আমরা কিছুদিন আগে যেমন ভাগ্যের দোষে এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতকে হারাতে ব্যর্থ হই, তেমনি আজকে পদার্থবিদ্যায় নোবেল প্রাইজ ঘোষণার পর আবারো আমরা ভাগ্যকে দোষ দিতে পারি। ৬ বছর বয়সী সুবর্ণ আইজ্যাক কে নোবেল দেয়া হয়নি (কিছুক্ষন হেসে কেঁদে খেলে নিতে পারেন)।
এইবছর নোবেল প্রাইজ দেয়া হয় তিন জনকে। নোবেল প্রাইজ এর অর্ধেক পাবেন Arthur Ashkin বর্তমানে উনি বেল ল্যাব এ কর্মরত। বাকি অর্ধেক পাবেন গুরুশিষ্য Gerand Mourou এবং Donna Strickland. এইবছরে নোবেল প্রাইজ এই দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ যে একজন নারী নোবেল লরিয়েট আছেন। এইবার আসি কি জন্য এরা নোবেল পেলেন।
Arthur Ashkin নোবেল পান অপটিক্যাল টুইজার বানানোর জন্য। প্রথমেই যে প্রশ্ন আসে এইটা কি খায় না পিন্দে? এককথায় বলতে গেলে অপটিক্যাল টুইজার এমন একটা সিস্টেমের নাম যেখানে আলো দিয়ে কোনও কিছু ধরা সম্ভব। এএএ! আলু আলো ছাড়া হয় না এইটা জানি সালোকসংশ্লেষণ লাগে। আলো দিয়ে কিছু ধরাও সম্ভব। ইয়েস এইখানেই Arthur Ashkin ভেল্কি। ১৯৬০ সালে মেইমেন রুবি লেজার আবিষ্কারের পর Arthur Ashkin একটা নিউইয়র্কের বেল ল্যাব এ একটা অদ্ভুত জিনিস খেয়াল করেন। এইটুক তো সবাই জানি যে লেজার এ তীব্র আলো থাকে । ছোটবেলায় যেইটা এর অর চোখে মারতেন অই লেজার কিন্তু ল্যাব এ আরও হাই পাওয়ার এর লেজার ব্যবহার হয়। লেজার এর আলো যত দূরে যেতে থাকে তত আলোর তীব্রতা কমতে থাকে। তো এই আলো যাওয়ার পথে কোনও গোলাকার বস্তু রাখলে দেখা যায় ওইটা কেন্দ্রের দিকে আসতে থাকে মানে লেজারের উৎসের দিকে। এই ব্যাপার টাই অপটিক্যাল টুইজার। তো কি হইসে? কি এমন হাতি ঘোড়া আবিষ্কার এইটা? এইবার চিন্তা করেন একটা ভাইরাস এই লেজারের আলোক পথে আছে এবং আমি এইটা কে অপটিক্যাল টুইজার দিয়ে ধরে ফেললাম। এখন ধরার পর কি করব? বইল্লেন না ভাজি করে মেস এ খালা না আসলে রান্না করে খাব। এইসব ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ধরে ধরে এদের নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা যাবে। এমনকি পরমাণু এর হাঁটাহাঁটি, রোমান্স (বন্ধন) সবই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। টিউশনে এখন স্টুডেন্ট প্রশ্ন করলে বইলেন না যে কোনও ব্যাটা পরমাণু চোখে দেখছে?
এইবার আসি গুরুশিষ্যর কীর্তিতে। ক্ষুদ্র তরঙ্গের লেজার কে টাইনা লম্বা করলে এই পিক ( Peak) পাওয়ার কমে যায়। এইবার এই পিক ( Peak) পাওয়ারের আলো কে বিবর্ধিত করে আবার সংকোচিত করলে যেই লেজার পাব সেটার তীব্রতা আগের চেয়ে বহুগুণে বাড়ে। Gerand Mourou এবং Donna Strickland এই দুইজন এই কাজটাই করছেন। যেইটা আগে করা সম্ভব হত না। কারন লম্বা করে বিবর্ধন করলে যে ম্যাটারিয়াল এর উপর বিবর্ধন করা হত ওইটাই নষ্ট হয়ে জেত। ফাইবার অপটিক্স কমুনিকেশন এ এই বিবর্ধন করা হয় ইরবিয়াম দিয়ে। এখন ক্ষুদ্র তরঙ্গের আলো দিয়েও কমুনিকেশন করা সম্ভব এই আবিষ্কারের কারনে। আর কি করা যাবে। ধরেন আপনার দর্শনাভূতির স্থায়িত্বকাল ১/১০ সেকেন্ড থেকে বেড়ে ৫ সেকেন্ড হয়ে গেছে। আপনি কে দেখবেন বলেন তো? সবকিছু দেখবেন। তামিল মুভি এর হিরো হয়ে যাবেন। গুলি করলে গুলিতো দেখবেন সাথে নাস্তাপানি করে কলাগাছ দিয়ে গুলি সরায়ে দিতে পারবেন। একদম ষ্টীল ক্যামেরা বানানো সম্ভব।
অনেকদিন পর লিখলাম। ভুল ক্রুতি মার্জনীয়(ঝাড়ু) অপরাধ হিসেবে দেখবেন।