somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষন কারা করে? ধর্ষন বাড়ার কারন কি?

২৪ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তনুকে আমি চিনি না।
তনুকে আমি দেখিনি কখনো।
তাই তনু কতটা মেধাবী ছিল, কতটা সংগ্রামী ছিল, কতটা হিজাবী ছিল, কোন নাট্যদলের কর্মী ছিল এসব শোনা কথা ব্যাখ্যা করে আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ঠ করতে চাই না।
এমনকি ক্যান্টরমেন্ট এরিয়ার হার্ড সিকিউরিটির মধ্যে এতো বড় অপরাধ কেমনে সম্ভব? মিডিয়া কেন নীরব? এসব সন্দেহের ওপর ভিত্তি করে "আর্মিরাই এটা ঘটিয়েছে" এ টাইপ আন্তাজে অপবাদও দিবো না।
____
আজ শুধু নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ধর্ষক কারা? সমাজে ধর্ষন বাড়ার কারন কি? এসব প্রশ্নের উত্তর খুজব।
___
মানুষের মাঝে দুটো সত্তা কাজ করে:
১. মানব সত্তা। ২.পশু সত্তা।
মানব সমাজে ধর্ষন নতুন নয়। আদিম যুগে যখন মানুষ পাথরের গুহায় বসবাস করতো তখন অহরহ ধর্ষন হতো। কেননা তখন মানুষ যতোটা মানুষ ছিল তারচেয়ে বেশী ছিল পশু।
সময়ের সাথে মানুষের মধ্যে মানব সত্তার বিকাশ ঘটেছে। এবং মানব সত্তার প্রভাবে মানুষের পশু সত্তায় লেগেছে লাগাম। কিন্তু পশু সত্তার বিনাশ ঘটেনি। তাইতো লম্পট থেকে শুরু করে সাধু পর্যন্ত সবার মাঝেই কম-বেশি পশু সত্তা কাজ করে।
কিন্তু আমাদের সভ্য সমাজ ব্যবস্থা পশু সত্তাকে জনসম্মুখে জেগে ওঠতে দেয় না। সামাজিক কারনে বেশীরভাগ মানুষই গোপনে এই সত্তার লাগাম টেনে ধরতে বাধ্য হয়। অথবা বিয়ের মাধ্যমে সামাজিক ও বৈধ ভাবে নিজের জৈবিক চাহিদা পূরনের ব্যাবস্থা করে।
কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত পশু সত্তায় আক্রান্ত যেসব মানুষ সামাজিক ব্যাবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আদিম যুগের মতো অবৈধ উপায়ে নিজের জৈবিক লালসা পূরনের সাহস রাখে তারাই মূলত ধর্ষক। এরাই ধর্ষন করে।
_____
এখন প্রশ্ন হলো সভ্য সমাজে ধর্ষন বেড়ে যাওয়ার কারন কি?
বর্তমান যুগে ধর্ষনের প্রধান কারন নারীর প্রতি নোংরা দৃষ্টিভঙ্গির বিস্তার।
বর্তমান যুগে নারী মানেই মাল।
নারী মানেই হট, সেক্সি।
নারী মানেই জৈবিক চাহিদা পূরনের জিনিশ।
ফলে সভ্য সমাজে হচ্ছে অসভ্যতার বিস্তার।
___
এখন প্রশ্ন হলো সামাজে এমন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির কারন কি?
আমি মনে করি সমাজে নারীর প্রতি এমন মনোভাব সৃষ্টির কারন প্রধানত মিডিয়া।
মিডিয়ায় নারীকে ভোগ্য পন্য হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
'আমি গরম চা, আমায় ফু দিয়ে খা!'
এটি একটি গানের লিরিক।
এই বাক্য গুলোর সারমর্মই বলে দেয় মিডিয়া নারী জাতিকে কত নিচে নামিয়ে এনেছে।
নারী প্রতি সৃষ্টি হওয়া এসব নোংরা দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের পশু সত্তার বিকৃত বিস্তারকে উৎসাহিত করছে। ফলে সমাজে বাড়ছে ইভটিজিং, ধর্ষন ইত্যাদি।
অথচ মিডিয়া যদি নারীকে.....
একজন মা,
একজন বোন,
একজন বঊ হিসেবে প্রচার করতো তাহলে সমাজে নারীর প্রতি পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি কতই না মহান হতো!
অতএব ধর্ষন রোধে চাই সুস্থ মিডিয়া।
____
এছাড়াও সমাজে নারী সহিংসতা নিয়ে আরেকটি মতবাদ চালু আছে, 'নারী হিজাব পড়ে না তাই নারী ইভটিজিং এর শিকার, ধর্ষনের শিকার'
তাদের এধরনের মতবাদ ধর্ষকদের ধর্ষনকে বৈধতা দিচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে ধর্ষক আর এরা একই গোয়ালের গরু।
কারন এদের যুক্তি অনুযায়ী ধর্ষকদের মতো এরাও নারীকে শুধুমাত্র যৌন লিস্পা পূরনের মাধ্যম মনে করে। নারীদের দেখলে এদেরও জৈবিক লালসা জেগে ওঠে।
ধর্ষক আর এদের পার্থক্য হলো ধর্ষকরা তাদের জৈবিক লালসা জোর করে পূরন করতে চায়, আর এরা এদের লালসা অবদমিত করার জন্য নারীকে হিজাব পড়াতে চায়।
অনেক গুলো কথা মনে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছিল। জানি না কতটুকু গুছিয়ে লিখতে পেরেছি।
___
সন্দেহ হচ্ছে তনু হত্যার বিচার কখনো হবে কিনা....
কিংবা একজন তনু হত্যার বিচারে সমাজ থেকে ধর্ষন কমবে কিনা।
তবুও আমি চাই তনু হত্যার বিচার হউক।
যাতে ধর্ষকরা পরেরবার আমার কোন মা বোনের ওপর নজর দিতে গিয়ে একটু হলেও ভয় পায়।
#justiceforTonu
#SorryTonu
___
পরিশিষ্ট : অনলাইনে যারা তনু হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন। ব্যাক্তিগত জীবনে হয়ত তাদের অনেকেই একজন ইভটিজার। মনে মনে ধর্ষকদের মতো তারাও হয়তো নারীকে ভোগ্য পন্য মনে করে। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি "আন্দোলনটা নিজেকে পাল্টানোর মাধ্যমে শুরু হউক"
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×