আমার মা একজন নারী। আমি নারী। আমার প্রিয় বান্ধবী, বোন, নানু, দাদী, ভাবী, চাচি, খালা, ফুপু, মামী-সবাই নারী। এদের সকলের জন্যই কি নারী দিবস? কি হয় আসলে তাদের জীবনে এই একটি বিশেষ দিনে? হরলিক্সের ‘উইমেন্স হরলিক্স’ কিংবা কিউবির ‘মার্চ ইন হার হিলস’ কি তাদের জীবনে কোন প্রভাব ফেলে? হয়তো হ্যাঁ, কিংবা হয়তো না! আমার জীবনে কিন্তু প্রভাব ফেলে। উইমেন্স হরলিক্স কিংবা মার্চ ইন হার হিলস আমার নারীত্বকে শ্রদ্ধা করতে শেখায় কয়েক গুণ। আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমি কে? কি? কেন?
বুর্জোয়া মতাদর্শের বিপক্ষে যারা তারা বলেন এইসব ডে/দিন/হেনতেন এগুলো কেবলই বাণিজ্য করার অজুহাত মাত্র। আবারও বলছি, হয়তো হ্যাঁ হয়তো না। কিন্তু একটি নারী দিবস থাকলই না হয়, ক্ষতি কি?
গত বছর এ দিনে আমি ‘রেডিও আমার ৮৮.৪’-এর স্টেশনে বসে আরজে জ্যাকলিনের সঙ্গে বসে শো করছিলাম (অতিথি হিসেবে), সঙ্গে ছিল তুলি’পু। আমরা নারী বলেই সেদিন আমাদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল, কর্মজীবী নারী আমরা। কিছুই হয়নি সেদিন নিছক আড্ডা ছাড়া। তবে সেই আড্ডাতেই বেরিয়ে এসেছিল সমাজের নানা অসঙ্গতি, নারীর প্রতি নিপীড়ন, নির্যাতন, পুরুষের ডমিনেন্সী আর কত কি! নারী দিবস বলেই হয়তো আমরা একটু বেশিই সোচ্চার ছিলাম সেদিন। আফটার অল, সেদিন ছিল ‘আমাদের’ দিন!
তবে একটা ব্যাপারে আমার দ্বিমত আছে। নারী দিবস যেমন আছে তেমনি পুরুষ দিবসও থাকা উচিৎ। ঐদিন না হয় আমি আমার ভাইকে একটা পাঞ্জাবী গিফট করলাম আর বয়ফ্রেন্ড কে ফেয়ার এন্ড হ্যান্ডসাম। অনেকে বলে নারী দিবস দেওয়া হয়েছে নারী দুর্বল, তাই তার অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে। আমি তা মনে করিনা। বরং পুরুষকে মনে করিয়ে দেওয়া আমরা আছি তোমাদের পাশে, তাদেরকে আর একটু সাহস যোগানো, তাদেরকে আর একবার মনে করিয়ে দেওয়া জ্বর হলে মা/বোন/স্ত্রী/ তোমার খেয়াল রাখবে, তোমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট হলে তুমিও অফিস থেকে ‘লিভ’ পাবে, বয়ঃসন্ধিকালে বড় বোন তোমার পাশে ছিল/থাকবে, আর সেই বোনকেই বিদায় দিতে হবে কয়েক বছর পর।
আমার ভাই আমাকে ডেইরী মিল্ক কিনে দিয়েছে আজকে। আমি আম্মাকে ভাত খাওয়ার প্লেট উপহার দিয়েছি। আমি খুশি, আম্মাও খুশি। নারী দিবস দিয়ে আসলেই অনেক কিছু হয়।
নীল হাতির পক্ষ থেকে বিশ্ব নারী দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



