যদি কেটে যায় মৃত্যু ভয়,
জেনো বিজ্ঞান লড়েছিল একা
মসজিদ মন্দির নয়।"
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্ব যখন টালমাটাল অবস্থা, স্থবির হয়ে পড়েছে সবকিছু। এ অবস্থায় করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যেই উপরের ছন্দজাতীয় কবিতা দিয়ে তৈরি ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। বৈশ্বিক এই দুর্যোগেও নিজেদের মার্কেটিং আর বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ থেকে বিরত থাকতে পারলো না বিজ্ঞান আর প্রগতির এসব ফেরিওয়ালারা।
মসজিদ মন্দিরের কাজ কি করোনার বিরুদ্ধে লড়া? বিজ্ঞানের সাথে এর তুলনা আসে কেন? বিজ্ঞানের কাজ বিজ্ঞান করবে। আদালত কি করোনার বিরুদ্ধে লড়ে? ল্যাব করোনার বিরুদ্ধে লড়তেছে। তাই বলে ফার্ম, ফ্যাক্টরি, মুদির দোকান, জাদুঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসনিক ভবন, হোটেল, এপার্টমেন্ট ইত্যাদি সবইকে করোনার বিরুদ্ধে লড়তে হবে?
মেনে নিলাম, বিজ্ঞান একা লড়ছে। তবে মসজিদ-মন্দির একাই যে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে তা নয়। ‘লড়াই’ শব্দটার সাথে যা যা জড়িত সেসবও তাকিয়ে দেখছে শুধু। কোটি কোটি ডলারের মারণাস্ত্র, নিমিষে দুনিয়া ধ্বংস করে দেওয়ার মতো পারমানবিক বোমা, যুদ্ধ বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, কামান, গোলা-বারুদ এই সব কিছুও অকেজো হয়ে পড়ে রইছে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিভাবে লড়ছে এসব?
বিজ্ঞানকে আমরা লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে দেখতে চাই না। পৃথিবী যে নিয়ম দিয়ে চলে সেটাই বিজ্ঞান। ভাইরাস যেমন বিজ্ঞান মেনে আমাদেরকে মারছে, আমরাও বিজ্ঞান ব্যবহার করে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করছি, এই যা। মসজিদ-মন্দির তো বিজ্ঞান চর্চা করতে নিষেধ করেনি। আপনি নাস্তিক হতে পারেন, অসুবিধা নেই। ভিন্নমত থাকবেই। যুগে যুগে ছিল। মানুষ হিসেবে নিজস্ব দর্শন ও বিশ্বাস বেছে নেয়ার অধিকার সবার আছে। কিন্তু নিজের বিশ্বাস, নিজস্ব মত প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি অন্যের বিশ্বাসকে আক্রমণ করতে হয়, তবে অবশ্যই সেটা অন্যায়। মারাত্মক অন্যায়।
আরেকটা কথা, যদি বেঁচে যাও এবার মতো, যদি কেটে যায় মৃত্যুর ভয়। এই যদিমূলক সংশয় দিয়ে যারা বিজ্ঞানকে খোদার আসনে বসাচ্ছেন। একবার ভেবে দেখেছেন, যদি মৃত্যুর ভয় না কেটে যায়, যদি এবার না বেঁচে যান- কী হবে?
জেনো, মসজিদের আঙিনায় হয়েছে তোমার জানাযা। জেনো, শ্মশানে পুড়েছে তোমার লাশ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪১