somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিসর

২০ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৪:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিনদিন ভ্যাপসা গরমের পর আজকে কি যে সুন্দর বৃষ্টি হলো! সকালবেলাতে বাসা থেকে বেরুবার সময়ে মুগ্ধ হয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেই সুযোগ কিংবা সৌভাগ্য নওরীনের কপালে হলো কই? বের হতে হতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিলো বলে পড়িমড়ি করে অফিসে আসতে হয়েছে। টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়া দেখবে কি, কর্মস্থলে পৌঁছাবার জন্য একটা রিকশা ধরতেই তার প্রাণ যায় যায় অবস্থা। গতোকাল রাতেই ঠিক করে রেখেছিলো বেশ আগে পরা সবুজ শাড়িটা পরে আজকে অফিসে আসবে। নিচের দিকে সামান্য ছেঁড়া বলে সকালবেলায় এই শাড়ি পরা নিয়ে মায়ের সাথে একচোট বেশ ঝগড়া হয়ে গেলো। মাতার উপরে নওরীন বেশ বিরক্ত হলেও মনে মনে তা চেপে রেখেছিলো। অনেক বয়স হয়েছে, সুগারের সমস্যা নিয়ে বেশ বিপর্যস্ত থাকে। তাছাড়া চিন্তাভাবনাতেও অনেক ওল্ডফ্যাশনড। নাইলে নিচের দিকে সামান্য ছেঁড়া সবুজ শাড়িটা কয়েকদিন নিয়মিত পরলেই বস রিফাত ভাইয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টির সিড়িতে উঠে আরেকটা প্রমোশন দিব্যি বাগিয়ে নেওয়া যাবে- মায়ের কাঁধে মুখ ঘষতে ঘষতে আদুরে গলায় এই গল্প কি নওরীন করতে পারতোনা?


‘আপা, রিফাত স্যার আপনাকে এই ফাইলটা দেখে দিতে বলছে। আর বলছে যেনো তার কাছে তাড়াতাড়ি ফাইলটা পাঠাই।’

ধ্যাত! সকাল সকাল সেজেগুজে শাড়ি পরে এসেছে কি টাক মাথার, মধ্যবয়স্ক , চূড়ান্ত আনইম্প্রেসিভ এই সিরাজ সাহেবের মুখ দেখতে? বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে উঠবার উপক্রম হলেও সহজাত ইম্প্রোভাইজেশনে নওরীন ভাবলেশহীন মুখেই ফাইলটা নেয়। সকালে শাড়ি পরবার সময়ে এমন কায়দা করে পরেছিলো যেনো কোমরের বেশ খানিকটা অংশ উন্মুক্ত হয়ে থাকে। দিন পনেরো আগে রিফাত ভাইয়ের গাড়িতে মাতাল অবস্থায় নওরীনের কাছে কথাটা সাবলীলভাবে বলে ফেলেছিলো। শাড়ি পরা মেয়েদের কোমরের কতকটা খোলা দেখতে তার নাকি বেশ ভালো লাগে। লোকটার অনেকগুলো গুণের মধ্যে এই একটা গুণ নওরীনের একটু বেশীই পছন্দ। খোলামেলা স্বভাবের। মনে যা আছে তাই বলে ফেলে। কোন রাখঢাক নেই। আর সেও দেখো, রিফাত ভাই জড়ানো গলায় যখন কথাটা বলছিলো সে কেমন গাড়ির সিটে দূরত্ব নিয়ে বসে ছিলো। তার কি তখন আরেকটু কনশাস থাকা উচিত ছিলোনা? এই মুহূর্তগুলোই তো কি করতে হবে বুঝে নেওয়ার আসল সময়। আর সে কিনা আচমকা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়ে রিফাত ভাইয়ের সরল স্বীকারোক্তির জবাবে কোন কথাই বলতে পারলোনা। মেয়েদের উইটও রিফাত ভাইয়ের খুব পছন্দ কথাটা সে ভালোমতোই জানে। অনেকদিন আগে একবার শুনেছিলো। এই অফিসে যেসব মেয়েদের চটজলদি প্রমোশন হয় তাদের উইট এবং সৌন্দর্য ডেভেলপ করবার ব্যাপারে রিফাত ভাইয়ের নিষ্ঠার কোন অভাব নেই। স্কুল থেকেই কতো ধরণের মানুষের সাথে সে মেলামেশা করে আসছে। এমনকি গানের সংগঠণেও গান শিখবার অস্বস্তিকর অংশটুকু বাদ দিলে চারপাশের সবাইকে হাসিতে মাতিয়ে রাখবার কাজটাও তো সে অনায়াসে করতে সক্ষম। অথচ এরকম ক্রুশিয়াল একটা মোমেন্টে চটজলদি কোন উইট তার মাথাতেই আসলোনা। রিফাত ভাই মেয়েদের এইসব ছোট ছোট ব্যাপার মনে রাখে এই বিষয়টা সে ভালো করেই জানে। এই যে আজকে সে এতো সাজসজ্জা করে এসেছে, রিফাত ভাইয়ের কোন খবরই নেই। একবার তার দিকে ভালো করে চেয়ে দেখলে রিফাত ভাইয়ের মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য। বেচারার কনজুগাল লাইফ খুবই হ্যাজার্ডাস। বউয়ের সাথে অনেকদিন হলো তার কোন বনিবনা নেই। একবার পার্টি থেকে বাড়ী ফিরবার পথে ক্যাজুয়ালী কোন এক মেয়ের রুপের প্রশংসা একটু বেশীই করে ফেলেছিলো- সেই থেকে স্ত্রীর সাথে স্বাভাবিক সম্পর্কটুকুও নেই। এমনকি বউ বেডরুমেও পর্যন্ত এলাউ করেনা রিফাত ভাইকে। একদিন খুব আবেগঘন গলায় নওরীনের কাছে কথাগুলো বলে বেশ ইমোশোনাল হয়ে গিয়েছিলো। প্রতিক্রিয়ায় খুব নরম কোমল গলায় রিফাত ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার খুব অল্পসময়ের মধ্যে তার প্রথম প্রমোশনটা হয়। ‘বুঝলা নওরীন, ইউ মাস্ট সিজ দা অপরচুনিটি।’ – রাফিন ভাই তাকে কথাটা বলেই গমগমে গলাতে হেসে উঠতো। উফ, রাফিন ভাই না, রাফি ভাই। একজনের নাম কি কথা আরেকজনের বলে মনে করবার বোকামীটা সে বারবার করে। নিজেকে কবে শোধরাতে পারবে? এই নিয়ে মাঝেমাঝে কি যে বিড়ম্বনায় পড়ে যায়। এই তো সেদিনও, বসুন্ধরা সিটিতে লাঞ্চ করতে গিয়েছিলো সবুজ ভাইয়ের সাথে। ভুলে বলে ফেলেছিলো সবুজ ভাইয়ের প্রিয় খাবার পিৎজা তার জন্য নিজে বানাবে। পরে সবুজ ভাইয়ের বিস্মিত চোখের দিকে তাকালে বুঝতে পেরেছিলো আসলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু রাজিবের প্রিয় খাবারের কথা বলে ফেলেছে। সবুজ ভাই মানুষ হিসাবে একটু বেখেয়ালী। তাই তেমন কিছু ভেবে বসেনি। কিন্তু দীপ হলে নওরীনের কপালে দুঃখই ছিলো। আজও মাঝেমাঝে দীপের সাথে ঝগড়া লেগে গেলে নওরীন নিজের দুর্ভাগ্যে কপাল চাপড়ায়। নিজে সুযোগ পেলে মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করতে দ্বিতীয়বার ভাবেনা, কিন্তু প্রেমিকা কারো সাথে একটু হেসেহেসে কথা বললেই মুখে সন্ধ্যাবেলার রেস্টুরেন্টের অন্ধকার নিয়ে আসবে। প্রেমিকের এই দ্বিচারীতা তার কাছে অসহ্যকর। কিন্তু কি আর করবে? এই নিয়ে সে কথা বলতে গেলেই দীপের মুখ ঝামটা আর রাজ্যের মিথ্যাচার। শেষমেষ ক্ষান্ত না দিয়ে তাই কোন উপায় থাকেনা।


রিফাত ভাইয়ের ইমার্জেন্সী ফাইলটা দেখে পাঠিয়ে দিয়েছে সেই কবেই। নিজের ডেস্কের দিকে তাকিয়ে দেখে তা বেশ হালকাই আছে। নিজের একটা ঘর পেলে পর্দার বাইরে দিয়ে কাজের ফাঁকে আকাশটা দেখতে পারতো। নওরীন লক্ষ্য করেছে আজকাল তার কথাবার্তা বেশ কাঠখোট্টা হয়ে গেছে। এতো এতো মানুষজনের সাথে প্রতিদিন তার ডিল করতে হয়। অফিসে বেশীরভাগ সময়ে তার কাজ বাইরে ক্লায়েন্ট ডিল করতে যাওয়া। স্মার্ট চলাফেরার কারণে ক্লায়েন্টরা তার সাথে কথাবার্তা বলতে খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বলে রিফাত ভাই বেশীরভাগ সময়তে ক্লায়েন্টদের ডিল করতে তাকেই পাঠায়। প্রথমে প্রথমে একটু ভয় ভয় করলেও এখন সে খুবই কমফোর্টেবল। এই কারণে একবার এক বড় কোম্পানীর চাকরীর অফারও তার কাছে চলে এসেছিলো। রিফাত ভাইকে মৃদু গলায় কথাটা বলতেই তার স্ট্রেইট নো শুনে নওরীনের মনে হয়েছিলো এই স্পষ্ট না এর ভেতরেও একটা অসহায়ত্ব আছে। তাই সেই কোম্পানীর এমডিকে তার পক্ষে যতোটা ভদ্রস্থ হওয়া সম্ভব তা বজায় রেখেই না বলে দিয়েছিলো। অথচ সেই কোম্পানীতে স্যালারীর ফিগারটা বেশ মোটাসোটাই ছিলো। সেই অফার নওরীন এক্সেপ্ট করলে এতোদিনে কি নিজের একটা ঘর সে পেতোনা? নিজের একটা ঘর না পাওয়ার বঞ্চনায় রিফাত ভাইয়ের মাখোমাখো কথার প্রতি তার বেশ বিরাগ জন্মে। কপালের শিরা দপদপ করতে গিয়েও পাঁচ গজ দূরত্বের ডেস্কে থেকে আসা ফিসফিস বাক্যমালায় শেষ মুহূর্তে নিজেকে সংযত করতে সমর্থ হয়। সেই ডেস্কের কর্ত্রী বিবাহিতা নিশা কাজে ফাঁকি দেওয়ার সামান্য সুযোগ পেতেই প্রেমিকের সাথে প্রেমালাপ শুরু করে দিয়েছে। প্রথমদিন থেকেই মেয়েটাকে দেখে নওরীনের পছন্দ হয়নি। চলাফেরা, পোশাকআশাক এতো ক্ষ্যাত- এরকম একজনের পাশাপাশি তাকে কাজ করতে হবে চিন্তা করতেই তার গা গুলিয়ে এসেছিলো। মেয়েটার কথাবার্তা একটু পর্যবেক্ষণ করে শুনলে স্পষ্ট বোঝা যায় মফস্বলের মেয়ে। অথচ দেখো- ঢাকায় এসে একটা চাকরী জুটিয়ে নেওয়া মাত্রই কি দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে। বিবাহিতা মেয়ে, সামান্য সুযোগ পেলেই কি বোল্ডলীই না প্রেমিকের সাথে প্রেম করতে আরম্ভ করে! লাজলজ্জার কোন বালাই নেই। পাশেই যে কলিগ সেই খেয়ালটুকু তো অন্তত রাখবে। বিবেচনাবোধ বলে একটা বিষয় যে আছে মেয়েটা এখনো তা জানেই না। প্রেমিক জুটিয়েছে নিশ্চয়ই ঢাকায় আসবার পরে। এইসব মেয়ে একবার ঢাকায় পা দিলেই আল্ট্রা স্মার্ট হয়ে উঠে। নিজের শিকড় পর্যন্ত বেমালুম ভুলে যায়। কলেজে থাকতে সে যখন টিএসসিতে কবিতা আবৃত্তির সংগঠণ করতো এরকম অনেক মেয়েকেই দেখেছে। মফস্বল থেকে দুইদিন হলো শহরে পা দিয়েছে- ব্যাস চালচলনই পুরোদস্তুর বদলে গেলো। উগ্র সাজপোশাক, কথাবার্তায় কি ডেসপারেটনেস! সে নিজে শহরে জন্মে আজীবন শহরে থাকা মানুষ- তারও কি এতো সাহস হয়েছে যে রাতবিরাতে বন্ধুবান্ধবের সাথে ঘুরে বেড়াবে এই মর্মে বাপ-মায়ের কাছে পারমিশন নেবে? স্কুলে ক্লাস টেন হবে, একবার মায়ের কাছে বান্ধবী শিমুর বাড়িতে থাকবার পারমিশন চাইতে না চাইতেই গালে বিশাল এক চড় খেয়েছিলো- নিশাকে প্রেমিকের সাথে গুটুরগুটুর করতে দেখলেই চড়ের নকশাঅংকিত সেই গালের কথা মনে পড়ে নওরীনের গাল জ্বালা করে। মাঝেমাঝে সে নিজেও কৌতূহলী কানেই কলিগের প্রেমালাপ শোনে। মেয়েটা বড্ড ন্যাকা। সুযোগ পেলেই ঘ্যানঘ্যান করে প্রেমিককে অনুরোধ করবে তাকে বসুন্ধরা সিটিতে সিনেমা দেখাবার। এই মেয়ের স্বামীটা কি নির্বোধ? শহরে এরকম বোকাসোকা কোন মানুষও থাকতে পারে যে কিনা স্ত্রীর পরকীয়া বুঝতে অক্ষম? নাকি সবই জানে, কিন্তু পৌরূষের অভাব প্রকট বলে কিছু বলতে সাহস করেনা? বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে নারী অধিকার নিয়ে সচেতন এক সংগঠণে কাজ করার সময় থেকেই বিষয়টি নিয়ে নওরীন দারুণ সচেতন। কিন্তু ম্যাদামারা পুরুষ তার কাছে অসহ্যকর। স্ত্রী-প্রেমিকা এদের পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দিলেই তো চলে- তাই বলে কি ভেড়া হয়ে থাকলে চলে? স্ত্রী পরকীয়া করলে কিংবা প্রেমিকা লুকিয়ে অন্যদের সাথে ফ্লার্ট করছে জেনেও যদি চুপ করে থাকে তাইলে কিসের পুরুষমানুষ? তবে দীপের সাথে বেশ বড়সড় ঝগড়া হয়ে গেলে ফেসবুকে সাব্বিরের সঙ্গ নওরীনের মন্দ লাগেনা। ছেলেটা এতো নিরীহ; তার প্রেমিকা তাকে ছেড়ে অন্য একজনের কাছে চলে গেছে কতো বছর হলো- এখনো প্রাক্তনপ্রেমিকার কথা ভেবে কাতর হয়ে পড়ে। সেই কাতরতা এতোটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ের যে মাঝেমাঝে নওরীনের পর্যন্ত তাকে সান্ত্বনা দিয়ে নরম, ভেজা ভেজা কথা বলতে হয়। প্রথম প্রথম সাব্বিরের এই নরম কোমল স্বভাবকে সে ভেবেছিলো অভিনয়। কিন্তু তিন থেকে চারবার দেখা করার পরে বুঝেছে দীপের সাথে খুব ঝগড়া হলে মাখোমাখো কথা বলা ছাড়া তার জীবনে ছেলেটার আর কোন প্রাসঙ্গিকতাই থাকতে পারেনা। এই সাব্বিরের মতো স্বভাবের পুরুষমানুষের ভাগ্যে নিশার মতো চালু মেয়েই শেষ পর্যন্ত জোটে। পৌরূষহীন পুরুষমানুষ নওরীনের বিশেষ একটা পছন্দের না হলেও স্বামীর সাথে নিশা মেয়েটার এই ধারাবাহিক প্রতারণা সে একেবারেই অনুমোদন করতে পারেনা। যতো যাই হোক, স্বামীকে ভালোই যদি না বাসবি তাইলে সম্পর্ক রাখা কেনো? এমন তো নয় যে অর্থনৈতিকভাবে স্বামীর প্রতি মেয়েটা নির্ভরশীল। দিব্যি গুছিয়ে চাকরীবাকরী করছে। স্যালারী যা পায় তাতে নিজে বেশ ভালোভাবেই থাকতে পারবে। চাইলে সেই প্রেমিক ছেলেটাকে বিয়েও করে নিতে পারে। কিন্তু স্বামীর সাথে এই ধাপ্পাবাজির তো কোন মানে হয়না। তবে বসুন্ধরা সিটিতে রাজিবের প্রিয় খাবার সবুজ ভাইয়ের বলে চাপিয়ে দেওয়ার ঘটনাটা হতচ্ছাড়া স্মৃতিশক্তি বেয়াদবের মতো মনে করিয়ে দিলে স্বামীর সাথে সহকর্মীর প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা থেকে নওরীন নিজেকে ক্ষান্ত দেয়।


সবুজ শাড়ী পরে এসেও সারাদিনে রিফাত ভাইয়ের ধারেকাছে ঘেঁষবার সুযোগ পাওয়া গেলোনা। এর কোন মানে হয়? ডেস্কে যা কিছু ফাইল ছিলো সেগুলার কাজ সেরে নিয়ে নওরীন অফিস থেকে ছুটির বেশ আগেই বেরিয়ে পড়লো। কিন্তু লাভ হলো কই? ট্রাফিক জ্যামের থেকে এতো সহজে মুক্তি আছে? তার উপরে রাস্তাজুড়ে ডাস্ট আর মানুষজনের হাউকাউতে নাভিশ্বাস উঠে যাবার যোগাড়। একবার চারিদিকে চেয়ে দেখলেই তো বিবমিষা জাগে। চৌরাস্তার মোড়ে তিনটা রিকশা আর একটা প্রাইভেট কারের মধ্যে হাঙ্গামা লেগে গেছে। দুই রিকশাওয়ালা অপরের রিকশার স্পোকে নিজেরটা ঢুকিয়ে দিয়ে কোথায় তা বের করবে তা না- দশ মিনিট ধরে অপরের মায়ের সাথে সঙ্গমের বাসনা ব্যক্ত করে চলেছে তো করে চলেছেই। সাদা রঙের প্রাইভেট কারটা দ্রুত বেরিয়ে যাবার তাড়নায় রঙ সাইডে টার্ন করিয়ে আপাত ছোটখাটো জ্যামকে বেশ বড়সড় বানিয়ে ফেলেছে। ট্রাফিক সার্জেন্ট তিনবার বাঁশি বাজিয়েও কোন সুবিধা করতে পারলোনা। ফুটপাথে মানুষের ভিড়ে হেঁটে জায়গা করে নেবে সেই সুযোগও নেই। মানুষজন সম্ভব হলে নিজের চলাচলের সুবিধার্তে ফুটপাথের কিনারে থাকা ছোট্ট ড্রেনের মধ্যে অপরকে ফেলে দেয়। ফুটপাথ থেকে ডানপার্শ্বে এটিএম বুথ থেকে বেরিয়ে এক বৃদ্ধ চারপাশের মানুষের তোয়াক্কা না করে কি কুৎসিতভাবেই না হাই তুলছে! এটিএম বুথ থেকে সাত কি আট গজ এগিয়ে গেলে যেই সুপারশপটি দেখা যাচ্ছে সেখান থেকে মানুষজন বাজার করে ভারি ভারি ব্যাগ বহন করে হৃষ্টচিত্তে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। এদিকে ইদানিং নওরীন লক্ষ্য করেছে যে সুপারশপ থেকে বামদিকে টার্ন নিলে সামান্য যেই ফাঁকা জায়গাটা পাওয়া যেতো সেখানে দুইজন মধ্যবয়সী ছেলেদের অন্তর্বাসসহ তাবিজ, আতর এইসব নিয়ে দিব্যি জমিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। মানুষজন অনেকসময় নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অন্তর্বাস দেখে, আতরের গন্ধ শুঁকে- পছন্দ হলে কিনে নিয়ে হেলেদুলে রাস্তায় হাঁটে। বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা আতর থেকে চোখ সরাতে সরাতে হুডখোলা একটা নির্দিষ্ট রিকশার দিকে নওরীনের চোখ পড়ে গেলে নিজের বুকে সে ড্রামের শব্দ শোনে। সেতু না? প্রেমিক আসিফের সাথে রিকশা করে ঘুরছে। সেতুর সাথে নওরীন স্কুলে পড়ার সময় থেকেই পরিচিত। চলাফেরা, সাজপোশাক, কথাবার্তা- কোনদিক থেকেই সেতুকে স্মার্ট বলবার কোন যুক্তি নওরীন খুঁজে পায়না। গুণের মধ্যে কেবল একটাই আছে সেতুর, খুব ভালো গান করতো। না না, সেতুর সুন্দর গান গাইবার বিষয়টি নিয়ে মাথা না ঘামানোই ভালো। কলেজে পড়বার সময়ে গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলো। তার অনেক বছর পরেও নওরীনকে দেখলেই গানের শিক্ষকরা সেতু সম্পর্কে জানতে চাইতো। নওরীন নিজে কি খারাপ গাইতো? বৃষ্টির সময়ে টিএসসিতে যখন ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে’ গানটা সে গলায় তুলতো তখন তার দিকে অগুনতি যুবক চোখজোড়ার মুগ্ধ দৃষ্টি কি সে দেখেনি? তারপরেও শিক্ষকরা সেতু ছাড়া আর কিছু বুঝতেই চাইতোনা। এ কি তার প্রতি অবিচার নয়? সে নিজেও গানের সংগঠণ ছেড়ে দিয়েছে অনেকদিন হলো তবে এখনো সে বিশ্বাস করে সেতুর কারণে প্রাপ্য পরিচিতিটুকু থেকে সে বঞ্চিত হয়েছে। গানের এই ব্যুৎপত্তির পরেও সে কখনো কল্পনাই করেনি যে সেতুর মতো মেয়েকেও একদিন তার গুরুত্ব দিতে হবে। যোগাযোগটা তাদের নিয়মিতই কিন্তু সেতুকে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ তা নয়। প্রধান এবং একমাত্র কারণ সেতুর প্রেমিক। আসিফের মতো চৌকস চেহারার ছেলের সাথে আর যাই হোক সেতুকে একেবারেই মানায়না। কথাটা নওরীন তাদের মিউচুয়াল অনেক বান্ধবীকেই প্রসঙ্গক্রমে বলেছে। শুধু কি চেহারা? আসিফের সাবলীল চলনবলনের সাথে তুলনা করলে সেতু কোনভাবেই ম্যাচ করেনা। তবে আসিফ ছেলেটা স্মার্ট হলেও কথাবার্তায় বেশ বেরসিক। আঁতেল স্বভাবের। তার সাথে যেদিন প্রথম পরিচয় হয়েছিলো- কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই ভারিক্কি ভারিক্কি সব বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলো। তখন কোন এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর ক্রসফায়ারের ঘটনায় দেশব্যাপী খুব হইচই। বিচারহীনভাবে মানুষকে খুন করার বিরুদ্ধে আসিফ আধাঘন্টা ধরে লেকচার দিয়েছিলো। ভদ্রতাবশত সে নিজের সাথে প্রাণপণ সংগ্রাম করে একবারের জন্যেও হাই তোলেনি। এরপরেও যতোবারই দেখা হয়েছে, সবসময় তার হাতে কোন না কোন কাঠখোট্টা বিষয়ের বই ছিলো। এতো হ্যান্ডসাম দেখতে একটা ছেলে, পোশাকেআশাকেও বেশ ঝকঝকে- কি ক্ষতি ছিলো একটু স্বাভাবিক ছেলেদের মতো হলে? স্বভাবে এতোটা সিরিয়াস না হলে কি ফেসবুকে তাকে নক দেওয়া যেতোনা? অবশ্যই যেতো। তাহলে তাদের পরিচয়টা আরো গাঢ় হতে পারতো। আসিফের কাছে তার কতো কিছুই না বলার থাকতে পারতো। সবুজ ভাই, রাজিব, সাব্বির- এদের সাথে আর কতোক্ষণই বা সময় কাটানো যায়? তাছাড়া আসিফ বেশ অবস্থাপন্ন ঘরের ছেলে। কিন্তু না, আসিফ সাহেবের এইসব নিয়ে চিন্তা করবার সময় কই? মুখে সবসময় সিরিয়াস সিরিয়াস একটা ভাব, হাতে কাঠখোট্টা বই আর সেতুর মতো মা-খালা টাইপের একজন প্রেমিকা জুটিয়ে বাবু আজীজ সুপার মার্কেটের বাইরে আর কিছু চিন্তা করতে রাজি নন! সেতু মেয়েটাও বেশ চালাক আছে। নিশ্চয়ই তার ব্যাপারে প্রেমিককে সাবধান করে দিয়েছে। মেয়েটা প্রচুর ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগে। সেই স্কুল থেকেই তো নওরীন তাকে দেখে আসছে। আসিফের আগে একটা প্রেমও করতে পারেনি। পারবে কিভাবে? কাছের বন্ধুবান্ধব প্রত্যেকেই ছিলো ছেলে। স্বভাবটাও ছিলো ছেলেদের মতো। পুরোদস্তুর টমবয় যাকে বলে। কোচিং শেষে পাড়া দিয়ে যখন হেঁটে যেতো ছেলেদের সাথে তার কোন তফাৎই করতে পারতোনা অন্য মেয়েরা। এরকম একটা মেয়ের সাথে আসিফের মতো একজন- যাক গে, তার অতো ভেবে কাজ কি? দীপের যন্ত্রণাতেই আজকাল সে বাঁচেনা। অফিস থেকে বাসায় ফিরে স্নান, খাওয়াদাওয়া সেরে রাতেরবেলা শুতে যাবার আগে পাঁচ দশ মিনিট কথা বললেই দীপের প্রতি নওরীনের কোন অভিযোগ থাকেনা। কিন্তু বাবুর তখন কাজ করবার সময়। তাই ফেসবুকে সবুজ ভাই কি সাব্বির ছাড়া সারাদিনের স্ট্রেস কাটাতে নওরীনের কাছে আর অপশন কই? এদিকে মুখে যতোই কাজের অজুহাত দিক; সুযোগ পেলেই অন্য মেয়েদের সাথে মাখোমাখো কথা বলার সুযোগ ছেড়ে দেওয়ার মানুষ দীপ নয় সে কি তা জানেনা? নিজের প্রেমিকাকে সে এতোটাই নাইভ মনে করে? সুপ্তি নামের তাদের এক বান্ধবী আছে- সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই দীপের জন্য দিওয়ানা। পাঁচ বছর হলো পরিবারসহ সুইডেনে চলে গেছে কিন্তু দীপের প্রতি ভালোলাগা একবিন্দুও কমেনি। এখনো দেশে আসলে একবারের জন্য হলেও দীপের সাথে দেখা করে যাবেই। এই বিষয়ে নওরীন কতোবার নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছে- তার সেন্টিমেন্টের কোন মূল্য দীপ দিলে তো? যতো যাই বলুক, ছেলেটা তিন বছরের সম্পর্কে তাকে কেবল জ্বালিয়েই গেলো। তার ভালোলাগা-খারাপলাগা কিছু নিয়েই কখনো সংবেদনশীলতা দেখালোনা। মা সচরাচর তার ব্যক্তিগত বিষয়ে তেমন একটা ইন্টারফেয়ার করেনা। তবে গতো পরশুদিন মাহতাব ভাইকে বাসায় ইনভাইট করে ডিনার করানোর কথাটা বেশ জোর দিয়ে বলেছিলো। অনেকদিন ধরেই নওরীন দেখে আসছে মাহতাব ভাইকে ডেকে ডেকে বাড়ীতে এনে খাওয়ানোর ব্যাপারে মা বেশ সিরিয়াস। মুখে কিছু না বললেও ইঙ্গিতটা ধরে নিতে নওরীনের তেমন কোন কষ্ট হয়নি। মাহতাব ভাই ক্যারিয়ারে বেশ দ্রুতই এস্টাবলিশড হয়েছে। সাড়ে তিন বছরের মাথায় ফ্ল্যাট, ব্যক্তিগত গাড়ি- এগুলা কি এমনি এমনি হয়? সবসময় দূরত্ব বজায় রেখে চলার চেষ্টা করলেও মায়ের ক্ষুরধার মস্তিষ্কের প্রশংসা না করে সে পারেনা। হাজার হোক, মা তো- মেয়ের প্রয়োজনটা ঠিক ঠিক বুঝতে পারে। শেষবার মাহতাব ভাই যখন বাসায় এসেছিলো তখন কথায় কথায় বলেছিলো যে দেশের বাইরে চলে যাবার চেষ্টা করছে। টাকাপয়সা যা জমিয়েছে তাতে করে ইস্ট ইউরোপের কোন একটা দেশে গিয়ে বিজনেস শুরু করতে তার সমস্যা হবেনা। ইশ, এই পর্যন্ত নওরীন বলতে গেলে বাংলাদেশই ভালোভাবে ঘুরতে পারেনি। সমুদ্র দেখেছে মাত্র দুইবার, একবার রাঙ্গামাটি আর একবার বগুড়া- দেশভ্রমণের পরিসর তার এটুকুই। ইস্ট ইউরোপে কতো কি আছে ঘুরবার, দেখবার- মাহতাব ভাইয়ের কাছে ইস্ট ইউরোপের কথা শুনতে শুনতে আরেকটু হলে মুখ ফসকে সেখানে নিজের ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছার কথা বলেই ফেলেছিলো। মাহতাব ভাই বুদ্ধিমান মানুষ, অতো আলগা প্রিটেনশনও নেই। বিশেষ ডিলিড্যালী না করে বিয়ের প্রপোজালটা হয়তো তখনই দিয়ে বসতো।


বাসার সামনের ছোট্ট রাস্তাটা প্যাঁচপ্যাঁচে কাঁদায় ভর্তি। একটু বেখেয়াল হলেই পা পিছলে পড়ে যাবে। নওরীন হ্যান্ডব্যাগটা সাবধানে বুকের কাছে নিয়ে পা টিপে টিপে হাঁটতে লাগলো। না, দীপের সাথে সম্পর্ক নিয়ে এতো টানাপোড়েন তার আর ভালো লাগছেনা। আর কতোদিন প্রেমিকের এইসব স্বেচ্ছাচারীতা সহ্য করা যায়? নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে মুখে কতো রাজাউজির মারে- আজ পর্যন্ত তাকে ভারতে পর্যন্ত ঘুরিয়ে নিতে আসতে পারলোনা। খালি তার সাথেই যতো চোটপাট, আর এসব সহ্য করার কোন মানে হয়না। বাসায় পৌঁছে একটু ফ্রেশ হয়ে মায়ের সাথে ঝগড়াটা মিটমাট করে নেবে। তারপর মাকে দিয়ে মাহতাব ভাইকে ফোন করিয়ে আগামীকাল কি পরশু তাদের বাড়ীতে ডিনারের আমন্ত্রণ জানালে ব্যাপারটা বেশ ভালো হয়। আর ইস্ট ইউরোপের কোন দেশে ঘোরার মতো কি কি জায়গা আছে ইন্টারনেটে তা সার্চ করে সে তো জেনে নেবেই।




সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৪:০২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×