ইচ্ছা ছিল প্রথম আষাঢ়ে ছাদে যাবো
বৃষ্টি দেখতে,
যাওয়া হয় নাই।
বৃষ্টি তো আর ক্যালেন্ডার দেখে আসে না।
সে কখনো মাসের আগেভাগেই দরজায় কড়া নাড়ে,
আবার কখনো হুট করে হাওয়ায়
হালকা জলছবি আঁকে।
বৃষ্টি হচ্ছে হঠাৎ ভেজা গন্ধে
মন উদাস হয়ে যাওয়া,
বৃষ্টি হচ্ছে আজকের এই খেয়ালী আকাশ,
মন ভালো আবার খারাপ,
বৃষ্টি হচ্ছে একটা কিশোরী মন।
হঠাৎ এই যে মুষলধারে বৃষ্টি!
ঘরের লাইট ফ্যান বন্ধ করে
চুপচাপ বসে থাকি বারান্দায়
যদিও শহরের কংক্রিটের দেয়ালে
রুক্ষ আবহাওয়া বন্দী,
শহরের বারান্দায় বৃষ্টি আসেনা।
আমরা যেমন তেমন করেই বেঁচে থাকি,
আমাদের মতন বৃষ্টি ও
যেমন তেমন করেই ঝরে;
এই আছি এই নাই এর মতন
কখনো প্রেম নিয়ে, কখনো বেদনা নিয়ে
কখনো শুধুই একাকীত্ব নিয়ে ঝিমায় রাস্তায়
বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটায়।
জানালার ওপারে
সাকুলেন্ট গুলো সরিয়ে রাখলাম
বারান্দায় একটা ফাঁকা চেয়ারে।
ব্যস্ত শহরের উঁচু দালানের আড়ালে
চলছে বিষণ্ণতা।
বারান্দার কোণে আজ
এক কাপ চা রেখেছি বৃষ্টির জন্য,
বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায় রঙ কিছুটা কমে গিয়ে
মেঘলা, বিষণ্নতা বুনে দিচ্ছে।
জানালার কাঁচ ধোয়াটে হচ্ছে ক্রমাগত।
একটা পাখি উড়ে যায় অন্য বারান্দায়
তার মনেও বৃষ্টির আবেগ তাড়িত বিষন্নতা
হারায় এক অনূঢ় বিকেলের কথায়
যেখানে সবই ছিল একটু একটু।
এই শহরে কেউ কাউকে চেনে না,
তবু পরিচিত চায়ের কাপে রোজ
কত কথা।
তারপর যে যার পথে চলে যায়
অনাকাঙ্ক্ষিত পুরাতন পথে বৃষ্টিতে ভিজে।
আমি তাকিয়ে থাকি মেঘে,
গাছের পাতায়,
দূরে,
কাছে,
পাশের বাড়িতে,
যেখানে একটা পাখি বসে আছে,
যেখানে একটা আম গাছ ,
যেখানে একটা ছোট্ট জানালা,
যেখানে মনেহয় রাজ্যের শান্তি।
মনে পড়ে স্কুলের ফেলে আসা দিন,
বৃষ্টি হলেই ছুটি,
বৃষ্টি হলেই ভেজা কাক,
ভিজতে ভিজতে হেঁটে যাওয়া রাস্তায়
কাদামাটির গন্ধে
এখন আমি নস্টালজিক
নিজের ভেতরে কোলাহলে ভিজি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৮