somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

গায়েন রইসউদ্দিন
আমি রইসউদ্দিন গায়েন। পুরনো দুটি অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করতে না পারার জন্য আমি একই ব্লগার গায়েন রইসউদ্দিন নামে প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছি এবং আগের লেখাগুলি এখানে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য আবার প্রকাশ করছি।

দানবের পেটে দু'দশক (মূল গ্রন্থ- IN THE BELLY OF THE BEAST) পর্ব-৯

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


৯০-এর দশকের রাম-আন্দোলন
বিশ্বে নানা স্থানে অন্য যেসব ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী আছে তারা যে সমাজ তৈরি করতে চায় তাদের কাছে তার একটা স্পষ্ট রূপ আছে। কিন্তু সঙ্ঘের প্রস্তাবিত হিন্দু-রাষ্ট্র কীরকম হবে, সেটা তারা ইচ্ছে করেই অস্পষ্ট রেখে দিয়েছে। কারণ, আরএসএস হিন্দুত্বের পুনর্জাগরণের যে কাজে নেমেছে তার জন্য সমর্থক-ভিত্তি বাড়াতে হবে, আর এখানেই নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। গরিব ও নিচু জাতের মানুষদের কাছে আরএএস-এর হিন্দুত্বের বাহ্মণ্যবাদী ধারণা বিশেষ সমর্থন পায় না। তাদের হিন্দু আধিপত্যবাদীর ধারণার মধ্যে জাত ও শ্রেণিগত, জাতিগত, ভাষাগত ও স্থানীয় আনুগত্যের বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করা হয়। এইসব সমস্যার মুখে পড়ে আরএসএস তার উচ্চাকাঙ্খী হিন্দু জাতীয়তাবাদের ধারণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দুটি বিষয় নিয়ে এলো—(১) ভারতের [কংগ্রেস ও অন্যান্য সমাজবাদী] সরকারের প্রতি ঘৃণা, ও (২) ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা জাগিয়ে তোলা। এই দুটি লক্ষ্য পূর্ণ করতে তারা রাম জন্মভূমি কর্মসূচি হাতে নেয়, পাশাপাশি দেশ জুড়ে সঙ্ঘের জঙ্গি কর্মীদের দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধায়। এইসব দাঙ্গায় হিন্দুর তুলনায় অনেক বেশি মুসলমান হত্যা, ধর্ষণ, সম্পত্তি ভাঙচুর ও ধ্বংসের শিকার হয়েছেন। সঙ্ঘ পরিবার এখন নিজেদের হাজির করে এক জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিসেবে, “সমাজতান্ত্রিক ও ঈশ্বরে অবিশ্বাসী” রাষ্ট্রশক্তি যাদের বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এই রাষ্ট্রশক্তি মুসলমান ও অন্য সংখ্যালঘুদের বেশি লাই দিয়ে চলেছে—যদিও সঙ্ঘ ভালো করেই জানে যে মুসলিম ও অন্য সংখ্যালঘুরা আসলে এ দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে চিরাচরিতভাবে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের অবস্থানে থেকেছেন।
নব্বইয়ের দশকে তাই আরএসএস, ভিএইচপি ও বিজেপি একসাথে রাম-মন্দিরের হিন্দু পুনরুত্থানবাদী প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলে। অযোধ্যায় শ্রীরামের “ঐতিহাসিক” জন্মস্থান নিয়ে তারা আন্দোলন গড়ে তোলে। তাদের বক্তব্য, ঐ জায়গায় অবস্থিত বাবরী মসজিদ (বাবরের নামানুসারে) নামের মসজিদটি নাকি গড়ে তোলা হয়েছিল “মুসলিম” আগ্রাসনকারীদের হাতে—ওখানে অবস্থিত হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসস্তুপের ওপর। সঙ্ঘের বক্তব্য অনুসারে, সেই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল শ্রীরামের পবিত্র জন্মস্থানকে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে। সঙ্ঘের বক্তব্য এই যে, একাদশ শতক থেকেই ওখানে স্তম্ভসহ একটি মন্দির ছিল।
কিন্তু বেলজিয়ামের উৎসাহী বিজেপি-পন্থী লেখক কনরাড এলস্ট পর্যন্ত তার বইয়ে স্বীকার করেছেন—
“মন্দিরটি কবে ধ্বংস করা হয়েছিল সেটা আমরা ঠিকঠাক জানি না। কোথাও এই ঘটনার কোনও বর্ণনা পাওয়া যায় না। মহম্মদ ঘোরীর সেনাবাহিনী এসেছিল ১১৯৪ সালে—তারা ধ্বংস করে থাকতে পারে। তার পরে সেটা তৈরি করা হয়েছিল।, এমনটাও হয়ে থাকতে পারে। আবার পরবর্তী কালের মুসলমান সেনাপতিরাও এটিকে ধ্বংস করে থাকতে পারে। তাই এটা সম্ভব যে ১৫২৮ সালে বাবরের সেনাপতি মীর বাকি যখন এখানে আসেন, তিনি হয়ত দারুন একটা হিন্দু মন্দির নয়, একটা ধ্বংসস্তুপ বা পুরনো একটা মসজিদ দেখতে পেয়েছিলেন”। অন্য পুরাতত্ত্ববিদরা পরিষ্কার জানিয়েছেন যে ওখানে কোন ইটের বা পাথরের মন্দিরের অস্তিত্বের কোন রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি। (ক্রমশঃ)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×