somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ হৃদয়ের একুল ওকুল

১৭ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এত এত বছর পর রাজনের আবার খোঁজ পাওয়া যাবে এ বিষয়টা  তমার কাছে সত্যি অবিশ্বাস্য লাগছিল।আশা তো কবেই ছেড়ে দিয়েছিল।পঞ্চাশ বছর। দীর্ঘ সময় । দীপক যখন ম্যাসেঞ্জারে মেসেজে খবরটা জানালো এবং রাজনের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর শেয়ার করলো।তমার অতীত যেন হুড়মুড়িয়ে সামনে এসে দাঁড়ালো।
এমন কি কখনও হয়?  হতে পারে? কত বছর বাদে! 
তমা  বিভ্রান্ত ছিল। লজ্জা না-কি দ্বিধা!  কে জানে কি! তমা আর আগ বাড়িয়ে ফোন দেয়নি।
তারপর একদিন পড়ন্ত বিকেলে রাজনের ফোন । তমার ব্যস্ততার জন্য রিসিভ করতে না পারা। হ্যোয়াটসঅ্যাপে  যে যার মতো সুবিধাজনক  সময়ে মেসেজ বিনিময় চলছিল যদিও।  পৃথিবীর অপর প্রান্তে থাকা কাঙ্খিত ব্যক্তিটির সাথে সরাসরি  যোগাযোগ হয়েও আর হয় না এমন একটা অবস্থা ।
চলতে থাকে  ক'দিনের দম বন্ধ করা চাপা উত্তেজনা।কত কিছু যে ভাবনায় আসে যায়!

১০ তারিখে বিকেলে সেই তারই   হঠাৎ ফোন এলো যখন। মুহুর্ত  কণ্ঠে স্তব্ধতা  নেমে  এলো তমার।
রিসিভ করার পরও ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ক্রমাগত হ্যালোর উত্তরে বেশ অনেকটা সময় পর তমা  কোন রকমে বলল


- হ্যাঁ বল আমি শুনছি।আমি তমা বলছি। কেমন আছো রাজন?
সম্ভবত রাজনও উত্তেজিত ছিল। তা নইলে সেও কেন তমার কণ্ঠ শোনার পর পরই বাকরূদ্ধ হয়ে যাবে । তমা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিল অপর প্রান্তের শ্বাস-প্রশ্বাস।
কিছু সময় নিয়ে  নীরবতা ভাঙলো সে।


- চিনতে পেরেছো মানে পেরেছিস রাজন? আমি তমা।
- হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই।কতদিন পর।কণ্ঠটা একই রকম আছে। কেমন আছো?
- হ্যাঁ আমি নিজের মত করে ভালো আছি। আচ্ছা আমরা একে অপরকে তুই করে বলতাম তাই না? মনে আছে?  সেই সব দিনের কথা? কত কত স্মৃতি!!
- আরে গাধা মনে থাকবে না মানে!  আমি আসলে কনফিউজড ছিলাম যে তোকে এখনও তুই করে বলা যায় কি-না!  কত দিন কত মাস
- পর হয়ে গেছি নাহ?
- আরে না না আমার অবশ্য ওসব কিছু মনে হয়নি। তুই তো বরাবরই সাহসী ছিলি।আমাদের ছেলেবেলা। ... সন্ধ্যা রাতে নানান অভিযান।শীতের দিনে রস চুরি। সেই  ভোর রাতে কাঁচা পাকা আম কুড়ানোর কথা আমার এখনও খুব  মনে পড়ে। দীপক তো ওর বোকামীর জন্য প্রায় মরতে বসেছিল সেবার ।
- হা হা হা ভীতুর ডিম ছিল । সেবার বাবার হাতের মারটা এখনও বেশ মনে আছে আমারও। সারা পিঠে কালসিটে পড়েছিল। মা'তো প্রায় বলতো এই মেয়ে কি করে পরের বাড়ি ঘর করবে? দুদিন ও তো কেউ রাখবে না। মায়ের কথা..
কথার মাঝে হঠাৎ রাজন বলল
- তমা!
- বল৷
- তুই কি আমায় ক্ষমা করেছিস।...  আমি জানি আমার জন্য তোর জীবনে ...
- এভাবে বললে কিন্তু আমার মন খারাপ হয়।আমার কষ্টটা বাড়ে। 
থাক ছাড় ওসব। তারপর বল তোর কি অবস্থা?  সংসারে কে কে?  কয় ছেলেমেয়ে?
- দূর্ভাগ্যবশত  আমার জীবনটা তেমন মধুর হয়নি রে।জানিস তো তোর আর আমার ব্যপারটার  পর  এক রকম টেনে হিঁচড়ে আমাকে কানাডায় মামার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। দেশের জীবন আর কানাডার জীবন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সব ছেড়ে তোদের ছেড়ে মাঝেমাঝে ভীষণ নিঃসঙ্গ লাগতো। কতদিন ওয়াশরুমে গিয়ে ডাক ছেড়ে কেঁদেছি। বারবার দেশে ফিরে যেতে চেয়েছি।কিন্তু...  আমি তোর খোঁজ রাখার অনেক চেষ্টা করেছি।বিশ্বাস কর, পারিনি। তখনকার সময় আর এখন আকাশ পাতাল পার্থক্য।বাস্তবতা ছিল  ভিন্ন।  সেই সময় ফোন বা অন্য মাধ্যম বাংলাদেশের সাথে..  আর তখন কানাডায় বাঙালি কমিউনিটির বিশেষ করে বাংলাদেশী খুব একটা ছিলও না সেখানে । সেজন্য যোগাযোগের বিকল্প ছিল না বললেই চলে।
- এখনও কি গান করিস রাজন? এখনও কি রবি ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করিস আগের মত?
- নাহ! সেরকম সময় সুযোগ কোথায়! সে সব এখন অতীত। জীবনের ঘূর্ণিপাকে সবই হারিয়েছে একে একে। তুই ও কি গান ছেড়েছিস?
- বাজিত পুরের কথা মনে পড়ে? না-কি তাও ভুলেছিস?
-অতীত ভুলি কি করে? পড়ে,  মনে পড়ে।
- আমার কথা! আমার কথা কি মনে পড়তো? 
- বিশ্বাস করবি কিনা জানি না, তুই তো আমার নিঃশ্বাস ছিলি। ভীষণ ভীষণ মনে পড়তো তোর কথা।মাঝে মাঝে বুকের পাঁজরটা খামচি দিয়ে উঠত।তোকে ভুলি কি করে বল।
-ওহ! সরি। বাদ দে ওসব।বউ বুঝি ডাকসাইটে সুন্দরী। 
- আরে বললাম না সংসারই তো টিকলো না।
- যাহ! মিথ্যে বলছিস এমন হয় না-কি কখনও!  বিদেশে কত কত সুন্দরী।
- শোন তাহলে,১৯৮৮তে দেশে ফিরে  আসি। ওই যেবার  বড় বন্যা হলো সেবার।বাবা মায়ের ইচ্ছেতে আমাদের বিয়ে হলো জাঁকজমকের সাথে।  ব্যারিস্টার রোকনুজ্জামানের নাম শুনেছিস নিশ্চয়। ওনার ছোট মেয়ের সাথে। সে এক এলাহী ব্যপার।
- ও আচ্ছা!
- সংসারটা ছয় মাসও টিকলো না জানিস। তোর অভিশাপ লেগেছিল বোধহয়। লিগ্যালি তুই তো আমার
-শোন রাজন, আমি কাউকে অভিশাপ দিই না ।কষ্ট হচ্ছে  তুই আমাকে এই চিনলি।
-প্লিজ তমা কিছু মনে করিস না। আমার ভুল হয়ে গেছে। আসলে আমি এভাবে বলতে চাইনি।
-এখন তো ওখানে সকাল। ব্রেকফাস্ট হয়েছে তোর?
- আরে উঠেই তো তোকে ফোন দিলাম। কথায় কথায় মনে নেই।  এই খাবো।
-আচ্ছা একটা প্রশ্ন করবো? তুই কি সত্যি মনে করিস আমাদের সম্পর্কটা ভুল ছিল!
- না না তা কেন? এসব তুই কি বলছিস এখনও তুই আগের মত সেরকম অভিমানী আছিস। আমার সামান্য কথায়
- আর অভিমান।
- তোর নিজের কথা কিন্তু কিছু বললি না।
- তেমন বলবার মত কিছু নেই।
- উনি কি করেন?
-উনি?
- তোর হাসবেন্ড। 
- হো হো হো হাসবেন্ড।
- হাসছিস যে
- দেশান্তরি হয়ে গেছে।
- কোন দেশে থাকেন।
-থাকে তোর দেশের মত কোন এক দেশে। 
- কেন হেঁয়ালি করছিস?
- কী হবে এসব খবরে?
-আচ্ছা ঠিক আছে তার নামটা বল। নামটা শুনি।
- রাজন! রাজন শিকদার। শান্তি।
-তমা!
- চমকেছিস তো।মেয়েদের বিয়ে একবারই হয়।বাদ দে ওসব তোর মনে পড়ে রবি ঠাকুরের সেই গান। আমরা দুজনে মৃণালদের বাগানে গেলেই  গাইতাম। দোলনায় দুলতে দুলতে সুর তুলতাম।
"মোরা ভোরের বেলায় ফুল তুলেছি
দুলেছি দোলায়
বাজিয়ে বাঁশি গান গেছেছি বকুলের তলায়।
আয় আরেকটিবার আয়রে সখা প্রাণের মাঝে আয় মোরা সুখের দুঃখের কথা কবো
প্রাণ জুড়াবে তাই।  "
- প্লিজ তমা থাম। তুই তো আমাকে না কাঁদিয়ে ছাড়বি না দেখছি।তবে তোর  গানের গলা কিন্তু এখনও বেশ।  
তমার আজ কেবলই গান গাইতে মন চাইছে। রাজন যে তার গানের বড্ড ভক্ত ছিল।এমন গুণ মুগ্ধ অনুরাগী সে কমই পেয়েছে এক জীবনে । তমা আবারও গাইলো,
"কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসাই ঘায়ে
কাঁদালে তুমি মোরে .."
-ওহ অসাধারণ! কিন্তু আজ এত বিরহের গান কেন?
- আমার জীবনটাই যে বিরহে ঢাকা। কবিগুরুও নিজেও বিরহী ছিলেন।
আসলে কবি গুরুকে অবলম্বন করেই তো আমি এখনও বেঁচে আছি।  না হলে কবেই নিঃশোষিত হয়ে যেতাম প্রকৃতির মাঝে।
-আমাদের কি আবার দেখা হতে পারে না তমা?
- হ্যাঁ হতে পারে। তাতে তো দোষের কিছু নেই।আর এই পড়ন্ত বেলায়। দীপক যেদিন বলল তোর সন্ধান পাওয়া গেছে।তুই টরেন্টোতে আছিস।ভালো আছিস।ভালো লেগেছিল । জানিস সেই সময় আমার পৃথিবী হঠাৎ যেন দুলে উঠেছিল।আনন্দে নেচে উঠেছিল মন।মনে হয়েছিল একছুটে পৌঁছে যাই তোর কাছে। কিন্তু... আমি নিজেকে ভীষণ ভীষণ সামলে ছিলাম সেদিন ।আমি জানতাম।আমার বিশ্বাস ছিল  তোকে একদিন না একদিন খুঁজে পাওয়া যাবেই। তবে কথা হবে কি-না । তুই কথা বলতে রাজি হবি কি-না ।এটা বিশ্বাসে ছিল না। আসলে তোর আমার সম্পর্ক নিয়ে সমাজ তো দুটো পরিবারকে কম অপমান করেনি। সমাজ সংসার নামের এই সিস্টেমর প্রতি আমার বিশ্বাসটাই উঠে গেছে তখন থেকে। তাই আর কোন বন্ধনে জড়াইনি।জড়াতে চাইনি।
- দীপকের কাছে আমি শুনেছি তুই আমাকে খুঁজতে অনলাইনে অনেক চেষ্টা করেছিস।অনেক সময় ব্যয় করেছিস।
- হ্যাঁ। আমি দীপককেও খুঁজে পাই করোনার সময়।হঠাৎ করেই।  আমাদের স্কুলের এক গ্রুপে। তারপর নাবিলাকে। করোনার সময়  লকডাউনে অঢেল সময় ছিল তো।সারাদিন বাড়িতে থাকা।সময়টাকে কাজে লাগিয়েছি বলতে পারিস। দীপককে ফেসবুকে এ্যাড করার পর আশ্চর্যজনকভাবে নাবিলার ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট আসে। আমি সত্যি চমকে গিয়েছিলাম। যখন জানলাম ওরা স্বামী স্ত্রী। আমি তো হতবাক।তবে ভালো হয়েছে । আমেরিকায় ওরা ভালো আছে জেনে ভালো লেগেছিল। আমাদের চারজনের একসাথে কত কত স্মৃতি...বল।
- তমা!
- বল। আমাদের বয়স কত হলো বলতো?
- তোর না আমার?
- আমরাতো সমবয়সী না-কি!  আমার তো সাতষট্টি চলছে।
- চালাকি করে আমার বয়স জানা হচ্ছে। জানিস না মেয়েদের বয়স জানতে নেই। আমি তো এখনও মনের দিক থেকে সিক্সটিন। সুইট সিক্সটিন।
- হো হো হো তা বেশ! তা বেশ!! তোর কথা শুনলে মনের মধ্যে শান্তি শান্তি ভাব  আসে ভালো লাগে।
সামনের ডিসেম্বর এ আমি দেশে আসছি। দীপক আর নাবিলাকে বলে দেখি ওরা আসে কি-না। আমরা আগের মত মজা করবো ঠিক আছে?
- দেখ যেটা ভালো মনে হয় কর। আজ রাখি তাহলে। কাজের বড্ড ধকল গেছে সারাদিন । বেশ ক্লান্ত লাগছে।
এর কিছু সময় বাদে ফোনটা রাখতেই জুঁই ছুটতে ছুটতে এগিয়ে আসে।
-তুমি কি গো?
- সন্ধ্যা হতে গেল ঘরে আলো নেই। কার সাথে কী বকবক করেই চলেছো ঘণ্টা ধরে। ওষুধ খেতে হবে না।
- আমি  কি আরও কিছু দিন বাঁচতে পারবো জুঁই? তোর কি মনে হয়? সময় পাবো? আমার একটা জরুরী কাজ পড়েছে। বড্ড জরুরী।
জুই চুপচাপ নিজের কাজ করতে থাকে। তমা আবার বলে
- এ রাজরোগ থেকে সহজে কি কেউ পার পায়। ডাক্তার তো বলেছে আর তিন মাস। তাই না রে জুই?
- শোন একটুও দুঃশ্চিন্তা করো না। সব ঠিক হয়ে যাবে। মনের জোর হারালে চলবে কেন? তোমার হাতে না কত কাজ! এত বড় প্রতিষ্ঠান তুমি ছাড়া কে চালাবে বল।বড় আপা তোমার উপর ভরসা করতেন।তুমি ছাড়া বাচ্চাগুলো মা হারা হবে যে। তমা ক্লান্তিতে চোখ বুঝলো।শরীরটা কেন জানি ভালো লাগছে না। আজ বড্ড গরম পড়েছে।
পরিশিষ্ট 
২৯ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ তমা এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। সে অন্তত  ডিসেম্বর  অবধি বাঁচতে চেয়েছিল। রাজনের শেষ স্পর্শ টুকু তার আজন্ম সাধ ছিল।সবার সব সাধ পূর্ণ হয় না বলেই পৃথিবী এত বৈচিত্র্যময়৷
অল্প বয়সী কিশোর কিশোরীর আবেগকে সমাজ প্রশ্রয় দেয় না তার উপর মানুষ দুটি যদি হয় দুই ধর্মাবলম্বী তাহলে তো কথাই নেই। এ সমাজ বৈপরীত্য মেনে নেয় না।বৈপরীত্য যতই পবিত্র হোক তাকে অনাচার ভাবে । সেই সময় তমা আর রাজনের বিয়েটাও এ সমাজ মেনে নেয়নি । তার ফলশ্রুতিতে রাজন বাধ্য  হয়েছিল দেশ ত্যাগে আর তার পরিবারও চলে গিয়েছিল অন্য এলাকায়। এদিকে তমাও হয়েছিল বাড়ি ছাড়া।আশ্রিত জীবনে অনেক বারই বিয়ের কথা পাকা হলেও শেষ অবধি সব কটা সম্বন্ধ  অলৌকিক ইশারায় ভেঙে গিয়েছিল।তমার কপালে কুলক্ষণা তকমা জুটেছিল সে সময়। তারপর কত দিন কত সংগ্রাম, কত পথ পাড়ি।এই ছোট্ট শহরের বুকে অনেক যত্নে  তমার হাতে গড়া স্কুলটা রয়ে গেছে।যদিও স্কুলটার প্রকৃত মালিক সে নয় তবুও মিসেস জব্বার মৃত্যুর আগে তাঁকেই সমস্ত  দায়িত্বভার দিয়ে গেছিলেন।স্কুলটা যাতে ভালো চলে এই বিশ্বাস থেকে তার নামেই লিখে দিয়েছিলেন।
তমার শরীরে  ক্যান্সারের জীবাণু  ছিল। ২০১৭ তে যখন ক্যান্সার ধরা পড়লো তখন সে রাজনকে দেখার জন্য মরীয়া হয়ে উঠলো।আর তো সময় নেই। এ জীবনে কি আর দেখা হবে না তাদের ?
সে শুনেছে নেট দুনিয়ায় কত কত হারিয়ে যাওয়া মানুষের পুনঃমিলন হয়। অবশেষে সে সফল হয়। মৃত্যুর আগে রাজনের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়।তবে রাজন দীপক বা নাবিলা কেউ তার রোগের কথা জানতো না। রোগের কথা সে কাউকে সেভাবে জানাতে চায়নি কখনও। এই বয়সে এসে কারো অনুকম্পা নিতে তার আর ইচ্ছে করে না।
তমার মৃত্যুর কিছুদিন  পর  একটি  আবক্ষ মূর্তি বসানো হয়েছে স্কুলের  উত্তরের গেটে। 
শিক্ষার্থীরা ভালোবেসে  আবক্ষ মূর্তির বেদিমূলে লিখে রেখেছে।
"এখানে বাতাস থমকে দাঁড়ায়
সুগন্ধি ফুল গন্ধ ছড়ায়।
মহান শিক্ষিকার মহান স্পর্শে
জ্ঞানের স্ফুলিঙ্গরা সুপথ দেখায়। "

ডিসেম্বর এর শেষ বিকেলে রাজন, দীপক আর নাবিলা সেই বেদী মুলে এসে পৌঁছালো। পরস্পর পরস্পরকে স্পর্শ করে দাঁড়ায় সারিবদ্ধভাবে। তমা নেই তবু যেন আছে। মৃত তমার মূর্তিতে রাজনের স্পর্শে আবার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে যেন। পড়ন্ত বিকেল অদ্ভুত মায়া ছড়ায়।
তারপর আরেকদিন রাজনের ফিরে যাবার প্রাক্কালে।এয়ারপোর্টে বসে তোলা ছবিগুলো দেখতে দেখতে নাবিলা হঠাৎ বলে ওঠে রাজন দেখ দেখ তোর পাশে তমাকে কেমন জীবন্ত লাগছে ।মনে হচ্ছে হাসছে।বাচ্চা মেয়ের মত হাসছে। তাই না? রাজন কিছু বলে না শুধু মাথা ঝাকায় তার দুই  চোখ ভারি হয়ে আসছে। 

সমাপ্ত
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক



সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৪১
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২০ টাকার নোট খাইলো ১ টাকার......

লিখেছেন জটিল ভাই, ১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৪

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)

বি. দ্র. পোস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধুনিক সভ্যতা নাকি প্রাগৈতিহাসিক বর্বরতা?

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১:৪৬


একসময় মানুষ ভাবত, বিজ্ঞানের অগ্রগতি, শিল্প-সাহিত্য, নৃত্য-সঙ্গীত, দর্শন আর মানবিকতা—এসবই হবে আধুনিক পৃথিবীর প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। এই প্রতিযোগিতা হবে কল্যাণের, সৃষ্টির, ভালোবাসার।
কিন্তু বাস্তবতা বড় নির্মম!

আজকের দিনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা হচ্ছে—কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেনারা ডাকাতী করেছেন; স্বীকার করেন না!

লিখেছেন দেশ প্রেমিক বাঙালী, ১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:১২


সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সংগে জড়িত এবং সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য যিনি চট্টগ্রাম-১২ এবং চট্টগ্রাম-১৩ আসনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তিনি ২০১৯-২০২৪ সময়কালে চতুর্থ হাসিনা মন্ত্রণালয়ে ভূমিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি পাথর পুষো বুকে?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:২৮



সম্মুখে বসে আছো..... যেন এক পাথরের পাহাড়
চোখে মুগ্ধতা নেই, ঠোঁটে নেই মিহি হাসি;
কী হাহাকার বুকে জমাও কে জানে, কী চাও;
রান্না বান্নার সংসার?
নাকি খাওয়া ঘুম আর টিভির চ্যানেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেব্রুয়ারির নির্বাচন: সমঝোতা নাকি শুভঙ্করের ফাঁকি?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ৮:১১



"তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের লন্ডন বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের গুঞ্জন—সমঝোতার আলো, না কি নতুন প্রতারণার জাল? জানুন বাংলাদেশের রাজনীতির অজানা দিক, বিভক্তির বাস্তবতা ও নির্বাচন ঘিরে নতুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×