হিরো আলম আর কখনও রবীন্দ্র সংগীত কিংবা নজরুলগীতি গাইতে পারবেননা বলে মুচলেকা নেয়া হয়েছে । মুচলেকা আবার আদালতেও নেয়া হয়নি! আমি এই সিদ্ধান্তকে মানতে পারলামনা । সাংবিধানিকভাবে একজন মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলার, গান করার অধিকার রাখে ।
তাঁর মানে এই দাঁড়ালো যে দেশে খ্যাতনামা শিল্পী ছাড়া আর কেউ গান গাইতে পারবেননা । কারণ অন্যদের গানের গলা বেসুরা ।
হিরো আলম একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক । তাঁর গান করার অধিকার আছে । তাঁর গান আপনার অপছন্দ হতে পারে এটাই স্বাভাবিক, আপনার আপনার রূচি ভিন্ন । সে যেরকম মানুষ সেরকম কাজ-ই করবে সেটাই স্বাভাবিক । হিরো আলম তো জোর করে কাউকে গান শোনাননা বা তাঁর গান শোনানোর জন্য কাউকে ফোর্স করেননা ।
হিরো আলমকে টার্গেট করা হলে, তাহলে তো মাহফুজুর রহমানও গান করতে পারবেনা বলে মুচলেকা নেয়া উচিত । কারণ মাহফুজুর রহমানের গানও অধিকাংশ মানুষ পছন্দ করেনা, তাঁরও বেসুরা গলা ।
গানের এই সংস্কৃতি সংরক্ষণ করার অধিকার তো সংবিধানে নেই । তবে কিসের ভিত্তিতে তাঁর থেকে মুচলেকা নেয়া হলো! এখানে কাদের স্বার্থ দেখা হলো! নাকি হিরো আলম গরীব বলেই এই কাজ করাতে কি বাধ্য করা হলো!
আমি নিজেও আগ্রহভরে কখনও হিরো আলমের গান, নাটক, শর্টফিল্ম দেখিনা । কারণ সে একশ্রেণীর মানুষদের কাছে সমাদৃত, আমি সেই শ্রেণীর বাহিরে । কিন্তু সে গান করতে পারবেনা সেটা বলা তো অন্যায় । পৃথিবীর প্রত্যেক মানুষ-ই সুরেলা হোক, বেসুরা হোক গান গায় ।
হিরো আলমকে স্যালুট জানান এই কারণে যে সে, ‘আমায় বেবীওয়ালা খাইছেরে সামনে বসাইয়া’, ‘তুমি দিওনাগো বাসর ঘরের বাত্তি নিভায়া’, মেইন সুইচটা টিপ্পা দে’ সহ আরও অনেক অশ্লীল গান করেননি, প্রচার করেননি । কিংবা ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর মতো অসভ্যতামি, অশ্লীলতা করেননি ।
অথচ আমরা দেখেছি দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিকালে হিরো আলম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । বন্যার সময় এক হাঁটু পানির মধ্যে দিয়ে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন । এই হিরো আলমকে তো ফেলে দিতে পারেননা!
হিরো আলমের প্রতি স্রেফ জুলুম করা হলো ।
সাব্বির আহমেদ সাকিল
১৩ শ্রাবণ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল | ২৮ জুলাই ২০২২ ইং | শ্যামগঞ্জ, ময়মনসিংহ
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৩:৪৫