"একজন মুসলমানের জন্য,স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় ৪ টা তো দূরে থাক একের অধিক বিয়ে করা হারাম।" ২য় বিয়ের খায়েশ থাকলে লেখাটি এড়িয়ে যান।
লালসালু উপন্যাসের সেই ভণ্ড প্রতারকেরা ধর্মের নামে, নিজের স্বার্থে এখনো ফতুয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে, আর সমাজেরই কিছু মূর্খ সেই সব প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে নিজের বেচে থাকা শেষ ঈমানটাও হারিয়ে ফেলছে।
কোথাকার কোন মামুনুল না ফামুনুল নিজের লুচ্চামি জায়েজ করার জন্য, জাতির উদ্দেশ্য ফতুয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে, দেশের আলেম সমাজ তা বসে বসে শুনছে। কারণ আর কিছু না, নিজেদের অন্তরে লুকিয়ে থাকা খায়েশ।
[ আমি বিশ্বাস করি, এ দেশে অনেক নেক,পরহেজগার আলেম আছেন,আশা করছি ওনারা এইসব ভণ্ডদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন। ]
একজন পুরুষের বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে, আল্লাহ প্রথমেই বলেছেন, তোমরা স্বাবলম্বী না হলে বিয়ে করো না। সম্ভব হলে,এতিমদের বিয়ে করো। যদি তাদের ব্যাপারে ন্যায় পরায়ণ থাকতে পারো। অর্থাৎ এতিম মেয়েদের বিয়ে করে, তাদের কাছে যৌতুকের চাওয়া বা খোটা দেওয়া যাবে না। আর স্ত্রীকে তার দেনমোহর পরিপূর্ণ ভাবে বুঝিয়ে দাও।
এই দেনমোহর ধার্য করবে মেয়ের পরিবার সেটি যদি কোটি টাকা হয়, তবে সেটা দিয়েই বিয়ে করার ক্ষমতা থাকলে বিয়ে করো না থাকলে নিজের লেভেলের কাউকে বিয়ে করতে হবে। তা না হলে , রোজা রাখো । কারণ রোজা পুরুষের কামভাব দমনে সহায়তা করে ।
বাংলাদেশের ছেলেদের ইচ্ছাই থাকে ধনীর মেয়েকে বিয়ে করে ধনী হওয়া। ধার দেনা করে বিয়ের অনুষ্ঠান করতে পারলেও দেনমোহর দিতে না পেরে হাতে পায়ে ধরে মাপ চাইয়ে নেওয়া।
আবার উল্টো দেনমোহর কেন বেশি ধরা হয় সেটা নিয়ে সমালোচনা করা। আরে ভাই, সালমান এফ রহমানের মেয়ের দেনমোহর আর বাবনের মেয়ের দেনমোহর কি এক হবে? মেয়েদের দেনমোহর নির্ধারিত হয় তার পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদার উপর ভিত্তি করে। লজিং থাকা, মানুষের বাসায় খেয়ে বড় হওয়া ছেলের কাছে তো সেটা বেশি মনে হবেই। কোন মেয়ের পিতা বা মাতার অধিকার নেই, মেয়ের দেনমোহরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবার কিংবা তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কোথাও তাকে বিয়ে দেয়ার। ভিক্ষুকের জন্য বিয়া নয়, করলে অন্য এক ভিখারিনীকে বিয়া করতে হবে তাও দেনমোহর বুঝিয়ে দিয়ে বাকি রেখে নয়। এটা করলে,আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধে যাওয়া হবে। ভুলে যেও না আল্লাহ সবচেয়ে, বড় কৌশলী।
স্ত্রীর কাছে নাকি মিথ্যা বলা জায়েজ। প্রথমেই এই ফতুয়া দেয়া ভণ্ডটার গালে দুইটা থাপ্পড় মারা উচিত। কারণ সে নিজের স্ত্রীর,অজান্তে ওই নারীর সাথে (বিয়ের আগে) সাথে গোপনে দেখাসাক্ষাৎ, মেলামেশা করেছে। যা পরিষ্কার জেনা। জেনা,অনেক প্রকার আছে। এই লোক পরিষ্কার একজন জেনাকারি।
সেটা ঢাকার জন্য আবার ফতুয়া দিচ্ছে। স্ত্রীর সাথে কতোটুকু কেন কিভাবে কথা বলা যাবে সে সংক্রান্ত একটি হাদিস রয়েছে , সেখানে বলা হয়েছে, স্ত্রীর কাছে তার রুপ সংক্রান্ত ব্যাপারে বাড়িয়ে প্রশংসা করা যাবে । কিংবা অসম্ভব কিছু স্ত্রী দাবী করলে, বলা যাবে আল্লাহ্ চাইলে ইনশাআল্লাহ্ আমি তা তোমাকে দেবো ।
আসুন জেনে নেই,অধিক স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে, আল্লাহ কি বলেছেন,
কুরআন এই বাস্তব সত্যকে অতি সুন্দর রূপে এইভাবে বর্ণনা করেছে, [وَلَنْ تَسْتَطِيعُوا أَنْ تَعْدِلُوا بَيْنَ النِّسَاءِ وَلَوْ حَرَصْتُمْ فَلا تَمِيلُوا كُلَّ الْمَيْلِ فَتَذَرُوهَا كَالْمُعَلَّقَةِ] অর্থাৎ "তোমরা যতই সাগ্রহে চেষ্টা কর না কেন, স্ত্রীদের মাঝে ন্যায়পরায়ণতা কখনই বজায় রাখতে পারবে না। তবে তোমরা কোন এক জনের দিকে সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকে পড়ো না এবং অপরকে ঝোলানো অবস্থায় ছেড়ে দিও না।" (সূরা নিসা ৪;১২৯)
এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, একাধিক বিবাহ করে স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায়পরায়ণতা বজায় না রাখা বড়ই অনুচিত ও বিপজ্জনক ব্যাপার। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, "যে ব্যক্তির দু'টি স্ত্রী আছে, কিন্তু সে তন্মধ্যে একটির দিকে ঝুঁকে যায়, এরূপ ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তার অর্ধ দেহ ধসা অবস্থায় উপস্থিত হবে।" (আহমাদ ২/৩৪৭, আসহাবে সুনান, হাকেম ২/১৮৬, ইবনে হিব্বান ৪১৯৪নং) অর্থাৎ একজন মুসলমানের জন্য,স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় ৪ টা তো দূরে থাক একের অধিক বিয়ে করা হারাম।
কোন মাওলানা বা লেবাস ধারী ৪ বিয়ের পক্ষে কথা বললেই, বুঝবেন এইডা লালসালুর সেই ভণ্ড। যে কুরআন পড়েছে,কিন্তু নিজের কুচিন্তা ও জেনা বাদ দিতে পারে নাই। এদের কাছ থেকে, নিজের স্ত্রী,মেয়ে,ও শিশুদের দূরে রাখবেন,কারণ এরাই বলৎকারকারী।
সাখাওয়াত বাবন
১০।০৪।২০২১
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:২১