দাড়ি কেন রাখে ওই মুসলিম পুরুষগুলো?
অদ্ভুত এক মুসলিম সমাজ আমরা!
নিজেকে মুসলিম মনে করা মানুষগুলো এমন এক চিন্তা ও শিক্ষা নিয়ে বড়
হয়েছে যে কেউ দাড়ি রাখলে তাকে প্রশ্ন করে "কী ব্যাপার শিবির করো নাকি?/
তুমি কি জঙ্গী-টঙ্গী হয়ে গেলা?"...
আমাদের ইজ্জত নিয়ে কি আদৌ চিন্তা করি আমরা?
আমাদের এই সমাজটাকে জাহেল সমাজ বললে কি অত্যুক্তি হয় কিনা আমার
জানা নেই। এখান প্রচলিত কনসেপ্টটাই এমন যে-- হজ্ব
থেকে ফিরে দাড়ি রাখতে হয়, আর হজ্বে যেতে হয় বৃদ্ধ বয়সে!!
এদিকে যৌবনে ছেলেদের গাল হবে চকচকা, টেলিভিশন কমার্শিয়ালে দেখানো হয়
চকচকা গালের প্রতি নারীদের অনেক 'আকর্ষণ'!!
মেয়েদের হিজাব প্রয়োজন এমন কনসেপ্টটা কমবেশি মুসলিম
(যারা আসলেই নিজেদের মুসলিম মনে করেন)
পরিবারগুলোতে থাকলেও ছেলেদের দাড়ির কনসেপ্টটা একদমই নেই।
এই কারণেই সমাজে প্রো-সেক্যুলার লোকেরা দাড়িওয়ালা ছেলেদের নিয়ে একটু
বেশি সহজে কৌতুক করার ধৃষ্টতা দেখায়। তবে আজকাল অনেক পরিবারেই চল্লিশ
পেরিয়ে যাওয়া 'বোরকা পরা' মায়ের জিন্স-টিশার্ট পরিহিতা সন্তান
পাওয়া যায়। পর্দার কনসেপ্টটাকে পানি দিয়ে গুলে খাওয়া হয়ত এটাকেই বলে!
প্রকৃতপক্ষে, দাড়ি কেবল ইচ্ছে হলেই রাখার জিনিস নয়। দাড়ি আমাদের
ফিতরাতের সাথে সম্পর্কিত। দাড়ি রাখা দরকার কেননা এটা মুসলিম
পুরুষদের রাখতে হয়। দাড়ি ছিলো নাবী রাসূলদের, দাড়ি ছিলো সাহাবাদের,
দাড়ি ছিলো এবং আছে ইসলামের সকল ইমামদের। দাড়ি মুসলিম পুরুষের পরিচয়,
এতে মিশে থাকে মুসলিম পুরুষের আত্মমর্যাদা, দাড়ি একটা ভালোবাসার চিহ্ন।
প্রিয় নবীর সুন্নাতকে ভালোবেসে ধারণ করা, যাকে ভালোবাসি তাকে অনুকরণ করা ও তার কথাকে সম্মান করে মেনে চলার একটি পরিচয় এই দাড়ি।
যার দাড়ি নেই, তার নিজ চকচকে নারীসুলভ গাল নিয়ে দাম্ভিক ও আত্মবিশ্বাসী হওয়ার
কিছু নেই। যদি কোন বড় কারণ থেকেই থাকে, তাহলে তার উচিত নিয়মিত
দোয়া করা আল্লাহ যেন তার পরিস্থিতিকে সহজ করে দেন এই সুন্নাহটি পালনের জন্য।
মুশরিকদের কাজ হলো দাড়ি চেঁছে ফেলা (শেইভ করা)
কিংবা নানান কারিকুরি করে দাড়ি কাটা।
ঢাকার রাস্তায় আজকাল বাঘের খামচা দেয়ার মতন ডিজাইনের দাড়িমুখ
পুরুষ দেখা যায়। তারাও কাউকে না কাউকে 'ফলো' করে।
যে যাকে ভালোবাসে, তার মত করেই নিজেকে তৈরি করে। যারা আল্লাহকে ভয়
করে ও রাসূলকে ভালোবাসে, তারা ইসলামকে মেনে চলে।
মনে রাখা দরকার, যারা যাদেরকে ভালোবাসে ও অনুকরণ করে,
আল্লাহ আখিরাতেও তাদেরই সান্নিধ্যে রাখবেন। আমাদের অনুকরণ ও
ভালোবাসা কি জাহান্নামের নাকি জান্নাতের পথে, সেটা মাথায়
রাখা খুব দরকার।
যেসব মুসলিম ভাইদের দাড়ি নেই, আল্লাহ যেন তাদের অন্তরে ঈমানকে বাড়িয়ে দেন
এবং দাড়ি রাখাকে সহজ করে দেন। আমাদের এই স্রেফ মুসলিম
নামওয়ালা সমাজে যেন সত্যিকারের দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেই তাওফিক
আল্লাহ যেন দান করেন। আমাদের পরিবারগুলোতে আমরা যেন ইসলামের
জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে পারি। প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) সুন্নাহ,
মুখের দাড়ির প্রতি কৌতুক ও তাচ্ছিল্যের
ধৃষ্টতা যেন কারো না হয় কখনো...
---- মাষ্টার মাইন্ড
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৫