somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষার শেষে

০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অপেক্ষার অনেক দিনই কাঁটলো। বছরটাও শেষ হয়ে গেল। রিশিতা কে আজও কিছুই বলা হলোনা। আর অপেক্ষার কোনই মানে হয়না। রিশিতা ক্লাস টেনে উঠে গেছে, এ বছরটা অপেক্ষায় কাঁটলেই বিপদ। কলেজে চলে যাবে রিশিতা এরপর সারাজীবন ধরে না বলা প্রেম নিয়ে আমায় ভুগতে হবে। এখন রিশিতা কে জানালে একটা সমস্যার কথা প্রথমেই বলতে পারে। তা হলো আমি জুনিয়র, মাত্র ক্লাস এইটে। যাক ব্যাপার না, ভালোবাসলে উন্মাদ একটু হতেই হয়।

ঠিক, আমি রিশিতাকে ছোট একটা কাগজের চিরকুটে লিখে দিলাম। " ভালোবাসি"
আশ্চর্য! রিশিতার চোখেমুখে কোন ধরণের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া খেয়াল করলাম না।
রিশিতা খুব সহজ ভাবে বলল, বেশ গরম পড়েছে, তাড়াতাড়ি বাসায় যা, মেডিটেশন কর, লম্বা লম্বা শ্বাস নে, ঠিক হয়ে যাবে।

ধুর! এটা কোন কথা হলো। কেউ প্রেমপত্র দিলে কোন মেয়ে এমন রিয়্যাকশন করে এটা তো আগে কখনও শুনিনি। অনেকেরই প্রেম দেখেছি কিন্তু এমন বিশ্রী সাজেশনের কথা কোথাও শুনিনি।
বরং রিশিতা চোখ গরম করে হাল্কা রাগ দেখাতো, সামান্য ঘৃণার প্রকাশ করত! নাহ তা নয়, আমাকে বলল মেডিটেশনের কথা!
আর ঘৃণা না থাকলে ভালোবাসা হবে কিভাবে? অনেক ভাবনা, অনেক ভাবনা।আর অমন রুপবতী রিশিতা যদি ঘৃণাই না করল তবে এ জীবনের পূর্ণতা কোথায়? থাক, সে রুপের বর্ণনা আমি কিছুতেই দেবনা পাছে সবাই তাকে ভেবে প্রেমে পড়বে। সে রিস্ক আমি নিতে চাইনা।
আমি কিছুতেই পিছু হটলাম না, এতদিনের অপেক্ষা সব কি মিথ্যে নাকি!
আমি বললাম, তুমি সময় নাও, ভাবো, তারপর বলো।
রিশিতা বলল, কি ভাবতে বলছিস রে! পিচ্চি ছেলে একটা, এখনি দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে।

তাই বলে রিশিতা আমাকে পিচ্চি ছেলে বলল! একথা শুনলে যে অনেক খারাপ লাগে।
ধুর! আমি হয়ত ঠিকভাবে প্রপোজ ই করতে পারলাম না। তবু হ্যাঁ ছাড়ছিনা কিছুতেই।

রিশিতা আমার থেকে যদিও সিনিয়র তবুও আমি ওকে তুমি বলেই বলি। প্রথম যেদিন তুমি করে বলেছিলাম, একবার বড় বড় চোখে তাকিয়েছিল আমার দিকে। এরপর ধীরে ধীরে মেনে নেয়।
ক্লাসে সিনিয়র বলেই কি আপনি বলতে হবে নাকি! পরে আবার ভাব ধরে বসে থাকবে। এ আমি মানিনা। ছেলে মেয়ের সম্পর্কে আপনি বলে কিছু হয়ই না। আমি বলতে কোনভাবেই প্রস্তুত না।

হঠাত্ খেয়াল করলাম, রিশিতা কোন এক ছেলের সাথে খুব হাসিখুশি মুডে আছে। হায়! হায়! প্রেম নয়ত আবার?
প্রেম হলে তো আমার সর্বনাশ মানে সাড়ে সর্বনাশ!
ছেলেটা কে?
তার জবাব তোকে দেব কেন, পিচ্চি ছেলে পিচ্চির মতই থাক!
দেখো রিশিতা বারবার কিন্তু পিচ্চি শুনতে একদম ভালো লাগেনা আমার।

ভালো না লাগলে আমার সামনে আসিস না।

তা কি করে হয়? ভালোবাসি তবে আসতে কিসের দ্বিধা!
রিশিতা রেগে বলল, আরেকবার যদি বলেছিস তো!

নাহ, রিশিতাকে বোঝাতে পারছিনা কেন? ভালোবাসি তা আবার এত বুঝিয়ে বলার কি আছে?
এরপর একদিন হঠাত্ রিশিতা আমাকে বলল, একটা কাজ করে দিতে পারবি?
আমিতো খুশিতেই বললাম, এটা আবার বলার কিছু হলো! তোমার জন্য তো.....
থাক! তোকে নায়কের অভিনয় করতে বলিনি। আমার প্র্যাকটিকাল খাতা লিখে দিবি। একদম ভুল করবিনা কিন্তু। স্যার যদি খাতা সাইন করতে কোন ঝামেলা করে তো খবর কাকে বলে বুঝবি।
মাথা নেড়ে বললাম ঠিক আছে।

এটাই সুযোগ তবে মন জয় করার। কথামতো অনেক যত্নে প্র্যাকটিক্যাল খাতা লিখে দিলাম। কিন্তু এবার ঘটলো অন্য ঘটনা। রিশিতার খাতা সাইন করতে স্যার ঝামেলা করলো। কোন কথা নেই, রিশিতা এসে আমার গালে কষে এক থাপ্পড় দিল।
কি হলো!
ভাবতেই আজ অবাক লাগছে একটা মেয়ে কিভাবে এত ভয়ঙ্কর রকমের থাপ্পড় দিতে পারে! ওহ, আগে কখনো খাইনি তো তাই বুঝতেও পারিনি। তবে আমি নিশ্চিত, নিউটন যদি এমন থাপ্পড় উপভোগ করতো তবে নির্ঘাত F=ma এর থিওরি বদলে যেত।
রিশিতা রাগী স্বরে বলল, শয়তান! খাতা তো ভালোই লিখেছিস। সেই সাথে প্রতি পৃষ্ঠায় একবার করে I Love U লিখেছিস।
আমি কোন কথা বলতে পারলাম না, মাথা নিঁচু করে ঘুরে চলে আসতেই,

দাঁড়া, কোথায় যাচ্ছিস, আমাকে ভালোবাসিস না?
শান্ত গলায় বললাম, না।
রিশিতা বলল, এখন যদি আর একবার ও না বলেছিস তো, আরেকটা থাপ্পড় খাবি।

আমি ভাবলাম, না, আরেকবার থাপ্পড় খেলে হয়ত জীবনে অন্য আর কোন মেয়ের সামনে এই গাল নিয়ে দাঁড়াতে পারবনা, রিশিতার সামনে তো নয়ই........
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০১৭ রাত ৩:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×