somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেক্যুলারিজম মানে কী : ধর্মহীনতা নাকি ধর্মনিরপেক্ষতা!

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুয়েকজনরে চিনি, যারা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করেন সেক্যুলারিজমের ব্যানারে। সেক্যুলারিজমের আভিধানিক অর্থ বলার প্রয়োজন এখন আর নাই। সবাই জানে, সেক্যুলারিজম অর্থ সোজাকথায় ধর্মহীনতা। নট কানেক্টেড উইথ রিলিজিয়াস এন্ড স্পিরিচুয়াল ম্যাটারস। কথা হইলো, এই সেক্যুলারিজমের উৎপত্তি কিভাবে?

বলা হয়া থাকে, তৎকালীন খ্রিষ্টান গীর্জা থিকা প্রচলিত আইন বা ধর্মের নামে পোপরা খ্রিষ্টান ক্যাথলিকদের ওপর নির্যাতন চালাইত, সেই নিপীড়ন থিকা মুক্তির জন্যই সেক্যুলারিজমের প্রবর্তন ঘটে। যেন ধর্ম গীর্জাতে থাকে আর রাষ্ট্রব্যবস্থায় থাকে গণতান্ত্রিক সংবিধান। এই অর্থে সেক্যুলারিজমের আক্ষরিক অনুবাদ ধোপে টেকে না। তাই এর প্রচলিত অর্থ করা হয়, স্বতঃস্ফুর্তভাবে যার যার ধর্মপালনের স্বাধীনতাকে। বর্তমানে এইটারে এককথায় প্রকাশ করা হয় ধর্মনিরপেক্ষতা।

এই সেক্যুলারিজমের উৎপত্তি হইলো খ্রিষ্টানিটি থিকা। তেমনি ফান্ডামেন্টালিজম বা মৌলবাদের জন্মও খ্রিষ্টানিটি থিকা। অষ্টাদশ শতাব্দীকে মোটামুটি ধরা হয় বিজ্ঞান আবিষ্কারের সূচনাযুগ। এই বিজ্ঞান আবিষ্কারের পর থিকা খ্রিষ্টধর্মের অনেক বিশ্বাস ও প্রচলিত ধারণার ওপর আঙুল ওঠতে থাকে। এখান থিকাই নাস্তিক্যবাদের আচরণ দেখা দেয় ধার্মিক মনে। তখন আমেরিকান খ্রিষ্টানদের একটি অংশ খ্রিষ্টধর্মের রক্ষার জন্য একটা আন্দোলন শুরু কইরা দেয়। এই আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে থাকে লেখক, পণ্ডিত, পাদ্রী এমনকি মন্ত্রীও। এরপর ধারাবাহিকভাবে ১২টি ভলিউমে খ্রিষ্টধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো লেইখা ছাপানো হয়। এই ভলিউমগুলোর নাম দেয়া হয়, দ্য ফান্ডামেন্টালিজম বা মৌলবাদ।

ধর্মের নামে যত নিন্দনীয় কাজ হইছে অন্যান্য ধর্মে দুঃখজনকভাবে সেগুলোর বোঝা চাপছে ইসলামের ঘাড়ে। ইসলামে ধর্মের নামে উগ্র সাম্প্রদায়িকতাও নাই, মৌলবাদিতাও নাই।

যাই হোক, বলছিলাম দুয়েকজন লোক যারা সেক্যুলার রাজনীতি করেন। ধর্মরে স্রেফ মনের মধ্যে রাইখা বিভিন্ন সামাজিক কাজে যোগ দেন মানবিক মূল্যবোধ থিকা। তাদের একজন আমারে একদিন বলতেছে। এই যে আমি সেক্যুলার রাজনীতি করি। বিভিন্ন মিটিং মিছিলে যাই। আমার পদ তো খুব বড় না। তাই আমার উপরপদস্থ লোকরে সমীহ কইরা চলতে হয়। যেমন, ধরেন একটা সমাবেশে গেছি। বক্তৃতা দেওন লাগবো। উপরপদস্থ ভাইয়েরা অন্যান্য ধর্মেরও আছে। এখন সেখানে গিয়া সালাম দিই কেমনে? বিসমিল্লাহ বইলা শুরু করি কেমনে? আল্লাহ শব্দ বলতেও কেমন দ্বিধা লাগে, তাই সৃষ্টিকর্তা বলতে হয়।

আমি তারে কইলাম, তাইলে তো সেক্যুলারের শেষ ভীতটারেও কফিনে ঢুকায়া পেরেক ঠুইকা দিলেন। সেক্যুলারের চেতনা তো হইলো, সবাই যার যার ধর্মপালনের স্বতঃস্ফূর্ত স্বাধীনতা পাবে। আপনে আল্লাহ বলবেন, আরেকজন ভগবান বলবে, তাতে সমস্যা বা সমীহকরণের কী আছে? সে চুপ হয়া গেল।

আপনে সেক্যুলার করেন, ভালো কথা। অন্যরে সমীহ করবেন, সেইটাও ভালো। কিন্তু নিজের ধর্মরে বিসর্জন দিয়া দিলে তো ওই ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলো কই, ধর্মহীনতা হয়া গেলো। আর এই ধর্মহীনতার আচরণ থিকা খোদ সেক্যুলারিজমও অতিষ্ট। সেক্যুলারিজমও চায়, সকল মানুষ যার যার ধর্ম নিয়া বাঁইচা, বাঁচার মতো বাঁইচা থাক। পরাশ্রয়ী হয়া নয়, নিজ আশ্রয়ে মাথা উঁচু কইরা। অথচ বর্তমান সেক্যুলারের এই দৈন্যদশা দেইখা খুব আফসোস লাগতেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×