somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কর্মী-দল বা টিম কিসে অনুপ্রাণিত হয়?

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষকে কিসে অনুপ্রাণিত করে তা নিয়ে অনেকে অনেক রকম ফিলোসোফি এবং থিওরী দিয়েছেন। তবে, আমার ট্রেইনারের মতে, 'সেলফ ডিপেন্ডেন্সী থিওরী' বা 'আত্মনিয়ন্ত্রণ তত্ত্ব'-টাই সেরা।

এই তত্তানুযায়ী, মানুষকে বাহ্যিক অনেক কিছু দিয়ে অনুপ্রাণিত করা যায়। যেমন- পদমর্যাদা, টাকা-পয়সা, স্বীকৃতি ইত্যাদি। অন্যার্থে, কোন কিছু করে দেয়ার বিনিময়ে কিছু পাওয়ার মাধ্যমে এই ধরণের বাহ্যিক অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে- আমি যদি প্রতিষ্ঠানের সেলস টার্গেট হিট করি, আমার বেতন বাড়বে অথবা আমি গ্রুপের সেলস লিডার হবো।

অন্যদিকে, আরেক ধরণের অনুপ্রেরণাদায়ক বস্তু থাকে যাকে 'অভ্যন্তরীণ অনুপ্রেরণাদাতা' বলা হয়। এই ধরণের অনুপ্রেরণা হৃদয়ের ভিতর থেকে আসে যা পাওয়ার ফলে সহকর্মীরা কোন কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়। যেমন- ব্যক্তিস্বাধীনতা, শ্রেষ্ঠত্ব, অভীষ্ট লক্ষ্য ইত্যাদি। 'এই ধরণের অনুপ্রেরণা পেলে আমি কোন কাজ করি, কারণ আমি তা ভিতর থেকে অনুভব করি' - এমনই থাকে সহযোগীদের মনের চিন্তা।

বাহ্যিক অনুপ্রেরণা স্বল্প সময়ের জন্যে আর অভ্যন্তরীণ অনুপ্রেরণা দীর্ঘ দিন স্থায়ী হয়।

বাহ্যিক অনুপ্রেরণাঃ

আপনার টিমের কিছু কিছু সহকর্মী আছে যারা অনুপ্রেরণা পায় যখন বস বা বসের বস তার সম্পর্কে কি ভালো চিন্তা করছে তা জানতে পারে। এরফলে দেখা যায়, যখন বস উপস্থিত থাকেন, সে প্রাণপণে কোন কাজ সমাধা করে। আবার, এমনো অনেকে আছে যারা তাদের বন্ধু-বান্ধবদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। তারা হয়তো বন্ধুদের পি,এইচ,ডি ডিগ্রী অথবা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া দেখে ভাবতে থাকে, আমি এখনও একজন কেরানীই হয়ে রইলাম!

আরেক ধরণের মানুষ আছেন যারা সব সময়ে নিজেকে 'লিডার বোর্ড'-এ দেখতে চান। তারা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সাফল্য লাভ করলে অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তারা কোন কিছু অন্যদের চেয়ে ভালো করার মাধ্যমে সহকর্মীদের চেয়ে এগিয়ে যেতে চান। আর, এজন্যেই, অনেক প্রতিষ্ঠান সহকর্মীদের মাঝে 'পিয়ার টু পিয়ার' জরীপ চালিয়ে কে কিসে ভালো করছেন তা বের করে।

আবার অনেকে আছেন যারা টাকা-পয়সা দ্বারা অনুপ্রাণিত হোন। এই ধরণের মানুষেরা কোন ভালো জায়গায় ছুটি কাটানো, দামী ঘড়ি বা গাড়ি কেনার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে থাকেন। কোন চাকরী থেকে এই ধরণের সুবিধা না পেলেই তারা গোল বাধিয়ে দেন। সেইজন্যেই, লাইন ম্যানেজারদের উচিৎ, এই ধরণের মানুষেরা কিসে তাদের বেতনের টাকা ব্যয় করেন তা জানা। এটা জানতে পারলে, সেই ব্যক্তি যখন কোন কাজে ভালো করবে না, তখন তাকে সেই জিনিস অফার করার মাধ্যমে কাজে মনোনিবেশে সাহায্য করতে পারবেন।


অভ্যন্তরীণ অনুপ্রেরণাঃ

এই ধরণের অনুপ্রেরণা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। তিন ধরণের অভ্যন্তরীণ অনুপ্রেরণা রয়েছে-

ক) ব্যক্তিস্বাধীনতাঃ অনেক ব্যক্তি আছেন যারা স্বাধীনচেতা। তারা স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চান। এই ধরণের মানুষদেরকে তাদের ইচ্ছা মতো কাজ করতে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

খ) শ্রেষ্ঠত্বঃ অনেক সময়ে দেখা যায়, অনেকে দেড়/দুই বছর কাজ চাকরী করে হাঁপিয়ে উঠেন। তারা নতুন কোন কিছু করার জন্যে মুখিয়ে থাকেন। এই ধরণের মানুষদেরকে নতুন কোন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিলে তারা কাজে অনুপ্রাণিত লাভ করেন।

গ) অভীষ্ঠ লক্ষ্যঃ প্রত্যেকেরই চাকরী করার পিছনে কোন না কোন কারণ থাকে। কাজ করার পিছনেও কমবেশি উদ্দেশ্য থাকে। একজন সফল ম্যানেজারকে তার অধিনস্তদের সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে তাদের কাজের পিছনের কারণগুলো জানতে হয়। একজন ভালো কর্মী তার ম্যানেজারের সাথে ব্যক্তিগত এসব বিষয় শেয়ার করে। কেউ যদি কোন সপ্তাহে কাজে খারাপ করে, তাহলে ম্যানেজার হতো বলবেন- তুমি আগামী বোনাস পাবে না। সেই কাজে খারাপ করাটা যদি এক মাস হয়, তাহলে, ম্যানেজার উদ্বিগ্ন হয়ে বলেন- কিশোর, আমি তোমার জন্যে কি করতে পারি? আর, কেউ যদি ছয় মাসের বেশি কাজে অনবরতঃ খারাপ করতে থাকে, তখন অন্য কোন টেক্টিকস ব্যবহার করতেই হয়। তখন হয়তো ম্যানেজার আমাকে প্রতি দিনের কাজে সাহায্য করতে থাকবেন। কিংবা, তিনি হয়তো আমাকে নতুন কোন কাজে নিয়োজিত করতে পারেন, যেমন, অন্য কোন ব্রাঞ্চে ঘুরে আসা, অথবা অন্য কোন ডিপার্টমেন্টের সাথে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া। এগুলো করে দেওয়ার মাধ্যমে তিনি হয়তো আমার মনকে আরও বিস্তৃত হবার সুযোগ করে দেন যাতে আমি ভালো বোধ করতে পারি।

আর, এভাবেই, একজন ম্যানেজারকে দলের বিভিন্ন কর্মী কিসে অনুপ্রাণিত হয় সে সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে। ব্যাপারটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। তবে, একজন ম্যানেজার যদি সঠিক ভাবে জানতে পারেন তার কোন কর্মী কিসে অনুপ্রাণিত হয়, তাহলে, তাদের কাছ থেকে কাজ বের করে আনাটা খুব সহজ হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×