somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিভাজন মেনে নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস প্রয়োজন

২৪ শে মে, ২০১৩ রাত ১০:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারই নাকি সবচেয়ে খারাপ স্বৈরাচারি সরকার হতে পারে। আর আমাদের মতো বিপুল জনসংখ্যার অর্ধশিক্ষিত অভাবি ক্ষেত্রবিশেষে অধৈর্য্য অসংগঠিত নাগরিকদের পরিচালনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নে অদক্ষ শাসকগোষ্ঠির মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠলে বিবদমান শক্তির পরস্পরকে নির্মূল করার খেলায় মেতে ওঠাটা অসম্ভব কিছু নয়।

গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সকল রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক শক্তির অংশগ্রহন জরুরি হলেও নেতৃত্ব এক্ষেত্রেও সরকারের উপরই বর্তায়, যা কোন অজুহাতেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

ক্ষমতায় থাকলে বিরোধি রাজনৈতিক শক্তিকে মোকাবিলায় যে দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার প্রয়োজন, ঐতিহাসিকভাবেই স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা তার প্রতিফলন দেখিনি। তাই কার্যকর গনতন্ত্রের পরিবর্তে আমরা অস্থিতিশীল এবং খুবই হাস্যকরভাবে সবসময়ই এক তথাকথিত ক্রান্তিকাল পার করছি বলে আলোচনা করা হয়।

আজকের আওয়ামি লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এর থেকে বেরিয়ে আসার সব সুযোগ তুচ্ছ করে সেই একই অগনতান্ত্রিকপন্থা বেছে নিয়েছে। বিরোধিদের আস্থায় নয়, নির্মূলের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে অদক্ষভাবে অপব্যবহার করছে।

অথচ বিরোধিশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা যে কোন শুভবুদ্ধি নয় আর বর্তমান বাস্তবতায় একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক শক্তিকে নির্মূল করার প্রয়াস যে সকল বিচারেই অগ্রহনযোগ্য সেটুকু বোঝার মতোন ধীশক্তি কি আওয়ামি লীগের বর্তমান নেতৃত্বের কারো মাঝেই নেই?

উইকিতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফল দেখছিলাম, দুটো জিনিস জেনে অবাক হলাম যার প্রথমটি হলো ঐ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তার! দ্বিতীয় অবাক ব্যাপার সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৭০টিতে অংশ নিয়ে ১৬০টিতে জিতে আওয়ামি লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানেই শতকরা হিসাবে ৭৫ভাগেরও কম ভোট পেয়েছিল তারা । মোদ্দাকথা হলো অনন্য ঐসময়েও ২৫ভাগের বেশি ভোটার (এবং নাগরিক?) আওয়ামি লীগের বিরোধীই ছিল!!

১৯৭০ সালের নির্বাচনের ফল

এমন ফলাফল থেকে যদি কেউ সিদ্ধান্ত নেয় যে এই ২৫ভাগের বেশি মানুষ বঙ্গবন্ধুর ছয়দফার বিরোধি ছিলো, পশ্চিমাদের অন্যায্য আচরনে অনেকটাই ভাবলেশহীন ছিলো, স্থানীয় পর্যায়ে আ'লিগ নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে তীব্র হতাশা ছিল, মাওলানা ভাসানীর নির্বাচন বয়কটের পরও তার অনেক অনুসারির ভোট আ'লিগের বিরুদ্ধেই গেছে মোদ্দাকথায় কারন যাই হোক না কেন এই মানুষগুলো কট্টর আওয়ামি বিদ্বেষিই, তাহলে তা কি খুব অযৌক্তিক হয়ে যাবে?

আজ এই ৪২বছর পরে এই আওয়ামি বিরোধি মানুষের সংখ্যা কি কমেছে? উত্তর সবারই জানা, "না"! অনেকখানি বেড়েছেই বরং। আমরা কেউ কি শেষবিচারে বাংলাদেশের রাজনীতির সক্রিয় দুটি ধারা যথা আওয়ামিপন্থা এবং আওয়ামি বিরোধিতাকে এড়িয়ে যেতে পারি? সবার উত্তর এক্ষেত্রেও ''না'' হওয়ারই কথা।

আর জামায়াত তার কোটামত ৬ভাগ ভোট সেইসময়ও পেয়েছে। এই ভোটব্যাংককে অস্বীকার বা এড়িয়ে যাওয়া কি সম্ভব? আবারো সেই ''না''।

আমার প্রশ্ন হলো এইসংখ্যক যে মানুষ আছেন তাদের কি অস্বীকার বা এড়িয়ে যাওয়া উচিত? সুযোগ বুঝে তাদের খাতির করা অথবা লাঠি হাতে দাবড়ানোর বাইরে এই মানুষদের নিয়ে অন্য আর কিছু কি করা যায় না (নিশ্চিহ্ন করার উদ্ভট সমাধানের বাইরে, যেটাও আদতে অসম্ভব)?

অথচ এই প্রশ্নে সরকারের আচরনে মনে হয় তারা চিরন্তন আওয়ামি বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার অপকৌশলই নিয়েছে যা প্রকারান্তরে ঐ বিরোধিদেরকেই আরো শক্তিশালী (এবং জনপ্রিয়?) করবে।

অথচ এদেরকে কার্যকরভাবে নিষ্ক্রিয় করতে প্রয়োজন স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ও গনতান্ত্রিক রাজনীতির মাধ্যমে মোকাবিলা করা। এইটুকু বোঝার মতোন ক্ষমতা আর তা বাস্তবায়ন করতে হলে যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা আর সাহসের প্রয়োজন তা বোধকরি একগুঁয়ে অদক্ষ এই সরকারের নেই। সামনে কি আছে আমাদের সেটা জানতে আমরা বোধহয় শুধু দ্বিধা আর শংকার সাথে অপেক্ষাই করতে পারি।
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×