চতুর্থ দিনের মতো চলছে পাটকল শ্রমিকদের ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন । পাটকল শ্রমিকদের দাবি অনেক দিনের । সরকারের কোনো মহল এগিয়ে আসতে দেখিনি কোনো অদৃশ্য কারণে । একজনের মৃত্যু হয়েছে ,হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক । আসলে পাটকল শ্রমিকরা বোকা। আপনারা বুঝতে পারেন নি আপনাদের দাবি আদায়ে কোন পন্থা সর্বশ্রেষ্ঠ । আগে আপনারা রাস্তায় ধর্মঘট করছেন এখন অহিংস ধর্মঘট করছেন এটাই ভুল । সরকার চাপে না পড়লে সরকার আপোষ করে না । যেখানে মানবিক বাংলাদেশের অভাববোধ করছে প্রত্যেকটি সেক্টর/সম্প্রদায় । এখন অমানবিকদের জয়জয়কার । এ যুদ্ধে না হয় অমানবিকরাই জয় হলো? তবে জেনে রাখুন একদিন মানবিক বাংলাদেশের জয় হবেই হবে । আপনারা ৪১৫০+ বেতন । যখন এটা মনে হয় ,তখন আপনাদের জীবনপট চোখে ফুটে উঠে। কারও ঘরে মেয়ে আছে ,বিয়ে দিবে হবে ,সমাজ চাপ দিচ্ছে । ছেল-েমেয়ের স্কুলে বেতন দিতে হবে । হয়তো যাদের কাছে প্রাইভেট টিউশন পড়ান তারাও অপেক্ষা করছে আপনার বেতনের । সেখানে অনেক স্বপ্ন ঝিইয়ে আছে । অসুস্থ্য বৃদ্ধ মা-বাবাকে ডাক্টার দেখানোর অপেক্ষা করছেন এই বেতনটা পেলেই নিয়ে যাবেন । ছেলেটা এসএসসি পরিক্ষা দিবে সে আশা করতেই পারে নতুন জামার । যুগের চাহিদায় এসএসসি /ইন্টারপাশ ছেলে-মেয়েরা বায়না ধরতেই পারে নতুন মোবাইলের । উৎসব-পার্বণে তারা আশা করতেই পারে এক টুকরো গরুরর মাংসের । আপনি কাদের কাছে দাবি নিয়ে আসছেন ? তারা সালমান-ক্যাটরিনার ড্যান্স দেখার জন্য ব্যস্ত। কনসার্ট ফর ডিজিটাল বাংলাদেশ আয়োজনের মতো মহা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে ।এভাবেই কি ডিজিটাল বাংলাদেশ স্লোগান প্রতিষ্ঠা করার .বিশ্বাস করানোর সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম ? এন্ড্র কিশোররা হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে লড়াই করুক । মনে রাখবেন মরতেই হবে একদিন । তখন চিকিৎসা করালেও মরবেন ,না করালেও মরবেন । আর সরকর কে দোষ দিবেন কি করে রাষ্ট্র ১০ লাখ টাকা দিয়েছে । হিসেবটা লিখে রাখতে পারেন । কখন/কিভাবে খালেদা জিয়ার জামিন হবে সেই চিন্তারই তো অন্ত নেই সেখানে আপনারা কারা ? মুজিব বর্ষ পালনের জন্য নানান আর্ন্তজাতিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে আয়োজন করতে কতটুকু সৃজনশীল ও দক্ষতার পরিচয় দিতে হয় জানেন? আর্ন্তজাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হয় ,রাজি করাতে হয় । প্রয়োজনে লবিং করতে হয় । এতসব কাজ করতে হয় যে আপনার মতো মানুষ পাটকল কলে উদয়স্ত থেকে কি করে বুঝবেন। বুঝতে শিখুন অন্যকে । সরকারের মন্ত্রী-সচিবদের অনেক কাজ । নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বির্নিমানে রাত দিন কাজ করতে হচ্ছে । আপনার অনশন ভাঙ্গানোর সময় কোথায় ? এত বোকা কেন আপনারা? আপনারা কি ভুল ডাক্টারের কাছে চিকিৎসা করার জন্য গেছেন । ভেবে দেখুন। ক্রিড়া ক্ষেত্রে শত শত কোটি টাকার আয়োজন । যেখানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট কে বলা হয় ভারতে সবচেয়ে অনগ্রসর অঞ্চল । সেই সৌরাষ্ট্রের মত ক্রিকেটীয় অবকাঠামো স্বয়ং বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট বলে খ্যাত মিরপুরেও নেই । ক্রিকেটের অবকাঠামোই বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতে সবচেয়ে ভালো ,সেটারই যদি এই অবস্থা বাকীদের হিসাব মিলিয়েই নিতে পারেন । আমার কাছে এমন আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ ।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিজেএমসি আওতায় ২৬টি পাটকলের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ২৫টি। এর মধ্যে ২২টি পাটকল ও ৩টি নন–জুট কারখানা। পাটকলগুলোতে গত বছরের জুন পর্যন্ত ২৭ হাজার ৭২১ জন স্থায়ী শ্রমিক এবং ৩ হাজার ৭৩০ জন কর্মচারী ও কর্মকর্তা ছিলেন। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ২৩ হাজার ২৭৮ জন বদলি শ্রমিক ও ৬ হাজার ৫৪৮ জন দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক কাজ করেন।
লোকসানের চক্র থেকে বের হতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত ২২টি পাটকল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাটকলগুলো ৪৬৬ কোটি টাকার লোকসান গুনেছে এবং চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসেই লোকসান হয়েছে ৩৯৫ কোটি টাকা।
সরকারের এই পাটকলগুলো যদি এভাবে প্রতিবছর লোকসানই দিয়ে যাই তাহলে চালু রেখে লাভ কি । এই শ্রমিকদের শ্রম নিয়ে জিম্মি রেখে কেন কষ্ট দিচ্ছেন । হয় সুদিন ফেরান না হয় বন্ধ করে দিন ।
শ্রমিকদের ঘোষিত দাবির মধ্যে রয়েছে,দাবির একাংশ-
১।সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন।
২।অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পিএফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বীমার বকেয়া টাকা প্রদান।
৩। টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ীকরণ, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ।
৪। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা জোনে মোট ২৬টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জোনে রয়েছে আমিন জুট মিলস লিমিটেড ও ওল্ড ফিল্ডস লিমিটেড, গুল আহমেদ জুট মিলস লিমিটেড, হাফিজ জুট মিলস লিমিটেড, এমএম জুট মিলস লিমিটেড, আর আর জুট মিলস লিমিটেড, বাগদাদ-ঢাকা কার্পেট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, কর্ণফুলী জুট মিলস লিমিটেড, ফোরাত কর্ণফুলী কার্পেট ফ্যাক্টরি, গালফ্রা হাবিব লিমিটেড ও মিলস ফার্নিসিং লিমিটেড। অপরদিকে খুলনায় রয়েছে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিল।
অনেক দিনপর ব্লগে আসলাম । আপনারা আশা করছি ভালো ছিলেন । ব্যস্ততার জন্য আসতে পারিনি । তবে ভালো ছিলাম । মিস করেছি আপনাদের ।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো,ইত্তেফাক,ডেইলি স্টার,বণিক বার্তা
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


