somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রঙ্গীন ঘুড়ি
উড়তে ভালো লাগে,মেঘের সাথে লুকোচুরি ভাল লাগে। ভাল লাগে এক আকাশ তারা কে সাক্ষী রেখে নাবিকের মত পথ খুঁজে নিতে। চোখ বন্ধ করে একটা নীল সমুদ্র আকঁতে ভাল লাগে। আর ভাল লাগে "তুমি" তে হারিয়ে যেতে ।

"অত:পর তাহারা"

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




-এই,মেজাজ খারাপ করাবা না একদম।

-ও,এখন কিছু বললেই মেজাজ খারাপ? মেজাজ আমার খারাপ হয় না??

-বেশি কথা বলতেসো। এইজন্যই বলে মেয়েরা ২ লাইন বেশি বুঝে। আর তুমি তার থেকে বেশি। ৩,৪,৫... লাইন বেশি বুঝ।

-বর্ষণ, তুমি এইটা বললা?? তুমি??

-হুম বলসি। তো?? মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে?? স্পেড কে স্পেড ই বলসি।

-তুমি আমাকে আর ফোন দিবা না। প্যান প্যান মার্কা ম্যাসেজও দিবা না একটু পর "সরি জান,সরি জান" লিখে। খবরদার...

-কি করবা তুমি?? হুম?? দিলাম না ফোন। কার কি??

-বাই।

-ওকে ওকে। যাও। বাই বলা লাগবে না। আবার বাই মারায়...


আমি বর্ষণ। নামের কোন সার্থকতা রাখি নি। জন্মের পর বাবা মা ভেবেছিলেন ছেলে আমার 'পানি'র মত ঠান্ডা হবে। কারণও ছিল এই ভাবনার। কোন এক অদ্ভুত কারণে আমি নরমাল বাচ্চাদের থেকে কম হাত পা ছোঁড়াছুঁড়ি করতাম। তাই নাম রাখা হল বর্ষণ। কোমল কোমল ভাব।

কিন্তু আদতে হলো উল্টা। ঠান্ডা আমি বয়স বাড়ার সাথে সাথে হয়ে গেলাম ফুটন্ত পানির মত গরম। কারণে অকারণে রাগ করার অভ্যাসটা বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করে নিজের মধ্যে নিয়ে নিয়েছিলাম। মানুষজন ও আমার রাগ দেখে চুপ মেরে যেত। আমি পরোক্ষভাবে আরো মাথায় উঠলাম।

উপরে যে কথোপকথন টা দেখলেন ওইটা আমার মেয়ে বন্ধু "অদিতি'র" সাথে। অনেকগুলো বন্ধু থাকলেও মেয়েবন্ধু একজনই। বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট। তাই আর খোলাসা করে বললাম না আমাদের সম্পর্কটা। কোন মানুষ আগুণের সামনেও একদম ঠান্ডা কিভাবে থাকে অদিতিকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।

আজ আমাদের ২৬তম "ঝগড়া দিবস"। ৫ মাসের সম্পর্কে ইতোমধ্যে আমরা রেকর্ড করে ফেলেছি মনে হয় ঝগড়ার দিক থেকে। কি নিয়ে ঝগড়া করি জানতে চাচ্ছেন?? তাহলে শুনুন।

আমি সারাদিন এ বাইরে থেকে আসি। সারাদিন তেমন কথাবার্তা হয় না অদিতির সাথে। ভাবি অদিতি আমার খোঁজ নিবে। ফেসবুক খোললেই একটার পর একটা ওর ম্যাসেজ থাকবে। ইনবক্সে থাকবে কিছু অস্থিরতা। কিন্তু কিসের কি?? একটা ম্যাসেজও দেয় নি। রাগ করবো না বলুন??

একটা ম্যাসেজ দিতে কি খুব কষ্ট হয়?? চিন্তা করেছি ১২ ঘন্টা কোন কথা বলবো না। বুঝার দরকার আছে আমাকে ছাড়া কেমন লাগে।


আগের ২৫ বার কি করেছি আমি?? আগের পঁচিশবার ও আমাকে "সরি" বলেছে। তারপরই কথা বলেছি। হুহ... আমিও কম না। এত সহজ?? খোঁজ নিবে না একটা। বাসে আসার পথে এক্সিডেন্টও তো করতে পারি।

আমি আজ বলবোই না "সরি"। ওহ শিট... মুখ ফসকে কি জানি একটা কথা বেরিয়ে গেল।


কি ব্যাপার?? ১২ টা পার হয়ে গেল। এখনও কোন কল,ম্যাসেজ কেন দেয় নি?? ও কাজটা ঠিক করতেসে না। একটা কল,ম্যাসেজ দিলেই তো রাগটা চলে যায়। যতই মুখে বলি রাগে মরি যাচ্ছি,আসলে সত্যি কথাটা বলি শুনুন। কাউকে আবার বলবেন না। কেমন??

ও ম্যাসেজ, কল না দিলে না আমার খুব খারাপ লাগে। আপনারা আবার ওকে বলবেন না এটা। সিক্রেট কিন্তু । ও শুনলে খবর আছে আমার। আমি শিউর দেখা হলে পরেরবার "নাক" ধরে টান দিবে। এত জিনিস থাকতে নাক ধরেই কেন টান দেয় এটা একটা রহস্য।

যাই হোক, ও যখন ম্যাসেজ দিচ্ছেই না তখন কি আর করা?? আমিই দেই ।

-সরি
-(no reply)
-সরি তো।
-(no reply)
-জান
-খবরদার জান ডাকবা না। ঢঙ !
-আর হবে না।
-কি হবে না?
-ঝগড়া হবে না।
-এত একই কথা ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে আর কতবার বলবা?
-যতবার শুনবা..
-আমার ঠেকা পড়সে নাকি?
-আমার ঠেকা পড়সে।
-কেন?
-আমি চোখে শুধু সর্ষে ফুল দেখতেসি।
-দেখবাই তো। আজকে সর্ষে ফুল, কালকে পাখি।
-পাখি তো ভাল জিনিস। দেখলে চোখ ভাল থাকে। চোখের ব্যায়াম হয়।
-তাই না?? কালকে আস। নাক ফাটাবো তোমার। আগে তো টান দিয়ে ছেঁড়ে দিসি। কাল ফাটাবো। ডাক্তার নিয়ে আসবা দেখা করতে।
-আচ্ছা, তাহলে শেষ?
-কি শেষ? রাগ? নো ওয়ে...
-প্লিজ, ইয়েস ওয়ে হয়ে যাক।
-কানে ধর। সেলফি তোলে পাঠাও। তারপর।
-জান..
-আবার? চুপ। ফোন রাখ। ফেসবুকে আমাকে ছবি ইনবক্স কর। কুইক। যতদেরি হবে তত কিন্তু পানিশমেন্ট বাড়বে। বলে দিলাম।
-বাসায় অনেক মানুষ।
-তো? প্রেম করার সময় বাসার মানুষ কই ছিলো? দিতে বলসি দাও। না হলে...
-আচ্ছা। তাহলে রাগ শেষ হবে তো??
-হুম।


তারপরের কাহিনী নিশ্চয় আর বলতে হবে না। জানেন প্রত্যেকবার এইটাই হয়। ওর সাথে কেন যে রাগটা করতে পারি না। আসলে অনেক ভালবাসি তো তাই। অনেক সময় অনেক বেশি এক্সপেক্ট করে ফেলি। হয়ত অধিকার থেকেই। ভালবাসায় অধিকার থাকবেই। সেটা যেভাবেই হোক যে অবস্থাতেই হোক। ঠিক বলি নি?

আর আমার না খুব ভাল লাগে। এই খুঁনসুটিগুলো। খুব সম্ভবত ওর নিজেরও ভাল লাগে। তাই আমাকে এইভাবে নাচায় আর আমি বাঁদরের মত নাচি। আমার লজ্জা হওয়া উচিত।

দেরি হয়ে যাচ্ছে। সেলফি দিতে বলেছে। না হলে আবার কি পানিশমেন্ট দিয়ে বসে কে জানে। আপনারা একটু অপেক্ষা করুন।

-এই সেলফি পাইসো?
-তোমাকে তো সেই কিউট লাগতেসে।
-তাই জান?? কতদিন পর কিউট বললা
-হুম। একদম ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত কিউট।
-অদিতি তুমি আমাকে ছাগলের বাচ্চা বললা??
-আরে বাবা আমি মজা করে বলেছি। এটা তো ফান। গাধাও বুঝে।
-ও ছাগলের বাচ্চা থেকে এখন গাধা হয়ে গেছি?
--উফ বর্ষণ। আমাকে শান্তি দিবা না??
-তুমি যা খুশি তাই বলবা আমাকে?? ফান ফান বলে সব উড়িয়ে দাও। আমার ভাল লাগে না বুঝো না??
-আরে,তুমি আবার ওভার রিএক্ট করতেসো।

এই যান তো এখন এখান থেকে। অনেক গল্প পড়সেন।
আর পড়া লাগবে না।বেশি পড়লে বদ হজম হবে। ঘুমান তাড়াতাড়ি। আমাদের ২৭তম ঝগড়া শুরু হয়ে গেছে। মজা নেয়া লাগবে না আর আপনাদের।

ও আর একটা কথা, এইবার কিন্তু আমি 'সরি' বলবই না। ফাইনাল... আপনারা স্বাক্ষী । যান এইবার ।


-ওই হ্যালো , অদিতি তুমি ফোন রাখ। আর ফোন দিবা না...........


(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×