somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এলোমেলো চিন্তা, ভালবোসা ও বিয়ে

২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বুকের মধ্যে কত অভিমান, ক্ষোধ, দুঃখ-কষ্ট, ভালোবাসাহীনতা নিয়েও সংসারগুলোতে হাল ধরে থাকে মানুষ । বিশেষত যখন সন্তান হয় তখন সে নিজের সুখের কথা আর বিকল্প চিন্তা করতে পারেনা । বিশেষত এইটা নারীরা(যাঁরা মা হয়ে যান) বেশী সাফার করে যান । পুরুষরাও সাফার করেন, যাঁর ফলে অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েন অথবা স্ত্রী-সন্তান কারোর কোনো ধার ধারেননা ।

একজনের মনে কেউ যখন বসে যায় তখন সেটাকে সরানোর সাধ্য ‘মৃত্যু’ ছাড়া আর বোধহয় কারোর হাতেই সেই শক্তি থাকেনা ।

বিয়ে করলে সামাজিক-রাষ্ট্রীয়-ধর্মীয় একটা রীতি পালন হয় ঠিকই । কিন্তু যে মানুষটাকে বিয়ে করা হয় তাকে যদি অন্তরে ধারণ-ই না করা যায় তবে সেই রীতি-নীতি থেকে বের হয়ে আসাই উত্তম । কারণ এতে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় । যেটা জেনারেশন বাই জেনারেশন সাফার করে!

অনর্থক সম্পর্কে জড়ানো কখনও সুফল বয়ে আনেনা । হতবুদ্ধিপ্রবণ কিংবা যৌনপ্রবণ হয়ে হুটহাট সিদ্ধান্তগুলো হয় আত্নঘাতী । ডেকে আনে মানসিক মৃত্যু । একটা মানুষের যখন মানসিক মৃত্যু ঘটে যায়, তখন শারিরীক মৃত্যুর ব্যাপারে সে আর পরোয়া করেনা । তাঁর কাছে পৃথিবীর সমস্তকিছুকে মিথ্যা মনে হয় ।

একটা মানুষের হাসির জন্য হাজার বছর বেঁচে থাকা যায় । আবার কারোর চোখে অশ্রু দেখলে এক নিমিষেই জীবনকে শেষ করে ফেলা যায় । নিজের জন্য, প্রিয়জনের জন্য একটু সুখ-ই জীবনকে অনেকদূর টেনে নিয়ে যায় । বেঁচে থাকবার আশা-ভরসা-সাহস জোগায়।

পৃথিবীর কাছে নিজেকে মেনে না নেওয়ার মতো মনোকষ্ট আর হয়না । মানুষ কি আর এমনেই সুইসাইড করে রে ভাই । সবাই তো স্বাভাবিক মৃত্যু-ই কামনা করে । পরিস্থিতি বাধ্য করে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে ।

একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি...

গতকাল আতিফ আহমেদ নিলয় নামের একটা ছেলে আত্নহত্যা করেছে গলায় রসি ঝুলিয়ে । আমার ভাগ্নে এবং ফ্রেন্ডলিস্টের এক ছোটবোন দেখি পোস্টও করেছে সেই সম্পর্কে । ছেলেটা তরুণ গায়ক, “কার বাসরে ঘুমাও বন্ধু, কার জন্য বউ সাজো” গানটা তাঁরই । অনেকদিন আগে গানটা শুনেছিলাম । সেভাবে পরিচয় জানতামনা ।

অথচ তাঁর মৃত্যুর পর তাকে জড়িয়ে তাঁর স্ত্রীর কান্নার ভিডিওটাও বেশ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । অথচ সেই ছেলেটার মনের কথাগুলো কেউ শুনতে চায়নি হয়তো কখনও, বুঝতে চায়নি ।

গতকাল প্রথম আলো একটা নিউজ করেছে যেটাতে হাসিনা বেগম নামের একজন নারী বলেছেন, “আল্লাহর ধারে সোময় কই মোগো দুইজনকে একলগে নিও । নাইলে তো দ্যাহনের কেউ থাকপেনা ।” কি সরল বাক্য দেখেছেন! একজনের প্রতি অন্যজনের কত মমত্ব, প্রেম, ভালোবাসা । যেগুলোই মানুষকে টিকিয়ে রাখে পৃথিবীতে ।

‘ভালোবাসাহীনতা’ মানুষকে নিষ্ঠুর, বর্বর, আত্নঘাতী, নিকৃষ্ট অমানুষে পরিণত করে । ভালোবাসাটা না থাকলে অন্যজনের যদি বোমা লেগে হাত-পা উড়ে যায় তবুও কোনো যায় আসেনা । জাস্ট ফরমাল দায়িত্বটা পালন করে, যেমন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসার খরচ বহন করা । কিন্তু সেই অসুস্থ মানুষটার মাথায় বুলিয়ে দেয়া, কপালে/হাতে চুমু খাওয়া, ভরসা দেয়া তাঁর কাছে অপ্রয়োজনীয় এবং অনর্থক বলে মনে হয় ।

আমার অসুস্থতায় মা যখন মাথায় পানি ঢেলে দেন, কিংবা বুকে সরিষার তেল গরম করে লাগিয়ে দেন তখন নিজের কাছে নিরানব্বই ভাগ সুস্থ মনেহয় । মনেহয় মা সারাদিন-রাত ধরে মাথায় পানি দিয়ে দিক, বুকে তেল মালিশ করে দিক; আমার আর কোনো মেডিসিনের দরকার হবেনা । যখন কাজের শত ব্যস্ততার ফাঁকে এসে ঘন ঘন জিঙ্গাসা করেন, অসুখের কি অবস্থা তখন মনেহয় এইতো ভরসার মানুষ, ভালোবাসার মানুষ ।

পৃথিবীতে মানুষকে টিকিয়ে রাখবার জন্য অপর মানুষের দরকার হয় যিনি অপর মানুষটাকে ভালো জানেন, বোঝেন । তাঁর মর্মস্থলে হাত রাখতে জানেন । সবমিলিয়েই তৈরি হয় ভালোবাসা । অভিপ্রায় তৈরি হয় হাজার বছর বেঁচে থাকবার....

সাব্বির আহমেদ সাকিল
১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | ২৬ মে ২০২২ | নেত্রকোণা
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২২ রাত ১:২২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তেল আর জল কখনো এক হয় না......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩৫



জুলাই ছিলো সাধারণ মানুষের আন্দোলন, কোন লিডার আমারে ডাইকা ২৪'এর আন্দোলনে নেয় নাই। কোন নেতার ডাকে আমি রাস্তায় যাই নাই। অথচ আন্দোলনের পর শুনি আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নাকি মাহফুজ। জুলাই বিপ্লবের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্ল্যাং রেভলিউশন: ১৮+ সতর্কবার্তা ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৩০


সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকে একটা ভাইরাল ভিডিও চোখে পড়লো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সদস্য সালাউদ্দিন আম্মার গণজাগরণ মঞ্চ ৩.০ তে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন: দেখতে পাইলে বাকশাল, শা*উয়া মা*উয়া ছিড়া ফেল/... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতাঃ হে বলবান

লিখেছেন ইসিয়াক, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪০

কে আছিস বলবান!
হ্ আগুয়ান।
দে সাড়া দে ত্বরা।
ধরতে হবে হাল,বাইতে হবে তরী, অবস্থা বেসামাল।

জ্বলছে দেখ প্রাণের স্বদেশ
বিপর্যস্ত আমার প্রিয় বাংলাদেশ।
মানবিকতা, মূল্যবোধ, কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতির বাতিঘর।
সর্বত্র আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×