মির্জা ফখরুলদের মাথায় যে তিল পরিমাণ ঘিলু নেই, তার প্রমাণ তারা যে রাজনৈতিক “দর্শণ” জিয়াউর রহমানের নিজ হাতে গড়া বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষাকারী দল বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠণ এবং “র” এর সাজানো প্ল্যান । ১৯৮১ সালে জিয়াকে হত্যার মাধ্যমে বিএনপির “বাংলাদেশী জাতীয়বাদী রাজনীতি”র কবর খোঁড়া শুরু হয়, ২০০৮ সালে তাদেরকে চেতনাশক দিয়ে অবশ করার মাধ্যমে স্লো পয়জন দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়ার কর্মসূচি শুরু হয় । মনে হচ্ছে ২০২৪ পরবর্তী এই সচেতনতার যুগে এনে তাদেরকে চুড়ান্ত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হেয়েছে । দেখুন হিসেব মিলিয়ে ২০২৪ এর এত বড় বিপ্লবের বিজয়ে অর্জিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের চরিত্র সম্পূর্ণরূপে আওয়ামীলীগেরই সীল সাপ্পোর লাগানো ফ্যাসিবাদী রূপ কি না ? জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটা ভাগাড়ে দলে পরিণত করে ফেলা হয়েছে কি না ?
জনগণ কি এতই বোকা মির্জ ফখরুল সাহেব এবং তার মত যারা “র” এর কেনা গোলাম হয়েছেন ?
আপনারা কি মনে করেছেন শত-হাজার বছরের সেই ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী অভিজাত হিন্দুদের দ্বারা নির্যাতিত অবহেলিত অধিকার বঞ্চিত নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের কিছু নিরিহ লোকদের ঢাকায় এনে তাদেরকে একপেট খাইয়ে, রাতে একটু ভালো ঘুমানোর ব্যবস্থা করে যে সম্মেলন করে “ হিন্দু- মুসলমান ভাই ভাই, ধানের শীষে ভোট চাই” শ্লোগানের আড়ালে বেশ জনপ্রিয় অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ দিয়ে ভারতকে খুশী করতে পেরেছেন ? যেসব নীতিমালা বাস্তবায়ন করবেন বলে এত কথার ফুলঝুরি শোনালেন, তা যে কতটা হাস্যকর, আর জিয়াউর রহমানের বিএনপির রাজনৈতিক মূল ভিত্তি তথা দর্শণের সাথে যে কতটা সাংঘর্ষিক সেই হুস আছে আপনাদের ?
আপনি কি মনে করেন ? “ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক বয়ান” কোথা থেকে আবিষ্কৃত হয়েছিল ? কি উদ্দেশ্যে আবিষ্কৃত হয়েছিল ? তা বুঝি এই দেশের মানুষ ভুলে গেছে ? আপনারা কি “জমিদারদের উৎখাত” এর ইতিহাস জানেন না ? হাজী শরিয়তুল্লারা যে ফরায়েজী আন্দোলনের মাধ্যমে বৃটিশদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের গৃহপালিত হিন্দু জমিদারদেরদের হাত থেকে পূর্ব বংগের মুসলমান শুধু নয় নিম্ন বর্ণের হিন্দুদেরও নাগরিক মর্যাদা, তাদের জমির মালিকানা ফিরিয়ে গোটা পূর্ব বংগের মুসলমান সহ সকল নিম্ন বর্ণের মানুষদের একটা স্বাধীন অস্তিত্ব সুরক্ষিত করে গিয়েছিলেন, সেই ইতিহাস কি আপনারা পড়েছেন ? তার মাধ্যমেই যে তথাকথিত “অসাম্প্রদায়িকতা”র ( মানে হিন্দু অভিযাত হলে আপনি অসাম্প্রদায়িকতার নামে “মানুষ”, আর তা না হলে আপনি অচ্ছুৎ, আপনার কোন মানবীয় মর্যদা থাকতে নেই ) হিংস্র থাবা থেকে মুক্ত স্বাধীন মানুষের মর্যদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই ইতিহাস আপনাদের জানা না থাকতে পারে, এদেশের কোটি কোটি মানুষের মধ্যে এই ইতিহাস কি অজানা মনে করছেন ? মির্জা সাহেব, আজ আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে এখন হিন্দুত্ববাদী এই বস্তপঁচা বয়ান পাঠ করে শোনাচ্ছেন, সেই স্বাধীন ভু খন্ডটি পেলেন কিভাবে ? সেই হুস আছে আপনার ? নাকি জেনেও জ্ঞান পাপী সেজে ভারতের হিন্দুত্ববাদীদের ক্ষপ্পরে পড়ে বাংলাদেশের তাবৎ মানুষকে বেকবুদের জালে একসাথে আটাকাতে চাইছেন ?
অসাম্প্রদায়িকতা মানে কি আপনি বোঝেন ? তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক বয়ানের পেছনের কারিগর কারা ? কি ছিল তাদের উদ্দেশ্য এটা যদি আপনি না জানেন, তাহলে জিয়াউর রহমান এর দল করার কোন অধিকার আপনি আর রাখেন ? এই দলের নায়ক বাংলাদেশের সংবিধান থেকে “ তথাকথিত অসাম্প্রদায়িকতা” তুলে দিয়েছিলেন কি আন্দাজে ? কোন কিছু না বুঝেই ?
আপনারা কয়েকজন নির্বোধ বুড়ো খাটাশগুলো জিয়াউর রহমানের সেই জনপ্রিয় বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদী বিএনপিকে যেখানে এনে দাঁড় করিয়েছেন, তাকে আর যাই হোক, এই দেশের মানুষ তাদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের দল মনে করছে না । এই বিএনপি আর ভারতের পায়ে মাথা লুটিয়ে দেয়া আওয়ামীলীগের সাথে কোন পার্থক্য খুঁজে না পেয়ে তারা এখন হতাশ হলেও সম্বিৎ ফিরে পেয়েছে যে, আপনাদের আসল রূপ প্রকাশিত হয়ে তাদের সচেতন মন আরো সজাগ হতে পেরেছে । আপনারা ভুল করলেও দেশের জনগণের আবারও ভুল করার কোন সুযোগ নেই । ভেবেছেন, ১/১১ এর মত একটা পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসবেন ? এত সোজা ?
কি ভেবেছেন ? আপনাদের আসল রূপ চেনার পর থেকে এখনো কোটি কোটি ফেসবুকের পাতা থেকে লাল রং মুছে ফেলা হয়নি, এটা আপনারা বোঝেন ? আগুন নিয়ে খেলছেন । ভেবেছেন “র” আর ওয়াকারদের মত কতিপয় গাদ্দাররা মিলে আপনাদের পার করে দেবে ? ওদের যদি যদি সেই ক্ষমতা থাকত, তাহলে এতদিনে বেকুব ইউনুস সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারত ? ওরা কিসের ভয়ে পারে না ? ভারতের কি এখন আর সেই দিন আছে ? ট্রাম্প ভারতকে কিভাবে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে সেই ধারনা আছে আপনাদের ?
এই দেশকে নিয়ে নতুন প্রজন্ম এবং জুলাই বিপ্লবে যে লোখো-কোটি জনতা রাস্তায় নেমে এসেছিল, তারা নতুন করে আর কাউকে খেলতে দেবে না, এই হুস যদি আপনাদের থাকত, তাহলে নাহিদদের আলাদা দল গঠণ করা লাগত না । তারেক সাহেবের প্রথম দিনের কথা আপনারা শুনতেন । তিনি কি বলেছিলেন ? তিনি আসলে এসব তরুণদের বুকে টেনে নিতে বলেছিলেন কি না ? কি জন্য বলেছিলেন ? একটা শক্তিশালী বিপ্লবী সরকার গঠণের ইংগিতই তিনি করেছিলেন । কিন্তু আপনারা কি করলেন ? ভারতকে খুশী রেখে চুপ্পুর কর্মচারি পরিষদ বানিয়ে এখন যে খেলা খেলছেন, সেই খেলার মাঠ বানানোর পরিকল্পণা নিয়ে করেছিলেন ?
আপনাদের সব পরিকল্পণা জনগনের কাছে কি পরিস্কার হয়ে যায় নি বলে মনে করেছেন ?
এদেশের সরল মানুষ যা হারিয়েছিল ১৯৭৫ সালে, তা হারিয়েছে আবারও ২০২৪ এ । ১৯৭৫ এর হারোনোটা দেশের অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পারেনাই । কেননা তখন তথ্য প্রবাহের এমন অবাধ ব্যবহার ছিল না । কিন্তু ২০২৪ এর হারানোর গল্প যে ১৯৭৫ এর হারানোর গল্প হতে চলেছে, এই ধারণা কি এই দেশের কমপক্ষে ৪ কোটির বেশী ভোটার বুঝতে পারছে না বলে মনে করছেন ?
আপনারা নিজেরা নিজের কবর খুঁড়েছেন অথবা সেই কবরে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবার জন্য জাতিকে বৃহত্তর গৃহযুদদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন । তবে গৃহযুদ্ধ বলেন আর যে যুদ্ধই বলেন, এই জাতি যেহেতু বুঝে ফেলেছে, ভারতের সেই দিন আর নেই যে মঈন ইউ আহমেদের মত বেকুবকে এমন ভয় দিয়ে বলবে, “ তোমরা পিলখানা আক্রমণ করতে গেলেই কিন্তু তোমাদের সেনানিবাস আমরা দখল করব” ? এই ভয় দেখানোর বয়ান যেমন ছিল ভুয়া এবং বর্তমানে আমেরিকার মাইনকার চিপায় পড়া ভারতের হিরোদের মধ্যে অন্যতম রাজনাথের হম্বি-তম্বিও যে আরো ভুয়া , তা এদেশের তরুণ প্রজন্ম সহ চায়ের দোকানদাররাও এখন বোঝে । কেননা ওরা হিসেব করে দেখেছে, এতই যদি সোজা হত, তাহলে হাসিনাকে রেখেই ওরা ক্যান্টনমেন্ট দখল করে ওদের বীরত্ব দেখালেই পারত ?
ঐ কাপুরুষগুলোর দৌড় বলিউডের সিনেমা বানানো পর্যন্ত । এটা এখন সবাই বোঝে । তবে আসুক না ? আমরা না হয় আরো কয়েক কোটি মানুষ মরব, তবুও এই দেশকে ভারতের পায়ের তলায় আর পিষতে দিব না ।
এবারের নির্বাচন হয়তো আপনারা এই ভয়ে নস্যাৎ করতে চাচ্ছেন নিজেরা ব্যর্থ হয়েছেন বলে ? কিন্তু মনে রাখবেন, যাই ঘটুক, বাংলাদেশে আপনাদের ঐ বস্তা পচা রাজনীতি আর চলবে না, এটাই বাস্তবতা ।
এই দেশে কোন সংখ্যা লঘু-সংখ্যা গুরু বলে কিচ্ছু নেই । এই দেশের সকল নাগরিক জাতি, ধর্ম , বর্ণ নির্বিশেষে “মানুষ” । “মানুষ” এর মধ্যে যারা লঘু-গুরু ভাগ করে তারা মানুষ নয় । তারা অন্য কিছু । যা হয়েছে ভারতের বর্ণবাদীরা । আমরা শ্রষ্টার সৃষ্টি মানুষ । বানরের বাচ্চা নই । এই দেশের সকল ধর্মের মানুষই মনে করে তারা বানরের বাচ্চা নয় । তারা শ্রষ্টার সৃষ্টি মানুষের বাচ্চা । অতএব যারাই এই দেশে সংখ্যা গুরু- সংখ্যা লঘু শব্দ ব্যবহার করে রাজনীতি করবে, তাদেরকে জুতা পেটা করবে সাধারণ মানুষ সবাই । সাধু ! সাবধান !!!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




