somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার সন্তান কেন অবাধ্য,উচ্ছৃংখল ??? আজকালকার পিতা-মাতার প্রতি কিছু তেতো সত্য কথা ।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই কিছু বছর পুর্বেও পিতা-মাতার সাথে সন্তানদের যে বন্ধন , যে ভালোবাসা ছিল আজ তা ফিকে হয়ে গিয়েছে। তখন মানুষের মাঝে না ছিল শিক্ষা , না ছিল প্রযুক্তি।কিন্তু নিখাদ মুহব্বত ছিল, নীতি ছিল, শ্রদ্ধাবোধ ছিল, ভক্তি ছিল। কিন্তু আজ কেন নাই ? কেন তখন মা-বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক ছিল মধুর ,অথচ আজ নাই ?কেন তখন সন্তান পিতামাতার বাধ্য ছিল, আজ কেন নাই ? কেন আজ সন্তানেরা অবাধ্য ,উচ্ছৃংখল?

আমরা যদি ধাপে ধাপে দেখি তাহলে দেখা যাবে জন্মের পর হতেই পিতা-মাতা উনাদের সন্তানের প্রতি যে দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করা উচিত ছিল তা আজকালকার মা-বাবা করেন না বলিলেই চলে। আজ মা কষ্ট পাবে ভেবে নরমাল ডেলিভারী না করে সিজার করেন। সন্তান জন্ম হইবার সাথে সাথে ইসলাম ধর্মমতে তার ডান কানে আযান, বাম কানে ইকামত দেওয়া, তাকে মধু খাওয়ানো, জন্মের ৭ দিন পর আক্বিকা দেওয়া, গোসল করানো, নাম রাখা উচিত ছিল তা বিধর্মীদের ষড়যন্ত্রে করেন না। বক্ষ্য সৌন্দর্য্য নষ্ট হইবে ভেবে কোটার দুধ খাওয়ায়ে বুকের দুধের হক হইতে বঞ্চিত করেন । যে সন্তান পিতা-মাতার বুক আগলে শুয়ে থাকার কথা তার জীবন কাটে কোন গৃহপরিচারিকার অযত্ন আর অবহেলায়। কারন বাবা ব্যস্ত টাকা কামানোয় আর মা ব্যস্ত নানা কাজে।
এই সন্তান যখন একটু বড় হয়ে হাটি হাটি পা পা করা শিখে(কাজের বুয়ার হাত ধরে), দুনিয়ার কোণ বুঝ-ই তার মাঝে নাই তখন তাকে খাওয়ানোর দোহাই দিয়ে, তার দুষ্টমি হতে নিষ্কৃতি পেতে বসিয়ে দেওয়া হয় টিভি সেটের সামনে। ঐ বাচ্ছা আলোর-ঝকমকানিতে আনন্দ পেতে থাকে। মা-বাবা খুব খুশি!! মা-বাবা ডাক শিখার আগে কার্টুন দেখে, বিজ্ঞাপন দেখে ওই সন্তান শিখে টম-জেরির নাম। যে শিশু নিজের জীবন কাহানী জানেনা সে শিখে নানা ছবির কাহানী !!!
এভাবে কাটে তার কয়েকটা বছর । এর পর ৩-৩,৫ বছর না হতেই কাধে ব্যাগ ঝুলিয়ে তাকে পাঠানো হয় কোণ কিন্ডারগার্টেনে কিম্বা কোন নাম করা ইংরেজি স্কুলে।শুরু হয় তার নিজের সাথে সংগ্রামের এক গৎবাধা জীবন। পড়া ,টিভি দেখা, ঘুমানো,স্কুলে যাওয়া এভাবেই কাটে তার বেশ কয়েকটি বছর । ধর্ম শিক্ষা থাকে অবহেলিত । যে বয়সে তাকে মক্তবে পাঠিয়ে কোরান শরিফ শিক্ষা দেওয়ার কথা , ইসলাম সম্পর্কে জানার কথা , ইসলাম এর আদেশ -নিষেধ জানার কথা সে বয়সে তার জীবন কাটে নির্দিষ্ট গন্ডীর ভিতরে।
এই সন্তান যখন শারীরিক পরিবর্তনে কিশোর-কিশোরীতে পদার্পন করে তখন সে নতুন আর এক জীবনে প্রবেশ করে। যে বয়সে সে সবকিছুকে নতুন করে ভাবতে শিখে , দেখতে শিখে ,বুঝতে শিখে, যে বয়সে তার খারাপ পথে ধাবিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি সে বয়সে আমরা কি দেখতে পাই ? দেখতে পাই পিতা-মাতা তার দিকে নজর দেয়না, যে সময় দেওয়ার কথা তা দেয়না। তার সাথে যে বন্ধুত্বপুর্ন সম্পর্ক গড়ার কথা তা করেনা। তাকে যে সাপোর্ট দেওয়ার কথা তা করেনা । তার প্রতি যে ভালোবাসা প্রকাশ করার কথা তা করেনা ।
উলটো দেখা যায় পিতা-মাতা তাদের ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে হাতে টাকা দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে,সন্তান যা চায় তা করতে দেয়। আবার অনেক পরিবার রয়েছে যেখানে মা-বাবার মাঝে সম্পর্ক ভালো থাকেনা। সন্তানের সামনে করে গালি-গালাজ,ঝগড়া-ঝাটি,মারামারি করে । ফলে এই সন্তান কোথায় যায় ? কি করে ? কার সাথে মিশে? কি খায় ? টিভিতে, কমপিউটারে কি করে, কি দেখে ? নামাজ পড়ে কি না ? কোথায় যায় তার খবর পিতা-মাতা কেউ রাখেনা ।
সময় কোথায় তাদের সন্তানকে সময় দেওয়ার ? তার খোজ নেওয়ার ?
ফলে এর পরিনতি আমরা কি দেখতে পাই ? আমরা দেখতে পাই সন্তানের ছোটবেলা হইতে জীবন কাটে অস্বাভাবিকভাবে। ছোটবেলা হইতে তাকে নানা হিংস্র, অদ্ভুৎ বিষয়ে অভ্যস্ত করা হয় টিভির মাধ্যমে তা তার মস্তিষ্কে ক্রিয়া করতে থাকে। উপরন্তু মা-বাবার অবহেলা, ধর্ম নিয়ে জ্ঞান না থাকা, ভালো-মন্দ যাচাই করার ক্ষমতা না থাকা , বাঝে বন্ধুদের সাথে চলাফেরা, পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে ঝোক ইত্যাদির কারনে এই সকল সন্তানেরা হয় অবাধ্য , উচ্ছৃংখল ।
তাহলে এই দায় কার ? পিতা-মাতা পারবে কি এই দায় এড়াতে ?
সকল পিতামাতার প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা আপনাদের সন্তানদের জন্মের পর হইতে ধর্মীয় শিক্ষা দিন, ধর্মীয় অনুসাসনে রাখুন,ধর্মীয় তর্জ-তরিকা পালন করুন এবং সন্তানদের সময় দিন,তাদের সাথে থাকুন,তাদের সাথে ভালো আচরন করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×