somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাবি : সংঘর্ষ, কারণ ও যৌক্তিকতা

০৬ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




প্রথমেই বলে নিই কেউ যদি এ লেখাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্বেষী কারো লেখা বলে ভেবে পড়া শুরু করে থাকেন, তবে তা পুরোপুরিই ভুল করবেন। এটি ঢাবি বিদ্বেষী তো নয়ই, বরং অতিমাত্রায় ঢাবিপ্রেমী একজনের লেখা। মা- বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে যেয়েই হোক আর নিজের ইঞ্জিনিয়র হওয়ার অদম্য ইচ্ছা ত্যাগ করতে না পারার জন্যই হোক, ঢাবিতে শেষ পর্যন্ত পড়া না হলেও সারাজীবনের স্বপ্নের ইনস্টিটিউশনের প্রতি আমার ভালোবাসা কোনদিনই কমেনি। বন্ধুদের সাথে অনেকসময়ই ঢাবির পক্ষ হয়ে লড়াই করতেও অনেকসময় বাধ্য হতে হয়। কিন্তু কিছুদিন পরপরই এমন সব ঘটনা ঘটে, যার কারণে আমাদের মত মানুষদের মুখ বন্ধ করে ফেলতে হয়। যেমন আজকের ঘটনা। খবরে পড়লাম আজকের সংঘর্ষের কারণ দুর্ঘটনা যেটার কারণ বাসশ্রমিকদের সাথে হাতাহাতি।

এখন আমার প্রশ্ন :

১। কতগুলো বাসশ্রমিকের সাথে ঢাবির মত একটা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের মারামারি লাগে কিভাবে? এদের সাথে হাতাহাতিতে কি ঐ ছাত্রদেরই ক্লাস ডিমোশন হয় না ?

২। স্বাভাবিকভাবেই কি মনে হয় না যে এরা কিছুসংখ্যক বিপথগামী তথাকথিত ছাত্র ? এদের জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানের নাম ডুবানোর অর্থ কি ?

৩। শাহবাগ এলাকায় অর্ধশত গাড়ি ভাংচুর। কিছু হলেই গাড়ি ভাঙা যেন একটা নিয়ম হয়ে গেছে। কেন ? গাড়ি যারা চালায় অনেকেই কষ্ট করে এই ব্যয়টা সহ্য করেন। অযথা সাধারণ মানুষের উপর এটা কি ধরণের অত্যাচার ?

৪। আমরা কি তাহলে ধরে নিব ঢাবির লেবেল পেয়ে গেলেই একশ্রেণীর ছাত্র ধরে নেয় যে তারা যা খুশি তাই করার লাইসেন্স পেয়ে গেছে ? তাদের মনে রাখা উচিত যে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপীঠে এত কম খরচে তারা যে পড়াশুনা করে, সেটা কিন্তু সম্ভব হয় দেশের মানুষের কারণেই, সে কারণে হলেও অনেকক্ষেত্রে তাদের দেশের প্রতি কিছু দায়িত্ব থাকে।

লেখাটা লেখা হয়েছে আজকের ঘটনার উপরে কিন্তু জিজ্ঞাসাগুলো শুধু আজকের না। ভাবতে খারাপ লাগে এই সেই বিশ্ববিদ্যালয় যাকে একসময় ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ বলা হতো, এরা সেই ছাত্রদের উত্তরাধিকার যারা না থাকলে হয়তো আমাদের ভাষা হয়ে যেত উর্দু, দেশটা হয়তো কখনোই বাংলাদেশ হতো না বা আমরা এখনো হয়ত স্বৈরাচার শাসিত বলেই পৃথিবীতে পরিচিত হতাম। এর থেকে পরিত্রানের কি কোন উপায়ই নেই ?

শেষ করছি লোকপ্রশাষণ বিভাগের এ.কে.ফিরোজ স্যারের একটা কথা দিয়ে। স্যার তার Introductory ক্লাসে বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা জায়গা যার কোন ঢুকবার বা বেরোবার দরজা নেই, এর কোন নির্দিষ্ট সীমানাপ্রাচীর নেই কেন না এটা এমন একটা জায়গা যেখানে সবাই সবসময় আমন্ত্রিত, শুধু দুঃখের বিষয় এই যে যাদের জন্য এই বিশাল পরিসরটা সাজিয়ে রাখা হয়েছে, তাদেরকেই এটি এখন আর আটকে রাখতে পারে না। খোলা দরজাটা দিয়ে ঢোকার বদলে বের হয়ে যেতেই তারা বেশি আগ্রহী।

এরকম একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক যে আহত ভঙ্গিতে শেষ কথাটুকু বলেছিলেন, তা মনে পড়লে আজও কষ্ট লাগে। আমাদের শিক্ষকেরা কি এরকম কষ্টই ডিজার্ভ করেন আমাদের কাছে ?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১১ রাত ১:৩৫
১৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×