১)
প্রতিবেশিনীর বেড়াল
আমার এক ঘর পরে যে প্রতিবেশিনী, তার বেড়ালটি এখানে আসে। সে একজন প্রেমিক এবং দক্ষ ক্রীড়াবিদ- প্রতিবেশিনী বলেন। আমার জানালাটা তার পছন্দ ছিলো, বড় নিঃশব্দে আসে, কোনো কোনোদিন উড়ন্ত ফরিঙের মত লাফ দিয়ে। বালিশের পাশে, সেখানে শুয়ে থাকে মাঝরাতে আর ডাইনিং এর নিচ থেকে আঁকড়ে ধরে পরিধেয়। মহল্লায় অনেক বন্ধুবান্ধব তার, অনেক মেয়ে বেড়ালের সাথে প্রেম আর যে কোনো প্রেম ভেঙে গেলে তিনদিন তিনরাত, উপবাসে কাটায়। শুনেছি, মহল্লা তন্নতন্ন করেও প্রতিবেশিনী তাকে খুঁজে পান না, সে বাহিরে রাত কাটায় আর ইঁদুর ধরার অনিশ্চিত প্রক্রিয়া একদম পছন্দ করে না!
বেড়ালটি এখন ভূগোল শিখতে বসে, রাত জেগে পড়ে, কীভাবে ফাঁকি দেয় কুকুরের চোখ আর ইঁদুর শিকারের কৌশল- নতুন ঠিকানা থেকে প্রতিবেশিনী জানায়।
২)
প্রতিধ্বনি
পুরোটা দিন লোকটি ঘুরে বেড়ালেন__
বিস্তৃত বালিয়াড়ি, নারকেল বাগান
সমুদ্রমুখী পাহাড়ের শহরে
আর যতটা সম্ভব পর্যবেক্ষণ করলেন
পাখি, সাগর আর গাছগাছালির
সৌন্দর্য, গতিপ্রকৃতি, উড়ে চলা
আর সমস্তদিন বিড়বিড় করলেন এই
সম্পূর্ণ ভ্রমণ লিপিবদ্ধ হয়ে গেলে
পাণ্ডুলিপি খুলে প্রকাশক দেখলেনঃ
মাঝবয়সী এক উদভ্রান্ত লোক
বিড়বিড় স্বরে পাখির কুহুতান আওড়াচ্ছে
যার প্রতিধ্বনি ফিরে আসছে কানে!
৩)
স্ত্রী এবং নিঃসঙ্গতা বিষয়ক
এটা ছিলো পাঁচ বছর আগে। আমার স্ত্রী শুয়ে ছিলো, আধখোলা। আমি তার মৌনতাকে অবলোকন করছিলাম। তার বুকে নদীর শব্দ বইতো আর কপোল থেকে ঘাড়, ওষ্ঠগুলো ছিলো প্রেমময়। আমি তার পাশাপাশি দাঁড়ালাম। তার অভিব্যক্তি, অঙ্গভঙ্গি চিত্তাকর্ষক ছিলো। আমি তাকে পাঠ করছিলাম। পাঠ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই, আমার ১২ বছরের নিঃসঙ্গতা সে টের পেয়ে যায়! যা একদা ছিলো চিরায়ত, ঈশ্বরের মত বাস্তব।
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে আমারও প্রশ্ন জাগে, তবে কি সেও প্ররোচিত হয়েছিলো যুবক আপেলের লোভে? জ্যোতিষীর তোতাপাখিই হয়তো জানে- মনে মনে ভাবি!
৮ অক্টোবর ২০১৭
বিকেল, বরগুনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬