somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ যে অর্থলোভী একটা শ্রেনী তৈরি হয়েছে তার জন্য ও কিন্তু আমরাই দায়ী।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"ভিকারুননিসা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকসহ তিনজন বরখাস্ত। এমপিও বাতিল। এইবার খুশি তো? যাও বাচ্চারা মোবাইল নিয়ে ক্লাসে যাও। পরীক্ষার হলে যাও। যা খুশি করো। কেউ তোমাদের কিচ্ছু বলার সাহস পাবে না। বলতে আসলে দুকথা শুনিয়ে দেবে।এতেও কাজ না হলে বাড়িতে গিয়ে ঝুলে পরবে। আমরা তো আছি তোমাদের হয়ে আন্দোলন করার জন্য। ফেসবুকে লেখালেখি করার জন্য। তোমাদের সকল অধিকার নিশ্চিত করা হবে। "

মাস দুয়েক আগে ভিকারুননিসা স্কুলের অষ্টম শ্রেনীর এক মেয়েকে মোবাইল রাখার অপরাধে টিসি দেওয়া হয়েছিল। তার ব্যাগে স্মাট ফোনে প্রাপ্ত বয়স্ক ছবি আমরা যাকে নীল ছবি বলি সেই ছবিসহ প্রাপ্ত বয়স্কদের ব্যবহিত জিনিস পত্রও নাকি পাওয়া গিয়েছিল। স্কুলটির অনেক বাচ্চাই মাদকাসক্ত বলে ইতিমধ্যে প্রচার রয়েছে। স্কুল সেকশনে মোট বাচ্চার সংখ্যা আট হাজার। এতো বাচ্চাদের নিয়ম কানুনের মধ্যে রাখতে হলে,একটু কঠিন অবস্থানে থাকতেই হয় সেটা সবার জানা। এখনকার বাচ্চারা তো আর ফেরেস্তা নয় যে,শান্ত সুবোধ হয়ে ক্লাসে বসে থাকবে।

কেউ কি বলবেন,ক্লাস এইটে,নাইনে পড়ুয়া একটা বাচ্চা স্কুলের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেন স্কুলে মোবাইল ফোন নিয়ে যাবে? তাও আবার ইন্টারনেটসমেত স্মাট ফোন!!!

আমরা ভুল করছি। আমার বাচ্চা যদি নাইনে পড়তো তাহলে আমি কিন্তু কিছুতেই তার হাতে মোবাইল দিয়ে স্কুলে পাঠাতাম না। স্কুলে বাচ্চারা শিখতে যায়। তার আসল শিক্ষাটা কিন্তু তার পরিবার থেকেই শুরু হয়। বলতে বাধ্য হচ্ছি,"গাছ ভাল তো ফল ভাল। পিতা মাতা বেয়াদব তো সন্তান মহা বেয়াদব।" হাজার পড়িয়েও তাদের মানুষ করা যাবে না।

একটা সময় স্কুলে শিক্ষকেরা বাচ্চাদের শাসন করতে পারতেন। সে সময় তাদের হাতে লাঠি ছিল। পান থেকে চুন খসলেই তারা বদমাইশ বলে লাঠি চালাতেন। তাদের কাছে মার খেয়ে, কানে মলা খেয়ে বাচ্চারা লেখা পড়া করে অনেক বড় হতো। মানুষ হতো। দেশের মুখ উজ্জল করতো। বাবা মায়েরা তাদের বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে গিয়ে বলতেন,স্যার এই নিন আমার বাচ্চা দিয়ে গেলাম ওর হাড্ডিগুলো আমার, চামড়া মাংস আপনার। হাড্ডি থাকলে চামড়া মাংস এমনিতেই হবে।

কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষকদের হাত থেকে সেই লাঠি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এইবার সকল আনুষ্ঠানিকতাসহ বকাঝকা করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো। এক কাজ করলে ক্যামন হয়? স্কুলের সব নিয়ম, আইন কানুন তুলে দেওয়া হোক। মোবাইল, প্রেম,প্রীতি,ভালবাসা করার অনুমতি দিয়ে দেওয়া হোক। শিক্ষকেরা না পড়িয়ে বেতন নিবে। বাচ্চারা না পড়ে খুশি থাকবে। উইন উইন সিচুয়েশন।

আবারো বলছি। আমরা ভুল করছি। গুটি কয়েক অবাধ্য বাচ্চার জন্য আমরা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে,লাখ লাখ বাচ্চার ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি।
শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীর পিতা মাতার আসন নিয়ে থাকেন কিন্তু আমরা তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিচ্ছি। একটা অবাধ্য বেয়াদপ, মূর্খ জাতী বোধ হয় এই সিস্টেমের ভেতর দিয়েই গড়ে উঠবে।

আমি জানি আমার এই সব কথাবার্তা অতি আধুনিক, উচ্চ শিক্ষিত,স্ব শিক্ষিত, নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকা পিতা মাতাদের অনেকের কাছেই ভাল লাগবে না। কিন্তু তবুও বলছি। আজ এই যে অর্থলোভী একটা শ্রেনী তৈরি হয়েছে তার জন্য ও কিন্তু আমরাই দায়ী। প্রফেশন,লিপিষ্টিক স্নো পাউডারের পেছনে সময় না দিয়ে আমাদের বাচ্চাদের পেছনেও সময় দেওয়া উচিত। অর্থের জোড়ে প্রতিপ্রত্তির প্রভাবে আমরা শিক্ষকদের গোলাম ভাবতে শুরু করেছি। বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে দিয়েই ভাবছি তারা লাট ব্যারিষ্টার হয়ে যাবে। এই প্রবনতা পরিত্যাগ করার সময় এসেছে। সন্মান সন্মান বয়ে আনে এই বিষয়টা বাচ্চা বুঝিয়ে স্কুলে পাঠাতে হবে।

আগে শিক্ষকেরা ভাবতেন, তাদের ছাত্র ছাত্রীদের মানুষ করতেই হবে আর এখন ভাবেন, কি দরকার মরা মেরে দায় কাধে নেওয়ার। পড়লে পড় না পড়লে গোল্লায় যা। আমাদের টিউশনি করে টাকা পেলেই চলবে।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৩
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×