মানুষের মৃত্যু হয় না, হয় আত্মার স্থানান্তর। সেই অর্থে অমরত্ব কথাটি সত্য। কেননা, স্থানের পরিবর্তন হলেও জীবের প্রাণ অক্ষত থেকে যায়। তবে এই মতের সাথে অনেকেই একমত হবেন না— সঙ্গত কারণে এই দ্বিমত অতি সাধারণ ও স্বাভাবিক। মণ্ডিতরা বলবেন, এই জীবনের পূণ্য-অপূণ্যের বিবেচনায় মৃত্যুর পর তার প্রাণ ঠিক থাকলেও, ঠিক থাকবে না তার শরীর। কারণ, পূণ্যের ভর বেশি হলে, পুরস্কার হিসেবে দেয়া হবে উন্নত শরীর ও উচ্চ মর্যাদা। আর অপূণ্যের বিষয়টি এর একেবারে বিপরীত। তাদের ধর্ম শাস্ত্র মতে এটা হল— পূণর্জন্ম। যার ভালো-মন্দ নির্ণীত হয় এই জনমের কর্মের উপর।
নাস্তিকরা দেহ বা প্রাণের অমরত্ব স্বীকার করে না। তারা মনে করে, দেহ বা প্রাণ; কোনোটারই ফিরে আসা সম্ভব না। কর্মফল বলতে কিছু নেই। তাই স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস বা তার গোলামি করার প্রশ্নও নেই। জীবন হল, উপভোগের বস্তু। বিধান ছাড়া যেভাবে পারা যায় উপভোগ করাই বুদ্ধির পরিচয়। তাওহীদ অবিশ্বাসীদের বিশ্বাসও প্রায় এরকমই।
মুসলিমদের বিশ্বাস হিন্দু বা নাস্তিকদের বিশ্বাসের অনুরূপ নয়। তাদের মতে কর্মফল আছে। এবং এই ক্ষণিকের জীবন ফয়সালা করবে অন্তহীন জীবনের। সে হিসেবে তারা এই জীবনের থেকেও বেশি প্রাধান্য দেয় পর-জীবনের প্রতি। যার কারণে, এদের জীবন চলে সুশৃঙ্খল বিধান মেইনটেইন করে। এরা ইচ্ছেমতো চলে না। এরা এদের জীবনের হিসেব নেয়, প্রভূর কাছে হিসেব দেয়ার আগে। এরা অন্যদের মত মানবতার বুলি না আওড়িয়ে, রবের দেয়া বিধান ‘রহমত আলাল খালক’ এর উপর বিশ্বাসী।
ধর্ম নির্বাচন কিংবা এর প্রতি পূর্ণ অবিশ্বাসের সুযোগ প্রত্যেকের থাকলেও এর পরিণতি পাল্টাবার ক্ষমতা কারোর নেই।
ছবি: সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:০৬