
দইয়ের কথা উঠলেই প্রথমেই যে অঞ্চলের কথা মাথায় আসে, সেটি হলো ‘বগুড়া’ । গুণগত মান ও স্বাদযুক্ত দইয়ের জন্য বিখ্যাত এ শহর । ২০২৩ সালে বগুড়ার দই ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পায় । সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায় এ শহরে প্রতিদিন ৩ কোটি টাকার দই বিক্রি হয় । মৌসুমে যাঁর বিক্রি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় ।
ইসলাম ধর্মের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহাতে দই-মিষ্টির চাহিদা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় । আতিথেয়তায় খাবারের শেষে এই দুই মিষ্টান্নের জুড়ি নেই । খাবারের পর পাতে পছন্দের দই কিংবা মিষ্টি বাড়তি তৃপ্তি যোগ করে ।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই দুই মৌসুমে দই এবং মিষ্টির দাম লাগামহীন হয়ে যায় । ভোক্তাদের বাড়তি দামে পছন্দের ডেজার্ট আইটেমটি কিনতে হয় । ফলশ্রুতিতে উৎপাদকেরা এসময় অধিক লাভ করেন ।
মৌসুমে বাড়তি দামের কথা উঠলে উৎপাদকেরা নানা অজুহাত দেখান । দুধ, চিনি, কাঠকয়লার সংকটের প্রসঙ্গ তোলেন । যেন মনে হবে মৌসুম এলেই ঘাটতি শুরু হয়ে যায় । এসময় হয়তো গাভী রাগ করে দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়, চিনির গুদামে আগুন লেগে যায় ।
অথচ ঈদের দিন ব্যতিরেকে সর্বত্রই সেসব উপাদানের ঘাটতি থাকেনা । ঘাটতি থাকার প্রসঙ্গটাই অবান্তর । প্রতিদিন গাভী দুধ দিচ্ছে সেই দুধ দুধওয়ালারা সময়মতো পৌঁছে দিচ্ছে । কারিগররাও সমানতালে কারখানায় কাজ করছে । কারণ মৌসুমগুলোতে তাঁদের কাজের চাপ বেশী থাকে ।
মৌসুমে দই কিংবা মিষ্টি প্রতিটি পন্যতেই ভোক্তা পর্যায়ে ১০০-২০০ টাকা বাড়তি রাখা হয় । সেটা শহর হোক কিংবা গ্রাম । পাশাপাশি এই মৌসুমে দইয়ের হাঁড়িগুলো বিশেষ কায়দায় তৈরি করে নেয়া হয় যাতে দইয়ের পরিমাণ কম দেয়া যায় । যদিও লোক ঠকানোর এটি একটি প্রাচীন পদ্ধতি ।
চাহিদার সাথে লাগামহীন দামের এ দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে প্রয়োজন প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ, ভোক্তা অধিদপ্তরের তদারকি । পন্যের সঠিক দাম এবং মান নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সুবিধা পাক ভোক্তাসমাজ । ভোক্তাদের ওপর জুলুম বন্ধ হোক ।
ভরাট কণ্ঠে ভোক্তারা গেয়ে উঠুক, ‘বগুড়ার দই হালায় আবার জিগায়...’
সাব্বির আহমেদ সাকিল
২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, গ্রীষ্মকাল | বৃহস্পতিবার | ১২ জুন ২০২৫ ইং | গাবতলী, বগুড়া
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০২৫ রাত ৯:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



