
আমার ক্যাম্পাসে পাঞ্জাবি এক ধান্দাবাজকে ধরে ফেলি কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানেই । মায়ের চোখের অপারেশনের কথা বলে সে টাকা তোলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে । প্রথম যেদিন সে সাহায্য নিতে আসে সেদিন ওঁর কাছে থেকে কাগজগুলো দেখেছিলাম, আমাদের বেতগাড়ীর গ্রামীন জিসি চক্ষু হাসপাতালের কাগজপত্র ছিল ।
কয়েক মাস কেটে যাওয়ার পরও এখনও সে টাকা তোলে । আমাকে দেখলেই চোখের আড়ালে চলে যায় । গতদিন বাদামওয়ালা রেজাউল মামাকে বললাম এ তো বাটপার । প্রায় আট-নয় মাস ধরে ও ধান্দাবাজি করছে । মামা আমার কথার সাথে ঐক্যমত পোষণ করলেন । এখন সে আর মায়ের চোখের অপারেশনের কথা বলেনা, অন্য কথা বলে টাকা তোলে ।
সেদিন ডিপার্টমেন্টে শার্ট-প্যান্ট ইন করা আরে ধান্দাবাজ এসেছে । রুমে আমরা মাস্টার্সের কয়েকজন বসে আছি । সে পরিচয় দিলো একজন প্রাক্তন শিক্ষক ছিলো কোনো এক স্কুলের । তাঁর ছেলের লিভার সিরোসিস হয়েছে, সেজন্য সাহায্য নিতে এসেছে । এর মধ্যে আমি মজতাহিদকে বললাম, এই বাটপারকে চিনেছিস সে কিন্তু আগেও একবার এসেছিল । মজতাহিদ বললো, হ্যাঁ ফাস্ট কি সেকেন্ড ইয়ারে এসেছিল ।
উনাকে কাছে ডেকে বললাম যে কাগজপত্র দেখান । উনি প্রতিউত্তরে বললেন যে কাগজ আনেননি । সুতরাং কট খেয়ে গেলেন । ক্লাসের নতুন দুইটা মেয়ে সম্ভবত কিছু টাকা দিলো । ওঁরা দেখলোই যে আমরা লোকটার থেকে লিগ্যাল পেপার্স চাচ্ছি তারপরেও দিলো । মাইয়া মানুষ, তারপরে আবার নতুন! এজন্য আরকিছু বললামনা ওদের ।
এর আগে এক নেশাখোর এসে একটা সহপাঠীকে এমন কথা বলেছে যে ও খুব সম্ভবত ২০০ টাকা দিয়েছিলো । টাকা নিয়েই সে চম্পট । পরে সহপাঠী মেয়েটাকে বললাম যে ওই তো নেশাখোর, টাকা নিয়ে গিয়ে নেশা করে ।
বগুড়া শহরেও নতুন এক ধান্দাবাজ নারীর আবির্ভাব ঘটেছে ক’দিন ধরে । দু’টো সন্তান নিয়ে ঘোরে, একটা কোলে থাকে আরেকটা পাশে হেঁটে যায় । কান্নাকাটি করে টাকা আদায় করে তো করেই মানুষের পাও ধরে অনেকসময় । সেদিন সদর থানার পাশে দেখি একটা লোককে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নিচ্ছে ।
আজ আমরা তিন বন্ধু সাবগ্রাম হাটে গেছি সমুচা, সিংগারা খাওয়ার জন্য । সেখানেও দেখি এভাবে কান্নাকাটি করে টাকা আদায় করছে । ওরে বললাম যে তুমি এদিকেও আসো তাহলে । অর্থ্যাৎ এঁর বিস্তার পুরো বগুড়া । সে জানে কবে, কোন দিন হাট-বাজার বসে ।
বগুড়া শহরে এরকম ধান্দাবাজ, বাটপারের আবির্ভাব মাঝেমধ্যেই ঘটে । এঁদের থেকে সাবধান হওয়া উচিত । একজন পূর্ণাঙ্গ সুস্থ সবল মানুষ কোনোভাবেই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য না । তবে সবাইকে যে অবিশ্বাস করতে হবে এমনটি করা যাবেনা । লিগ্যাল এভিডেন্স থাকলে তারপরেই সাহায্য করা উচিত ।
সাব্বির আহমেদ সাকিল
০৬ কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, হেমন্তকাল | শনিবার | ২২ অক্টোবর ২০২২ ইং | সাবগ্রাম, বগুড়া
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




