ক্রিকেট বিশ্বকাপ-১৯৭৯ বা প্রুডেন্সিয়াল বিশ্বকাপ'১৯৭৯ ছিল আইসিসি আয়োজিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ২য় আসর। ৯ থেকে ২৩ জুন, ১৯৭৯ মোট ১৫ দিন। প্রতিযোগিতাটি ২য় বারের মতো ইংল্যান্ডেই অনুষ্ঠিত হয়। ইংল্যান্ডে ২য় বারের মতো বিশ্বকাপ আয়োজনের যুক্তি ছিল প্রথম বিশ্বকাপের মতো। ইংলিশ গ্রীষ্মের সেই দীর্ঘ দিন ও আয়োজন করার সক্ষমতা। গ্রুপ ফরম্যাটও ছিল ১৯৭৫ বিশ্বকাপ ধাঁচের। টেস্ট খেলুড়ে ৬টি দেশ তো আছেই তার সথে অন্য দুটি দেশ মিলে মোট ৮টি দেশের অংশগ্রহণ। এখানে কিছুটা ব্যতিক্রম একটি ব্যাপার ছিল। চার বছর আগে শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা বিশ্বকাপে খেলেছিল আমন্ত্রিত দল হিসেবে। এবার এই আমন্ত্রনের মাঝে জুড়ে দেওয়া হয় বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসার শর্ত। তাই বলা যায় ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি ট্রফির আসর বসে। এতে বাংলাদেশও সেই সময় অংশগ্রহন করেছিল। তবে ফাইনালে উঠতে পারেনি। তখনকার দুই ফাইনালিস্ট শ্রীলঙ্কা ও কানাডা পায় দ্বিতীয় বিশ্বকাপে খেলার টিকেট।
আগের বিশ্বকাপের মতো এই প্রতিযোগিতার ধরণ ও নিয়মাবলী অপরিবর্তিতই রাখা হয়েছিল়। এই আসরের ভেনু ছিল ইংল্যান্ডের ৩ টি স্টেডিয়াম। প্রতিটি দলের ৬০ ওভার ইনিংস। সাদা পোষাক এবং লাল বল। দিনের আলোতে খেলা।
দ্বিতীয় বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন কিন্তু ওই আইসিসি ট্রফিতে ছিল না; বরং ক্যারি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপের প্রভাব ছিল এটি। ক্যারি পপ্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজটা ছিল বিদ্রোহী ক্রিকেটারদের সিরিজ। এই সিরিজেরই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল ক্রিকেট-বিশ্বের সব জায়গায়। পরিবর্তনের হাওয়া ছিল ওই ক্যারি প্যাকার ওয়ার্ল্ড সিরিজে।পূর্বের প্রচলিত সব ক্রিকেট প্রথাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আধুনিক ও নতুন ধাঁচের ক্রিকেট যেমন রঙিন পোশাক, সাদা বল, রাতের ক্রিকেট এসকল ব্যাপার যুক্ত করা হয় এই সিরিজে। দর্শকরাও দারুণভাবে লুফেও নিয়েছিল সিরিজটি। কিন্তু ‘রক্ষণশীল’ আইসিসি তখনও সেই পরিবর্তনের স্রোতে গা ভাসায়নি। তাই প্রাথমিকভাবে এই প্যাকার সিরিজে খেলা ক্রিকেটারদের নিষিদ্ধ করা হয়। যেমনটা করা হয়েছে আইসিএল সিরিজে তবু ১৯৭৯ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান ঠিকই ‘বিদ্রোহী’ খেলোয়াড়দের নিয়ে তাদের দল গঠন করে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সেটা করেনি। এর ফলে অস্ট্রেলিয়া দলটি এই আসরে তাদের খেলার রং হারিয়ে বিবর্ণ দুর্বল দল হয়ে যায়। ইয়ান চ্যাপেল, গ্রেগ চ্যাপেল, রডনি মার্শ, ডেনিস লিলিদের মতো সুপার স্টারদের বাদ দিয়ে দল গঠন করলে সেই স্কোয়াডে আর কেই বা থাকে বলুন?? এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক ছিলেন কিম হাগীস।
এই বিশ্বকাপে যে ৮টি দেশ অংশগ্রহণ করে সেগুলো হলো; যথাক্রমে- অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, নতুন যুক্ত হয় ব্রায়ান মাউরিচেটের দল কানাডা। বাদ পড়ে প্রথম বার অংশগ্রহন করা পূর্ব আফ্রিকা।
২য় বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপে ছিল ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা। এর মধ্যে কেবল কানাডার বিপক্ষেই ৭ উইকেটের জয় পায় হাগীসের অস্ট্রেলিয়া। বাকি দুই দেশ ইংল্যান্ড ও পাকিস্থান দলের সাথে যথাক্রমে ৬ উইকেট ও ৮৯ রানের পরাজয় বরন করে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় অস্ট্রেলিয়া দলটি। শেষ হয়ে যায় প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ যাত্রা। আগের বারের মতোই সবগুলো ম্যাচ জিতেই সেমি-ফাইনালে ওঠে মাইক ব্রেয়ারলের নেতৃত্ব দেয়া ইংল্যান্ড দল। আর দুটি জয় দিয়েই তাদের সঙ্গী হয় আসিফ ইকবালের নেতৃত্ব দেয়া পাকিস্তান দল। গ্রুপ পর্বে পাকিস্থান শুধু ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৪ রানে পরাজিত হয়েছিল।
তবে গ্রুপ 'বি’ তে সৃষ্টি হয় চরম নাটকীয়তা। সবথেকে বড় অঘটনের জন্ম দেয় শ্রীলঙ্কা। টেস্ট মর্যাদায় স্থান না পাওয়া অনুরা তিনিকনের এই দলটি শ্রীনিবাস ভেংক্টরাঘাবানের ভারতকে হারিয়ে পায় মর্যাদাপূর্ণ এক জয়। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ওই খেলায় আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ২৩৮ রান তোলে লঙ্কানরা। জবাবে ভারত অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৯১ রানে। ৪৭ রানে শ্রীলঙ্কার জয়টিই বলতে গেলে বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম অঘটন। ৫৭ বলে ৬৪ রান করা শ্রীলংকান এলআরডি মেনদিস হন ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ।
দুর্দান্ত সেই জয়ের পেয়েও কিন্তু সেমিফাইনালে যেতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। মার্ক বারগেসের নিউজিল্যান্ডের কাছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যাধানে হারায় এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলা বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় গ্রুপে তৃতীয় স্থান নিয়ে বিদায় নিতে হয় লঙ্কানদের। এদিকে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের কাছে ৯ উইকেটে, নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে এবং লঙ্কানদের কাজে ৪৭ রানের এই তিন ম্যাচ হারা ভারত দলকে বাড়ি ফিরে যেতে হয় শূন্য হাতেই। ওদিকে লঙ্কানদের সঙ্গে ম্যাচ বৃষ্টিতে পন্ড হলেও বাকি দুই খেলার জয়ে গ্রুপে সবার ওপরে থেকেই সেমি-ফাইনালে ওঠে ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। দুটি ম্যাচ জয়ের ফলে নিউজিল্যান্ড উঠে সেমিতে।
গ্রুপ পর্বের ১২টি ম্যাচের মধ্যে বেশিরভাগ খেলা ছিল একপেশে; কিন্তুু সেমি-ফাইনাল হয়ে ওঠে দুর্দান্ত ও ব্যতিক্রম। ২০ জুন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ড পায় রুদ্ধশ্বাস এক জয়। মাত্র ৯ রানের জয় ছিল এটি। নিউজিল্যান্ড টসে জিতে প্রথমে স্বাগতিকদের ব্যাটিং করতে পাঠায়। ইংল্যান্ডের শুরুটা তেমন ভাল হয় নি, ৩৮ রানের মাথায় ইংল্যান্ডের ২ উইকেট পড়ে যায়। ইংল্যান্ডের ওপেনার ব্রেয়ারলি করে ১১৫ বলে ৫৩ রান গ্রাহাম গুচের ৮৪ বলে ৭১ রান আর ডারেক রানডালের ৫০ বলে ৪২ রানের উপর ভর করে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মোট রান দাড়ায় ২২১ রান। ইংল্যান্ডের ২২১ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার জন রাইট আক্রমনাত্বক সুচনা করে ১৩৭ বলে তিনি করেন ৬৯ রান। কিন্তুু অপর প্রান্তে অনবরত উইকেটের পতনের ফলে শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন হয়ে দাড়ায় ৬ বলে ১৪ রান। শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান সংগ্রহ করে ২১২ পর্যন্ত যেতে পেরেছিল কিউইরা। একটি উইকেট অক্ষত ছিল তখনো, কিন্তু ততক্ষনে নির্ধারিত ৬০ ওভার যে শেষ হয়ে গেছে। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালের দেখা পায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
ওদিকে ঐ একই দিনে ওভালে আরেক সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সম্পুর্ন ম্যাচটাই ছিল নাটকীয়তায় ভরা। প্রথমে ব্যাটিং করা ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনার গর্ডন গ্রীনিজের ১০৭ বলে ৭৩ রান আর দেশমন্ড হায়নসের ১১৫ বলে ৬৫ রানের বদৌলতে ১৩২ রানের দারুন একটি উদ্বোধনী জুটি গড়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিত্তি। তার সাথে ভিভিয়ান রিচার্ড আর ক্লাইভ লয়েডের ৩৭ আর ৩৪ রানের বদৌলতে ছয় উইকেটে ২৯৩ রান তুলে ইনিংস শেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্থানের আসিফ ইকবাল ৫৬ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট নেয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১০ রানের মাথায় প্রথম উকেটের পতন ঘটে পাকিস্তান দলের। উদ্বোধনী জুটি ভেঙে গেলে মাজিদ খানের ১২৪ বলে ৮১ ও জহির আব্বাসের ১২২ বলে ৯৩ রানে দুর্দান্তভাবে খেলায় ফেরে পাকিস্তান। পাকিস্থানের রান তখন এক উইকেটে ১৭৬। ম্যাচের পাল্লা তখন প্রবলভাবে হেলে যায় পাকিস্থানের দিকে। হঠাৎ কলিন ক্রফটের আগুনের গোলায় রংবদল হয়ে যায় ম্যাচের। শুরুতে জহির খান ও পরে মাজিদকে আউট করে ক্যারিবিয়ানদের মুখে হাসি ফোটান এই ফাস্ট বোলার। এরপর জাভেদ মিয়ানদাত বোল্ড আউট হয়ে শূন্য রানে প্যাভিলনের দিকে ফিরে যায়। বড় ধরনের হোঁচট খায় পাকিস্থান। ওই হোঁচট থেকে পাকিস্তান আর ফিরতে পারেনি পাকিস্থান দল। একে একে ৭৪ রানের মধ্যেই ৯ উইকেটের পতন হয় পাকিস্থান দলের। ফলে ৫৬.২ ওভারে ২৫০ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্থান। থেমে যায় ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখা পাকিস্থান দলটির যাত্রা। আর ৪৩ রানের জয় পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ফাইনালে ওঠে ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যচ সেরা হন গর্ডন গ্রীনিচ।
২৩ জুন লর্ডসে ফাইনালে মুখোমুখি হয় প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা স্বাগতিক ইংল্যান্ড। টসে জয়ী হয়ে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় ক্যারিবীয়ানদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সূচনাটি তেমন ভাল হয়নি, এক পর্যায়ে স্কোর ৩/৫৫ থেকে ৪/৯৯ হয়ে যায়। গর্ডন গ্রীনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, আলভিন কালীচরণ এবং ক্লাইভ লয়েড আউট হয়ে যান। এরপর ৫ম উইকেট জুটিতে ভিভ রিচার্ডস আর কলিস কিং খেলতে থাকেন। কলিস কিং ৬৬ বলে ৮৬ রান করেন। রিচার্ডস একপ্রান্ত ধরে রেখে দলের স্কোর বড়াতে থাকেন। নীচের সারির ব্যাটসম্যানেরা একে একে সকলেই শূন্য রানে আউট হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রিচার্ডস ১৫৭ বলে ১৩৮ রান করে অপরাজিত থেকে নির্ধারিত ৬০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে ২৮৬ রানে নিয়ে যান। স্বাগতিকদের লক্ষ্যমাত্রা দাড়ায় ৬০ ওভারে ২৮৭ রান। ‘কিং’ রিচার্ডস ইনিংসের শেষ বলে হেঁটে গিয়ে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে ফ্লিক করে যে ছক্কা মারেন, সেটি হয়ে যায় ক্রিকেট রূপকথার চিরন্তন অংশ। গ্যালারিতে ছুটিয়েছে তুফান।
জবাব ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যান বেয়ারলি আর বয়কট ভাল সূচনা করেন। উদ্বোধনী এই জুটিতে রান হয় ১২৯, রিচার্ডসের মিতব্যয়ী বোলিংয়ে রান সংগ্রহের গতি কিছুটা কমে যায়। মাইক ব্রিয়ারলি ও বয়কট ব্যাটিং করছিলেন ধীর গতীতে। দুই অঙ্কে পৌঁছতে ১৭ ওভার লাগিয়ে ফেলেন তারা। চা-বিরতির কিছুক্ষণ পর রিচার্ডসের অফ স্পিনে ক্যাচ তুলে দেন ইংলিশ ওপেনার ব্রিয়ারলি। দুর্দান্ত ফিল্ডার ক্লাইভ লয়েডের হাত থেকে পড়েও যায় বলটি। অবশ্য অনেকে মনে করে ক্লাইভ লয়ডের মতো দুর্দান্ত ফিল্ডার ইচ্ছে করেই ক্যাচটি ফেলে দিয়েছিল যাতে ধীর গতিতে থাকা ইংলিশ জুটি আরো কিছুক্ষন সময় মাঠে থাকে। এক্ষেত্রে ক্লাইভ লয়েডের ভাষ্য হলো " অনেকেই বলেন যে, আমি নাকি ইচ্ছে করে ক্যাচটি ফেলে দিয়েছি। যেন ওই ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের পরাজয় ত্বরান্বিত হয়। এটি মিথ্যে। তবে অমনটা করলে তা ভালো কৌশলই হত। কেননা দুই ইংলিশ ওপেনার যত বেশি ওভার ক্রিজে কাটাচ্ছিলেন, তাদের কফিনে আরেকটি করে পেরেক ঠুকে দিচ্ছিল তা "-অনেক বছর পরে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কথাটা বলেন ক্যারিবিয়ান এই অধিনায়ক। লয়েড ইচ্ছে করে বয়কটের ক্যাচ ছাড়ুক বা নাই ছাড়ুক, ইংল্যান্ড হারের পথে নিয়ে যায় ঐ ধীর গতির ব্যাটিং । ১২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৩৯ তম ওভারে। ততক্ষনে রানের জন্য হাঁস-ফাঁস শুরু করতে থাকে ইংল্যান্ড শিবির। তখন তো আর ৩০ গজের বাধ্যতামুলক ফিল্ডিং যুগ ছিলনা, বাউন্ডারি লাইনে তাই ইচ্ছে সংখ্যক ফিল্ডার রাখতে পারেন লয়েড। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা রানের জন্য ব্যাট চালিয়েছেন আর হয়েছেন আউট। ১৩৫ রানে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় উকেটের পতনেরর পর এক সময় দুই উইকেটে ১৮৩ রানে পৌঁছেছিল ইংলিশরা কিন্তুু গার্নারের অসাধারন বলে ১৮৩ রানের মাথায় বোল্ড হন দুই ইংলিশ মিডল অর্ডার ব্যটসম্যান গাওয়ার এবং গোঁচ। ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৪/১৮৩। গার্নারের বোলিং তোপের মুখে এক এক করে আত্তসমর্পন করতে থাকে ইংলিশ ব্যাটিং। মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে পাঁচ ৫টি উইকেট পরে যায় ইংল্যান্ডের। অপ্রত্যাশিতভাবে ১৯৪ রানে অল-আউট হয়ে যায় ইংলিশরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ২৮৬ রান আর অতিক্রম করা হয়না স্বাগতিক দেশ ইংল্যান্ড এর। ম্যাচে ৩৮ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে ‘বিগ বার্ড’ জোয়েল গার্নার ৯২ রানেরর ব্যবধানে জয় পেতে বিশেষ ভূমিক রাখেন। তবে অপরাজিত সেঞ্চুরির ‘কিং’ রিচার্ডসের জন্যই নায়কের আসনটা বরাদ্ধ করা হয়েছিল। তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন খুব কাছে গিয়ে থেমে যায় ইংলিশদের। টানা দ্বিতীয় বারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। আর অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড দ্বিতীয়বারের মত ট্রফি হাতে নিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
মুলত ১৯৭৯ সালের বিশ্বকাপে পূর্বের আসরের ন্যায় কোন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
একনজর বিশ্বকাপ ক্রিকেট ১৯৭৯:
* মোট ম্যচ হয়েছিল: ১৫ টি
* দর্শক উপস্থিতি: ১৩২০০০(৮৮০০ প্রতি ম্যাচ)
* সর্বাধিক রান: গর্ডন গ্রীনিচ ( ২৫৩ রান)
* সর্বাধিক উইকেট: মাইক হেন্ড্রিক ( ১০টি)