মহাবিশ্বের অলি গলিতে ঘুরলে এমন কিছু বিরল দৃশ্য সচারচর আমাদের চোখে ধরা পড়ে যেগুলো দেখে অনেক সময় আমরা মুগ্ধ হয়ে যাই, আবার বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকি সেই দৃশ্যটার পানে। মহান সৃষ্টিকর্তা তার সৃষ্টি জগৎকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে গড়ে তুলতে এবং সুনিপূণ হাতে সাঁজাতে এমন কিছু প্রাণীও সৃষ্টি করেছেন, যার মধ্যে অনেক অদ্ভুত, অতিকায় হিংস্র আবার অতি ক্ষুদ্র, দেখতে অনিন্দ্য সুন্দর অথচ খুবই ভয়ংকর এবং লাজুক প্রকৃতির নিরীহ প্রাণীও রয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলোর খোঁজ আমরা জানলেও অধিকাংশই রয়ে গেছে যুগ যুগ ধরে আমাদের দৃষ্টির অন্তরালে।
তবে এই ধরনের অদ্ভুত দর্শন প্রাণীর সন্ধান লাভ করতে মানুষের কৌতুহলের যেন শেষ নেই। আর তাইতো সেই সমস্থ কৌতুহলি মানুষ বারবার ছুটে যান দেশ-বিদেশের চিড়িয়াখানা গুলোতে। কারো কারো আবার খাঁচায় পুরে রাখা প্রাণী দেখে সাধ না মিটলে বেরিয়ে পড়েন গহিন বন-জঙ্গল আর পাহাড়-পর্বত গুলোতে। আর ভাগ্যক্রমে যদি তেমনই কোন রহস্যময় প্রাণীর সন্ধান লাভ ঘটেই যায়, তাহলে তো কথাই নেই। অনেকে জীবনের মায়া তুচ্ছ করে হলেও চরম ঝুঁকি নিয়ে ছুটে যান সেই প্রাণীটিকে অন্তত এক নজর দেখার জন্য।
গাম্বিয়া অভিযানের সময় পরিচালনাকারী দলটির অফিসিয়াল লোগো।
ঠিক তেমনই একটা প্রাণী নিয়ে ২০০৬ সালে গাম্বিয়ায় অভিযান পরিচালনা করেন একদল বৃটিশ অনুসন্ধানী বিজ্ঞানী দল। স্যার রিচার্ড ফ্রিম্যানের নেতৃত্বে চূড়ান্ত ভাবে যে অভিযানটির নামকরণ করা হয়েছিল "J. T. Downes Memorial Gambia Expedition 2006" নামে। আর সেই অভিযানে এই অনুসন্ধানকারী দলটি যে অদ্ভুত আর রহস্যময় প্রাণীটির সন্ধান লাভ করতে পেরেছিলেন, সেই প্রাণীটিই হলো আমার আজকের পোস্টের মূল টপিক 'নিনকা-নানকা!' গাম্বিয়ায় স্থানীয় ভাবে আসলে নিনকা-নানকা একটি অদ্ভুত আর রহস্যময় ড্রাগন হিসাবেই বেশি পরিচিত। তবে অনেকে হয়তো বলবেন, ড্রাগন তো ড্রাগনই। সুতরাং এটাতে আর আশ্চার্য হওয়ার কি আছে? বিশেষ করে যারা নেপাল, তিব্বত, তাইওয়ান বা চীনের গহিন বন-জঙ্গল অথবা পাহাড়-পর্বত গুলোতে ঘুরে বেড়িয়েছেন, তারা হয়তো এটাকে খুবই মামুলি বলে মনে করবেন। তবে সত্যিটা হলো, 'নিনকা-নানকা' আদৌতে মামুলি কোন ড্রাগনের নাম নয়!!
অভিযান পরিচালনাকারী দলের কয়েকজন সদস্যবৃন্দ।
সে এক ভয়াবহ আর রহস্যময় অদ্ভুত প্রাণীর নামই হলো 'নিনকা-নানকা!' এমনকি এই প্রাণীটার সন্ধান লাভের জন্য বৃটিশ অনুসন্ধানকারী বিজ্ঞানীদলটি ছুটে বেড়িয়েছেন গাম্বিয়ার 'কিয়াং ওয়েস্ট ন্যাশনাল পার্ক' থেকে পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই। এছাড়াও তৎকালিন সময়ে বিশ্বের অনেক বড় বড় অনলাইন নিউজ চ্যানেল গুলোও অত্যন্ত ফলাও করে ছাপিয়ে ছিল এই 'নিনকা-নানকা'র সচিত্র। তবে বিবিসি নিউজ থেকে দাবি করা হচ্ছিল, 'আসলে এই প্রাণীটির অস্তিত্ব পৃথিবীতে আদৌ আছে কিনা মূলত সেটা প্রমাণের জন্যই বৃটিশ অনুসন্ধানী বিজ্ঞানী দলটি এই অভিযানে নেমেছিল। কেননা এই অভিযানের বহু পূর্বেই পশ্চিম আফ্রিকার অনেক কল্প-কাহিনী আর পৌরাণিক মিথে এই নিনকা-নানকার বেশ কিছু বর্ননা পরিলক্ষিত হয়।'
জিরাফের মুখমন্ডলের আদলে সৃষ্ট নিনকা-নানকার একটি কাল্পনিক চিত্র!
আর সেই বর্ননানুসারে এটাই বোঝা যায় যে, পাহাড়ি জলাভূমি এবং বন-জঙ্গল পরিবেষ্টিত এলাকাতেই নিনকা-নানকা'রা বিচরণ করতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাছাড়া উক্ত বিজ্ঞানী দলটিও মনে করেন যে, নিনকা-নানকারা মূলত জলাভূমি পরিবেষ্টিত এলাকাতেই বসবাস করে। তবে বিবিসির ভাষ্য মতে, 'গম্বিয়ার অসংখ্য গল্প বা কল্প-কাহিনীতে নিনকা-নানকার নানা জাতি, নানা আকার এবং নানা চেহারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।'
যদিও সাধারণ ড্রাগনদের মধ্যেও নানা জাতি, আকার এবং বর্ণের বর্ননা আমরা পেয়ে থাকি। তবে আফ্রিকান এবং গাম্বিয়ান সেই সব প্রাচীন উপকথায় যে নিনকা-নানকা'র বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে নিনকা-নানকা'দের অদ্ভুত সব চেহারা আর আকার আকৃতির কথা। ফলে এতদিন যাবত নিনকা-নানকা'কে কেবল মাত্র একটি কাল্পনিক ড্রাগন হিসাবেই মনে করা হতো। সেই সব প্রাচীন রুপকথায় কখনো নিনকা-নানকা'র মুখমন্ডলকে ঘোড়ার মুখমন্ডলের সাথে তুলনা করা হয়েছে, আবার কোথাও বা জিরাফের মত মুখমন্ডলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সব থেকে বেশি নিশ্চিত এবং অধিকাংশ তথ্যেই ঘোড়ার আদলের মুখেরই বর্ননা পাওয়া গেছে বলে অনেকে মনে করেন।
বিজ্ঞানীদের ধারণা মতে, লম্বা শরীর আর লম্বা লেজওয়ালা নিনকা-নানকা'দের অ্যাবড়ো-থ্যাবড়ো শরীরজুড়ে গোলাকার আয়নার মত অতি সচ্ছ আর চকচকে অসংখ্য আঁশ আছে। যেমনটি থাকে আমাদের দেশের বনরুইদের শরীরে। তাছাড়া নিনকা-নানকা'র মাথার উপরে চামড়ার দর্শনীয় একজোড়া ঝুঁটি আছে, যা দেখতে অনেকটা জিরাফের মাথার উপরকার চামড়াওয়ালা শিং অথবা বল্গা হরিণের মাথার উপরকার চামড়াওয়ালা শিংয়ের ন্যায়। তবে তাদের মুখমন্ডল দেখতে একদমই জিরাফের মত নিরীহ প্রকৃতির নয়, বরং অত্যন্ত ভয়ংকর।
কুমিরের মত দেখতে নিনকা-নানকার একটি কাল্পনিক চিত্র।
আর সেকারণেই তাদের মুখের মধ্যে অত্যন্ত ভয়ংকর দর্শন দু'পাঁটি দাঁতও থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। যা দেখলেই পিলে চমকে উঠতে পারে যে কোন দর্শনার্থীরই। তাছাড়া অন্য আর একটি বর্ননায় উল্লেখ করা হয়, কিছু কিছু নিনকা-নানকা দেখতে অনেকটা কুমিরের মত। তবে তারা লম্বায় কুমিরের থেকেও আরো অনেক বৃহৎ আকৃতির হয়ে থাকে। দেখলে হয়তো এটাকে অনেকটা ডাইনোসরের মতই মনে হবে, তবে আদৌতে ডাইনোসরের মত অতটা বিশাল মোটা শরীর সাধারণত নিনকা-নানকা'দের নেই। শরীর মাত্র এক মিটার বা তার চেয়ে সামান্য বেশি মোটা এবং যা লম্বায় প্রায় সতের থেকে আঠারো মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও এদের শরীর যেমন লম্বাটে ধরনের, ঠিক তেমনই যেন তার সাথে মিল রেখেই গলা এবং লেজও একই অনুপাতে লম্বা হয়ে থাকে। পা'গুলোও আদলে ডাইনোসরের পায়ের মত বলে মনে হলেও আদৌতে সেটা অতটা বিশাল আর শক্তিশালী নয়। সাধারণত এদের শরীরের সাথে মানানসই সামনে এবং পেছনে দু'টি করে মোট চারটি পা আছে। তবে পেছনের পায়ের থেকে সামনের পা দু'টি সামান্য কিছুটা ছোট হয়ে থাকে, যা দেখতে অনেকটা ক্যাঙ্গারুর মত।
পাখাওয়ালা উড়ন্ত সাপের মত দেখতে ঘোড়ার মুখমন্ডলের আদলে তৈরি করা নিনকা-নানকার একটি কাল্পনিক চিত্র।
এছাড়াও আরো একটি বর্ননায় নিনকা-নানকা'কে দেখতে অনেকটা পাখাওয়ালা সাপের সাথে তুলনা করা হয়েছে। এবং অনেকেই মনে করেন যে, এরা পাখি বা উড়ন্ত ডাইনোসরের মত আকাশে উড়তে পারে। তবে এই ধরনের নিনকা-নানকা এখনো পর্যন্ত কেউ দেখেছে বলে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই পাখা ওয়ালা নিনকা-নানকা'র কথা শুনলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মনে হয়তো ভুত-প্রেত বা দৈত্য-দানব নিয়ে বহুল প্রচলিত আজগুবি সব কল্প-কাহিনীর মত গল্প বলে সন্দেহ জাগতে পারে।
যদিও আফ্রিকান রুপকাথায় নানাবিধ নিনকা-নানকার হাজারও আকার আকৃতির বিবরণ পড়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ইদানিং কিছু ঘটনা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের কারণে নিনকা-নানকার অস্তিত্ব যেন বিশ্ববাসিকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। একসময়ের অতি কল্প-কাহিনী আর অতিকথন নিনকা-নানকা'র অস্তিত্বকে যেভাবে বিতর্কের মুখে ঠেলে দিয়েছিল, সেই কল্প-কাহিনীই যেন আজকে 'ক্রিপটোজুলোজিক্যাল' গবেষণার একটি অন্যতম বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে বৃটিশ অনুসন্ধানকারী বিজ্ঞানী দলটির দলনেতা ক্রিপটোজুলোজিস্ট জনাব রিচার্ড ফ্রিম্যান জানিয়েছেন, বর্তমান পারিপার্শ্বিক দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় প্রাণীটির অস্তিত্বের প্রমাণ খুবই অসম্পূর্ণ। কেননা, বেশিরভাগ লোকই প্রাণীটিকে দেখার পরে প্রচন্ড ভয়ে এতটাই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন যে, পরবর্তিতে সেই কারণে খুবই দ্রুত তারা মৃত্যুমুখে পতিত হন। তবে রিচার্ড ফ্রিম্যানের নেতৃত্বে অনুসন্ধানকারী দলটি তাদের প্রাথমিক সাফল্যের অংশ হিসাবে গাম্বিয়ার 'কিয়াং ওয়েস্ট ন্যাশনাল পার্ক'-এর একজন প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন।
ঘোড়ার মুখমন্ডলের আদলে দেখতে নিনকা-নানকার একটি কাল্পনিক চিত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী সেই ব্যক্তিটি জানান, 'প্রায় কয়েক বছর আগে তিনি নিনকা-নানকা নামক এই রহস্যময় প্রাণীটির দর্শন লাভ করতে পেরেছিলেন। যার গায়ের রং ছিল অনেকটা সবুজ বর্নের এবং শরীর প্রায় এক মিটার বা চল্লিশ ইঞ্চির (৪০") মত চওড়া। তবে প্রাণীটির আপাদমস্তক আনুমানিক প্রায় পঞ্চাশ মিটারের মত লম্বা ছিল এবং যার অর্ধেকটাই প্রায় তার লেজের অংশ। অর্থাৎ মাথার অগ্রভাগ থেকে লেজের প্রান্ত ভাগ পর্যন্ত প্রায় একশত দশ (১১০) হাতের মত লম্বা, যার মধ্যে শুধুমাত্র লেজটাই প্রায় ২৫ মিটার বা পঞ্চান্ন (৫৫) হাতের মত লম্বা! এবং গলাও ছিল ঠিক জিরাফের গলার মতই অনেকটা লম্বাটে ধরনের। তবে সেটা ঘোড়ার গলার মতই সকল অংশে সমান্তরাল ছিল। আর পায়ে ছিল খুবই শক্তিশালী নখ যার প্রত্যেকটাই ছিল ধারালো কাঁটা যুক্ত এবং খুবই বিষাক্ত। '
এখন ব্যাপারটা হলো, একশত দশ হাত লম্বা রেলগাড়ি টাইপের বিশাল এই প্রাণীটার দর্শন যদি কেউ লাভ করতে পারে; তাহলে তার যে প্রথম স্বাক্ষাতেই পিলে চমকে যাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আর তার উপরে সেটা যদি হয় অদ্ভুত দর্শন ভয়ানক কোন প্রাণী, তাহলে অবস্থাটা যে কি হতে পারে-তা তো সহজেই অনুমেয়। সুতরাং এক্ষেত্রে যদি উক্ত প্রাণীটি দর্শনে প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে মারাই যান, তাহলে দোষটা তো আর তাদেরকে দেওয় যায় না? তবে কিয়াং ওয়েস্ট ন্যাশনাল পার্কের সেই প্রত্যক্ষদর্শী বর্ননা করেন যে, তিনি প্রায় কোন ধরনের দূর্বলতা ছাড়াই প্রায় এক ঘন্টা যাবত উক্ত প্রাণীটিকে পর্যবেক্ষন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এবং তারপরেও তিনি অন্যদের মত ধিরে ধিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ফলে অসুস্থতার কারনে তিনি আর নিনকা-নানকার পরবর্তি কোন কাজ-কর্মগুলো দেখার সুযোগ পাননি। তবে বিজ্ঞানীদের সাথে মত বিনিময় কালে তিনি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে এতটাই দূর্বল হয়ে পড়েন যে, ঐ একঘন্টার মধ্যে নিনকা-নানকাটি ঠিক কি খেয়েছিল, কিংবা কিভাবে বিচরন করছিল অথবা তাদের পছন্দনীয় খাবার ঠিক কোন গুলো ছিল তার কিছুই তিনি বলতে পারেননি।
তবে নিনকা-নানকা নিয়ে হাজার বছরের কল্প-কাহিনী, রুপকথা বা শোনা কথা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণগুলো একত্র করে পর্যবেক্ষক মহল ধরনা করছেন যে, যেহেতু নিনকা-নানকা পাহাড়ি জলাভূমি ও বন-জঙ্গলে বিচরনকারী প্রাণী এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মগোপনকারী প্রাণীদের মত নিভৃতচারী, সেহেতু স্বাভাবিক ভাবেই তারা প্রকৃতিগতভাবে অত্যন্ত নিরীহ স্বভাবের হতে পারে। আর এই স্বভাবের প্রাণীরা সাধারণত তৃণভূজীই হয়ে থাকে। তাছাড়া হয়তো আত্মরক্ষার তাগিদে কখনো কখনো শিকারীর পিছনে ধাওয়াও করতে পারে। তবে তাদের মুখে কুমিরের মত ধারালো দাঁতের সারি কিন্তু এই ধারনার কিছুটা ব্যতিক্রমই দাবি করে। তাছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিটার বর্ননানুসারে পার্কের জলাভূমিতে দেখা নিনকা-নানকাটি যতো লম্বাই হোক না কেন, ওর কিন্তু চারটি পা ছিল শরীরের সাথে বেশ মানানসই। সুতরাং এক্ষেত্রে আমাদের দেখা সাধারণ ড্রাগনদের মত ওদেরও যে ছয়টি বা তারও অধিক পা থাকতে পারে একথাটা কিন্তু খুব জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
অর্থাৎ নিনকা-নানকা কুমির, গিরগিটি, টিকটিকি বা বনরুইয়ের মতই চারটি পায়েরই অধিকারী। তবে নিনকা-নানকার পায়ের নখ এবং কাঁটার মত বাড়তি অঙ্গগুলোই বলে দিচ্ছে ওরা আসলেই বিশাল আকৃতির একটা ড্রাগন। তাছাড়া তার গায়ের চকচকে যে আঁশের কথা বলা হয়েছে সেটা থেকে তাকে অনেকটা আমাদের দেশের বিরল প্রজাতির বনরুই এর শরীরের সাথেও তুলনা করা যেতে পারে। হয়তো বা নিনকা-নানকার শরীরের সেই আঁশ এতটাই চকচকে যে প্রত্যক্ষদর্শীরা সেটাকে অনেকটা 'আয়নার মত' বলেই উল্লেখ করেছেন।
তবে এতদিন যাবত নিনকা-ননকা একটা অদৃশ্য এবং সম্পূর্ণ কাল্পনিক প্রাণী হিসাবে বেঁচে থাকলেও বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রার যুগে এবং এযাবত কাল অবধি নিনকা-নানকা সম্পর্কিত যে সমস্থ তথ্য ও বিবরনাদি পাওয়া গেছে তাতে হয়তো খুব শীঘ্রোই বিশ্ববাসি নিনকা-নানকা সম্পর্কে একটা বাস্তব সত্যের সম্মূখিন হতে পারবে বলে বিশ্লেষকরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত অভিযান পরিচালনাকারী দলটি বাস্তবতার থেকে বহু দূরে অবস্থান করছে, তথাপি সাধারণ কৌতুহলি মানুষ হিসাবে তাদের উপরে সামান্য একটু আস্থা রাখতে বা দোষ কি? হয়তো অনেক অপ্রকাশিত ঘটনার মত এইটাও একদিন ঠিকই বিশ্ববাসির সামনে প্রকাশিত হবে......!!
তথ্যসূত্রঃ- পোস্টে উল্লেখিত কিছু তথ্য ২০০৮ সালে প্রকাশিত 'পৃথিবীর আশ্চার্য প্রাণী জগৎ' সংক্রান্ত একটি ম্যাগাজিন বই থেকে সংগৃহিত এবং প্রত্যেকটা ছবি সহ বাকি তথ্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু তথ্যের লিংক নিচে উল্লেখ করে দেওয়া হলোঃ-
=> উইকিপিডিয়া & এনসাইক্লোপিডিয়া- নিনকা-নানকা।
=> বিবিসি নিউজ- গাম্বিয়ার পৌরাণিক ড্রাগনকে অনুসরণ।
=> গাম্বিয়া এক্সপিডিশন-২০০৬।
=> গাম্বিয়ায় অভিযান পরিচালনাকারী দলটির অভিযান শেষের প্রতিবেদন।
=> নিনকা-নানকা কি?
প্রাণী সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার লেখা ঠিক একই কোয়ালিটির আরো তিনটি পোস্ট আছে। নিচে তার লিংক উল্লেখ করে দেওয়া হলো। সময় থাকলে একই সাথে সেগুলোর উপরেও একবার চোখ বুলিয়ে আসতে পারেনঃ-
☞ জানা/অজানাঃ- "বৈচিত্রময় জোনাকি পোকার সাতকাহন"
☞ জানা/অজানাঃ- "প্রাগৈতিহাসিক যুগে বিলুপ্ত হওয়া এক অতিকায় দানবীয় প্রাণী ডাইনোসরের সাতকাহন"
☞ জানা/অজানাঃ- "রুপকথার রঙিন পাখি 'হামিংবার্ড'-এর সাতকাহন!"
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- টাইপিংয়ের ভুলের কারনে হয়তো অনেক জায়গায় বানানে ভুল থাকতে পারে। সেটাকে বিবেচ্য বিষয় হিসাবে না ধরে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে কৃতার্থ হবো! তাছাড়া এতক্ষণ যাবত সাথে থেকে এবং কষ্ট করে এতবড় একটা পোস্ট পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন! হ্যাপি ব্লগিং....!!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০