somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সানজিদা আয়েশা শিফা
আমি সানজিদা আয়েশা সিফা। আগে এই ব্লগে আলোর পরী নিকে লিখতাম। জন্মেছি পটুয়াখালিতে। এইচ এস সি পর্যন্ত সেখানেই পড়াশুনা।পরে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আই ই আর থেকে অনার্স মাস্টার্স আর এখন এম ফিল করছি। ফেইসবুকে আছি https://www.facebook.com/sanjidamahim

দুঃসময়ের বন্ধু আর সুসময়ে শত্রু

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুঃসময়ে যেমন বন্ধুর পরিচয় মেলে, তেমনি সুখের সময় আপনাকে অবশ্যই কিছু শত্রু চিনিয়ে দিবে। আপনার সামান্য একটু সুখে আপনার কিছু হিংসুকের ক্লেদভরা হৃদয় উন্মুক্ত হয়ে যাবে, আপনার জন্য কি ভীষণ দগদগে পুঁজে ভরা নিন্দা তাতে !আপনার হাতে তুচ্ছ আধ ফোটা ফুলের একটা কলি দেখে কারো পৃথিবী জুড়ে তার যত অপ্রাপ্তি সব কিছুর জন্য আপনার ওই সামান্য সুখটুকু দায়ী, ঠিক এমনই মনে হবে। আপনার ভাল চাকরি হয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই কোটা আছে, অথবা টাকা দিয়েছেন, ভাল স্ত্রী পেয়েছেন? নিশ্চয়ই বোকা দেখে মেয়েটি আপনাকে বিয়ে করেছে। ভাল স্বামী পেয়েছেন? পটিয়েছেন নিশ্চয়ই ।
নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য হেইটার্সরা আপনার যোগ্যতাকে খাট করবেই, কিন্তু তবুও আপনার জন্য এতটুকু মঙ্গলকামনা নয়।
দেখা গিয়েছে সারা জীবন প্রার্থনা করে কপালে দাগ তৈরি করেছেন কোন আন্টি অথচ আপনার সামান্য সুখটুকু যেন তার হৃদয়ে আগুনের হল্কা বইয়ে দেয়।প্রার্থনার সার কথাটুকু ভুলে ঝামটা মেরে বলে বসেনঃ জানি না বুঝি এত পয়সা কোথায় পেয়েছে?
আপনি কিছুটা খ্যাতিমান হয়ে গেছেন টিভিতে আপনাকে, দেখা যায়, ফেইসবুকে আপনার অনেক ফ্যান, আপনার লেখা দু' চার জন পড়ে হয়ত, ঠিক একই সাথে শত হৃদয়ে আপনার জন্য জমা হয়েছে কি ভীষণ অশুভকামনা!
এজন্যই বুঝি অস্কার ওয়াইল্ড বলেছিলেনঃ
সাধারণ লোকের সহনশীলতা খুব বেশী, তারা প্রতিভা ছাড়া আর সব কিছু সহ্য করতে পারে।
আলোচনা তখনই মুখরোচক হয় যখন তাতে যুক্ত হয় সমালোচনা। নিজের দিকে একবার না তাকিয়েই আমরা অন্যের খুঁতগুলো খুঁজে বলে এক ধরনের বিকৃত তৃপ্তি লাভ করি। চেনিং পোলাক বলেছিলেনঃ সমালোচক হল সেই খোঁড়া লোক যে দৌড়ানো শেখায়।
আমাদের জাতীয় ধারায় একই প্রতিচ্ছবি। কেউ কিছুটা উঁচু অবস্থানে পৌঁছলে তাকে নিচে অপদস্থ অবস্থা দেখার জন্য আমরা সুযোগ খুঁজি, এবং সুযোগ পাওয়া মাত্রই হ্রদয়ের সমস্ত বদহজমটুকু উদ্গিরন করি। নোবেল বিজয়ী, বড় লেখক, চিত্র তারকা, ফেইসবুক সেলিব্রেটি কেউই তাতে বাদ পড়ে না।

বঙ্গবন্ধু এজন্য আক্ষেপ করে বলেছিলেনঃ পরশ্রীকাতরতা শব্দটি পৃথিবীর অন্য কোন জাতির অভিধানে আছে কিনা আমার জানা নাই।
তবে এটা আসলে সব সমাজেই আছে , কাহলিল জিব্রান তার একটি বইয়ে বলেছেনঃ Travel and Tell No one, Live a true love story and tell no one, Live happily and tell no one.
People ruin beautiful things
আরেকজন লেখক, এই মুহূর্তে নাম মনে নেই তার বিখ্যাত একটা উক্তি ছিল যেঃ সারাজীবন স্রষ্টার কাছে বলেছি, প্রভু তুমি আমার নিন্দুকদের হাস্যকর বানিয়ে দাও, তিনি তাই করেছেন।
মেডিটেশনের বিভিন্ন মেথড যারা ফলো করেন, তারা জানেন যে মেডিটেশনে অন্যের মঙ্গলকামনা একটা বড় অংশ হিসেবে থাকে। কারণ যখন অন্যের জন্য মঙ্গলকামনা করা হয় তখন নিজের মঙ্গলসাধন এমনিতেই হয়।
অন্যের ভালটুকু যে হৃদয়, হৃদয় খুলে নিতে পারে, তার সেরাটুকুর স্রষ্টার আদেশে অবশ্যই ঘটে ঠিক নিউটনের তৃতীয় সূত্রের মতই।
মেয়েটি উদ্যোক্তা হয়ে নতুন কিছু শুরু করেছে, তার জন্য একটু শুভকামনা করি , ছেলেটি ভাল চাকরি পেয়েছে তার জন্য মন থেকে দোয়া করি, মেয়েটি কথা দিয়েও অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলেছে তার নামে কুৎসিত মিথ্যা না বলি, বন্ধুর ছেলেটি ভাল যায়গায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তার জন্য আনন্দিত হই। ভাল কাজ, লেখা দেখলে না হয় লাইক দিয়ে উৎসাহিত করি ।
প্রতিদ্বন্দ্বীকে অভিনন্দিত করে নিজেই হই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। কেউ যখন এগিয়ে যেতে চায় নিজের বৃহৎ সত্ত্বাটুকু দিয়ে সেই পথচলায় গতি সঞ্চার করি।
অন্যের জন্য শুভকামনা ঘুরে বহুগুণ হয়ে নিজের কাছে আসে, সেটা দেখার জন্য অন্য জনম পর্যন্ত অপেক্ষার দরকার নেই,
তা ঘটে এই জনমেই। আমাদের চোখের সামনেই।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×