জামায়াত নেতা বললেন
মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখন নিজামীর বিরুদ্ধেও হচ্ছে...
‘ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার সময় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র হয়েছে। তেমনি আজ বাংলাদেশে নিজামীর বিরুদ্ধেও মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার সিরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের আলোচনা সভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর শাখার আমির রফিকুল ইসলাম খান এ কথা বলেন। ঢাকার বড় মগবাজারের আল ফালাহ্ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সভায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য ও পল্টন থানা জামায়াতের আমির শফিকুল ইসলামও একই রকম কথা বলেন।
তবে গত রাতে যোগাযোগ করা হলে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, তিনি মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে নিজামীর তুলনা করেননি। তিনি বলেন, ‘এই তুলনা করার তো প্রশ্নই ওঠে না। আল্লাহর রসুলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, আর ইসলামি আন্দোলনের নেতাদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে—এটা কি তুলনা বোঝায়? বোঝায় না।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের আরেক সদস্য ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বলেন, আল্লাহর আইন চালু ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। জামায়াত ও শিবির সেই আইন চালুর জন্য কাজ করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘মহানবী যখন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন, তখন তাঁকে সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়েছে, তাঁর ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, উটের পচা নাড়িভুঁড়ি মাথায় ঢেলে দেওয়া হয়েছে, মিথ্যাচার করা হয়েছে, ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তেমনি বাংলাদেশে নিজামী সাহেব জামায়াতে ইসলামীর আমির হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সাঁথিয়া (পাবনার উপজেলা) থেকে হাড়গোড় নিয়ে এসে তাঁকে খুনি বানানো হয়েছে।’... তিনি বলেন, ‘ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার সময় মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, ষড়যন্ত্র হয়েছে। তেমনি আজ বাংলাদেশে নিজামীর বিরুদ্ধেও মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
পল্টন থানা জামায়াতের আমির শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকল মানুষ শ্রদ্ধা করবে—এটা নবীর ক্ষেত্রেও হয়নি। নবীর পথে বাধা এসেছে, অপপ্রচার চালানো হয়েছে, কাঁটা বিছানো হয়েছে। তেমনি আজকেও আমরা যাঁরা একই কাজ করছি, তাঁদের পথে বাধা দেওয়া হচ্ছে, অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, কাঁটা বিছানো হচ্ছে।’
আল্লাহর আইনের দাবি: প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বলেন, ‘আজ দেশে সমস্যার অভাব নেই, সেই সময় সরকারের কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা জামায়াত ও ছাত্রশিবির। অথচ সরকারের উচিত, শিবিরকে তার চরিত্রের জন্য স্যালুট করা।...আল্লাহর হুকুম, তাঁর আইন দিয়ে সমাজ সাজানো যদি অপরাধ হয়, তাহলে সেই অপরাধ জামায়াত-শিবির করতেই থাকবে। ১৫ কোটি মানুষের দেশে রাসুলের বিধান কার্যকর হবে না, আল্লাহর বিধান কার্যকর হবে না—এটা হতে পারে না।’
ইদানীং জামায়াতের নেতারা নানা সভা-সমাবেশে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছেন। অথচ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার শর্ত হিসেবে দলের গঠনতন্ত্র থেকে আল্লাহ্র আইন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বাদ দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী।
২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনে সংশোধিত গঠনতন্ত্রের খসড়া জমা দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। ২০০৯ সালের ১১ জুলাই দলের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা গঠনতন্ত্রের এই পরিবর্তন অনুমোদন করে। কমিশনে গঠনতন্ত্র জমা দেওয়ার দিন কামারুজ্জামান বলেছিলেন, আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা নিয়ে নানা কথা ওঠায় তাঁরা বিষয়টি গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দিয়েছেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




