
সরকারি চাকরিতে আবেদন ফি বাড়ানো হইছে আজ থেকে সাত দিন পূর্বে । তেরো এবং ষোল গ্রেডের আবেদন ফি দ্বিগুণ করা হয়েছে । এগারো ও বারো গ্রেডে পূর্বে আবেদন ফি নির্ধারণ করা না থাকলে সেটা এখন তিনশো টাকা করা হয়েছে । সতেরো থেকে বিশতম গ্রেডে পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে একশো টাকা করা হয়েছে ।
বিবিএস ২০১৬-১৭ এর হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে বেকার সংখ্যা ২৭ লাখ । ২০১৭ সালের পর আর কোনো জরিপ করা হয়নি । লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) সংস্থাটির তথ্যমতে, বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি । প্রতি ১০০ জন স্নাতক ডিগ্রিধারীর মধ্যে ৪৭ জনই বেকার । অর্থাৎ প্রতি দুইজনে একজনের নাম বেকারের খাতায় অন্তর্ভূক্ত । [সূত্র: নিউজবাংলা২৪; ২০২০ সালের নিউজের আলোকে]
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি । প্রতিষ্ঠানটি আভাস দিয়েছে, কয়েক বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে ৬ কোটিতে দাঁড়াবে, যা মোট জনসংখ্যার ৩৯ দশমিক ৪০ শতাংশ হবে ।
যাইহোক ওসব পরিসংখ্যান নিয়ে অন্যদিন আলোচনা করা যাবে কিন্তু সরকার হুট করে দ্বিগুণ, তিন গুণ আবেদন ফি বাড়িয়ে এমন একটি কাজ করে দিলো যে ফি বাড়ানোর কারণে এখন অধিকাংশ আর এত অর্থ খরচ করে আবেদন করবেনা । সুতরাং আবেদনের সংখ্যা নির্ঘাত কমে আসবে অর্থ্যাৎ প্রতিদ্বন্দী কমে আসবে ।
প্রতি বছরান্তে সরকারি চাকরির জন্য যতগুলো আবেদন জমা হয় তাঁর সকল অর্থ জমা হয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে । আবেদনের এই অর্থগুলো বরাদ্দ হয় পরীক্ষক, কেন্দ্র ফি, ফলাফল মূল্যায়ন, প্রকাশ এসব ক্ষেত্রে ।
আবেদন ফি বাড়িয়ে দেশের একটা বিশাল পরিমাণ বেকার জনগোষ্ঠীর উপর এটি একটি নতুন চাপ সৃষ্টি করা হলো । ওদিকে নিত্যপন্যের দাম, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে তো সুঁই-সুতো থেকে সবকিছুর দাম লাগাতার বৃদ্ধি পাচ্ছে তো পাচ্ছেই ।
সাতদিন পূর্বে দেশের লাখো শিক্ষিত বেকারের কাছে এটি থাকার কথা ছিল সবচেয়ে বড় ইস্যু হিসেবে । যেটা নিয়ে কথা বলার বিশেষ প্রয়োজন ছিলো । যাঁরা ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত আছে তাঁদের এটি নিয়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করার কথা ছিল । যদিও এসবের কিছুই ঘটেনি এদেশে । না ঘটবারই কথা অবশ্য!
এই সপ্তাহের মধ্যে কয়েকটি ইস্যু শিক্ষিত বেকারদের কাছে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যমূলক হলেও সরকারি চাকরির আবেদন ফি বাড়ানোর ইস্যু যে কোন আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে পরে গেছে তাঁর ভ্রুক্ষেপ কেউ-ই করেনি । যেদিন নিউজটা পত্রিকায় আসে সেদিন আমি নিউজটা পড়লেও ভেবেছিলাম কেউ হয়তোবা বিষয়টি নিয়ে লিখবে । কিন্তু হতাশ হতে হলো যে বিষয়টি কারোর নজরে আসেনি!
আমি জানিনা এদেশে কার বা কাদের উপর ভরসা করা উচিত, বিশ্বাস রাখা উচিত । এইসব নিয়ে লিখতেও আসলে বিরক্ত লাগে, লজ্জা লাগে, ভয় লাগে । দুঃখিত এই উদ্বাস্তু বিষয়টি নিয়ে লেখাটি লেখার জন্য এবং পড়ে আপনার সময় নষ্ট করানোর জন্য!
সাব্বির আহমেদ সাকিল
১৭ আশ্বিন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল | রোববার | ০২ অক্টোবর ২০২২ ইং | বগুড়া
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




