর জাহাঙ্গীরের নিজেদের মধ্যেও যেন আর কোন কথা নেই।আসলে আশেপাশের পরিবেশটাই বুঝি সবাইকে নিরব থাকতে প্ররোচিত করছে। ভ্যান রিকশা চালক তার মত প্যাডেল কষে যাচ্ছে। অভি আর জাহাঙ্গীর নিজেদের মধ্যে টুকটাক কথা বলছে কখনও কখনও। বড় বড় ফাঁকা মাঠ। দিগন্তে কিছু গাছ পালা দেখা যায় সেখানে মনে হয় লোকালয়।কোথেকে যেন ঢোলের শব্দ আসছে। এর মধ্যে দুজনে ভ্যানরিকশা থামিয়ে জলবিয়োগ সেরে নিলো।ততক্ষণে ভ্যানরিকশা চালকটি একটা অদ্ভুত দেখতে পাতার বিড়ি ধরালো।জল বিয়োগ শেষে ভ্যান রিকশা আবার চলতে লাগলো।সমস্ত এলাকাটি যেন বালিয়াড়ি শুধু বালু আর বালু। এ যেন বেলে মাটির রাজ্য। কোথাও কোথাও বালি তুলে ইয়া বড় বড় ঢিপি করে রাখা হয়েছে। বাতাসে সেই বালি ফুরফুর করে উড়ছে। ইতিমধ্যে অভি আর জাহাঙ্গীরের সারা শরীর বালিতে বালিময়। এই এলাকার এমন দুরবস্থা কেন? জানতে চাইলে কোন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলো না ভ্যান রিকশা চালকটি । অনেক চেষ্টাতে যেটুকু জানা গেল এলাকার এম পি বা চেয়ারম্যান সবাই ঢাকাবাসী ভোটের সময় ছাড়া তারা এই এলাকায় খুব একটা আসে না। আর ভোট হয় ব্যালেটে নয় বুলেটে। আরও কিছু দুর ভ্যানরিকশায় আসার পর ভ্যান চালক হঠাৎ বলল সে আর যাবে না।

-কারন?
সে বলল তাতে বিরক্ত লেগে গেল বলে কি এসব?
-তার নাকি কাজ আছে। আগে মনে ছিল না।এই মাত্র মনে পড়ল এখন তাকে ফিরে যেতে হবে। অচেনা অজানা যাত্রী বেকার দাড়িয়ে ছিল বলে দয়া করে এই পথ টুকু সে তাদের টেনে এনেছে। ইত্যাদি?
অভির তো রাগে গা হাত পা কাঁপছে, মামদোবাজি না-কি! আর যাবে না মানে কি?জাহাঙ্গীর অচেনা অজানা জায়গায় ফ্যাসাদে জড়িয়ে পড়তে চায় না। অভিকে শান্ত করে অগত্যা ভাড়া মিটিয়ে দিলো। ভাড়া মিটিয়ে দিতেই ভ্যানরিকশা চালকের যেন মুখে বুলি ফুটলো
এটা যেহেতু জনবিরান এলাকা সেহেতু এই এলাকায় প্রায় ডাকাতি হয়। এখানে অপেক্ষা করা ঠিক হবে না।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া ভালো । গুম খুন অপহরণ এখানকার নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। কখন কখনও খুন করে হত্যাকারিরা বালির মধ্যে লাশ পুঁতে রাখে। প্রায় বালি খুড়ে মানুষের কঙ্কাল পাওয়া যায় এখানে। দিন রাত এখানে সমান। থানা পুলিশ প্রশাসন কোন এক অজ্ঞাত কারনে নীরব থাকে এসব ব্যাপারে। এই এলাকার প্রসিদ্ধ ডাকাতের নাম রঘু ডাকাত। যদিও তাকে কেউ কোনদিন দেখেনি আজ অবধি । তবে তার নামে সবাই ভয় পায়।বড় কর্তার পরে তার লোকজনকেই ভয় পায় এলাকার মানুষ ।
অভি মুখ কেমন যেন শুকিয়ে গেছেল মুহুর্তে ।জাহাঙ্গীর ও কিছুটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

অভি উত্তেজিত হয়ে বলল,
- কি বলেন দিনে ডাকাতি? একি মগের মুল্লুক নাকি।
লোকটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিল এবার।
-ভয় দেখাচ্ছেন না তো?।এতকক্ষণ মুখের একপাশটা গামছায় ঢাকা ছিল লোকটির এবার ইচ্ছে করেই যেন গামছা সরিয়ে নিলো এক ঝটকায়। জাহাঙ্গীর আর অভি দুজনেই ভালো করে খেয়াল করে দেখলো লোকটির মুখের এক পাশ জুড়ে বিভৎস একটা কাটা দাগ। একটা চোখ নেই সেখানে বিভৎস ক্ষত, দেখলেই কেমন যেন গা গুলিয়ে যায়। অভির হঠাৎ মনে হলো এই লোকটি ই সেই ডাকাত দলের সদস্য নয় তো? ইতিমধ্যে খুব দ্রুত লোকটি দুরে চলে গেছে তার ভ্যান রিকশাটি নিয়ে।
অভি নিজের মনে বিড়বিড় করে বলল ,
-এই লোকটি সেই রঘু ডাকাত নয়তো। আমাদের তো ঠিকই পথের মাঝে ফেলে রেখে গেলো । কিছুদুর গেলে দলবল নিয়ে হাজির হবে মনে হচ্ছে।
যদি এসে হাজির হয় তখন কি হবে।? কেউ আমাদের কখনও খুঁজে পাবে না আমাদের লাশ থাকবে বালির নীচে চাপা দেওয়া। উফ!!!!!!!!!!
জাহাঙ্গীর কোন কথা না বলে হাঁটতে শুরু করল। অভি তখনও দুরের পানে চেয়ে আছে। কি ঘটতে চলেছে এরপর?
চলবে
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক

কপি বা শেয়ার করা সম্পূর্ণ নিষেধ
ছাব গুগল থেকে
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:০৮
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×