সম্পদ, ক্ষমতা আর সম্মান সব সময় একসাথে আসে না। এই তিনটা শব্দের মাঝে কেন যেন খিটিমিটি লেগেই রয়েছে। সম্পদ আসে তো শক্তি আর সম্মান নাই। সম্মান আসে তো সম্পদ আর শক্তি অনেক দূরে বসে বাঁকা হাঁসি দেয়। ২০১৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পদের পরিমাণ ছিলো ২.২৮ কোটি রুপী। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সম্পদের পরিমাণ ৩.৮ কোটি পাকিস্তানী রুপি। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের সম্পদের পরিমাণ ৭ কোটি টাকার উর্ধে। আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্টের সাথে তুলনা করলে এই সম্পদ কিছুই নয়। ২০১৫ সালে ট্রাম্পের সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অন্যদিকে, ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ কত জানেন কি? তাঁর সম্পদ উপরে উল্লেখিত চার রাষ্ট্রপ্রধানের মিলিত সম্পদের চেয়েও বেশি! ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার! মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডঃ মাহাথির মোহাম্মদের সম্পদের পরিমাণও কম নয়। ৩.২ কোটি রিঙ্গিট।
একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছেন কি- প্রথমে উল্লেখিত চার রাষ্ট্র/সরকার প্রধানের সঙ্গে পরের দু'জনের পার্থক্য কোথায়? ব্রিটেন এবং মালয়েশিয়ার মত দেশের রাষ্ট্র প্রধানগণ যেমন সম্পদ, ক্ষমতা আর সম্মান উপভোগ করেন, ঠিক তে্মনি উপরের চারজন করেন কি? উপরের চারজনের হয়তো সম্পদ আর ক্ষমতা আছে, কিন্তু, সম্মান? দেশে-বিদেশে প্রায়ই তাঁদেরকে সম্মান রক্ষার পরীক্ষা দিতে হয়।
সম্পদ এমন একটি জিনিস যার পথ ধরে ক্ষমতাও ব্যক্তি বিশেষের হাতে চলে আসে। কিন্তু, সম্মানটা কেন যেন ধরা দেয় না! আবার, বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল জয়ী ব্যক্তিত্ব ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসের সম্পদ আর সম্মান দুই-ই আছে। কিন্তু, ক্ষমতা থেকে তিনি কত দূরে!
কিছুক্ষণ আগে Deutsche Welle-তে সাকিব আল হাসানের খবরটি নিয়ে লাইভ অনুষ্ঠানটি দেখতে দেখতে উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের সাথে নিজেকে তুলনা করলাম মনে মনে। তাঁদের মতো সম্পদ, ক্ষমতা আর সম্মান- এর কোনটাই আমার নেই। যদি থাকতো, তাহলে কি করতাম?
সবার প্রথমে, হযরত শাহ জালাল (রহ)-এর দরগাহ'র সামনে লাইন ধরে বসে বা শুয়ে থাকা ফকিরগুলোকে একটা বাড়ি, একজন নার্স আর মাসিক ইনকামের ব্যবস্থা করে দিতাম। এরপর একে একে ৬৪ জেলার ভিক্ষুকগুলোর এরকম পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করতাম। এটা খুবই ছোট্ট একটি চাওয়া!
এই প্রসঙ্গে, একটা ঘটনা বলি। দু'দিন আগে আমার বৌ কয়েকটা মুরগী সদকা দেওয়ার জন্যে কিনেছিলেন। পরে আমাকে জানালেন যে, সদকা দেওয়ার জন্যে আমাদের এলাকায় একজন ফকিরও পাননি। আমি তাঁকে বললাম যে, মসজিদের কাছে নামাজের সময় গেলেই অনেক ফকির পেতে।
একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছেন কি! ফকিরেরা কেন যেন প্রার্থনালয় অথবা দরগাহগুলোর সামনে ভিড় করে ভিক্ষা চাওয়ার জন্যে। অফিস-আদালত পাড়াতে তাদের সংখ্যা গড়পড়তায় কমই দেখা যায়!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩১