বিশিষ্ট কুর্দি কবি ও লেখক আবদুল্লাহ পেশোয়ারকে বহুল জনপ্রিয় জীবিত কুর্দি কবি হিসাবে গণ্য করা হয়। জন্মেছিলেন ১৯৪৬ সালে ইরাকী কুর্দিস্তানের আর্বিলে। সেখানে টিচার্স ট্রেনিং ইন্সস্টিটিউশনে লেখাপড়া করেন। তিনি ১৯৭০ সালে বাগদাদে কুর্দিজ রাইটার্স ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠায় সংযুক্ত ছিলেন। কিন্তু ১৯৭৩ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চলে যান। এবং ১৯৭৯ সালে এমএ আর ১৯৮৪ সালে দর্শনশাস্ত্রে পিএইচডি করে পরবর্তী ৫ বছর লিভিয়ার ত্রিপলিতে শিক্ষকতা করেন। এরপর ১৯৯৫ পর্যন্ত ফিনল্যান্ডে বসবাস করেছেন। তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ১৯৬৩ সালে আর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ১৯৬৭ সালে। তারপর তাঁর আরও সাতটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলো ’বড়উ জর্দাপার (গোধূলির দিকে যাত্রা)’ আর ’হেসপিম হিউরু রেকিফিম চিয়া (মেঘ আমার ঘোড়া, পর্বত আমার রেকাব)’। এছাড়া তিনি কুর্দিতে ওয়াল্ট হুইটম্যান আর আলেকজান্ডার পুশকিন অনুবাদ করেছেন।
আবদুল্লাহ পেশোয়ার
১.
যদি চাও
তোমার বাচ্চাদের বালিশগুলো
প্রস্ফুটিত হোক পিঙ্কের মতো,
যদি চাও বরফ-সাদা সিল্কি
স্বপ্নের দোলনায় বেষ্টিত হোক ওরা,
যদি তুমি চাও ওদের ডায়াপার হোক
রংধনুর মতো রঙীন আর
মসীহার হৃদয় দিয়ে
খেলুক পুতুল ওরা,
যদি চাও
ইক্ষুর ফলনে ভরে উঠুক তোমার আখক্ষেত,
যদি চাও তোমার আনন্দের উচ্ছ্বাস থেকে
সূর্য তার তৃষ্ণা মেটাক,
যদি চাও ওই ঘন মেঘেরা তোমার মাঠগুলোয়
সবুজের বার্তা পাঠাক আর
মেলে ধরুক বসন্তের ঢুলুঢুলু চোখের ওই পাপড়ি,
তাহলে মুক্ত করো—
মুক্ত করো
আমার জবানে বাসা বাঁধে
যেই পাখি।
০৪.০৬.১৯৭২
কুর্দিস্তান
২.
তোমার সাথে পরিচয়ের আগে,
আমি ছিলাম আত্মকেন্দ্রীক, এক শিশু।
চওড়া আকাশটাকে
ভাবতাম একটা তাঁবু
আমার জন্যই টাঙানো রয়েছে, আর
অন্য কেউ নয় কেবল আমার দ্বারাই অধ্যুষিত
এই পৃথিবীটা একটি প্লাবন-পরবর্তী দ্বীপ মাত্র।
কিন্তু হঠাৎ করেই তোমার ভালোবাসা এসে পৌঁছুল আমার কাছে
আর ধ্বংস করে দিল আমার এই দুর্গ, দুর্গের দেয়ালগুলো,
বদলে দিল সব রঙ
বাতিল ঘোষণা করলো সমস্ত আইন।
আমার নির্জনতার জন্য
বিশাল পৃথিবীটাকে একটি খাঁচায় পরিণত করে দিলো সে।
শিখিয়ে দিলো
অর্ধেক বালিশে কী করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
০১.১২.১৯৭৩
ভরোনেজ
বাংলা অনুবাদ: ঋতো আহমেদ
২০।০৪।২০২০
ছবিসূত্র: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:১১