কি লিখছি জানি না।
প্রথম বই? মনে নেই। কিচ্ছু মনে নেই আমার, মনে পড়ছে না। শুধু মনে পড়ে কালো জাদুকর বইটা কয়েক হাজার বার পড়েছিলাম। গ্রামের বাড়িতে কিছু না পেয়ে নীল মানুষ পড়েছিলাম লাখ খানেক বার। বন্ধুর কাছ থেকে এক দিনের জন্যে ধার করে আনা তার অটোগ্রাফ সমেত জোছনা ও জননীর গল্প বইটা রাত দশটা থেকে তিনটা পর্যন্ত পড়ে শেষ করে পরদিন দিয়ে এসেছিলাম বন্ধুকে। একবার বাসা খালি ছিলো, নন্দিত নরকে পড়ে কেঁদেছিলাম মেঝেতে শুয়ে। ঐদিন টিউশনিতে যাইনি, হপ্তাখানিক চোখ ছলছল ছিলো...
২০১০ এ অন্যপ্রকাশের স্টলে প্রচন্ড ভীর দেখে দুপুর যেতে চাইলো না তাই ওকে দাঁড় করিয়ে রেখে আমি আর বাপি দিলাম ভোঁ দৌড় যদি স্টলে স্যার থাকে... ছোট ভাইয়াই তো ওঁর বই এনে দিতো সবসময়... এখন থেকে কার বই এনে দিবা ভাইয়া??
কতো স্বপ্ন ছিলো... উত্তরা থেকে গাজীপুর কতো কাছে... যাই যাই করে যাওয়া হলো না। ভেবে রেখেছিলাম আমি ভাইয়াকে নিয়ে যাবো নুহাশপল্লীতে, পা ছুঁয়ে কদমবুছি করবো আর তাকিয়ে থাকবো কিছুক্ষন তার দিকে, বলবো আমার মাথায় একটু হাত রাখবেন স্যার?
উনি বিরক্ত হয়ে বলবেন, ব্যাটা মাথায় এতো জেল ক্যান, যা ধুয়ে আয়!
আমি দৌড়ে গিয়ে চট করে ধুয়ে আসবো... স্যার আমার মাথায় হাত রাখবেন... স্যারের হাত ভেজা পানি আমার চুল-মাথা-গাল বেয়ে পড়বে... স্যার আমার চোখের পানি টের পাবেন না... পেলেও কিছ্ছু বলবেন না। স্যারকে বলবো দেখেন ভাইয়া ঠিক আপনার স্টাইলে গদ্য লিখে, কিন্তু আমাকে ছাড়া কাউকে দেখায় না, ব্লগেও দেয় না।
স্যার আপনি কি ব্লগ পড়েন?
সারমেয়পুত্রদের কার্সিং রঙ্গ কতটা উপভোগ করেন?
হামা ভাইয়ের লেখা কেমন লাগে আপনার?
স্যার আপনার আর আমাদের গ্রামের বাড়ি এক জেলায়... নান্দাইলের ইউনুস নিয়ে লিখেছিলেন না? হাবলঙ্গের বাজারে -তে এসিস্ট্যান্ট হেড মাস্টার মুসুলী থেকে আনিয়ে ছিলেন না? আমাদের গ্রামের বাড়ি নান্দাইলের মুসুলীতে। কিন্তু গ্রামের বাড়ির কথা বলাটা বোধহয় ঠিক হবে না... ওখানে বড় হইনিতো...
হাবিজাবি কি লিখছি? আমি মাত্র তন্দ্রাবিলাস পড়ছিলাম, দুপুর ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলো আমি ফেসবুকে আছি কিনা। বললো হুমায়ুন আহমেদ আর নেই। আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
চোখের পাতা ভিজে উঠছে... হাত পা অসাড়। কেউ যদি একটিবার বলতো... খবরটা মিথ্যা। শুধু একবার।