দেশের আইনে এমন কিছু অপরাধ রয়েছে যার সহযোগী হলে কোন অপরাধ নেই। একই অপরাধে অংশ নিলেও সহায়তাকারীকে আইনের আওতায় আনার কোন সুযোগ নেই। এছাড়াও দণ্ডবিধির চতুর্থ অধ্যায়ে সাধারণ ব্যতিক্রমসমূহ তো রয়েছেই; যেখানে অপরাধ করলেও তাকে সাজার আওতায় আনা যায়না। এর কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করছি। নয় বছরের কম বয়সের কোন শিশুর অপরাধ বলতে কিছু নেই। বারো বছরের কম বয়সের শিশু যার কোন কাজের পরিণতি সম্পর্কে বোধশক্তি হয়নি তার অপরাধ নেই। পাগলেরও কোন কাজের ক্ষেত্রে অপরাধ নেই। এগুলি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে আরেকটি লেখায় তুলে ধরবো। তবে এ লেখাটায় একই অপরাধে সহযোগিতা করলেও তাকে নিরাপরাধ হিসেবে বিবেচনার দিকেই ফোকাস করবো।
প্রথমেই জেনে নেয়া দরকার অপরাধে সহায়তার বিষয়টা কী! দণ্ডবিধির পঞ্চম অধ্যায়ে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে। সহায়তা বলতে বুঝায়- প্রথমত কোন কাজ করতে অন্য ব্যক্তিকে প্ররোচিত করা। দ্বিতীয়ত কোন কাজ করানোর জন্য এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে ষড়যন্ত্র করার ফলে ওই কাজটি সংঘটিত হওয়া। তৃতীয়ত, ইচ্ছাকৃত বা চুপ থেকে ওই কাজ করা।
তাহলে অপরাধে সহায়তা করলে সাজাটা কী হবে সেটাও জেনে নেই। কোন খারাপ কাজে সহায়তা করলে এবং সহায়তা করার ক্ষেত্রে আলাদা কোন সাজার বিধান না থাকলে মুল অপরাধের জন্য যে সাজা সহায়তাকারীও সেই সাজা পাবে।
তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে সহায়তাকারী এ সাজা পাবেনা। দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচারের শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে। কোন ব্যক্তি পরকীয়া করে অন্য কোন ব্যক্তির স্ত্রীর সাথে দুজনের সম্মতিতে স্বেচ্ছায় যৌনসঙ্গম করলে যা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হয়না, তাহলে ওই ব্যক্তি ব্যভিচারের অপরাধে দোষী হবে। এজন্য ৫ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হবে। যৌন সঙ্গম নারী পুরুষ উভয়ের ইচ্ছায় হলেও ওই নারীকে এক্ষেত্রে সহায়তাকারী হিসেবে চিহ্ণিত করার সুযোগ নেই। উক্ত ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, অনুরূপ ক্ষেত্রে নারীকে খারাপ কাজে সহায়তাকারী হিসেবে দণ্ড দেয়া যাবেনা। মানে হলো- যৌনসঙ্গম করার জন্য পুরুষের সাজা হবে। মহিলার কোন অপরাধ নেই।
দ্বিতীয় ক্ষেত্রটা ঘুষ প্রদানকারীর ক্ষেত্রে। কোন সরকারি চাকরিজীবী ঘুষ নিয়েছেন। এতে তিনি দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তবে প্রথম পক্ষ ঘুষদাতা নিজের ইচ্ছায় সুবিধা পেতে ঘুষ প্রদানে সহযোগিতা করলে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় দুষ্কর্মে সহায়তার অপরাধ করেছেন মর্মে গণ্য হবেন। তবে দণ্ডবিধির ১৬৫-খ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোন সরকারি কর্মচারিকে ঘুষ দিতে প্রলুব্ধ, বাধ্য, জোর বা বশ করা হলে ঘুষদাতা কোন অপরাধে সহায়তা করেননি বলে গণ্য হবেন। মানে কাউকে ঘুষ দিতে বাধ্য করলে অথবা ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয়না এমন পরিস্থিতিতে ঘুষ দিলে তার কোন অপরাধ হবেনা। মানে হলো- যিনি ঘুষ খাবেন তিনি সাজা পাবেন। আর যাকে ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়েছে তিনি নিরাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন। ঘুষের অপরাধে সহায়তা করলেও তাকে ধরা যাবেনা।
পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ এ পরিক্ষার্থীর জন্য কোন সাজা উল্লেখ করা হয়নি। পরীক্ষার্থীকে নকলে সহায়তা করলে সহায়তাকারীর জন্য সাজার ব্যবস্থা রয়েছে। যিনি বা যারা কোন পরীক্ষার্থীকে কোন লিখিত উত্তর অথবা কোন বই বা লিখিত কাগজ অথবা তার কোন পৃষ্ঠা কিংবা কোন উদ্ধৃতি পরীক্ষার হলে সরবরাহ করেন অথবা মৌখিকভাবে বা যান্ত্রিক উপায়ে কোন প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য বলে দিয়ে সহায়তা করেন তিনি বা তারা ধারা ৯ অনুযায়ী পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড যা দুই বছরের নিচে নয় এবং অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবেন। তবে পরীক্ষার্থীর বিষয়ে কী হবে তা আইনে উল্লেখ করা হয়নি। আইন প্রণেতারা চাননি, পরীক্ষার্থীরা এই আইনে সাজা পাক। তবে নকলের অপরাধে তাকে সহায়তাকারী হিসেবে দণ্ডবিধির ১০৮ ধারায় শাস্তি দেয়ার সুযোগ আছে কী! তবে সেটা প্রয়োগ করা কখনোই ঠিক হবেনা! তবে কোন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা গ্রহণের সাথে সংশ্লিষ্টদের বাঁধা প্রদান করলে মারধর করলে তাকে সাজা দেয়া যাবে। তবে তার বয়স ১৮ বছরের কম হলেও আরেক ঝামেলা। মোবাইল কোর্টে সাজা দেয়ার কোন সুযোগ নেই। থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।