প্রশ্ন: ভারত যদি কালকে বাংলাদেশ দখল করে নেয় তাহলে কি আমাদের কোন ক্ষতি হবে?
উত্তর: আপনার পাশে থাকা হিন্দু ভাইটিকে অথবা বোনটিকে প্রশ্ন করেন তো... ভারত যদি কাল বাংলাদেশ দখল করে নেয় তাতে তার কোন আপত্তি আছে কিনা। একই প্রশ্ন দেশের নাস্তিক সমাজ বা কথিত সুশিলদেরো করতে পারেন।
অতি সম্ভব্য উত্তর হবে... এদের কারোরই কোন আপত্তি নেই এবং থাকলেও তাদের দিক থেকে যৌক্তিক কোন কারণ দেখাতে পারবে না বরং আরো খুশিই হবে। বলবে আমরা ভারতের মত বড় একটা দেশের সাথে যুক্ত হবো এটা তো আমাদের জন্য ভালো কথা। এই কারণেই এরা জিন্নাকে মনে প্রাণে ঘৃণা করে কারণ জিন্নার কারণেই এরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলো। আর সেই বিচ্ছিন্নতার কষ্ট এরা আজো ভুলতে পারেনি। জিন্নার সাথে ১৯৭১ বা মুক্তিযুদ্ধের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু তবুও জিন্না কে ঘৃণার একমাত্র কারণ জিন্না ওদের ভারত থেকে আলাদা করেছিলো।
যাইহোক... এবার যদি আপনি এই প্রশ্নটাই কোন মুসলমানকে করেন, তাহলে? একজন মুসলমানের অবশ্যই ভারত বাংলাদেশ দখল করলে সমস্যা হবে। বাংলাদেশ ভারত হয়ে গেলে মুসলমানদের এই দেশে আর কোন অধিকার থাকবে না...
সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকবে না...
মুসলমানর গরু কুরবানি করতে পারবে না...
গো হত্যার দায়ে তাদের হত্যা করা হবে...
তাদের ধর্ম পালনে অধিকার থাকবে না...
সে আল্লার জমিনে নামাজ পড়োতে পারবে না...
নিজের নেতা নিজে বেছে নিতে পারবে না। মুসলমানরা রাজনীতিতে সুযোগ পাবে না...
নিজের দেশেই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে যাবে... ইত্যাদি...ইত্যাদি।
অর্থাৎ... ইসলাম আছে বলেই এই দেশের ৯৩% মানুষের মধ্যে বাংলাদেশ নামের দেশটাকে টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে। মুসলমানরা অবশ্যই কোন হিন্দু দেশের অংশ হয়ে হিন্দুদের অধীনে, তাদের রাজত্বে থাকতে চাইবে না। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন... "ভারতের মত বড় দেশের সাথে যুক্ত হওয়া কি আমাদের জন্য ভালো নয়?" হ্যাঁ... হয়তো ভালো হতেও পারে কিন্তু ছোটবেলায় পড়া সেই কবিতাটা মনে আছে?
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই?
আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকার পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।
বাবুই হাসিয়া কহে,- সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাচা ঘর, খাসা।
এই কবিতার ছন্দেই বলতে চাই... আমার দেশ গরিব হোক, ছোট হোক তবুও এটা আমার দেশ।
পরের প্রশ্ন: ভারত বাংলাদেশ দখল করে নেয়না কেনো?
বাংলাদেশের একজন রাজনৈতিক নেতা এক আর্মি জেনারেল কে প্রশ্ন করেছিলেন "ভারত যদি চায় বাংলাদেশ দখল করবে তাহলে কত সময় লাগতে পারে?" আর্মি জেনারেল উত্তর দেন... "ঐ বর্ডার পর্যন্ত আসতে যতটুকু সময় লাগে আর কি।" অর্থাৎ ভারত চাইলে একদিনেই বাংলাদেশ দখল করতে পারে। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন আসে... করেনা কেনো?
ভারত বাংলাদেশ দখল করেনা তার পিছনে একটাই কারণ। ভারত বাংলাদেশ দখল করতে পারবে কিন্তু হজম করতে পারবে না। দেখেন ভারত একটা ব্রাহ্মণ বাদী দেশ। মুখে বলা হয় ভারত হিন্দু দেশ কিন্তু হিন্দু তো নিচু জাতের হিন্দুরাও। ভারতে উঁচু জাতের হিন্দু আর নিচু জাতের হিন্দু এক নয়। ভারতে নিচু জাতের হিন্দুদের আজ ঘৃণার নজরে দেখা হয়। নিচু জাতের হিন্দুদের সমাজের সম্মানিত কোন জায়গা দেওয়া হয় না। তাদেরকের লেখাপড়া থেকে শুরু করে চাকুরী সব জায়গায় বৈষম্যের স্বীকার হতে হয়। আজো ভারতের স্কুল গুলোতে নিচু জাতের হিন্দু বাচ্চাদের দিয়ে উঁচু জাতের হিন্দু বাচ্চাদের টয়লেট সাফ করানো হয় । চিন্তা করেন তো একবার। আপনি আপনার সন্তান কে স্কুলে পাঠালেন আর জানতে পারলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ আপনার সন্তান কে লেখাপড়া না শিখিয়ে তাকে দিয়ে অন্য শিশুদের টয়লেট সাফ করাচ্ছে। এটা আপনার ও আপনার সন্তানদের জন্য কতটা অপমান জনক? ভারতে নিচু জাতের হিন্দুরা যদি উঁচু জাতের হিন্দুদের টিউবওয়েল থেকে পানিও খায় তাহলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। গত বছর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, এক BJP নেতা এর নিচু জাতের হিন্দুর গায়ে প্রসব করার তাকে অপমান করার জন্য। তাহলে ভারতে নিচু জাতের হিন্দুদের অবস্থা বোঝেন।
আর ভারতে মুসলমানরা হিন্দুদের কাছে ঐ নিচু জাতের হিন্দুদের থেকেও নিকৃষ্ট জাতি। সুতরাং ওরা যদি বাংলাদেশ দখল করে তাহলে ভারতে থাকা মুসলমানদের সাথে আরো ১৫ কোটি মুসলমান যুক্ত হবে যেটা ভারতের ব্রাহ্মণ বাদী হিন্দুদের অধিপ্ত্য ও ক্ষমতার জন্য এক বিরাট বড় হুমকি। তাই ভারতের হিন্দুরা কোনদিনো চাইবেনা ভারতের মুসলিম জনসংখ্যায় আরো কয়েক কোটি যোগ করতে। আর ঠিক এই কারণেই ভারত বাংলাদেশ দখল করেনা।
অর্থাৎ বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকে আছে বাংলাদেশের মুসলিম আইডেন্টিটির কারণে। অন্যথায় বাংলাদেশ যদি হিন্দু কোন দেশ হতো তাহলে ভারত একদিনো সময় নষ্ট করতনা বাংলাদেশ দখল করে নিতে।
তবে ভারত বাংলাদেশ দখলের চেষ্টা করেনি তা কিন্তু নয়। আপনারা কেউ যদি আবু রুশদ এর লেখা "বাংলাদেশে র" বইটি পড়ে থাকেন তাহলে দেখবেন ভারতের RAW এর লোকজন যে শুধু বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে আঁকড়ে বসে আছে তা নয়। ভারতের RAW এর বাংলাদেশে একটি বড় আস্তানা হলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও কালচারাল সেন্টার গুলো। ভারতের লক্ষ হচ্ছে এগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের মুসলিম আইডেন্টিটিকে মুছে ফেলা। তাই এগুলোর সবগুলোই দেখবেন চরম লেভেলের ইসলাম বিদ্বেষী এবং এরা বাংলাদেশে মুসলিম বাঙ্গালী পরিচয় কে ঘৃণা করে এবং আচার আচরণ ও বেশভূষায় আমাদের কলকাতার দাদা বাবুদের মত বানাতে চায় জেনো তাদের ও আমাদের মধ্যে কোন পার্থক্য না থাকে।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যেমন চেয়েছিলো এই দেশের মেয়েদের ধর্ষণ করে এই দেশে পাকিস্তানের বীজ রেখে দিয়ে সেই বীজ দিয়ে একদিন বাংলাদেশ দখল করবে। তেমনি ভারতেরো লক্ষ হলো বাংলাদেশের মুসলিম পরিচয় কে আস্তে আস্তে মুছিয়ে দিয়ে আমাদের ভারতের অংশ করে নেবে। আর যতদিন সেই আশা পূরণ না হয় ততদিন হাসিনার মত ভারতের দাসদের এই দেশের ক্ষমতায় রেখে এই দেশকে শোষণ করা। অর্থাৎ এই দেশে দখল করবেনা কিন্তু এই দেশে থেকে খাজনা নেবে।
অতয়েব, আশাকরি এতদূর আলোচনায় আপনারা পরিষ্কার হয়েছেন যে বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ইসলাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম আছে বলেই বাংলাদেশ আছে। যেদিন ইসলাম এই দেশ থেকে চলে যাবে সেদিন বাংলাদেশ বলেও আর কিছু থাকবে না। কারণ ইসলাম বাংলাদেশে ভারতের বিরুদ্ধে রক্ষা কবজ হিসেবে কাজ করে।
তবে এর পরেও কিছু প্রশ্ন রয়ে যায় যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ
যেমন... ধর্মীও উগ্রতা ও জঙ্গিবাদ
ধর্মীও উগ্রবাদী প্রতিটা মুসলিম দেশেরই একটি বড় সমস্যা। কোন সন্দেহ নেই বাংলাদেশেও এর অস্তিত্ব আছে। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশে ধর্মীও উগ্রতা কি পরিমাণ আছে বা এর তীব্রতা কতটা তা আমরা আজো ঠিকমত জানিনা। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের শুরু যেটাকে বলা হয় সেটা হলো ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলা থেক। এর আগে বাংলাদেশে কখনো জঙ্গি হামলা হয়নি এবং বাংলাদেশ কে সবাই শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবেই চিনতো। কিন্তু এই ঘটনা বাংলাদেশ কে প্রথমবারের মত বিশ্বের দরবারে একটি জঙ্গি দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। কিন্তু সেই ঘটনার আজ ১১ বছর পরে হলেও আমরা জানতে পেরেছি সেই জঙ্গি হামলাটি ছিলো সম্পূর্ণ আওয়ামীলীগ ও ভারতের সাজানো নাটক। ভারত থেকে সন্ত্রাসী এনে বোমা হামলা ঘটিয়ে দেশটাকে জঙ্গি দেশ হিসেবে দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিলো সেই হামলা। এরপর বিগত ১৭ বছরে আরো বহু জঙ্গি হামলা ও আক্রমণ হয়েছে এই দেশে কিন্তু প্রতিটা আক্রমণের পিছনেই আওয়ামীলীগ ও ভারতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
এই কারণেই দেশে কতটা রাজনৈতিক সাজানো জঙ্গিবাদ আছে আর কতটা আসল জঙ্গিবাদ আছে তার কোন হিসাব বা আন্দাজ আমাদের নেই। গত কয়েক বছরে আপনারা যতগুলো ধর্মীও দাঙ্গা হাঙ্গামা দেখেছেন সেগুলোর প্রত্যেকটা ঘেঁটে দেখেন। সেগুলোর পিছনে কোন না কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি জড়িত ছিলো এবং এগুলো তারা কোন না কোন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল অথবা প্রতিশোধ নিতে করেছে। তবে এখন সময় এসেছে আমরা এগুলো নিয়ে ভেবে দেখি। তবে জঙ্গিবাদের মোকাবেলা করা মানে দেশ থেকে ইসলাম সরিয়ে দেওয়া নয় বরং ইসলামের ভালো ও শান্তিপ্রিয় দিকটা বেশী বেশী প্রচার করা। এক্ষেত্রে আমাদের আলেম সমাজ মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
ধর্মীও শান্তি বজায় রাখতে আলেম সমাজ মুখ্য ভূমিকা... কিভাবে?
আমাদের দেশে দুই ধরনের আলেম পাওয়া যায়। একধরণের আলেম খুবই অল্প শিক্ষিত, উগ্র ও হিঙ্গস্রতা প্রচার করে। এরা চরম লেভেলের অমুসলিম বিদ্বেষী, নারী বিদ্বেষী এবং সব সময় হিংস্রতা ও উগ্রতা নিয়ে কথা বলে। অন্যদিকে আমাদের এমন আলেম সমাজো আছে যারা শিক্ষিত, স্মার্ট, শান্তিপ্রিয় এবং সকলের প্রতি ভালোবাসা ও শান্তি রক্ষার কথা বলে। বাংলাদেশ থেকে ধর্মিও উগ্রবাদী মোকাবিলা করতে এইসব আলেমরা আমাদের মূল হাতিয়ার। আমাদের উচিৎ হবে এই ধরণের আলেমদের বেশি বেশী প্রোমট করা এবং তাদের শিক্ষাকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এবং ঐসব উগ্র, হিংস্র আলেমদের নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণে নিয়ে আসা। একই সাথে আমি এও মনে করি যে রাজনীতিতে ইসলামি সমাজ ও আলেমদের জন্য জায়গা করে দেওয়া উচিৎ। আমার এতক্ষণের আলোচনায় হয়তো কিছুটা ধারণা পেয়েছেন যে ইসলাম আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ অথচ এর পরেও বিগত ৫৭ বছর ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলাম ও আলেমদের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। তাদেরকে একরকম অচ্ছুত ও সমাজচ্যুত করে রাখা হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
দেখুন... ধর্ম খুবই সেনসিটিভ জিনিষ এবং এর ভুল ব্যবহার লাভের চাইতে ক্ষতি বেশী করতে পারে। আর তাই ধর্মের সঠিক ও শান্তিপূর্ণ ব্যবহার আমার মতে আলেমরা ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না। আর তাই এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্ম ও আলেমদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর।
এরপরে বিষয় আসে যে, অমুসলিমদের ব্যাপারে কি মতামত?
দেখুন আমি আগেই বলেছি বাংলাদেশ স্বাধীন থাক অথবা ভারতের দখলে। বাংলাদেশের অমুসলিমদের আমার মনে হয়না তেমন কোন অসুবিধা হবে। তবে তারা যদি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে চায় তাহলে তো অবশ্যই সেটা দেশের জন্য মঙ্গল এবং সেটাই কাম্য। কিন্তু তাহলে তাদেরকেও দেশ রক্ষার জন্য ইসলামের গুরুত্ব কে অনুধাবন করতে হবে এবং বাংলাদেশের এই মুসলিম পরিচয় কে মেনে নিয়েই দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। দেশকে অন্য কোন রূপ দেওয়া চলবে না কারণ তাতে দেশর ধ্বংস অনিবার্য।
কোন একটি ধর্মকে সম্মান করা বা সমাজ ও দেশের অংশ হিসেবে মেনে নেওয়ার মানে এই না যে মুসলমান হয়ে যাওয়া বা নিজের ধর্মকে অপমান করা। তারা তাদের ধর্ম পালন করবে এবং মুসলিমরা তাদের কিন্তু দেশের স্বার্থে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে তাদের ৯৩% এই মুসলিমের দেশে ইসলামের পরিচয় কে মেনে নিতেই হবে।
ইসলামের আরেকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক আমি আলোচনা করতে চাই...
আপনারা কি জানেন আমরা চাইলে ইসলাম কে আমারা শুধু দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নয় বরং ভারত কে হারিয়ে আমরা ইসলাম কে দেশের উন্নয়নের জন্যেও ব্যবহার করতে পারি! কিভাবে?
অবাক করা হলেও সত্য যে আপাদমস্তক ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী হলেও ভারতের সবচেয়ে বেশী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয় মিডিল ইস্টের মুসলিম দেশগুলো থেকে। ভারত নিজের গো মাতাকে জবাই করে তার চামড়া ও মাংস রপ্তানিতেও বিশ্বের মধ্যে প্রথম সারীর দেশগুলোর মধ্যে একটা এবং আরো মজার বিষয় ভারতের সবচেয়ে বড় গরুর চামড়া রপ্তানি কারক কোম্পানি হিন্দুত্ববাদী গোমুত্রখোর BJPর সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ মুখে ধর্মের কথা বললেও ধান্দা করার বেলায় সব চলে।
যাইহোক... এবার চিন্তা করেন তো। মুসলিম দেশ হিসেবে অনন্য মুসলিম দেশগুলোর সাথে লেনদেন আমরা কি আরো উন্নত করতে পারিনা? তার জন্য সবার আগে আমাদের আমাদের দেশের মুসলিম পরিচয় কে গ্রহণ করতে হবে এবং ইসলামকে আমাদের দুর্বলতা নয় বরং শক্তি হিসেবে ব্যাবহার করতে হবে। আমরা চাইলে আমাদের মুসলিম আইডেন্টিটিকে অন্য মুসলিম দেশগুলোতে মার্কেটিং ও প্রচারে ব্যাবহার করে মুসলিম দেশ গুলোর সাথে আমাদের ব্যবসা আরো উন্নত করতে পারি। মুসলিম হয়ে মুসলিমদের সাথে ওঠবস করা বা মুসলিমদের সাহায্য করা ফরজ। আর এটাকেই যদি আমর কাজে লাগিয়ে মুসলিম দেশগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারি এবং ভারতের হিন্দুত্ববাদী, মুসলিম ঘৃণা ও ইসলামোফোবিয়া রূপ যদি আমরা অনন্য মুসলিম দেশগুলোর কাছে তুলে ধরতে পারি। তাহলে সেটা আমাদের মুসলিম দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ আরো উন্নত করতে পারে।
হ্যাঁ... আমরা ভারতের সাথে সস্তা লেবার রপ্তানি করাই পাল্লা দিতে পারবো না কারণ ভারত অনেক বড় দেশ এবং ১৪০ কোটির উপরে জনসংখ্যা যার সাথে আমাদের মত ছোট দেশের পাল্লা দেওয়া কোনদিনই সম্ভব না। কিন্তু আমরা চাইলে ভারতের চিপ লেবারের তুলনায় আমাদের চিপ লেবারদের একটু উন্নত পর্যায়ে রাখতে পারি কারণ আমরা মুসলমান দেশ এবং অন্য মুসলিম দেশগুলর সাথে সংযোগ স্থাপনে ইসলাম একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে যা হিন্দুত্ববাদী ভারতের পক্ষে সম্ভব না। আমাদের বাংলাদেশকে মুসলিম দেশ গুলোর কাছে আমাদের এই মুসলিম পরিচয় ও ইসলামিক দেশ হওয়ার গৌরব কে ফলাও করে প্রচার করতে হবে এবং সেভাবেই মুসলিম দেশ গুলোর কাছে মার্কেটিং করতে হবে জেনো... তারা কোন হিন্দু দেশের লেবারের বদলে আমাদের মত মুসলিম দেশের লেবার নেওয়াকে বেশী গুরুত্ব দেয়।
ভারত বাংলাদেশের এই সম্ভাবনা কে ভালোভাবেই জানে আর তাই পরিকল্পিত ভাবেই ভারত বিগত ১৭ বছর আমাদের প্রবাসী কর্মসংস্থান কে ধ্বংস করেছে হাসিনাকে দিয়ে।
এবার আসি, সর্বশেষ বিষয়... দেশের ইসলামের চর্চা বাড়ালে অনন্যা মুসলিম চরমপন্থি দেশ যেমন আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের সন্ত্রাসী প্রভাব পড়বে কিনা দেশে?
হ্যাঁ... রিস্ক একটা তো থেকেই যাই কারণ আগেই বলেছি ধর্ম খুবই সেনসিটিভ একটা বিষয় এবং এটাকে খুবই সেন্সিটিভিটির সাথে হ্যন্ডেল করতে হয়। তবে মজার বিষয় হলো, এখানে আমরা ভারত থেকে একটা বেনিফিট পাবো। ভারত নিজেদের স্বার্থে আমাদের দেশে বহু বছর থেকে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে আসছে। কিন্তু ভারত জানে যে এই দেশে আসলে কোন জঙ্গি নেই এবং জঙ্গি থাকলে বরং ভারতেরই বড় সমস্যা হবে। ইসলামি জঙ্গিবাদের জিও পলিটিক্স যারা বোঝেন তারা সহজেই বুঝবেন যে, কেনো ভারত নিজের স্বার্থেই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের প্রভাব বিস্তার করতে দেবে না। সুতরাং খেলাটা হলো... ভারত নিজের স্বার্থে আমাদের বাইরে জঙ্গিবাদের প্রভাব থেকে রক্ষা করবে আর আমারা দেশের ভিতরের জঙ্গিবাদের প্রভাব ঠেকাবো নিজেদের স্বার্থে।
দীর্ঘ ৫৭টি বছর দেশ চলেছে অন্যের ইচ্ছায়। এখন সময় এসেছে নিজের পরিচয় কে মেনে নেওয়ার এবং নিজেদের দেশ নিজে গড়ার। বাংলাদেশের মুসলিম পরিচয় আমাদের কোন দোষ না বরং এটা আমাদের বৈশিষ্ট্য।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


