somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরজ আলি মাতুব্বরের একটি প্রশ্ন ও কিছু কথা

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরজ আলী মাতুব্বর, আপনাকে বলছি, জানি না আপনি শুনছেন কিনা, তবুও বলছি। বৈজ্ঞানিক ভাবে একজন মানুষের মৃত্যুর পর তার দেহের বিনাশ ঘটে, কিন্তু তাঁর আত্মার কি ঘটে, তা বিজ্ঞান সঠিকভাবে বলতে পারেনা। ধরে নিই, মৃত্যুর পর আত্মার কোন বিনাশ ঘটে না। তাহলে আপনার গত হয়ে যাওয়া (অবশ্যই দেহত্যাগ করে গত হওয়া কিন্তু পুরোপুরি গত হওয়া নয়) আত্মাটি হয়তো আমার কথা শুনছে। দয়া করে নিচের বিবৃত অংশটি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।

আপনি আপনার সত্যের সন্ধানে বইয়ের প্রশ্নাবলীঃ দ্বিতীয় প্রস্তাব (ঈশ্বর বিষয়ক) এর ৯ম অনুচ্ছেদ (স্থান, কাল ও শক্তি – সৃষ্ট না অসৃষ্ট) – এ বলেছেন এবং প্রমাণ করেছেন যে, ঈশ্বর যেমন অনাদি, অনন্ত, অসীম ও নিরাকার তেমনি স্থান, কাল এবং শক্তিও অনাদি, অনন্ত, অসীম ও নিরাকার। আপনি বলেছেন, যদি স্থান, কাল এবং শক্তি অনাদিকাল থেকে স্বভাবতই বিদ্যমান থাকে, তাহলে এরা ঈশ্বরের সৃষ্টি নয়। আপনি আরও বলেছেন, যদি ঈশ্বরই এসকলের সৃষ্টি করে থাকেন, তাহলে তিনি স্থানকে সৃষ্টি করলেন কোন স্থানে থেকে, কালকে সৃষ্টি করলেন কোন কালে এবং শক্তিকে সৃষ্টি করলেন কোন শক্তির দ্বারা; যেহেতু ঈশ্বর, স্থান, কাল ও শক্তি সকলেই অনাদি, অনন্ত, অসীম ও নিরাকার?

আপনার স্বঅর্জিত জ্ঞানের তুলনায় অধম এই মানুষটি এখন শুধু আপনার এই প্রশ্নটি নিয়েই একটু আলোচনা করব। আমি কিছু প্রশ্ন করব, আমি জানি আপনার আত্মার পক্ষে এই মুহূর্তে এসকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দেশ ও বিদেশে যারা আপনার রচিত বইয়ের জ্ঞানকে পুঁজি করে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী (Atheist) হয়ে উঠছেন, তাদের কাছে আমার আকুল অনুরোধ, আপনারা আমার এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিয়ে আমাকে চির কৃতজ্ঞ করবেন, আর যদি আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে আপনারা অপারগ হন, তাহলে এই মহাবিশ্ব সহ সকল কিছুর একজন সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও রক্ষাকর্তা আছেন তা বিনম্রচিত্তে মেনে নিবেন।

প্রথমে আমি বিজ্ঞানের একটি সুগঠিত, সর্বসম্মত ও আধুনিক তত্ত্ব নিয়ে একটু আলোচনা করব। তত্ত্বটি হল, বিগ ব্যাং থিওরী (Big Bang Theory) বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব। বেলজিয়ামের একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারক জর্জেস লেমাইট্‌র ১৯২৭ সালে প্রথম স্বাধীনভাবে আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ থেকে ফ্রিডম্যান-লেমাইট্‌র-রবার্টসন-ওয়াকার সমীকরণসমূহ উপপাদন করেন। আইনস্টাইন সাধারণ আপেক্ষিকতার জন্য এই ক্ষেত্র সমীকরণসমূহের গোড়াপত্তন করেছিলেন। ফ্রিডম্যান সমীকরণ উপপাদনের পর কুণ্ডলাকার নীহারিকার ক্রম পশ্চাদপসারণের উপর ভিত্তি করে লেমাইট্‌র প্রস্তাব করেন যে, মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন পরমাণু থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে, যে প্রস্তাব বর্তমানে ‘মহা বিস্ফোরণ’ নামে পরিচিত। কিছু সময়ের জন্য স্থির অবস্থা এবং মহা বিস্ফোরণ দুইটি তত্ত্বেরই যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা ছিল বিধায় বিতর্কেরও অবকাশ ছিল প্রচুর। কিন্তু সময়ের আবর্তে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সাধিত হয় যার অধিকাংশই প্রথমটির বদলে দ্বিতীয় তত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতার সাক্ষ্য প্রদান করে। ১৯৬৪ সালে মহাজাগতিক ক্ষুদ্র তরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ আবিষ্কৃত হওয়ার পর মহা বিস্ফোরণ তত্ত্ব মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও বিবর্তন ব্যাখ্যার জন্য সবচেয়ে উপযোগী তত্ত্ব হিসেবে গৃহীত হয়। বিগ ব্যাং থিওরী ১৯৪৯ সালের ২৮শে মে বিবিসির থার্ড প্রোগ্রামে প্রথম মানুষের গোচরিভূত হয়। পরবর্তীতে এ বিষয় নিয়ে প্রচারিত পাঁচটি প্রোগ্রামের নাম হয় ‘দ্য ন্যাচার অব ইউনিভার্স’। তারপর ১৯৫০ সালের শুরুতে প্রতিটি লেকচার প্রকাশিত হয় ‘দ্য লিসেনার’- নামক ম্যাগাজিনে, আর তখনই সর্বপ্রথম ‘বিগ ব্যাং’ কাগজে ছাপা অবস্থায় মানুষের নজরে আসে।

বিগ ব্যাং থিওরীর মূল কথা হল, ‘শত শত কোটি বছর আগে এই মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তুপুঞ্জ একটি মাত্র পরমক্ষুদ্র বিন্দুতে (পরমানুতে) সংহত (পুঞ্জীভূত) অবস্থায় ছিল এবং পরে একটি মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে (অবশ্যই সম্প্রসারিত হয়ে) অজস্র নক্ষত্রপুঞ্জ এবং সৌরজগতের সৃষ্টি (অর্থাৎ এই সম্প্রসারণসীল মহাবিশ্বের উত্পত্তি)’।

ভাবলে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে মন এই ভেবে যে, বিগ ব্যাং থিওরী আবিষ্কারের প্রায় ১৩৫০ বছর পূর্বেই পবিত্র ও মহা ঐশী গ্রন্থ, মহান আল্লাহতা’য়ালার পাক-কালাম কুরআনে বিগ ব্যাং থিওরীর ব্যাপারে বলা আছে। মহান আল্লাহ্ সূরা আম্বিয়ার ৩০ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন,

“অবিশ্বাসীরা কি দেখেনা যে, মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে ছিল একিভূত (একক), তারপর আমি তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম”। (সুবহানাল্লাহ্)


এখানে, একক বা একীভূত বলতে মহাবিস্ফোরণের ঠিক পূর্ব মুহুর্তের পরম বিন্দুকেই নির্দেশ করা হয়েছে বৈকি।


পবিত্র কুরআনের আয়াত অর্থাৎ আল্লাহর বানী যে বিগ ব্যাং থিওরীকেই প্রমাণ করে, তার বর্ণনা পাওয়া যায় পবিত্র কুরআনের সূরা যারিয়ার ৪৭ নং আয়াতটিতে। আল্লাহ্ বলেন, “আর আসমানকে আমি আপন হাতে (সুকৌশলে) সৃষ্টি করেছি এবং আমি অবশ্যই সব ক্ষমতাই রাখি। আর বিশ্বকে আমিই প্রসারিত করে দিয়েছি.......................।“ (সুবহানাল্লাহ্)

আমরা জানি, সম্প্রসারণ কথার অর্থ প্রসারিত করা বা হওয়া। এখন কোন বস্তু সম্প্রসারণের প্রয়োজন তখনই পড়বে, যখন তা সম্প্রসারণ হওয়ার যোগ্য হবে।!

আনন্দিত হই এই ভেবে যে, মহান আল্লাহ্ তায়ালার কত অসীম ক্ষমতা, তিনি শত শত কোটি বছর পুর্বে যা ঘটেছে তা বর্ণনা করেছেন মহা পবিত্র গ্রন্থে, তাও আবার সেই তত্ত্ব আবিষ্কারের প্রায় ১৩৫০ বছর পুর্বেই!


আমরা জানি, মাতুব্বর সাহেবের ‘সত্যের সন্ধানে’ পুস্তকখানি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে এবং বিগ ব্যাং থিওরী সর্বপ্রথম মানুষের সামনে উন্মোচিত হয়েছিলো ১৯৫০ সালে।

এখন আমার প্রশ্ন হল, বিজ্ঞানমনস্ক আরজ আলী মাতুব্বর কি ‘বিগ ব্যাং থিওরী’ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না? তাঁর বইয়ে বিজ্ঞানের এই সর্বসম্মত তত্ত্ব সম্পর্কে আলোচনা না করাটা একটু রহস্যময়ই লাগে বৈকি।

যেহেতু, ‘সত্যের সন্ধানে’ বইয়ে ‘মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব’ সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। তাই ধরে নিতে হয় যে, আরজ আলী মাতুব্বর ‘বিগ ব্যাং থিওরী’ হয়তো বিশ্বাসই করতেন না। তাহলে স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে, তিনি বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করেছেন কিভাবে? আর বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করে এর সুপ্রমাণিত ও শক্তিশালী একটি তত্ত্বকে অবিশ্বাস করা কি চরম হঠকারীতারই শামিল নয়?

আবার অন্যদিকে ধরে নিই যে, আরজ আলী মাতুব্বর ‘বিগ ব্যাং থিওরী’ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন এবং বিশ্বাসও করতেন, হয়তোবা কোন একটা বিশেষ কারণে (!) তার বইয়ে ‘বিগ ব্যাং থিওরী’-র কোন উল্লেখ ছিলোনা। এখন আমার প্রশ্ন হল, আরজ আলী মাতুব্বর, বিগ ব্যাং থিওরী মতে যদি পরম কোন বিন্দু থেকেই যদি স্থান, কাল ও শক্তির সৃষ্টি হয়, তাহলে সেই পরম বিন্দুটি বিস্ফোরণকালে কোন স্থানে ছিল, কোন কালে সেটি বিস্ফোরিত হল এবং সেটি বিস্ফোরিত হলোই বা কোন শক্তি দ্বারা?

তা মাতুব্বর সাহেব, আপনি কি বলবেন বিগ ব্যাং থিওরী সম্পূর্ণ অমূলক?
নাকি বলবেন এটাই সত্য। যদি এটাই সত্য হয়, তাহলে অতি সম্প্রতি আবিষ্কৃত ‘বিগ ব্যাং থিওরী’ কিভাবে ১৩৫০ বছর পূর্বেই মহাপবিত্র আল-কুরআনে বিবৃত হল? আপনার বলার প্রয়োজন পড়বেনা, স্বাভাবিক জ্ঞান সম্পন্ন যে কোন ব্যাক্তিই নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারবে, বিবৃত হয়েছে কারণ এর বিবৃতিদানকারী পরম শক্তিশালী, বিচারদিনের মালিক, এ মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণার নিয়ন্ত্রণকর্তা আল্লাহ্ সুবহানাহুতাআলা। যিনিই একমাত্র পেরেছেন কোন স্থানে না থেকে তাঁর অসীম শক্তির দ্বারা মাত্র একটি বিন্দু থেকে এই ক্রমশ সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের সৃষ্টি করতে।


মহান আল্লাহ্ মানুষকে জ্ঞান দান করেন, সেটা অর্জনের ব্যাপার, তবে সেটা কারও নিজস্ব অর্জন নয়, অবশ্যই সেটা তাঁরই দান। আসুন আমরা সত্যের সন্ধানে যাই, তবে কোনভাবেই যেন সেটা হঠকারিতাকে আশ্রয় করে না হয়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×