প্রিয়া সাহার কথা মনে আছে , কারো ভুলার কথা নয় । বাংলাদেশের আলো বাতাস খেয়ে বেড়ে উঠা প্রিয়া সাহা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মি.ট্রাম এর প্রায় কোলে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে যাচ্ছিল । পি.কে সাহাকে চিনেন ? হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে সেই টাকা ভারতে পাচার করে আমানতদারীদের পথে বসিয়ে দিয়ে বেনাপোল হয়ে ভারত হয়ে আমেরিকায় পালিয়ে গেছে । আচ্ছা , ওসি প্রদীপকে চেনেন ? নাম শুনেছেন ? ও যে, যিনি ক্ষমতার দাপটে পাখির মতো গুলি করে মানুষ মেরে মাদক ব্যবসায়ী নামে চালিয়ে দিয়ে নিজেই গড ফাদার হয়ে উঠে ছিলেন শুধু তাই না নিজে নামে স্ত্রীর নামে গড়ে তুলেছিল সম্পদের পাহাড় । হাজার কোটি টাকা ভারতে পাচার করে সেখানেই গড়ে তুলেছেন বিত্ত বৈ বিত্তের পাড়ার । আচ্ছা , ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্রের কথা মনে আছে ? ওই যে যিনি শরীরে করোনা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন শেষে বিষয়টি ধরা পড়লে ভারতে পালিয়ে যান । কিন্তু করোনার জন্য ভারতে পালিয়ে যাননি গিয়েছেন তার অবৈধ শত শত কোটি টাকার দুনীতির কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার জন্য । আচ্ছা, এসকে সিনহার কথা মনে আছে ? আমাদের বিচারপতি । আচ্ছা আর বলবো না । এসব সবার জানা । এ রকম লোকদের সংখ্যা নেহাত কম না ।
আমার আজকের টপিকস হচ্ছে, বাংলাদেশে কি সত্যিই কোন ধর্মীয় সহিংসতা আছে ? না ঘটাবার চেষ্টা চলছে ?
খুজে দেখতে হবে , বাংলাদেশের কি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ফ্যাসাদ আছে কিনা । যদি থাকতো তাহলে বাংলাদেশের কোন বড় সরকারী পোস্টে কোন হিন্দু বা বৌদ্ধ বা খৃষ্টান প্রমোশন পেত না । ভরতে যেমন সেনা প্রধান হওয়ার কাতারে মুসলিম পৌঁছে গেলে তাকে সেনা প্রধান না বানিয়ে তার জুনিয়র অফিসারকে সেনা প্রধান বানানো হয়েছিলো সেই ধরনের নজির সৃষ্টি হতো ।
[ একই ঘটনার দুই ধরনের চিত্র । কোন ঘটনা ঘটলেই চিত্র এভাবে পাল্টে যায় । উপরের চিত্রটি প্রথম আলোর । ২য় চিত্রটি ডয়েচ বাংলার ।থেকে নেওয়া । বিদেশি অতিথীরা যখন দেশে আসছে ঠিক তার আগে এমন একটি ঘটনাকে রং চং মেখে ধর্মীয় সহিংসতা হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে পরিকল্পিত ভাবে । ]
আমি বড় হয়েছি , পুরাণ ঢাকায় । বড় হয়েছি হিন্দু মামা, খালা, মাসি, জেষ্টু, দাদুদের সাথে হেসে খেলে । তাদের বাড়িতে আমাদের যাতায়াত বা আমাদের বাড়িতে তাদের যাতায়াতের মাঝে ধর্ম কোনকালেই দেয়াল হয়ে দাড়াতে পারে নাই। খুব কাছ থেকে দেখেই বলছি এ কথা । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কথায় কথায় , বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের এতো অভিযোগ উঠে কেন ? কারা উঠায় ? কি তাদের স্বার্থ ?
বাংলাদেশে হিন্দুরা যে ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করে তা ভরতেও ভোগ করতে পারে না । তাহলে তারা এতো অভিযোগ তুলে কেন ? খুজতে গিয়ে দেখা গেছে , সাধারণ হিন্দু ভাইয়েরা কোনদিন কোন অভিযোগ তুলে না। যারা তুলে তারা সাধারণ হিন্দু না হিন্দুদের মাঝে ঘাপটি থাকা চক্রা । ওসি প্রদীপের স্ত্রীর মতো তাদের রয়েছে ভরতীয় পাসপোট । তারা প্রিয়া সাহার মতো এনজিও চালায় । নিজেরা ঘরে নিজেরাই আগুন দিয়ে প্রতিবেশীর নাম দিয়ে তাকে ধর্মীয় সহিংসতা বলে চালিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করে । (প্রিয়া সাহার ভাই নিজে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে প্রতিবেশিদের নামে মামলা করেছিলো । )
শাল্লায় যে ঘটনাটি ঘটেছে , সেটির সাথেও কোন ধর্মীয় সহিংসতা নেই । সেটি ছিলো পরিস্কার স্থানীয় কোন্দল । কিন্তু আমাদের দেশের অতি উর্বর মস্তিকের সাংঘাতিক ও কিছু সুবিধা ভোগী কোন ঘটনা ঘটলেই সেটাকে ধর্মীয় সহিংসতা বলে চালিয়ে দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারে নেমে পড়ে । পক্ষান্তরে ভরতে একের পর এক ধর্মের নামে মুসলিম নির্যাতন ,হত্যা ,ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলেও মুখে কুলুপ এঁটে থাকে । সর্বশেষ মন্দীরে পানি খাওয়ার অপরাধে নির্মম ভাবে এক মুসলিম শিশুকে পেটানো হয় । এমন ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে কি ঘটেছে ?
বাংলাদেশের মানুষ কোন কালেই ধর্মের জন্য অন্য ধমের মানুষের উপর জুলম, হত্যা , ধর্ষণের মতো কোন ঘটনা বা কাণ্ড ঘটায় নি । বরং হিন্দুদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু ভারতীয় বিজিপি জঙ্গি এদেশে বহুদিন যাবত ধর্মীয় দাঙ্গা লাগাবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । পশ্চিম বঙ্গে নির্বাচনকে সামনে রেখে এরা বাংলাদেশের ঘটনাকে হিন্দু নির্যাতন বলে চালিয়ে ভোটে জেতার চেস্টা করছে , বলে অনেকে মন্তব্য করেছে ।
আমি নিজে দেখেছি , পুরাণ ঢাকায় একটি মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে একটি দাঙ্গা লাগাবার প্রচেষ্টা । কিন্তু ওখানকার হিন্দু ভাইয়েরা সজাগ ছিলো বলে চক্রান্তকারীরা সফল হতে পারে নাই । তারা মিডিয়ার ক্যামেরায় উপস্থিত হয়ে , বলেছে, এখানে কোনদিন কোন হিন্দু বাড়ি ছিলো না । এটা হিন্দু সম্পত্তিও না । এই বক্তব্যের পর চক্রান্তকারীরা পালিয়ে যায় ।
পরিশেষ , বলবো , সরকারের উচিত এদেশে যে সকল হিন্দু ও হিন্দুদের মাঝে প্রবেশ করা দাঙ্গাবাজ সন্ত্রাসী দাঙ্গা লাগাবারে চেষ্টা করছে ও ভারতে অর্থ পাচারের সাথে জড়িত তাদের উপর নজরদারী বাড়ানো । তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা। কারণ এরা সরকারের সকল অর্জনকে নষ্ট করে দিচ্ছে । বাংলাদেশের হিন্দুরা সব সরকারের সময় সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা পেয়ে থাকে । সেটিকেই পুজি করে একটা চক্র ষরযন্ত্র করে যাচ্ছে ।
গতবছর দেখেছি , একটি হিন্দু এনজিও যারা রোহিঙ্গাদের মধ্যে দেশিয় অস্ত্র সাপলাই করে দাঙ্গা লাগাবার চেষ্টাা করেছিল । এসব ই তো মিডিয়ায় এসেছে । তাই এসব আর কারো অজানা নয় ।
দেশটা সকল ধর্মের মানুষের । মুসলমানদের ধর্মীর আহকাম হচ্ছে, অন্যধর্মের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া । কিন্তু সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে যারা দেশকে অস্থির করতে চায় বা চাইছে তাদের গ্রেফতার করে জেলে ঢুকানো সরকারের জন্য জরুরী হয়ে পরেছে । সেটা না করতে পারলে সরকারের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২১ দুপুর ১:০০