somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী.
আমি সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলাম।প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলামও লিখেছি। shakawatarticle.blogspot.com/

ডায়াবেটিস : সচেতনতা চাই সর্বস্তরে

১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ডায়াবেটিস রোগের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। আমাদের পরিবার গুলোতে এমন কোনো সদস্য নেই যার ডায়াবেটিস নেই। বর্তমান বিশ্বে এই রোগ আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে। যা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুবই উদ্বিগ্ন। আর এই কারণেই ডায়াবেটিস রোগকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতি বছর ১৪ই নভেম্বর ডায়াবেটিস দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে প্রতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস পালন করা হয়।

ডায়াবেটিস কী
ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি, তখন তা থেকে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। এই গ্লুকোজ যখন মানুষের দেহের কোষে পৌঁছায়, তখন সেখান থেকে শক্তি উৎপাদন হয়। খাদ্য থেকে উৎপন্ন গ্লুকোজ কে দেহের কোষে পৌঁছানোর দায়িত্ব হচ্ছে ইনসুলিন নামক হরমোনের। এই ইনসুলিন হরমোনই গ্লুকোজকে কোষে পৌঁছে দিয়ে মানুষের দেহে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

যখন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তখন তার ইনসুলিন হরমোনটির নিঃসরণ কমে যায়। ফলে সে গ্লুকোজকে কোষে পৌঁছাতে পারে না। যারফলে শরীরে গ্লুকোজ বেড়ে যায় এবং শক্তি উৎপাদনও কমে যায়। এই বাড়তি গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয় প্রস্রাবের মাধ্যমে। এই কারণে রোগীর ঘনঘন প্রস্রাব হয় এবং তৃষ্ণার্ত হতে থাকে। একদিকে শরীরে শক্তি কমে যায়, অন্যদিকে অতিরিক্ত প্রস্রাবের সাথে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ বের হওয়ার কারণে রোগী দূর্বল হয়ে পড়ে। এভাবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালি, স্নায়ু, কিডনি, চোখ ও হৃদযন্ত্রের নানান সমস্যাসহ বিভিন্ন শারিরীক জটিলতা সৃষ্টি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে কোনো ব্যক্তির খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৭ মিলি মোল /লিটার বা তার বেশী হলে এবং খাওয়ার দুই ঘন্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলি মোল /লিটার বা তার বেশী হলে ঐ ব্যক্তির ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

ডায়াবেটিস দুই প্রকার
ক) টাইপ -১ ডায়াবেটিস
খ) টাইপ -২ ডায়াবেটিস

ক) টাইপ -১ ডায়াবেটিস
সচারচর ৩০ বছরের নীচে টাইপ -১ ডায়াবেটিস দেখা যায়। এই রোগীদের শরীরে ইনসুলিন হরমোন একেবারেই তৈরি হয়না। ফলে আজীবন তাদের ইনসুলিন নিতে হয়। এ ধরনের রোগী দেশে কমই আছে।

খ) টাইপ -২ ডায়াবেটিস
আমাদের দেশে এই জাতীয় ডায়াবেটিস রোগীই বেশী। এইসব রোগীর শরীরে ইনসুলিন ঘাটতি বা নিস্ক্রিয় থাকে। ফলে অনেক সময় তাদের ইনসুলিন নিতে হয়। যদি নিয়মিত শরীরচর্চা বা কায়িক শ্রম করা যায় তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ইনসুলিন নিতে হয়না।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ
যদি উপসর্গ সম্পর্কে রোগের শুরুতে ধারণা থাকে তাহলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই সহজ। ডায়াবেটিসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ রয়েছে যেমন -

ক) ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া। রোগের প্রাথমিক দিক থেকে হঠাৎ করে রোগীর প্রস্রাব হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

খ) অধিক পরিমাণে তৃষ্ণার্ত হওয়া এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া। ঘনঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণে রোগীর শরীরের পানির মাত্রা কমে যায়। শরীরের পানি শূন্যতা পূরণের জন্য রোগীর পানির পিপাসা বেড়ে যায়।

গ) যেকোনো ক্ষত বা কাঁটাছেঁড়া সহজে না শুকানো। যখনই কোন রোগী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবে তখন থেকে তার শরীরের কোনো ক্ষত সৃষ্টি হলে তা সহজে শুকাবে না।

ঘ) চোখে ঝাপসা দেখা। রোগের শুরু থেকেই হঠাৎ করে রোগী ঝাপসা দেখতে শুরু করবে।

ঙ) হালকা পরিশ্রমে দুর্বল হওয়া। মানুষের স্বাভাবিক পরিশ্রমে যদি কেউ দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে তা ডায়াবেটিসের লক্ষন হিসাবে ধরা হয়।

চ) কম সময়ের মধ্যে হঠাৎ ওজন কমে বা বেড়ে যাওয়া। কারো যদি খুব হঠাৎ করে ওজন বেড়ে বা কমে যায় তাহলে ডায়াবেটিসের উপসর্গ।

ছ) হাত পা কিংবা হাত পায়ের কোনো আঙ্গুল অবশ অনুভব হওয়া।

জ) অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা। স্বাভাবিক খাওয়ার পরও যদি ক্ষুধা লাগে তাহলে তা এই রোগের লক্ষন।

কী কারণে ডায়াবেটিস হয়?
ডায়াবেটিস বংশগত রোগ হলেও বিভিন্ন কারণে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। যেমন-

শরীরচর্চা না করা: টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো নিয়মিত শারিরীক পরিশ্রম কিংবা শরীর চর্চা না। অথবা কাজ কর্ম না করে শারীরিকভাবে নিস্ক্রিয় থাকা।

গায়ে রোদ না লাগা: কেউ যদি অফিসে ডেস্কজব করে এবং সারাদিন অফিসে কাটা‌নোর ফলে শরীরে সূর্যের আলো না লাগে, তবে তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কেননা রোদে ভিটামিন ডি- থাকে। যদি এর ঘাটতি দেখা দেয় তবুও ডায়াবেটিস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মানসিক অস্থিরতা: যে সকল কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে তার একটি হলো অত্যধিক মানসিক চাপ বা অস্থিরতা। পারিবারিক সমস্যা, অতিরিক্ত কাজের প্রেসার ইত্যাদি থাকলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে।

ঘুম না হওয়া: একজন মানুষের দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন হয়। যদি কোনো কারণে দীর্ঘদিন এই পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে শরীরে শর্করা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হয়ে যায়।

পানিশূন্যতা: প্রতিটি মানুষেরই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করা উচিত। যদি কেউ পর্যাপ্ত পানি পান না করে, তাহলে দেহে পানিশূণ্যতা সৃষ্টি হয়। আর পানিশূন্যতা থেকে হাইপারগ্লিসেমিয়া, যার ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা ঘনীভূত হয় এবং ডায়াবেটিস রোগ সৃষ্টি হয়।

রাতে অতিরিক্ত খাওয়া: গবেষণায় দেখা যায়, রাতে পরিমাণের অতিরিক্ত খাওয়া এবং এর পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হতে পারে।

সকালে খানা না খাওয়া: প্রতিটি মানুষেরই সকালের নাস্তাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ডায়াবেটিস রোগী সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের রক্ত শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।

চাইনিজ খাবার: যারা নিয়মিত চাইনিজ খাবারে অভ্যস্ত তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কেননা চাইনিজ খাবারে অনেক বেশি ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট থাকে। যা শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। ফলে ধীরে ধীরে ডায়াবেটিস শরীরে জেঁকে বসে।

প্লাস্টিক সামগ্রীতে খাবার খাওয়া: প্লাস্টিক সবসময়ই মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যদি কেউ নিয়মিত প্লাস্টিক সামগ্রী দিয়ে খাবার বা পানীয় খায়, তাহলে তার ডায়াবেটিস হতে পারে। কেননা প্লাস্টিক সামগ্রীতে এমন কিছু রাসায়নিক থাকে যেগুলো ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সৃষ্টি করে। এরফলে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হতে পারে।

দূষিত মাংস: বিভিন্ন কারণে মাংস পরিষ্কার করার জন্য কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এধরনের মাংস খেলে হাইপারগ্লিসেমিয়া হয় বা রক্তে সুগার বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস রোগ হয়।

সুগন্ধি ব্যবহার: বিশেষ কিছু সুগন্ধি রয়েছে, যার নিয়মিত ব্যবহারে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কেননা পারফিউম, কোলোন, রুম ফ্রেশনার ইত্যাদিতে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যার অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং ডায়াবেটিস রোগ সষ্টি করে।

কাদের এই রোগ
এই রোগ যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে ৩০ /৩৫ বয়সের পর এই রোগ স্বাভাবিক ভাবে ধরা পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় বংশগত কারণেই ডায়াবেটিস রোগ বেশী হয়। সাধারণত মা-বাবা, চাচা, খালা, মামা, ফুফু এমন কারো ডায়াবেটিস হলে তাদের বংশধরদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়াও যারা তাদের জীবনকে অনিয়ন্ত্রিত ও উশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। বিশেষকরে যারা উচ্চ বিলাসী জীবনযাপন করে অধিক পরিমাণে ফাস্টফুড, জাংকফুড, কোমল পানীয়, অতিমাত্রায় ফ্যাটযুক্ত এবং রিচফুড খেয়ে থাকে তাদের ডায়াবেটিস হতে পারে। শুধু তাইনয় যারা পরিশ্রম বিহীন অলস জীবনযাপন করে তাদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।

এইসব কারণ ছাড়াও যাদের বয়স ও উচ্চতা অনুসারে ওজন বেশী। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা বেশী থাকে। সেইসাথে অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা যারা করে তারা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বেশী থাকে।

আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও
আমরা অনেকে জানিই না শিশুদেরও ডায়াবেটিস হতে পারে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের (আইডিএফ) এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৭ হাজারেরও বেশী শিশু এই রোগে আক্রান্ত। যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ টাইপ -১ এবং ২০ শতাংশ টাইপ -২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি বছর যুক্ত হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ শিশু।

ডায়াবেটিসের ক্ষতিকর দিক
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা পুরো শরীরে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। শরীরে এমন কোনো অঙ্গ নেই যা সে ক্ষতি করে না। যেমনঃ

মস্তিষ্কের ক্ষতি: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে স্ট্রোক হতে পারে, রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ অথবা মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়েও স্ট্রোক হতে পারে।

চোখের ক্ষতি: ডায়াবেটিসের কারণে প্রথমেই রোগী চোখে ঝাপসা দেখে। ডায়াবেটিস একসাথে দুই চোখকেই আক্রান্ত করে। চোখ আক্রান্ত হওয়াকে বলা হয় ডায়াবেটিক আই ডিজিজ বা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রন হলে রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস থেকে চোখে ছানিও পড়তে পারে বা গ্লুকোমাও হতে পারে।

মুখে ঘা: ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে খুব সহজেই মুখে ঘা হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক: যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের হার্ট অ্যাটাকের হার স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থেকে হার্টের রক্তনালি ব্লক হয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

ডায়াবেটিক ফুট: ডায়াবেটিস রোগীদের অল্প আঘাতেও ছিঁড়ে যেতে পারে। সামান্য ঘা সাধারণ মানুষের এমনিতেই শুকিয়ে যায়। অথচ ডায়াবেটিস রোগীদের ঘা সহজে শুকায় না। শুধু তাইনয় সামান্য ঘা থেকেও বড় ঘায়ে পরিনত হওয়ার কারণে পা পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয় অনেকক্ষেত্রে।

কিডনি রোগের কারণ: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে কিডনির ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়। এটাকে ন্যাবোপ্যাথি বলা হয়। ডায়াবেটিক রোগীদের দুটা কিডনি এক সাথে আক্রান্ত হয়। ফলে অল্পতেই কিডনি বিকল হয়ে ডায়ালিসিস করানোর পর্যায়ে চলে যায়। যার শেষ ঠিকানা হয় মৃত্যু।

যৌন সমস্যা: ডায়াবেটিসের কারণে যৌন চাহিদা কমে যায়। ফলে রোগীর যৌন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই কারণে প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী যৌন সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করে।

নার্ভের সমস্যা: ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু বা নার্ভ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটাকে বলা হয় নিউরোপ্যাথি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে শরীরের সমস্ত স্নায়ু সিস্টেমকে ধ্বংস করে। যারফলে হাত-পা জ্বালাপোড়া, সুচের মতো সেনশন বা পিঁপড়া হাঁটার মতো সুড়সুড়ি অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এভাবে ব্যথা, পরে অবশ, আস্তে আস্তে ঘা, শেষে পা পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।

এইসব ছাড়াও ডায়াবেটিসের কারণে দাঁতেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি অকালে দাঁত পড়েও যায়। শুধু তাইনয় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অবস্থায় গর্ভধারণ করলে মা এবং শিশু উভয়ই সাংঘাতিকভাবে আক্রান্ত হতে পারে।

কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব
ডায়াবেটিস নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। এর থেকে বাঁচতে হলে একে নিয়ন্ত্রণ করেই বাঁচতে হবে। অধিকাংশ রোগীই জীবনযাপনে অনিয়মিত হওয়ার কারণে এই রোগে নানান সমস্যা সৃষ্টি হওয়াসহ মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। তাই আসুন আমরা জেনে নিই কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল কার্যকরী কাজ হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাঁটাচলা করা। নিয়মিত ব্যায়ামে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন কমে। ফলে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া এইসবের মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে রখা সম্ভব হয়। একইসাথে চেষ্টা করতে হবে নিয়মিত কিছুক্ষণ রোদে হাঁটা। যাতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারে।

খাবার দাবার: মিষ্টি জাতীয় খাবারসহ সবসময়ই প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। চিনিকে সর্বদাই না। এমনকি চিনির পরিবর্তে অন্যান্য কিছুও ব্যবহার না করা। কেননা গবেষণায় এদের কাজ নির্ভুল সেটা প্রমাণিত নয়। সকালের নাস্তা পর্যাপ্ত খেতে হবে। রোগীদের নিয়মিত ডিম, মাশরুম, টমেটোর মতো কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেতে হবে। এক বেলা পেট ভরে না খেয়ে পরিমানে অল্প অল্প করে নিয়মিত বিরতিতে খানা খেতে হবে।

একইসাথে খাদ্য তালিকায় প্রোবায়েটিকস জাতীয় রাখতে হবে। যেমন, দই বা ছানাজাতীয় খাদ্য ইত্যাদি দেহে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার হার বাড়ায়। যার অভাবে অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি হয় যা ইনসুলিন প্রতিরোধক সৃষ্টি করে। যার ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়।

চেষ্টা করতে হবে ফাস্টফুড কিংবা চাইনিজ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে। প্রক্রিয়াজাত মাংস না খেয়ে ফ্রেস মাংস খেতে হবে। ঘরে বাইরে প্লাস্টিক জাতীয় সামগ্রীতে খানা না খাওয়া এবং যথাসম্ভব পানি পান করা।

পর্যাপ্ত ঘুমানো ও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা: রোগীদের সবসময়ই চেষ্টা করতে হবে সবসময় যেন দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যায়। আর চিন্তামুক্ত থাকলে তবেই পর্যাপ্ত ঘুমানো যাবে।
তাই মানসিক চাপ মুক্ত থাকার জন্য হাঁটাহাঁটি করা, লম্বা করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়া ইত্যাদির অভ্যাস করতে হবে।

ধূম ও মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া: ডায়াবেটিস ছাড়াও আরো অসংখ্য রোগের কারণ ধূমপান ও মদ পানের অভ্যাস। তাই যাবতীয় রোগ ঠেকাতে যেসব বদঅভ্যাস ছাড়তে হবে, তার মধ্যে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস অন্যতম। কেননা এইসবের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া এবং ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস পরিসংখ্যান
বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের অবস্থা খুবই করুন। গত কয়েক বছর আগেও শীর্ষ দশ ডায়াবেটিস আক্রান্ত দেশে বাংলাদেশ ছিলো দশম। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। শুধু তাইনয় ২০৪৫ সালের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে চলে আসার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের হিসাব মতে, ২০২১ সালে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিস রোগীর ৮৭ শতাংশ রয়েছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, প্রতিবছর সাড়ে ১২ শতাংশ মানুষ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটির কাছাকাছি (একুশে টিভির প্রতিবেদন)।

এই রোগের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। যারফলে অনেক পরিবারই চিকিৎসা ব্যয় সামলাতে না পেরে অসচ্ছল হয়ে পড়ছে। সেইসাথে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে একটি বিশাল জনগোষ্ঠী। যার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। একটি জরিপে দেখা গেছে, চিকিৎসাবাবদ এই রোগের পেছনে ব্যয় হচ্ছে প্রতি মাসে গড়ে চার হাজার টাকারও বেশী। সেই হিসাবে প্রতি মাসে দেশে খরচ হয় ৩ হাজার ৬০০ কোটি এবং বছরে ৪৩ হাজার ২০০ কোটিরও বেশী। আশংকার কথা হচ্ছে, দিনদিন রোগী বৃদ্ধির কারণে এই রোগের ঔষধ স্বল্পতা সৃষ্টি হচ্ছে। গুটিকয়েক কোম্পানি এই রোগের ঔষধ বাজারজাত করছে বলে তাদের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণের মনোভাব কাজ করছে। ফলে প্রতিনিয়তই ডায়বেটিসের ঔষধের ঘাটতি সহ মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি বা বাডাস ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদের জাতীয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহিম এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৮০ সালে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের উপর একটি বিশেষজ্ঞ গবেষণা হাসপাতাল বারডেম প্রতিষ্ঠা করে। এর কাজ হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া এবং স্ক্রিনিং সরবরাহ করা। যারাই এই রোগে আক্রান্ত হন তারা এই সমিতির অনুকূলে সারা দেশে ৮০ টিরও বেশী স্থানীয় কেন্দ্রে সদস্য হতে পারেন। এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারেন।

সর্বশেষ কথা হচ্ছে, এই রোগ একপ্রকার রাজকীয় রোগ। যাদের জীবনযাপন অভিজাত এবং বেহিসাবী তারাই বেশী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে যাদের বংশগত রোগের ইতিহাস নেই। সুতরাং এই রোগ নিয়ে যতবেশী সচেতন হওয়া যাবে এবং সচেতন করা যাবে ততবেশী এই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আসুন সবাই এই রোগ নিয়ে সচেতন হই।

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।


ডায়াবেটিস রোগের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। আমাদের পরিবার গুলোতে এমন কোনো সদস্য নেই যার ডায়াবেটিস নেই। বর্তমান বিশ্বে এই রোগ আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে। যা নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুবই উদ্বিগ্ন। আর এই কারণেই ডায়াবেটিস রোগকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রতি বছর ১৪ই নভেম্বর ডায়াবেটিস দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে প্রতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস পালন করা হয়।

ডায়াবেটিস কী
ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ। আমরা যখন খাদ্য গ্রহণ করি, তখন তা থেকে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। এই গ্লুকোজ যখন মানুষের দেহের কোষে পৌঁছায়, তখন সেখান থেকে শক্তি উৎপাদন হয়। খাদ্য থেকে উৎপন্ন গ্লুকোজ কে দেহের কোষে পৌঁছানোর দায়িত্ব হচ্ছে ইনসুলিন নামক হরমোনের। এই ইনসুলিন হরমোনই গ্লুকোজকে কোষে পৌঁছে দিয়ে মানুষের দেহে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

যখন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় তখন তার ইনসুলিন হরমোনটির নিঃসরণ কমে যায়। ফলে সে গ্লুকোজকে কোষে পৌঁছাতে পারে না। যারফলে শরীরে গ্লুকোজ বেড়ে যায় এবং শক্তি উৎপাদনও কমে যায়। এই বাড়তি গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয় প্রস্রাবের মাধ্যমে। এই কারণে রোগীর ঘনঘন প্রস্রাব হয় এবং তৃষ্ণার্ত হতে থাকে। একদিকে শরীরে শক্তি কমে যায়, অন্যদিকে অতিরিক্ত প্রস্রাবের সাথে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ বের হওয়ার কারণে রোগী দূর্বল হয়ে পড়ে। এভাবে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে রক্তনালি, স্নায়ু, কিডনি, চোখ ও হৃদযন্ত্রের নানান সমস্যাসহ বিভিন্ন শারিরীক জটিলতা সৃষ্টি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে কোনো ব্যক্তির খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ ৭ মিলি মোল /লিটার বা তার বেশী হলে এবং খাওয়ার দুই ঘন্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ১১.১ মিলি মোল /লিটার বা তার বেশী হলে ঐ ব্যক্তির ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়।

ডায়াবেটিস দুই প্রকার
ক) টাইপ -১ ডায়াবেটিস
খ) টাইপ -২ ডায়াবেটিস

ক) টাইপ -১ ডায়াবেটিস
সচারচর ৩০ বছরের নীচে টাইপ -১ ডায়াবেটিস দেখা যায়। এই রোগীদের শরীরে ইনসুলিন হরমোন একেবারেই তৈরি হয়না। ফলে আজীবন তাদের ইনসুলিন নিতে হয়। এ ধরনের রোগী দেশে কমই আছে।

খ) টাইপ -২ ডায়াবেটিস
আমাদের দেশে এই জাতীয় ডায়াবেটিস রোগীই বেশী। এইসব রোগীর শরীরে ইনসুলিন ঘাটতি বা নিস্ক্রিয় থাকে। ফলে অনেক সময় তাদের ইনসুলিন নিতে হয়। যদি নিয়মিত শরীরচর্চা বা কায়িক শ্রম করা যায় তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ইনসুলিন নিতে হয়না।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ
যদি উপসর্গ সম্পর্কে রোগের শুরুতে ধারণা থাকে তাহলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই সহজ। ডায়াবেটিসের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ রয়েছে যেমন -

ক) ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া। রোগের প্রাথমিক দিক থেকে হঠাৎ করে রোগীর প্রস্রাব হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।

খ) অধিক পরিমাণে তৃষ্ণার্ত হওয়া এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া। ঘনঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণে রোগীর শরীরের পানির মাত্রা কমে যায়। শরীরের পানি শূন্যতা পূরণের জন্য রোগীর পানির পিপাসা বেড়ে যায়।

গ) যেকোনো ক্ষত বা কাঁটাছেঁড়া সহজে না শুকানো। যখনই কোন রোগী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবে তখন থেকে তার শরীরের কোনো ক্ষত সৃষ্টি হলে তা সহজে শুকাবে না।

ঘ) চোখে ঝাপসা দেখা। রোগের শুরু থেকেই হঠাৎ করে রোগী ঝাপসা দেখতে শুরু করবে।

ঙ) হালকা পরিশ্রমে দুর্বল হওয়া। মানুষের স্বাভাবিক পরিশ্রমে যদি কেউ দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে তা ডায়াবেটিসের লক্ষন হিসাবে ধরা হয়।

চ) কম সময়ের মধ্যে হঠাৎ ওজন কমে বা বেড়ে যাওয়া। কারো যদি খুব হঠাৎ করে ওজন বেড়ে বা কমে যায় তাহলে ডায়াবেটিসের উপসর্গ।

ছ) হাত পা কিংবা হাত পায়ের কোনো আঙ্গুল অবশ অনুভব হওয়া।

জ) অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা। স্বাভাবিক খাওয়ার পরও যদি ক্ষুধা লাগে তাহলে তা এই রোগের লক্ষন।

কী কারণে ডায়াবেটিস হয়?
ডায়াবেটিস বংশগত রোগ হলেও বিভিন্ন কারণে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। যেমন-

শরীরচর্চা না করা: টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো নিয়মিত শারিরীক পরিশ্রম কিংবা শরীর চর্চা না। অথবা কাজ কর্ম না করে শারীরিকভাবে নিস্ক্রিয় থাকা।

গায়ে রোদ না লাগা: কেউ যদি অফিসে ডেস্কজব করে এবং সারাদিন অফিসে কাটা‌নোর ফলে শরীরে সূর্যের আলো না লাগে, তবে তার ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কেননা রোদে ভিটামিন ডি- থাকে। যদি এর ঘাটতি দেখা দেয় তবুও ডায়াবেটিস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

মানসিক অস্থিরতা: যে সকল কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস হতে পারে তার একটি হলো অত্যধিক মানসিক চাপ বা অস্থিরতা। পারিবারিক সমস্যা, অতিরিক্ত কাজের প্রেসার ইত্যাদি থাকলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে।

ঘুম না হওয়া: একজন মানুষের দৈনিক নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন হয়। যদি কোনো কারণে দীর্ঘদিন এই পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে শরীরে শর্করা বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হয়ে যায়।

পানিশূন্যতা: প্রতিটি মানুষেরই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করা উচিত। যদি কেউ পর্যাপ্ত পানি পান না করে, তাহলে দেহে পানিশূণ্যতা সৃষ্টি হয়। আর পানিশূন্যতা থেকে হাইপারগ্লিসেমিয়া, যার ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা ঘনীভূত হয় এবং ডায়াবেটিস রোগ সৃষ্টি হয়।

রাতে অতিরিক্ত খাওয়া: গবেষণায় দেখা যায়, রাতে পরিমাণের অতিরিক্ত খাওয়া এবং এর পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হতে পারে।

সকালে খানা না খাওয়া: প্রতিটি মানুষেরই সকালের নাস্তাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ডায়াবেটিস রোগী সকালের নাস্তা এড়িয়ে যান তাদের রক্ত শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।

চাইনিজ খাবার: যারা নিয়মিত চাইনিজ খাবারে অভ্যস্ত তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। কেননা চাইনিজ খাবারে অনেক বেশি ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট থাকে। যা শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। ফলে ধীরে ধীরে ডায়াবেটিস শরীরে জেঁকে বসে।

প্লাস্টিক সামগ্রীতে খাবার খাওয়া: প্লাস্টিক সবসময়ই মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যদি কেউ নিয়মিত প্লাস্টিক সামগ্রী দিয়ে খাবার বা পানীয় খায়, তাহলে তার ডায়াবেটিস হতে পারে। কেননা প্লাস্টিক সামগ্রীতে এমন কিছু রাসায়নিক থাকে যেগুলো ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সৃষ্টি করে। এরফলে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হতে পারে।

দূষিত মাংস: বিভিন্ন কারণে মাংস পরিষ্কার করার জন্য কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এধরনের মাংস খেলে হাইপারগ্লিসেমিয়া হয় বা রক্তে সুগার বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস রোগ হয়।

সুগন্ধি ব্যবহার: বিশেষ কিছু সুগন্ধি রয়েছে, যার নিয়মিত ব্যবহারে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কেননা পারফিউম, কোলোন, রুম ফ্রেশনার ইত্যাদিতে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যার অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং ডায়াবেটিস রোগ সষ্টি করে।

কাদের এই রোগ
এই রোগ যেকোনো বয়সেই হতে পারে। তবে ৩০ /৩৫ বয়সের পর এই রোগ স্বাভাবিক ভাবে ধরা পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় বংশগত কারণেই ডায়াবেটিস রোগ বেশী হয়। সাধারণত মা-বাবা, চাচা, খালা, মামা, ফুফু এমন কারো ডায়াবেটিস হলে তাদের বংশধরদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়াও যারা তাদের জীবনকে অনিয়ন্ত্রিত ও উশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করে তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। বিশেষকরে যারা উচ্চ বিলাসী জীবনযাপন করে অধিক পরিমাণে ফাস্টফুড, জাংকফুড, কোমল পানীয়, অতিমাত্রায় ফ্যাটযুক্ত এবং রিচফুড খেয়ে থাকে তাদের ডায়াবেটিস হতে পারে। শুধু তাইনয় যারা পরিশ্রম বিহীন অলস জীবনযাপন করে তাদেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।

এইসব কারণ ছাড়াও যাদের বয়স ও উচ্চতা অনুসারে ওজন বেশী। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা চর্বির মাত্রা বেশী থাকে। সেইসাথে অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা যারা করে তারা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বেশী থাকে।

আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও
আমরা অনেকে জানিই না শিশুদেরও ডায়াবেটিস হতে পারে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের (আইডিএফ) এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৭ হাজারেরও বেশী শিশু এই রোগে আক্রান্ত। যাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ টাইপ -১ এবং ২০ শতাংশ টাইপ -২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি বছর যুক্ত হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ শিশু।

ডায়াবেটিসের ক্ষতিকর দিক
ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা পুরো শরীরে মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। শরীরে এমন কোনো অঙ্গ নেই যা সে ক্ষতি করে না। যেমনঃ

মস্তিষ্কের ক্ষতি: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে স্ট্রোক হতে পারে, রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ অথবা মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়েও স্ট্রোক হতে পারে।

চোখের ক্ষতি: ডায়াবেটিসের কারণে প্রথমেই রোগী চোখে ঝাপসা দেখে। ডায়াবেটিস একসাথে দুই চোখকেই আক্রান্ত করে। চোখ আক্রান্ত হওয়াকে বলা হয় ডায়াবেটিক আই ডিজিজ বা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রন হলে রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস থেকে চোখে ছানিও পড়তে পারে বা গ্লুকোমাও হতে পারে।

মুখে ঘা: ডায়াবেটিস রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে খুব সহজেই মুখে ঘা হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক: যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের হার্ট অ্যাটাকের হার স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। রক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থেকে হার্টের রক্তনালি ব্লক হয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

ডায়াবেটিক ফুট: ডায়াবেটিস রোগীদের অল্প আঘাতেও ছিঁড়ে যেতে পারে। সামান্য ঘা সাধারণ মানুষের এমনিতেই শুকিয়ে যায়। অথচ ডায়াবেটিস রোগীদের ঘা সহজে শুকায় না। শুধু তাইনয় সামান্য ঘা থেকেও বড় ঘায়ে পরিনত হওয়ার কারণে পা পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয় অনেকক্ষেত্রে।

কিডনি রোগের কারণ: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে কিডনির ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায়। এটাকে ন্যাবোপ্যাথি বলা হয়। ডায়াবেটিক রোগীদের দুটা কিডনি এক সাথে আক্রান্ত হয়। ফলে অল্পতেই কিডনি বিকল হয়ে ডায়ালিসিস করানোর পর্যায়ে চলে যায়। যার শেষ ঠিকানা হয় মৃত্যু।

যৌন সমস্যা: ডায়াবেটিসের কারণে যৌন চাহিদা কমে যায়। ফলে রোগীর যৌন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই কারণে প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী যৌন সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করে।

নার্ভের সমস্যা: ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু বা নার্ভ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটাকে বলা হয় নিউরোপ্যাথি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে শরীরের সমস্ত স্নায়ু সিস্টেমকে ধ্বংস করে। যারফলে হাত-পা জ্বালাপোড়া, সুচের মতো সেনশন বা পিঁপড়া হাঁটার মতো সুড়সুড়ি অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এভাবে ব্যথা, পরে অবশ, আস্তে আস্তে ঘা, শেষে পা পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়।

এইসব ছাড়াও ডায়াবেটিসের কারণে দাঁতেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি অকালে দাঁত পড়েও যায়। শুধু তাইনয় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অবস্থায় গর্ভধারণ করলে মা এবং শিশু উভয়ই সাংঘাতিকভাবে আক্রান্ত হতে পারে।

কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব
ডায়াবেটিস নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। এর থেকে বাঁচতে হলে একে নিয়ন্ত্রণ করেই বাঁচতে হবে। অধিকাংশ রোগীই জীবনযাপনে অনিয়মিত হওয়ার কারণে এই রোগে নানান সমস্যা সৃষ্টি হওয়াসহ মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে। তাই আসুন আমরা জেনে নিই কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল কার্যকরী কাজ হচ্ছে নিয়মিত ব্যায়াম এবং হাঁটাচলা করা। নিয়মিত ব্যায়ামে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন কমে। ফলে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া এইসবের মাধ্যমে রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে রখা সম্ভব হয়। একইসাথে চেষ্টা করতে হবে নিয়মিত কিছুক্ষণ রোদে হাঁটা। যাতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারে।

খাবার দাবার: মিষ্টি জাতীয় খাবারসহ সবসময়ই প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। চিনিকে সর্বদাই না। এমনকি চিনির পরিবর্তে অন্যান্য কিছুও ব্যবহার না করা। কেননা গবেষণায় এদের কাজ নির্ভুল সেটা প্রমাণিত নয়। সকালের নাস্তা পর্যাপ্ত খেতে হবে। রোগীদের নিয়মিত ডিম, মাশরুম, টমেটোর মতো কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেতে হবে। এক বেলা পেট ভরে না খেয়ে পরিমানে অল্প অল্প করে নিয়মিত বিরতিতে খানা খেতে হবে।

একইসাথে খাদ্য তালিকায় প্রোবায়েটিকস জাতীয় রাখতে হবে। যেমন, দই বা ছানাজাতীয় খাদ্য ইত্যাদি দেহে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার হার বাড়ায়। যার অভাবে অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি হয় যা ইনসুলিন প্রতিরোধক সৃষ্টি করে। যার ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়।

চেষ্টা করতে হবে ফাস্টফুড কিংবা চাইনিজ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে। প্রক্রিয়াজাত মাংস না খেয়ে ফ্রেস মাংস খেতে হবে। ঘরে বাইরে প্লাস্টিক জাতীয় সামগ্রীতে খানা না খাওয়া এবং যথাসম্ভব পানি পান করা।

পর্যাপ্ত ঘুমানো ও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা: রোগীদের সবসময়ই চেষ্টা করতে হবে সবসময় যেন দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যায়। আর চিন্তামুক্ত থাকলে তবেই পর্যাপ্ত ঘুমানো যাবে।
তাই মানসিক চাপ মুক্ত থাকার জন্য হাঁটাহাঁটি করা, লম্বা করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়া ইত্যাদির অভ্যাস করতে হবে।

ধূম ও মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া: ডায়াবেটিস ছাড়াও আরো অসংখ্য রোগের কারণ ধূমপান ও মদ পানের অভ্যাস। তাই যাবতীয় রোগ ঠেকাতে যেসব বদঅভ্যাস ছাড়তে হবে, তার মধ্যে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস অন্যতম। কেননা এইসবের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া এবং ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে।

বাংলাদেশে ডায়াবেটিস পরিসংখ্যান
বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের অবস্থা খুবই করুন। গত কয়েক বছর আগেও শীর্ষ দশ ডায়াবেটিস আক্রান্ত দেশে বাংলাদেশ ছিলো দশম। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। শুধু তাইনয় ২০৪৫ সালের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে চলে আসার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের হিসাব মতে, ২০২১ সালে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিস রোগীর ৮৭ শতাংশ রয়েছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে। আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, প্রতিবছর সাড়ে ১২ শতাংশ মানুষ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটির কাছাকাছি (একুশে টিভির প্রতিবেদন)।

এই রোগের চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। যারফলে অনেক পরিবারই চিকিৎসা ব্যয় সামলাতে না পেরে অসচ্ছল হয়ে পড়ছে। সেইসাথে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে একটি বিশাল জনগোষ্ঠী। যার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। একটি জরিপে দেখা গেছে, চিকিৎসাবাবদ এই রোগের পেছনে ব্যয় হচ্ছে প্রতি মাসে গড়ে চার হাজার টাকারও বেশী। সেই হিসাবে প্রতি মাসে দেশে খরচ হয় ৩ হাজার ৬০০ কোটি এবং বছরে ৪৩ হাজার ২০০ কোটিরও বেশী। আশংকার কথা হচ্ছে, দিনদিন রোগী বৃদ্ধির কারণে এই রোগের ঔষধ স্বল্পতা সৃষ্টি হচ্ছে। গুটিকয়েক কোম্পানি এই রোগের ঔষধ বাজারজাত করছে বলে তাদের মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণের মনোভাব কাজ করছে। ফলে প্রতিনিয়তই ডায়বেটিসের ঔষধের ঘাটতি সহ মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি বা বাডাস ১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাদের জাতীয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহিম এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৮০ সালে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের উপর একটি বিশেষজ্ঞ গবেষণা হাসপাতাল বারডেম প্রতিষ্ঠা করে। এর কাজ হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা। রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া এবং স্ক্রিনিং সরবরাহ করা। যারাই এই রোগে আক্রান্ত হন তারা এই সমিতির অনুকূলে সারা দেশে ৮০ টিরও বেশী স্থানীয় কেন্দ্রে সদস্য হতে পারেন। এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারেন।

সর্বশেষ কথা হচ্ছে, এই রোগ একপ্রকার রাজকীয় রোগ। যাদের জীবনযাপন অভিজাত এবং বেহিসাবী তারাই বেশী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে যাদের বংশগত রোগের ইতিহাস নেই। সুতরাং এই রোগ নিয়ে যতবেশী সচেতন হওয়া যাবে এবং সচেতন করা যাবে ততবেশী এই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আসুন সবাই এই রোগ নিয়ে সচেতন হই।

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:২৪
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×