somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ফালতু ক্যাঁচাল

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামনে অর্নবের এইচ এস সি পরীক্ষা। যেহেতু পরীক্ষার খুব বেশি দিন বাকি নেই তাই শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ভীষণ ব্যস্ত সে।সন্ধ্যা হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে, সময় গড়িয়ে দুরে কোথাও এশার আযান দিচ্ছে এখন, এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠলো।কিছুটা বিরক্তি নিয়ে ফোনের দিকে এক ঝলক তাকিয়েই বুঝলো আননোন নাম্বার!
অসময়ে কে আবার ফোন দিলো? সোহাগ অবশ্য প্রায়ই এরকম করে, হয়তো কোন পাঠ নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বা অন্য কিছু , তখন হাতের কাছে যার সেল ফোন পায় তার ফোন দিয়েই কল দেয়। মহা কিপটার কিপটা! ফোন রিসিভ করলো অর্নব,
-হ্যালো! কে বলছেন প্লিজ?
- তোর হ্যালোর গুষ্টি কিলাই হারামজাদা।তোর মা'য়ে আছেনি আশেপাশে? তোর মায়ের কাছে ফোনটা দে তাড়াতাড়ি?
- ক্যান মায়ের কাছে ফোন দিব কেন? আপনি কে? কি চাই?
- কথা কম কইবি, মেজাজ খারাপ করাইস না,যা কইতাছি হেইডা শোন, তোর মায়ের লগে আমার বিশেষ আলাপ আছে বুঝছস? আর শোন, আমি জানি তুই অখন বাড়িত আছোস। খবরদার চালাকি করবি না আর যদি চালাকি কইরা লাইন কাটোস তাইলে কইলাম গুষ্টি শুদ্ধ সোজা তোর বাসায় আইয়া উঠুম।তার বাদে দেখামু খেল।বুঝছোস!
মোবাইলের অপর প্রান্তের লোকটি যে কে, অর্নব এখন সেটা আন্দাজ করতে পারছে। কি ভয়ংকর অবস্থা! এই ব্যাটা তার ফোন নাম্বার পেল কিভাবে? কোন রকমে ঢোক গিলে চিঁউ চিঁউ আওয়াজে মাকে ডাকলো অর্নব।
- আম্মু, আম্মু তোমার ফোন।
-তোর ফোনে আমারে আবার কে কল দিছে ? আজিব তো! কেডা রে? কি কয়?
অর্নবের মা ফোন রিসিভ করার আগে লাউড স্পিকার অপশন অন করে দিলো। এটা তার বরাবরের অভ্যাস। সে একটু কানে খাটোও বটে ।
- হ্যালো , কেডা আপনে?
- কেমন আছো চয়নিকা ?
আহ কি মিষ্টি ডাক? মনটা ভরে গেল চয়নিকা মজুমদারের। সুজন না-কি? যাহ! তা কি করে হয়? সুজন! সে তো এখন সুদূর জাপানে। কতদিন হয়ে গেল, কত মাস,কতবছর! কথা হয় না ,দেখা হয় না। সুজন এমন মিষ্টি করেই তাকে ডাকতো একসময়। আহ! কি দিন ছিল সেসব! তবে সুজনের গলার স্বর তো এমন ছিল না, ছিল কি?
- ভালো,বেশ ভালো আছি । আপনি কে বলছেন প্লিজ? আহ্লাদে গদ গদ হয়ে বলল চয়নিকা মজুমদার ।
অপর পাশ থেকে আরও মিষ্টি রোমান্টিক কন্ঠে প্রতি উত্তর এলো
- আমাকে ছাড়া তুমি ভালো আছো? ভালো থাকতে পারছো? এতটা স্বার্থপর কি করে হলে তুমি? কি করে পারলে এত নিষ্ঠুর হতে?তুমি কি জানো আমি একটুও ভালো নেই ।আমার মন ভালো নেই। রাতে ঘুম হয় না আমার,খাবার খেতে গেলে কিছু খেতে পারি না। দু দন্ড শান্তিতে কোথাও বসতে পারি না।সামনে পরীক্ষা ঠিক মত পড়তেও পারি না।কি হবে আমার বল তো? তোমার চিন্তায় ক্লান্ত হয়ে যদিও বা একটু ঘুমাই ঘুমালেও স্বপ্নে তোমাকেই দেখি।শুধু তোমাকে ই দেখি। তিন সত্যি বলছি। কেন এমন হয়?কাল তোমার ভাবনা ভাবতে ভাবতে কখন যেন চোখ মুদে এসেছিল।ঠিক তখনই একটা স্বপ্ন দেখলাম, কি স্বপ্ন দেখলাম জানো প্রিয়তম? দেখলাম, তুমি বাথরুমে শাওয়ার নিচ্ছ আর আমি পেছনে থেকে তোমাকে দু'হাতে জ....
- এই হারামজাদা কে রে তুই চাবকে তোর পেছনের ছাল তুলে নেব। এত বড় সাহস! ইয়ারকি মারিস আমার সাথে ?ফাজিল কোথাকার! ঘরে তোর মা বোন নেই? সাহস থাকলে সামনে আয়, দেখি কত মুরোদ! সামনে তোকে পেলে তোর খবর আছে কিন্তু এই কয়ে দিলাম। আর একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ যদি আর কোনদিন ফোন দিস বা আর একটা বাজে কথা উচ্চারণ করিস আমি প্রমিস করছি, তোকে আমি চৌদ্দ শিকের ভাত খাইয়ে ছাড়বোই ছাড়বো । এই কেরে তুই? কথা বলিস না কেন? কে তুই? বাপের ব্যাটা হলে নাম বল। নাম বল তাড়াতাড়ি।
- তোর ছেলের প্রেমিকার বাপ!!
- মানে?
- কুল ডাউন বেবি, কুল ডাউন! এত উত্তেজিত হলে চলে। আভি তো পিকচার বাকি হ্যায় ইয়ার! আর মানে জানতে চাইছিস না?মানেটা শোন তোর গুনধর ছেলের কাছে,পাশেই তো আছে, ও সব জানে।
- না,তোর মুখ থেকে আগে শুনি। তারপর না হয় ছেলের কাছ থেকে শুনবো।
- আমার ছোট মাইয়ার নাম চয়নিকা। তোর নামেই নাম,বুঝছস। তোর পোলা আমার মাইয়ারে পথে ঘাটে জ্বালাতন করে।প্রেম নিবেদন করে। বাসার সামনে আইয়া খাড়াইয়া থাকে,লগে বকাটে পোলাপান লইয়া আড্ডা মারে। গতকাল একখান চিঠি দিছে তোর পোলা আমার মাইয়ারে আর ঠিক এই কথা গুলাই লিখছে চিঠিতে ।বাকিটুকু পইড়া শুনাইমু না- কি?...
সময় থাকতে পোলারে শাসন কর না হলে কিন্তু খবর আছে। তোর লগে তোর পোলারও....
পাশেই দাড়িয়ে ছিলো অর্নব, ঠাস করে একটা রাম চড় খেয়ে মাথাটা ঘুরে উঠলো তার।
না হয় একটু প্রেমই করেছে তাই বলে এমন করে কেউ মারে! ...
চয়নিকা নামের মেয়েগুলো এত নির্দয় হয় কেন কে জানে?
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৯:০০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×