somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইনের ফাঁকফোকর-০২

০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক.
বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে কোটি টাকা বোঝাই জাহাজ চুরি করলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে একই জাহাজের ভেতর থেকে একটা টাকা চুরি করলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হবে। এই আইন বৃটিশদের রচিত। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধিতে এই বিধান রয়েছে। অনেকে বলে থাকেন, স্বাধীনতা অর্জন করেছি ৫২ বছর হয়ে গেলো। অথচ এখনো দেশে বৃটিশদের রচিত আইন চলছে। তাদের জন্য এটি একটি বড় যুক্তির হাতিয়ার হতে পারে! পুরা জাহাজ চুরি করলে তিন বছরের সাজা আর জাহাজের ভেতর থেকে একটা পয়সা চুরি করলেও সাত বছরের সাজা। এটা কেমন বিচার!

আগেই বলেছি দণ্ডবিধিতে এই বিধানটি রয়েছে। দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় সাধারণ চুরির শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি চুরি করলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানাদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। অন্যদিকে বসত ঘর ইত্যাদিতে চুরির শাস্তির বিধান রয়েছে ৩৮০ ধারায়। এতে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি মানুষের বসবাস বা সম্পত্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয় এমন ভবন, তাবু, জাহাজে চুরি করলে তার সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হবে। এছাড়া জরিমানাও করা হবে।

এর পেছনের দর্শনটা কী! একই চুরি অথচ একটিতে সাজার পরিমাণ বেশি। অন্য চুরিতে সাজা কম। এর কারণ হচ্ছে একক্ষেত্রে উন্মুক্তভাবে রাখা মালামাল চুরি হয়েছে। অন্যক্ষেত্রে দেয়ালের ভেতরে রাখা মালামাল চুরি হয়েছে। বাইরে রাখা মালামাল চোখের সামনে পড়লে মানুষের লোভ লালসা জাগতে পারে। এর ফলে সে চুরি করতে প্রভোকড হয়। প্রভোকেশনটাই এখানে ধর্তব্য। অপরাধের ক্ষেত্রে উস্কানি ছিল কীনা এটা বিবেচনার যোগ্য। অন্যদিকে দেয়ালের আড়ালে ঘর বা জাহাজের ভেতরে কোন মালামাল কাউকে প্রলোভন দেখাতে পারেনা। এ মালামাল চুরিতে কোন উস্কানি নেই। আছে পরিকল্পনা। পরিকল্পনা করেই ঘরের ভেতরে চুরি করতে হয়। আর সম্পূর্ণ জলযান বা অন্য যেকোন জিনিস ঘরের বাইরে চোখের সামনে থাকে। এসব কারণে অপরাধের ক্ষেত্রে উস্কানি ছিল এটা প্রমাণ করতে পারলে আসামী আইনের সুবিধা পেয়ে থাকে। যেসব দর্শনের ওপর বৃটিশ আইন রচিত হয়েছে, তার মধ্যে অপরাধের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করাটা অন্যতম। কীসের পরিপ্রেক্ষিতে, কোন অভিপ্রায়ে অপরাধটা করা হয়েছে, তার উপর সাজা নির্ভর করবে। এটাই বৃটিশ আইনের সৌন্দর্য। বাংলাদেশে রচিত আইনে এ বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে।

দুই.
আরেকটা উদাহরণ দেই। খুন করলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। আবার কয়েকদিনের সাজাও হতে পারে। এটি বিস্তারিত বুঝাতে গেলে কালপাবল হোমিসাইড বা অপরাধজনক নরহত্যা এবং মার্ডার বা খুন দুটি বিষয় বুঝতে হবে৷ প্রথমে অপরাধজনক নরহত্যার বিষয়টি বলছি। কেউ মৃত্যু ঘটানোর উদ্দেশ্যে বা মৃত্যু হতে পারে এমন দৈহিক জখম করার উদ্দেশ্যে বা কোনো কাজের মাধ্যমে মৃত্যু হতে পারে জেনেও সেসব কাজের মাধ্যমে কারো মৃত্যু ঘটালে তা অপরাধজনক নরহত্যা হবে।

ধরুন, একজন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গর্ত খুড়ে। পরে গর্তের উপর নাজুক কাঠ বা ঘাস বিছিয়ে দেয়। এতে ওই ব্যক্তি গর্তে পড়ে গিয়ে মারা গেলে তা অপরাধজনক নরহত্যা হবে। অথবা এক ব্যক্তি জানে অপর ব্যক্তি ঝোপের আড়ালে রয়েছে। সে জেনেশুনে ওই ঝোপের উপর গুলি করে। এতে ওই লোক মারা গেলো। এতে যে ব্যক্তি গর্ত খুড়েছে বা গুলি ছুড়েছে সে অপরাধজনক নরহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হবে। তবে আরেক ব্যক্তি চুরি করার উদ্দেশ্যে বা একটি কুকুরকে হত্যার জন্য ঝোপে গুলি করলে আর তাতে কেউ নিহত হলে গুলি ছোড়া ব্যক্তির অপরাধজনক নরহত্যার অপরাধ হবেনা।

এভাবে মার্ডার বা খুনেরও বিভিন্ন ধরণ রয়েছে। সরাসরি গুলি করে খুন করতে পারে। অথবা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এমন মৃদু আঘাত করে খুন করতে পারে যা সুস্থ অবস্থায় করা হলে মৃত্যু হতোনা। যদি আঘাতকারী রোগের বিষয়টি জেনেশুনে আঘাত করে তাতে খুনের অপরাধ হবে। রোগের বিষয়টি না জানলে খুনের অপরাধ হবেনা। তবে কারো হত্যার উদ্দেশ্য ছিলনা তারপরও রামদা বা মুগুর দিয়ে আঘাত করেছে। এতে কারো মৃত্যু হলে আঘাতকারী খুনের অপরাধে দোষী হবে। কেউ বিনা কারণে অনেক লোকজনের ওপর গুলি করলে, তাতে কারো মৃত্যু হলেও খুনের অপরাধ হবে।

তবে এমন অবস্থাও হতে পারে। কেউ কাউকে কোন একটা বিষয়ে উত্তেজিত করেছে। এতে ওই ব্যক্তি গুরুতর ও আকস্মিকভাবে উত্তেজিত হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তাকে খুন করে ফেলেছে। এটা মার্ডার বা খুন হবেনা। কালপাবল হোমিসাইড হবে৷ তবে এক্ষেত্রেও কিছু শর্ত রয়েছে। ধরুন একজন ব্যক্তি আরেকজনকে গালাগালি করেছে। আর এতে ওই ব্যক্তি গালাগালি করা ব্যক্তির পুত্রকে খুন করেছে। এটা খুন হবে। কারণ প্রোভোকেশন খুন হওয়া ব্যক্তির পক্ষ থেকে ছিলনা৷

একজন ব্যক্তি আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। এসময় প্রতিপক্ষ বলে যে, সে মিথ্যা সাক্ষ্য দিচ্ছে। এতে উত্তেজিত হয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যা করলে সেটা খুন হবে। কেউ কাউকে ঘুষি দিয়ে নাক তুলে ফেলার উপক্রম করে। এসময় তাকে আটকে ফেলা হয়। পরে তাকে হত্যা করলে খুন হবে। তবে নিজেকে আঘাত থেকে রক্ষা করার সময় প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে কাউকে মেরে ফেললে সেটা অপরাধজনক নরহত্যা হবে। খুন হবেনা। এভাবে সরল বিশ্বাসে সরকারি কর্মচারিকে প্রদত্ত ক্ষমতার বলে আইনানুগ বা প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কারো মৃত্যুর কারণ হলে সেটা খুন হবেনা। হত্যার কোন পরিকল্পনা ছিলনা। তবে হঠাৎ ঝগড়ার ফলে কারো মৃত্যূ হলে আর সেটা নির্মম ও অস্বাভাবিকভাবে না হলে সেটাও অপরাধজনক নরহত্যা। খুন নয়। এছাড়াও কারো প্ররোচনায় আঠারো বছরে বেশি বয়সের কেউ আত্মহত্যা করলে সেটা খুন হবেনা।

আমরা জানলাম কোনটা খুন আর কোনটা অপরাধজনক নরহত্যা। দুইটাতেই কারো মৃত্যু হয়। অথচ সাজা এক নয়। দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন এবং জরিমানার বিধান রয়েছে।

আর খুন নয় এমন অপরাধজনক নরহত্যার সাজার বিধান রয়েছে ৩০৪ ধারায়। এক্ষেত্রে মৃত্যুর অভিপ্রায়ে আঘাত করে থাকলে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হবে। আর আঘাতের উদ্দেশ্য মৃত্যু ছিলনা অথচ মৃত্যু হয়েছে এমন অপরাধজনক নরহত্যার সাজা দশ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের কারাদণ্ড, জরিমানা ও উভয়দণ্ড দেয়া হবে।

বৃটিশদের তৈরি আইন কেমন তার ধারণা দেয়ার জন্য চুরি আর খুনের বিষয়টি উল্লেখ করেছি। একই চুরি। একই খুন। অথচ এর সাজা ভিন্ন ভিন্ন। এর কারণও পরিস্কার। আগেও বলেছি। আবার বলছি, অপরাধের প্রেক্ষাপট, উস্কানি, সরল বিশ্বাস এসব বিবেচনা করতে হয়।

তিন.
এবার চলুন, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রণীত কোনো আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এমন একটি আইন পর্যালোচনা করি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর ১১ ধারায় যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ধারায় বলা হয়েছে,

যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান, তাহলে উক্ত স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্মীয় বা ব্যক্তি-মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।

যৌতুকের কারণে কোন নারীকে খুন করলে তার মৃত্যুদণ্ড হবে। হত্যাকারীকে যাবজ্জীবন বা এর কম মেয়াদে সাজা দেয়ার সুযোগ নাই৷ এই ধারার ক্ষেত্রে দণ্ডবিধিতে উল্লিখিত অপরাধজনিত নরহত্যার বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়নি। স্ত্রীর উস্কানি ছিল কীনা তা ধর্তব্য নয়। সাধারণ থাপ্পরে মৃত্যু হলেও মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে৷ এখানে অপরাধের অভিপ্রায় বা মেনস রিয়া ছিল কীনা সেটা বিবেচনারও সুযোগ রাখা হয়নি। এ আইনে যৌতুকের দাবিতে কোন নারীর মৃত্যুর বিচারে অপরাধিকে ফাঁসি দিতে হয়েছে৷ নয়তো খালাস দিতে হয়েছে৷ মাঝামাঝি আর কোন সাজা নেই৷ যৌতুকের জন্য কোন নারীকে হত্যার কোন উদ্দেশ্য ছিলনা, অথচ দুর্ঘটনাক্রমে মারা গেছে- এই আইনে এটা বলার কোন সুযোগ নাই। যৌতুকের কারণে হত্যা হয়েছে কীনা একমাত্র সেটাই দেখার সুযোগ রয়েছে৷ এই আইনের সমালোচনা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি শুধু বৃটিশদের তৈরি আইনের বৈশিষ্ট্য ও বাংলাদেশে তৈরি আইনের বৈশিষ্ট্য দেখাতে আলোচনা করলাম। বুঝতেই পারছেন, বৃটিশরা কত গবেষণা করার পর একটি আইন তৈরি করেছে৷ ওই রকম আইন তৈরি করা আর সম্ভব নয়৷ যারা ভাবেন বৃটিশদের আইন কেন এখনো চলছে, যারা বৃটিশদের আইন পাল্টাতে বলেন তারা হয় আইনের বিষেশত্ব জানেন না। না হয় সস্তা শ্লোগানে স্টান্ডবাজি করতে এমন কথা বলেন!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×