
আজ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস । স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারী প্রথম গুমের শিকার হন ঔপন্যাসিক, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান । ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আনুমানিক ৬০০–৭৫০ জন মানুষ গুম হয়েছেন । যে মানুষগুলো কোথায় আছে, কেমন আছে—তা তাঁদের পরিবার জানেনা ।
জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটির লক্ষ্য হলো, বিশ্বব্যাপী গুম ও জোরপূর্বক নিখোঁজের মতো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি, ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ ও রাষ্ট্রকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা ।
পৃথিবীজুড়ে জোরপূর্বক গুমকে শুধু একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় । এই দিবসটি তাই বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রকে স্মরণ করিয়ে দেয়—নাগরিকের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং কোনো নাগরিককে গুম করার মতো অনৈতিক ও বেআইনি কর্মকাণ্ড সহ্য করা যায় না ।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, এমনকি সাংবাদিকদের গুমের ঘটনা আলোচনায় আসে ।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে মানুষ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু পরে আর খোঁজ মেলেনি ।
অন্তর্বর্তী সরকার এখন গুমের ঘটনা তদন্ত করছে । আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ সনদে সই করেছে বাংলাদেশ এবং গঠন করেছে গুম তদন্ত কমিশন । এ পর্যন্ত দুটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ।
গত ২৮ আগস্ট ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ । খসড়ায় গুমের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয় ।
রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে স্পষ্ট বার্তা আসবে যে, দেশে আর কোনো নাগরিক গুম হবে না । আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব সবাই মিলেই এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন, যেখানে ভিন্নমতকে সম্মান জানানো হবে, নাগরিক নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকবে এবং মানবাধিকারের মর্যাদা সর্বাগ্রে স্থান পাবে ।
সাব্বির আহমেদ সাকিল
১৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল | শনিবার | ৩০ আগস্ট ২০২৫ ইং | সাতমাথা, বগুড়া
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



