গতকাল সিলেট স্টেডিয়ামে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম.সাইফুর রহমানের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । অনুষ্ঠানে আমি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে উপস্থিত হই কোন দলের কোন সর্মথক হিসেবে নয় ,হাজির হয়েছি যেন সিলেটের এই কৃতী সন্তানের কর্মময় জীবন,দেশের প্রতি তারঁ ত্যাগ ,না জানা অনেক অবদান ইত্যাদি ইত্যাদি জানতে পারি ।দিন কয়েক পূর্বে সিলেটের আরেক কৃতী সন্তান সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড.ফরাস উদ্দিন এসেছিলেন সিলেটের নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি তে একটি সেমিনারে প্রধান আলোচন হিসেবে ।সেখানে ও আমি নাদান উপস্থিত হয়েছি ,উনার জ্ঞান গর্ব আলোচনা শুনে নিজেকে ধন্য করেছি । দেশের কোন মহান ব্যক্তিদের সিলেট আগমন শুনলে বা তাদেঁর নিয়ে সভা সেমিনারের আয়োজন হলে আমি আমার সবোর্চ্চ চেষ্টা করি সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য ।কখনও পারি আবার কখনও পারি না ।দেশের এক প্রান্তে বসবাস,তাই কাল ভদ্রে এদের আগমনের খবর পেলে মনের মধ্যে শিহরণ লাগে ,উপস্থিত হতে পারলে ভাল লাগে ।এজন্য গত কালকে আমার সেখানে গমন ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জন এম.সাইফুর রহমানের অবদান আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন ভাবে বর্তমান অর্থমন্ত্রী আব্দুল মালের সমালোচনা করলে একজন সিলেটি হিসেবে মনে বড় কষ্ট পেয়েছি । একদিকে সাইফুর রহমানের কৃতিত্ব শুনে যেমন ভাল লেগেছে ঠিক তেমনি খারাপ ও লেগেছে ।হ্যাঁ উভয় জন অর্থনীতিবিদ, অর্থমন্ত্রী,আবার সিলেটী তাই বিভিন্ন প্রেক্ষিতে বিভিন্ন বিষয় তুলনা করতে গিয়ে সমালোচনা করাটা স্বাভাবিক ভাবে সহজ হয়েছে ।যেমন সিলেটি হিসেবে সাইফুর রহমান এমন করেছেন,সিলেটী হিসেবে উনি(বর্তমান অর্থমন্ত্রী) তো কিছুই করেন নি । বা অর্থমন্ত্রী হিসেবে সাইফুর রহমানের মতো তিনি কিছুই করেননি ইত্যাদি ইত্যাদি ।
কিন্তু সবচেয়ে বড় কষ্ট পেয়েছি খবরের কাগজে যখন পড়লাম নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর অর্থমন্ত্রীকে নব্য রাজাকার বলে তার গ্রেফতার ও বিচার চাইলেন ।নূরুল কবীল সাহেব আপনি সন্দেহ নেই একজন বিখ্যাত সাংবাদিক । আপনার তুলনায় আমি মূর্খ বৈ কিছু নই ।আপনার প্রতি সম্মান রেখে বলছি একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনও রাজাকার হতে পারেন না ।আর যে জন্য নব্য রাজাকার বলে গ্রেফতার ও বিচার চাইলেন আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনেকরি সেখানে আপনি ভালই করে জানেন অর্থমন্ত্রী হিসেবে উনার দোষ কতটুকু ।এই্তো 'গত ১সেপ্টেম্বর শনিবার নিউইয়র্কের একটি সেমিনারে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বললেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর একনায়কত্ব কায়েম হয়েছে।'যেখানে একজনের সর্বময় ক্ষমতা সেখানে অন্যদের আর কি বা করার আছে,শুধু গবুচন্দ্র মন্ত্রি হওয়া ছাড়া ।যা আপনারা বিভিন্ন সময় বলে থাকেন ।
। যেখানে মন্ত্রীদের নেই কোন কর্তৃত্ব ,মন্ত্রীপরিষদ আছে ঠিক , কিন্তু প্রধান কর্তৃত্ব সেই ব্রিটিশ আমলের দ্বৈত শাসনের মতো প্রধান মন্ত্রীর অনির্বাচিত উপদেষ্টাদের হাতে ।এই উপদেষ্টার মধ্যে থেকে একজনের তো হলমার্কের কর্নধার তানভির সাহবের সাহেবের সাথে সুসর্ম্পক আছে বলে তানভির নিজেই স্বীকার করেছেন ।এখন 'যত দোষ নন্দ ঘোষের মতো 'সেই আমাদের অর্থমন্ত্রীর । কেন তিনি কিছুই করেন না ।
আজ শেয়ার কেলেংকারি,বিশ্বব্যাংক,গ্রামীণব্যাংক সমস্যা,হলমার্ক কেলেংকারি সব কিছুর সমাধানের জন্য এই প্রবীণ বয়সে একজন ব্যক্তি বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ।কিন্তু কারও পক্ষ থেকে লেশ মাত্র সহানুভূতিটুকু পর্যন্ত নেই ।আহা রে ।
বিশ্বব্যাংক যার জন্য ঋণ বাতিল করে সেই ব্যক্তিকে দেশপ্রেমিক ঘোষাণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেখানে রীতিমতো জিহাদ ঘোষণা করে বিশ্বব্যাংকের বিরোধে দেশের প্রায় লাল বাতি জ্বেলে দিয়েছিলেন,সেখানে এই ব্যক্তিটিই কিন্তু আপনাদের আমাদের পদ্মাসেতুর জন্য যা করে যাচ্ছে সেজন্য সেলুট দিতেই হবে ।আশার আলো নিভু নিভু করলেও এখনও নিভে যায় নি ।গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে আজ যা হচ্ছে তা তো এক ব্যক্তির কোন ইচ্ছা পূরণ করার জন্য ।কিন্তু কাজটা করানো হচ্ছে মাল সাহেব কে দিয়ে ।তাই সবার অভিযোগের আঙুল তারঁ দিকে ।কিন্তু ভুলে গেলে চলবেনা এই আব্দুল মাল মুহিত সাহেব না হলে গ্রামীণ ব্যাংক আলো দেখতো কি না সন্দেহ আছে ।ড.ইউনুসের ''গ্রামীণ ব্যাংক ও আমার জীবনী'বইটি পড়লে সন্দেহের ধোঁয়াশা কেটে যাবে আশা রাখি ।
দেশের জন্মের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে এই সিলেটিরাই কিন্তু দেশের অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসছেন ।কিন্তু কেন সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়টি বার বার কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই চোখ বুঝে এই সিলেটের কৃতী সন্তানদের উপর ছেড়ে দেওয়া হয় । কারণ একটাই ব্যক্তি জীবনে সিলেটিরা সত্য।জীবন গেলেও অন্যের সম্পদের প্রতি নেই কোন লোভ,আর রাষ্ট্রীয় জীবনে তো প্রশ্নই আসেনা ।কিন্তু এই সত্ প্রতিভাবান মানুষ গুলো বিভিন্ন সময় দেশের নোংরা রাজনীতির শিকার হয়ে অন্যের সমালোচনার,কটু কথার সম্মুখীন হচ্ছেন ।ভাবতে ,শুনতে বড় কষ্ট লাগে ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






