
উত্তরপ্রদেশসহ ভারতের পাঁচ রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের বেশি দেড়ি নাই।
কট্টরপন্থি বর্তমান ক্ষমতাশীন বিজেপি সরকার এ সময়ে বিভিন্ন ভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। দু'দিন আগে ভারতীয় সংগীত জগতের কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকরের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে বলিউড বাদশা শাহরুখ খান ইসলাম ধর্ম অনুসারে মোনাজাত করে মৃত্যুদেহে কয়েক বার ফু দেন। শাহরুখ খানের ফু দেওয়াকে থুতু দিয়েছে বলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন হরিয়ানা রাজ্যের বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অরুণ যাদব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সৃষ্ট সে বির্তক বেশিদূর না আগালেও বিজেপি শাসিত কর্নাটকে সুচতুর ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া ধর্মীয় বিদ্বেষ বেশ গড়িয়েছে। এতে ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি কর্নাটকের রাজনৈতিক অঙ্গনও বেশ উত্তপ্ত। বিজেপিপন্থি রাজ্য সরকার স্কুল ও কলেজের ড্রেসকোড বিষয়ে কঠোর অবস্থান করে জনগণের ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ ও সংবিধান পরিপন্থী কাজ করছে বলে কর্নাটক লোকসভার প্রধান বিরোধীদল তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বাম দলগুলো ওয়াক আউট করে লোকসভা থেকে।
কর্নাটকের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ মুসলমান। সংখ্যালঘু মুসলিম এই জনসংখ্যার পক্ষে লোকসভার অধিবেশন বর্জনকারী বিরোধীদলের পক্ষে নিশ্চিয় সংখ্যা গরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সমর্থন থাকবে না। কট্টরপন্থী বিজেপির মূল লক্ষ্য মুসলমান ও হিন্দু এই দুই ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লাভ।
একটা বিষয় খেয়াল করলে দেখবেন। ভারতে কিন্তু শুধু হিজাব বা বোরখাই ধর্মীয় পোষাক বা চিহ্ন নয়। শিখরা মাথায় বিশেষ টুপি বা পাগড়ি পরিধান করে। হিন্দু বাহ্মনেরা মাথা ন্যাড়া করে টিকলি রাখে। পৈতা পড়ে। হাতে "তাগা” (এক গুচ্ছ লাল সুতা) বাঁধে। বিবাহিত মেয়ে শিক্ষার্থীরা হাতে শাঁখা ও সিঁথিতে সিঁদুর ব্যবহার করে। খ্রীষ্টান সেবিকা ও ইহুদি নারীরাও হিজাব পড়ে। এসবই তাদের ধর্মীয় চিহ্ন। এসব নিয়ে কিন্তু সেখানে কোনো বিতর্ক নাই। এসব করলে কিন্তু সেখানে কেউ বলে না জঙ্গি বা রাম রহিমের লোক। কিন্তু মুসলমান মেয়েরা হিজাব পড়লেই সমস্যা!
আসল কথা হলো যাদেরকে জনগণ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। মূলত তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর মত জঘন্য কাজ করে। হোক সেটা ভারত বা বাংলাদেশ। তবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোকারীরা যে সফল নয় সেটা কর্নাটকের কলেজ শিক্ষার্থী মুসকানের সাহসিকতা ও তার প্রতি তার বন্ধুদের সমর্থনই বলে দিচ্ছে। এমন সাম্প্রতিকতা চলতে থাকলে অখন্ড ভারত খন্ড খন্ড হতে বেশি দেড়ি হবে না।
-সোহাগ তানভীর
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




